কলেজ লাইফের প্রথম দিনের অনুভূতি।। জানুয়ারি-১০/০১/২০২৩।।

in hive-129948 •  2 years ago 

☬নমস্কার সবাইকে☬

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই আপনারা... ? আশাকরি সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন সুস্থ আছেন। প্রত্যেকে তার পরিবার নিয়ে সুখে আছেন। আজকের নতুন একটা ব্লগে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

Higher secondary তে physics একটু কম মার্কস এর জন্য কলেজে মেরিট লিস্টে নাম ওঠা নিয়ে আমি বেশ চিন্তিত ছিলাম। যাইহোক যেদিন মেরিট লিস্ট দিল সেদিন দেখলাম আমার পছন্দের জায়গা গুলোতে প্রথম মেরিট লিস্টে নাম আসেনি। মন খারাপ হয়ে যাওয়াটাই স্বাভাবিক তবে আমি ধৈর্য হারালাম না দ্বিতীয় মেরিট লিস্টের জন্য অপেক্ষা করতে লাগলাম। এদিকে আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব অলরেডি কলেজে ভর্তি হয়ে গেছিল। কারণ তাদের প্রথম মেরিট লিস্টে নাম চলে এসেছিল। প্রথম মেরিট লিস্ট দেওয়ার খুব সম্ভবত সাত দিনের মাথায় দ্বিতীয় মেরিট লিস্ট বের করে আমার কলেজ এবং দেখি সেখানে 17 নাম্বারে আমার নাম এসেছে। যাইহোক অনেকটাই ভালো লাগছিল যে আমার পছন্দের সাবজেক্ট নিয়ে পড়তে পারব। এদিকে বেশ কিছুটা ভয় লাগছিল জীবনে প্রথমবার কলেজে যাওয়ার কথা চিন্তা করে। কারণ কলেজে গেলেই সব থেকে যেটা বেশি ভয়ানক সেটা হল ragging হওয়া। সেই সময়টাতে আমি এই ব্যাপারটা নিয়ে মোটেই মেন্টালি প্রিপেয়ার ছিলাম না।

IMG_20230109_235432_431.jpg

খুব সম্ভবত ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে, আমি প্রথম দিন কলেজে গিয়েছিলাম। আসলে তারিখটা ঠিক মনে করতে পারছি না তবে সোমবার ছিল এইটুকু মাথায় আছে। যেহেতু স্কুলের ছোট গণ্ডি পেরিয়ে কলেজে পা রেখেছিলাম প্রথমবার তাই আমার কিছুটা ভয় করছিল। তার থেকে বেশি ভয় লাগছিল সিনিয়ারদের দেখে। এই বুঝি কিছু জিজ্ঞাসা করে বসে তাহলে তো কান্না করে দেব। কারণ আমি বছর চারেক আগে প্রচন্ড পরিমাণ ভীতু ছিলাম। যাইহোক কলেজে ঢুকেই প্রথমে আমি আমার ডিপার্টমেন্ট খুঁজতে লাগলাম যেহেতু আমার বন্ধুরাও ঐদিন প্রথমবার গিয়েছিল তাই তারাও ঠিক জানতো না যে আমাদের ডিপার্টমেন্টটা কোন জায়গায়। মোটামুটি গেটের দারোয়ান এবং আশেপাশের সিনিয়রদের থেকে খোঁজ নিয়ে চলে গেলাম ক্লাস রুমের উদ্দেশ্যে। এতকিছু শুনে নেওয়ার পরও আমাদের ক্লাস খুঁজতে অনেক সময় লেগে গেল। গিয়ে দেখি সবাই বসে আছে তবে এখনও ক্লাসরুমে কোন স্যার বা ম্যাম ঢোকেনি। কিন্তু এ কি, আমরা যাওয়ার সাথে সাথে সবাই দাঁড়িয়ে গেল কেন সেটাই বুঝলাম না। যদিও সেই ব্যাপারটা কিছুটা পরে বুঝেছিলাম, আসলে তারা ভেবেছিল আমরা সিনিয়র। যদিও আমাকে দেখতে একটু বড় মনে হয়। পরবর্তীতে আমার যাদের সাথে খুব ভালো বন্ধুত্ব হয়েছিল তারাই আমাকে একদিন বলেছিল যে প্রথমদিকে তোর সাথে কথা বলতে ভয় পেতাম। মনে হতো যে বিশাল জ্ঞানী এবং আধ্যাত্মিক টাইপের মানুষ।

মোটামুটি ১৫ মিনিট অপেক্ষা করার পর ক্লাসে আমাদের HOD ম্যাডাম চলে আসলো এবং তার সাথে সাথে কিছু শিক্ষক শিক্ষিকা ক্লাসের ভিতর এসে দাঁড়ালো। আমি তো এমনিতেও ভয়ে ছিলাম এত সুন্দর সুন্দর মেয়েদের একসাথে অত কাছ থেকে দেখে। তারপর প্রফেসরদের দেখেও ভয় করছিল। প্রথমে আমাদের সবার ইন্ট্রো নেওয়া শুরু করল এবং ঘুরতে ঘুরতে যখন আমার অব্দি চলে আসলো তখন আমার পরিচয় দেওয়া শুরু করলাম। বিশ্বাস করবে না আমি আমার নাম বলার পর আমার বাড়ির অ্যাড্রেস ভুলে গেছিলাম ভয়ে। হা হা হা... পরে এই ব্যাপারটা নিয়ে বেশ হাসাহাসি হয়েছিল। এরপর আমাদের শিক্ষক মহোদয়রা তাদের পরিচয় দিল এবং কে কোন সাবজেক্ট পড়াবে সেই বিষয়ে নিয়ে টুকটাক কথাবার্তা বলল।

তারপর তো ক্লাস থেকে সকল শিক্ষকরা বেরিয়ে গেল কিন্তু আমাদের জন্য পরবর্তীতে কি অপেক্ষা করছিল সেটার জন্য আমরা একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না। হঠাৎ করেই দেখি কোথা থেকে সব সিনিয়াররা চলে এসেছে। তারা একে একে আমাদের intro নেওয়া শুরু করেছে। তারপর আবার এমন এমন কথা বলছে যে লজ্জায় পড়ে যেতে হচ্ছে। তবে একটা জিনিস বেশ ভালো করে খেয়াল করলাম সেটা হল যত বেশি সিনিয়র তাদের জ্ঞানের পরিধি এবং কথা বলার ধরন তত বেশি ভালো। আমার তো তখনই ফাইনাল ইয়ারের দাদা দিদিদের খুব পছন্দ হয়ে গেছিল। আসলে বিপদের সময় বা পড়ালেখায় কোন সমস্যা দেখা দিলে এই সিনিয়াররাই পাশে এসে দাঁড়ায় তাই তাদের এটুকু যন্ত্রণা সহ্য করাটা তেমন কোনো বড় ব্যাপার না। মোটামুটি আমাদের এই ইন্ট্রো ২-৩ ঘণ্টা চলেছিল। এরপর আমরা নিজেদের ভিতর পরিচিত হতে শুরু করি। তবে কেন জানিনা বেশিরভাগ মেয়েরা আমার সাথে পরিচিত হতে এসেছিল এবং কলেজ লাইফের সবথেকে বেশি মেয়ে বান্ধবী ছিল আমার। যদিও মেয়েদের সাথে আমার সম্পর্ক খুব বেশিদিন ভালো থাকে না। আমি এখন অব্দি এই কাহিনীর কোন হদিস খুঁজে পেলাম না।

আজকের পর্ব এই পর্যন্তই ছিল। আশাকরি আপনাদের ভালো লেগেছে আজকের পর্বটি। আর ভালো লাগলে অবশ্যই একটি কমেন্ট করতে ভুলবেন না। কারণ আপনাদের একটি কমেন্ট আমাকে নতুন এবং ভালো কিছু করার উৎসাহ যোগায়। ভালো থাকবেন সবাই।

🕉️ধন্যবাদ সবাইকে🕉️

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সত্যি ভাইয়া এই জিনিসটা অনেক ভালো লাগল, আপনি দেখতে বড় তাই সবাই সিনিয়র মনে করেছে-হা হা হা।আপনি টিচার দের ভয়ে না সুন্দরী মেয়েদের ভয়ে বাড়ির ঠিকানা ভুলেছেন? আপনার অনেক মেয়ে বান্ধবী ছিল, যাইহোক আপনি কি কন্যা রাশি ছিলেন নাকি।আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মূহুর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আপনি টিচার দের ভয়ে না সুন্দরী মেয়েদের ভয়ে বাড়ির ঠিকানা ভুলেছেন?

খুব সম্ভবত এই দুটো কারণই ছিল,

সুন্দরী মেয়ে এবং টিচার। 🤣

কমেন্ট করতেই তো এলাম, কলেজ লাইফের প্রথম দিন আর পুরো ব্যাপারটা নিয়ে খুব দারুণ করে লিখেছেন। দাদা আসলে আমি নিজেও প্রথম দিন যখন কলেজে গিয়েছিলাম তখন বেশ ভয় পেয়ে ছিলাম। কারণ সেদিন আমি একদম একা গিয়েছিলাম। আমার সাথে কোন ফ্রেন্ড আমার কলেজে ভর্তি হয়ে হয়নি। পুরো গল্পটা পড়ে বেশ ভালোই লেগেছে।

আমার সাথে পুরনো স্কুলের কিছু বন্ধু ছিল এই জন্য খুব বেশি একটা ভয় পাইনি। তবে তারপরও যথেষ্ট ভীতিকর অবস্থায় ছিলাম। ধন্যবাদ আপু পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য।

আমি কিন্তু পুরো পোস্টটি মনোযোগ দিয়ে পড়ে বেশ আনন্দ পেলাম। ওই যে ভয়ে আপনার এড্রেস ভুলে যাওয়ার ব্যাপারটা আসলেই দারুন ছিল। আর সবশেষে এত ভাল ভাল মেয়ে বন্ধু পেয়েও সম্পর্ক বেশিদিন ভালো থাকে না জেনে আরো বেশি মজা পেলাম।

আমারও কলেজ জীবনে অসংখ্য মেয়ে বান্ধবী ছিল তবে সবার সাথে সম্পর্ক দীর্ঘদিন টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলাম। কিন্তু বিয়ের পর সবাইকে পর করে দিতে বাধ্য হয়েছি, তা না হলে পরিবেশ বেশ গরম হয়ে উঠতো। আর হ্যাঁ কলেজে কিছুটা বড় ভাইদের অত্যাচার হয় ঠিকই তবে কলেজ লাইফটা ভীষণ আনন্দদায়কও বটে।

আপনি তো দেখছি আমার মত, চারিদিকে মেয়েরা ঘুর ঘুর করে। হা হা হা... যাই হোক আমার পোস্ট মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

বিশাল জ্ঞানী এবং আধ্যাত্মিক টাইপের মানুষ আছে তাই তো জানতাম না😉,আসলে ভাবের চেয়ে ভঙ্গি বেশি আরকি।ragging এর জন্য আবার প্রিপারেশনও লাগে নাকি,তাহলে আপনি প্রিপারেশন নেন আমি যেহেতু সিনিয়র তাই একবার ragging দিতে চাই আপনাকে।আর আপনি ভয়ে ঠিকানা ভুলে গিয়েছেন নাকি সুন্দরী মেয়েদেরকে দেখে তাই আগে বলেন😉।ঘটনা কি আসলেই সত্যি মেয়ে বান্ধবী আপনার অনেক ছিলো নাকি চাপা মারছেন😃

ঘটনা কি আসলেই সত্যি মেয়ে বান্ধবী আপনার অনেক ছিলো নাকি চাপা মারছেন😃

ঘটনা সত্যি। আমার ডিপার্টমেন্টের ৯০% মেয়েই আমার বান্ধবী ছিল। শুধু বান্ধবী না খুব কাছেরও বটে। তারা এখনও আছে তবে কথা হয়না খুব বেশি।

ওই সময় তো আমি রেগিং এর ভয় পেতাম তবে এখন আমি নিজেই র‍্যাগিং করি। একটা অন্যরকম মজা আছে এর মধ্যে।