☬নমস্কার সবাইকে☬
হ্যালো বন্ধুরা,
আগের পর্বে যেখানে শেষ করেছিলাম -
এই বয়সেও অপু একবার চিন্তা করেছিল যে ঘর ছেড়ে চলে যাবে অন্য কোথাও। কিন্তু কোথায় যাবে..?, কার কাছে যাবে...? এই কথা দু'একবার চিন্তা করে আবার থেমে গেছে।
সন্ধ্যার দিকে অপুর বাবা কাজ সেরে এসে অপুর মায়ের কাছে সমস্ত ঘটনা শুনলো, যে অপু দুপুরে স্কুল থেকে এসে কিছু খায়নি। তার পরিবর্তে উলটো হয়ে খাটের উপর শুয়ে রয়েছে। এদিকে অপু কখন রাগ করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছিল সেটা টেরই পাইনি সে নিজে। একে তো সারাদিন বাবা ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরেছে তার উপর আবার এসে তার মায়ের মুখে অপুর নামে কথা শুনে অপুর বাবার মাথায় রক্ত চড়ে গেল। গজ গজ করতে করতে অপু রুমে গিয়ে অপুকে কান ধরে টেনে তুলল, আর বলল বেয়াদব ছেলে একে তো পড়াশোনা করবে না তার উপর যদি শিক্ষক কিছু বলে তাহলে নিজেকে পরিবর্তন না করে রাগ করে শুয়ে থাকা হচ্ছে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে গেল, এখন পর্যন্ত খাওয়ার নাম নেই। ভগবান যে তোর মত ছেলে কেন আমাকে দিয়েছে সেটাই বুঝিনা। পারিস তো কোন একদিন রাগ করে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে, আমার আর তোর মুখ দেখতে ইচ্ছা করছে না। এই কথা শুনে অপুর মন আরো খারাপ হয়ে গেল। সে এবার মন স্থির করে নিল যে সন্ধ্যা হলেই সে ঘর থেকে পালিয়ে চলে যাবে তার মামাবাড়ি।
একটু সন্ধ্যা গড়াতেই অপুর বাবা চলে গেল ভাত খাওয়ার জন্য রান্নাঘরে। এই সুযোগে অপু তার বাবার তিন ব্যাটারির টর্চ লাইট টা নিয়ে বেরিয়ে পড়ল ঘর থেকে। অপুর মামা বাড়ি খুব বেশি একটা দূরে নয়। তাদের গ্রাম ছেড়ে মাঝখানে আর একটা গ্রাম পড়ে তারপরে হল অপুর মামাবাড়ি। এখন যদি ঘর থেকে বেরিয়ে যায় তাহলে ঘন্টা দুয়েক এর ভিতরে মামাবাড়ি পৌঁছে যাবে। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে যে মাঝখানে একটা জায়গা রয়েছে যেটা অনেক গভীর জঙ্গল এবং সেই জঙ্গল নিয়ে রয়েছে নানা গল্প, নানা রটনা। তবে অপুর উপর মাথায় এতটাই জেদ চেপে গেছিল যে এইসব তার কাছে কিছুই মনে হচ্ছিল না। একবার তো চিন্তা করেছিল যে ওই জঙ্গলের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে, তারপর যদি কোন লোক সেখান দিয়ে যায় তাহলে তার সাথে জঙ্গল পাড়ি দিয়ে সামনের গ্রামে চলে যাবে। মোটামুটি ঘন্টা খানে হাঁটার পরে অপু ক্লান্ত হয়ে গেল, তাই গ্রামের একটা টিউবয়েল থেকে কিছুটা জল খেয়ে আবার রওনা দিল তার মামা বাড়ির উদ্দেশ্যে। কিছুদূর হাঁটতেই সে সেই জঙ্গলের কাছে চলে আসলো যেটার জন্য এত সময় সে ভয় পাচ্ছিল।
কিন্তু কিছু করার নেই কারণ সে অলরেডি মাঝ পথে চলে এসেছে। এখন যদি সে বাড়ি ফিরে যায় তাহলে তার বাবা-মা তাকে আবার মারবে তাই ভয়ে ভয়ে জঙ্গলের একটা সাইডে গাছের নিচে বসে থাকলো, এই আশা নিয়ে যে যদি কেউ এখান দিয়ে যায় তাহলে তার সাথে করে জঙ্গল পাড়ি দিয়ে যাবে সামনের গ্রামে। এদিকে প্রায় আধা ঘন্টা অপেক্ষা করার পরেও কেউ সেখানে আসলো না। তারপর আবার শিয়ালের ডাক আর নিস্তব্ধ গাছেদের এক পলকে তার দিকে তাকিয়ে থাকাটা বেশ ভীতিকর মনে হচ্ছিল তার কাছে। এমনিতেও বয়স কম তারপর আবার গভীর জঙ্গল সব মিলিয়ে বেশ ভয় করছিল অপুর। যাইহোক আর কিছু সময় অপেক্ষা করার পরও বুঝতে পারল যে তাকে জঙ্গল পার করে দেওয়ার মতো কেউ আসবে না। তাই সে নিজেই সাহস নিয়ে ঢুকে পড়লো জঙ্গলে। একে তো ঘন জঙ্গল তার উপর আবার বিভিন্ন বন্য জীবজন্তুর ডাক বেশি ভয়ংকর একটা পরিবেশ তৈরি করেছিল তখন। কিছু দূর হাটার পরেই সে বুঝতে পারল কে হয়তো তার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে। কিন্তু সে অনুমান করতে পারলেও দেখতে পারছে না তাকে। এইবার তো অপু কান্না করে ফেলল আর বলল, প্লিজ আমাকে ভয় দিও না। আমি মামার বাড়ি যাবো।
চলবে.......🏃
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | স্টোরি রাইটিং। |
---|
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি বলতে আমার বেশ মজার লাগছে গল্পটা পড়তে। এটার অন্যতম কারণ অবশ্য আপনার লেখনী। তবে অপু চরিত্র টা সমাজের বাস্তব চিত্র লাগে আমার কাছে। পুঁথিগত বিদ্যার কদর করতে জানে শুধু এই সমাজ। অন্য গুণাবলীর বিন্দু মাত্র দাম নেই কারোর কাছে। আর ছোট বেলায় পড়াশোনার জন্য যখন বকা খেতাম আমারও ইচ্ছে করতো এমন দূরে কোথাও চলে যাই। যাই হোক দেখা যাক পরবর্তীতে কি অপেক্ষা করে আছে অপুর জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দুই একজন লোকের জন্য গল্পটা লিখছি,তার মধ্যে আপনি একজন। বেশির ভাগ লোক তো জেনারেল রাইটিং বা গল্প দেখলে স্কিপ করে। ভালো লাগে আপনার মন্তব্য পড়তে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই আমার ব্যক্তিগত মতামত বলে এখানে যারা ব্লগিং করছে, তাদের বেশির ভাগের কাছে প্যাশন এর থেকে পয়সা টা বড়। আর সেটা যত সহজে করা যাবে তত লাভ বেশি। তাই এই ধরনের কোয়ালিটি পোস্ট সবাই স্কিপ করে। ও হ্যাঁ আরো একটা ট্রেন্ড আছে, আপনি অন্যের পোস্টে কমেন্ট না করলে সেও করবে না কমেন্ট। সেটা আপনি যতোই ভালো লিখেন না কেন। হাহাহাহাহা,, কথা শুনতে খারাপ হলেও , আমার কাছে মনে হয় এটাই সত্যি। সে যাই হোক, সবই মনের ব্যাপার। যে যেই ভাবে হ্যাপি থাকবে, সে সেই ভাবেই থাকুক 😊😊
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হা হা হা.... 😂 আমার মনের কথা আপনি বলে দিলেন। আমি সব কিছুই নোটিশ করি ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এসব কারণেই কাজের মজা টা হারিয়ে ফেলছি কেন যেন দিন দিন, আর নিজেকেও গুটিয়ে নিচ্ছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম চলে যেয়েন না। ভালো মানের ব্লগার খুব দরকার ভাই।😰😰
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
"অপু এবং ব্রহ্মদৈত্য"গল্পটির প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম, আর সেটা পড়ে আমার ভয়ের বদলে মজা লাগছিল।আজকের পর্বটি পড়ে অপুর জন্য খারাপ লাগছে, সবাই তাকে নিয়ে স্কুলে ঠাট্টা তামাশা করছে, এটা তো খুবই দুঃখজনক একটি বিষয়। শেষ পর্যন্ত জঙ্গল পাড় করে দেওয়ার জন্য কোনো লোক না পেয়ে অপু জঙ্গলে ঢুকতে শুরু করলো, আর এখান থেকেই মনে হচ্ছে রহস্য শুরু হলো। পর্বটি পড়ে ভালো লাগলো। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পরের পর্ব দুই একদিনের মধ্যে দিয়ে দেবো, পড়ে নিও। আশাকরি ভালো লাগবে। পোস্ট পড়ে মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অবশ্যই পড়বো দাদা ।তোমার লেখাগুলো আমার কাছে বেশ ভালো লাগে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তোমাদের জন্যই তো লিখি,যারা আমার পোস্ট পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit