বন্ধুত্ব থেকে প্রণয়, প্রণয় থেকে পরিণয়..!🌸🦋 ।। মার্চ -২০/০৩/২০২৩।।

in hive-129948 •  2 years ago 

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

বেশ কিছুদিন হয়ে গেল গল্প লেখা হয় না। যদিও বিশেষ কোন সময় পাচ্ছি না গল্প লেখার জন্য। কারণ গল্প লিখতে গেলে যথেষ্ট ধৈর্য এবং সময়ের দরকার। তবে আজ অনেকদিন পর বেশ কিছুটা ফ্রি হয়েছি, তাই ভাবলাম আপনাদের সাথে একটা গল্প শেয়ার করা যাক। যদিও আজকের এই গল্পটা আমার বিগত দুই দিন ধরে মাথার ভেতর ঘুরঘুর করছে। অনেক পুরনো ঘটনা, ভুলে যেতে পারি তাই মনে হল যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনাদের সাথে শেয়ার করা যাক। তারপর আবার যদি ভুলে যায় তাহলে তো আবার সমস্যা হয়ে যাবে। আজকের এই মিষ্টি প্রেমের গল্পটা আমার খুব কাছের একজন বন্ধুর সাথে ঘটেছিল। যাইহোক আর বেশি কথা বলবো না, চলুন আজকের গল্পে ফিরে যাওয়া যাক। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে।


তখন খুব সম্ভবত ক্লাস ইলেভেনে পড়ি, সময়টা ছিল গ্রীষ্মকাল। একদিন ক্লাস রুমে বসে আছি হঠাৎ করেই দেখি আমার বন্ধু সুদীপ আমার পাশে এসে বসলো। অন্য দিনগুলোর তুলনায় আজকে দেখলাম তার মনের অবস্থা খুবই খারাপ। মনে হচ্ছে এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে যেটা ঘটার কথাই ছিল না। যেহেতু খুব কাছের বন্ধু ছিল তাই তার মনও খুব সহজে বুঝতে পারতাম। তারপরও অনেকটা কৌতুহল হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলাম যে কি হয়েছে তার। তবে সে কোন উত্তর দিতে রাজি নয়। যাই হোক তারপর তাকে আর কেউ জিজ্ঞাসা করা হয়নি, কারণ আমাদের ক্লাসের কেমিস্ট্রি স্যার উত্তমবাবু চলে এসেছিল। খুবই রাগী এবং দেখতেও বেশ ভয়ঙ্কর ছিল তাই চুপচাপ ক্লাস করতে লাগলাম। আস্তে আস্তে এই ঘটনা প্রায় ভুলেই গেছিলাম। ছুটির সময় গিয়ে আবার মনে পড়ল যে সুদীপ তো কোন একটা বিষয় নিয়ে মন খারাপ করে বসে ছিল। বাড়ি ফিরতে ফিরতে তাকে আবার সেই একই প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলাম। এবার সে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করে আমাকে বলল যে বাংলাদেশি একটা মেয়ের সাথে তার বেশ কিছুদিন ধরে রিলেশনশিপ চলছে কিন্তু ইদানিং সে তার সাথে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে কোন কারণ ছাড়াই। এই কথা শুনে এত পরিমাণে হাসি পাচ্ছিল যে বলে বোঝানো যাবে না। তারপরও বন্ধুর খারাপ লাগবে জেনে নিজেকে কিছুটা কন্ট্রোল করে আবার জিজ্ঞাসা করলাম যে এত লং ডিস্টেন্স রিলেশনশিপ করার কি দরকার ছিল। আর তুই যে এই ঘটনা ঘটিয়েছিস কোনদিন তো জানতেই পারিনি।

couple-2601156__480.jpg
সোর্স

বন্ধুদের ভেতর আমি সবসময় সিঙ্গেল এবং বেশ স্ট্রিক মাইন্ডেড ছিলাম। তাই কিছু কিছু বন্ধু আমার সাথে তাদের প্রেমের গল্প শেয়ার করত না। কারণ শেয়ার করলেই তাদের এমন এমন কথা বলে দিতাম যে প্রেম করার ইচ্ছেটাই মরে যেত। তাই আমার সাথে অনেক সময় লুকিয়ে যেত ব্যাপারগুলো। এই কারণেই শুধু আমার সাথে এই কথাগুলো শেয়ার করেনি। তবে যখন সে একেবারেই অসহায় হয়ে পড়ে তখনই আমার শরণাপন্ন হয়। কি করব সেটাই চিন্তা করছিলাম, কারণ দেশের ভিতর হলে হয়তো দেখা করে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করা যেত, তবে যেহেতু ব্যাপারটা দেশের বাইরে চলে গেছে। তাই কি করব সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। আর এদিকে আমাদের বয়স যথেষ্ট কম সুতরাং এমন কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে না যেটা ভবিষ্যতে অনেক খারাপ কিছু হতে পারে। আমি সুদীপ কে বললাম যে কোন চিন্তা করিস না দেখছি কি করা যায়। সেদিন বিকালে সে আবার আমাদের বাড়ি আসলো এবং বলল যে তাকে সব জায়গা থেকে ব্লক করে দিয়েছে এবং তার সাথে কোন ধরনের যোগাযোগ রাখতে সে রাজি নয়। বুঝতে পেরেছিলাম যে এবার আমাকে মাঠে নামতে হবে না, হলে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব নয়।

man-2933984_1280.jpg

সোর্স

মোটামুটি ঐদিন বিকালে মোবাইল ফোনে রিচার্জ কার্ড ভরে বাংলাদেশী সেই মেয়ের নাম্বারে কল লাগালাম। চাইলেই হোয়াটসঅ্যাপ বা ফেসবুকে কল দিতে পারতাম তবে তবে ভাবলাম ফোন দিয়েই সরাসরি কল দেই। সুদীপ আমার পাশেই বসেছিল। আমি মেয়ের নাম্বার এ ফোনে ডায়াল করে কল লাগালাম। দু'একবার রিং হতেই একজন মহিলা ফোনটা ধরল খুব সম্ভবত ওই মেয়ের মা ছিল। যদিও এটা আমার কাছে আনএক্সপেক্টেড ছিল কারণ যাকে কল দিয়েছি তার বদলে অন্য কেউ ধরেছে এখন কি বলবো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না। পরবর্তীতে আমাদের পরিচয় গোপন করে কথা বললাম। কিন্তু তিনি কথা বলতে রাজি নয়, কেন যে এরকম ব্যবহার করছিল আমি জানিনা। পরবর্তীতে কোন উপায় না দেখে ফোন কেটে দিলাম। সেদিন রাতে আরো একবার কল দিয়েছিলাম হঠাৎ দেখি মেয়েটা ফোন ধরেছে। তারপর আমার বন্ধু সুদীপের সব ঘটনা খুলে বললাম তবে সে তার উপর এত পরিমাণে রেগে গেছিল যে আমার কথা শুনতেও রাজি ছিল না।

couple-1934204__480.jpg
সোর্স

নিজেকে কিছুটা কন্ট্রোল করে মেয়েকে জিজ্ঞাসা করলাম যে সুদীপের উপর তার রাগের কারণ কি। তারপর সে এমন কিছু যুক্তি দিল যেটা শুনে আসলে হাসি থামানো যায়নি। এই মেয়ে নাকি সুদিপকে কে বলেছিল বাংলাদেশ যাওয়ার জন্য। তবে তার পাসপোর্ট হয়নি এজন্য সে যেতে পারিনি এই কারণে তার রাগ হয়েছে। আরো একটা কারণ ছিল সেটা হল যে ওই মেয়ে নাকি সুদীপের কাছে ইন্ডিয়ান কিছু কসমেটিক্স চেয়েছিল কিন্তু সে এগুলো কারো কাছে পাঠাতে পারেনি জন্য তার সাথে রিলেশনশিপে রাখতে চায় না। হা হা হা... আমি মনে মনে চিন্তা করলাম ভালোবাসা কি এতই ঠুনকো যে এই সামান্য ব্যাপার গুলো নিয়ে এতদিনের সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে। যাইহোক আপাতত কিছু তো আর করার ছিল না, তাই ভালো মন্দ জিজ্ঞাসা করেই ফোনটা রেখে দিলাম।

চলবে......🏃

পোস্ট বিবরণ


শ্রেণীগল্প।
লোকেশননড়াইল, বাংলাদেশ।
যাইহোক আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🎯ধন্যবাদ সবাইকে🎯

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

হা হা গল্পটা পড়ে বেশ কিছু সময় হাসলাম 😅
ভালোবাসা এতো সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই ঘটনাগুলো শুনলেই অবাক লাগে। তবে এখনকার তরুণ প্রজন্ম অতি আবেগি এবং বিপদে পরে যায় খুব তাড়াতাড়ি। যাই হোক সামান্য কসমেটিকসের জন্য এমনটা ঘটতে পারে এটা সত্যিই অকল্পনীয় ব্যাপার।
দেখা যাক সামনের পর্বে কি ঘটে।
ধন্যবাদ ভাই গুছিয়ে গল্পটা লেখার জন্য।

ভালোবাসা নষ্ট হয়নি তো ভাই। একদম শেষে কি ঘটেছিল সেটা তো পরবর্তী পর্বে দিয়ে দেবো।

🤣🤣,বাদ দেন ভাই!বেডি মানুষ 😂।কসমেটিকস লাগবে,হাসি আটকাতে পারছিনা আসলেই😂😂।
ইদানীং এমন ঘটনা খুব সাধারণ। কারণ জামানাটা অনলাইনের।
মীমাংসা সম্পর্কে জানার অপেক্ষায় থাকলাম।

🤣🤣,বাদ দেন ভাই!বেডি মানুষ 😂

এটা ভালো বলেছেন ভাই। হা হা হা...

যাইহোক পরবর্তী পর্ব হয়তো ২-১ দিনের ভিতর দিয়ে দেব। তখন পুরো ব্যাপারটা হয়তো বুঝতে পারবেন।

ভাইয়া আপনার গল্প পড়ে আমারও হাসিঁ পাচ্ছে। কি ভালবাসা তাদের বাংলাদেশে আসার জন্য পাসপোর্ট রেডি হয়নি,তাই আসতে পারবে না। আবার সুদীপ না আসলে কসমেটিক্স গুলো মেয়েটা পাচ্ছে না,আবার কাউকে দিয়ে পাঠাচ্ছেও না। তাই ব্রেকাপ,হা হা হা। ধন্যবাদ ভাইয়া।

আসলে ওই সময় তাদের প্রেম করার জন্য পারফেক্ট বয়স হয়েছিল না, এজন্য এরকম ছেলে মানুষই করেছিল আর কি। হা হা হা...