আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম ফেরদৌসের বাড়িতে গিয়ে ফেরদৌসের কাজ শেষ হলে সেখান থেকে আমরা চরভদ্রাসন নামক এলাকায় পদ্মার পাড়ে যাবো। যেখানে কিছুদিন আগে আমি আমার এলাকার বন্ধুদের সাথে গিয়েছিলাম। সেই জায়গাটি আমার কাছে খুবই পছন্দ হয়েছিলো। আমি ফেরদৌসকে বলেছিলাম তোমাদের বাড়িতে গেলে সেখান থেকে ওই জায়গা থেকে ঘুরে আসবো। যাই হোক পরিকল্পনা মোতাবেক ঠিক হয়েছিল আমরা বেলা তিনটার দিকে রওনা দেবো। কিন্তু যাওয়ার দিন সকালে ফেরদৌস আমাকে ফোন দিয়ে বলল একটু পরে বের হতে। তখন ঠিক হলো আমরা সাড়ে তিনটার দিকে বের হবো। পরবর্তীতে আরো একধাপ সময় পিছিয়ে শেষ পর্যন্ত আমরা রওনা দিয়েছিলাম চারটার দিকে। ৪ঃ০০ টা বাজার কিছুক্ষণ আগে আমি ইউসুফ ভাইয়ের চায়ের দোকানে পৌঁছেছিলাম।
তারপর সেখান থেকে ফেরদৌস আর আমি মিলে ওর বাড়ির দিকে রওনা দিলাম। যেহেতু ফেরদৌসের বাড়ি বেশ অনেকটা দূরে তাই ফেরদৌস চেষ্টা করছিলো দ্রুত চালাতে। আমি আবার দ্রুত মোটরসাইকেল চালানো পছন্দ করি না। কারণ দ্রুত গতিতে মোটরসাইকেল চালালে এক্সিডেন্টের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। যাই হোক দুই বন্ধু গল্প করতে করতে ফেরদৌসের বাড়ির দিকে যাচ্ছিলাম। পথের মধ্যে শুনতে পেলাম আসরের আযান হয়ে গিয়েছে। তখন আমরা দেখে শুনে একটি মসজিদের কাছে থেমে। সেখান থেকে আসরের নামাজ আদায় করলাম। তবে নামাজ আদায় করতে গিয়ে দুজন ঘেমে একেবারে ভিজে গিয়েছিলাম। কারণ যেখানে আমরা নামাজ পড়েছিলাম সেখানে তখন লোডশেডিং চলছিলো। অনেক তাছাড়া সেদিন গরমও পড়েছিল অনেক।
যাইহোক নামাজ পড়া শেষ হলে আমরা আবার ফেরদৌসের বাড়ির দিকে যেতে লাগলাম। এভাবে চলতে চলতে পাঁচটা বাজার কিছুক্ষণ পরে আমরা ফেরদৌসের বাড়িতে উপস্থিত হলাম। এর আগেও আমি দু-একবার ফেরদৌসের সাথে ওর গ্রামের বাড়িতে গিয়েছি। গ্রামের বাড়িতে ওর দুই চাচা থাকেন দুজন আলাদা দুটো বাড়ি করে। তবে গ্রামের ভেতর ফেরদৌসের চাচার বাড়ি দেখে আমি আসলেই অবাক হয়েছি। প্রাইমারি স্কুলে চাকরি করা শিক্ষক তিনি গ্রামের ভেতরে ডুপ্লেক্স বাড়ি বানিয়েছেন। তাই আমি মজা করে ফেরদৌসকে বললাম তোমার চাচা হচ্ছে বাংলাদেশের সবচাইতে ধনী প্রাইমারি শিক্ষক। আমরা কিছুক্ষণ ফেরদৌসের বাড়ির আশেপাশে ঘোরাফেরা করলাম। এর ভেতরে ফেরদৌসের চাচা চাচি ঘর থেকে বাইরে এসে ফেরদৌসকে ডাকতে লাগলো। আমি চাচ্ছিলাম সেখান থেকে তাড়াতাড়ি বের হতে। কারণ সেখান থেকে বের না হতে পারলে আমাদের আর সেই নদীর পাড়ে যাওয়া হবে না। তবে ফেরদৌসের চাচা চাচির জোড়াজুড়ির কারণে আর সহজে সেখান থেকে বের হতে পারলাম না।
এভাবে বেশ কিছুক্ষণ সময় পরে আমরা সেখান থেকে বের হতে সক্ষম হলাম। সেখান থেকে বের হয়ে কিছুদূর আসার পরে ফেরদৌস বলল এখন কি আমরা সেই নদীর পাড়ে যাবো? আমি বাইরে তাকিয়ে দেখি প্রায় সন্ধ্যা হয় হয় অবস্থা। আমি বললাম আজকে আর সম্ভব না। চলো আজকের মতো বাড়ি চলে যায়। পরবর্তীতে আবার কোনদিন এদিকে এলে তখন সেই নদীর পাড়ে যাওয়া যাবে। যদিও আপাতত আর ফেরদৌসের সাথে ঘোরাফেরা সম্ভব হচ্ছে না। কারণ ফেরদৌস কয়েকদিনের ভেতর একটি চাকরিতে জয়েন করছে। সেখানে জয়েন করলে কোথায় পোস্টিং হবে সেটা এখনো জানেনা। যদি দূরে কোথাও পোস্টিং হয় তাহলে আগামী দীর্ঘদিন ফেরদৌসের সাথে আর ঘোরাফেরা সুযোগ হবে না। ফেরদৌস ফরিদপুর না থাকলে আমি বেশ একা হয়ে পড়ি। যদিও এখন এলাকার কিছু বন্ধু-বান্ধবের সাথে মাঝে মাঝে ঘোরাফেরা করি। তবে ফেরদৌসের সাথে দীর্ঘদিন ঘোরাফেরা করে যে মজা পেয়েছি সেটা অন্য কারো সাথে ঘুরে আর পাই না। এখন আমি মনে মনে প্রার্থনা করছি ফেরদৌসের পোস্টিং যেন ফরিদপুরের কাছাকাছি কোন জায়গায় হয়। তাহলে হয়তো মাঝে মাঝে ও বাড়িতে আসলে তখন ওর সাথে ঘোরাফেরা করতে পারবো। এই চিন্তা করতে করতেই সেদিন বাড়ি ফিরলাম।
আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইস | হুয়াই নোভা 2i |
---|---|
ফটোগ্রাফার | @rupok |
স্থান | সদরপুর |

250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |


Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness

OR
ভাইয়া আমার কাছে কিন্তু আপনাদের বন্ধুত্ব যেমন ভালো লাগে, তেমনি করে ভালো লাগে আপনাদের মজার মজার ঘুরা ফিরার পোস্ট গুলো পড়তে। বৃষ্টির মধ্যেও আপনারা কি মজার সময়ই না কাটিয়েছেন আপনারা। তবে আফসোস হলো ফৈরদৌস ভাইয়ার চাকুরী হওয়ায় আপনাদের আর তাকে নিয়ে এত মজার ঘুরা হচেছ না। তবুও আপনাদের বন্ধুত্ব অটুট থাকুক সারা জীবন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আপনি ঠিকই বলেছেন ফেরদৌস ভাইয়ার চাচা হচ্ছে বাংলাদেশের সবচাইতে ধনী প্রাইমারি শিক্ষক। তা না হলে প্রাইমারি শিক্ষক হয়ে কিভাবে এত বড় ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরী করে। যায়হোক আমিও দোয়া করি ফেরদৌস ভাইয়ার পোষ্টিং যেন ফরিদপুরে হয়। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া, ফেরদৌস ভাইয়ের চাচা গ্রামের বাড়িতে এত সুন্দর ডুপ্লেক্স বাড়ি করেছে যা দেখে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। তবে তিনি কিভাবে ধনী প্রাইমারি শিক্ষক হলেন টিপসটা জানা থাকলে আমার খুব কাজে লাগতো। কেননা আমার অর্ধাঙ্গিনীও প্রাইমারি স্কুলের টিচার হাহাহা। যাইহোক ভাইয়া, আপনার ও ফেরদৌস ভাইয়ের বন্ধুত্বের সম্পর্ক দেখে মনটা ভরে যায়। এমন বন্ধুত্বের বন্ধন সব সময় যেন থাকে এই প্রত্যাশা করছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি কথা বলতে ফেরদৌস ভাইয়ের চাচার বাসা দেখে আমি নিজেও অবাক। বাড়িটা বেশ সুন্দর। আমিও আপনার মতো ভারত পাকিস্তান ম্যাচের উওেজনায় নিজের দৈনন্দিন কার্যক্রমকেও নিয়ন্ত্রণ করেছি। আর বাইক চালানো আমার নিজের পছন্দ না। তবে প্রয়োজনের সময় এটা অনেক উপকারি।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাদের বন্ধুত্ব ও ঘোরাফেরা দেখে ভীষণ ভালো লাগে।আমিও দোয়া করি ফেরদৌস ভাইয়ার পোস্টিং ফরিদপুরের কাছাকাছি ই যেনো হয়।সত্যি আমিও অবাক ভাইয়ার চাচার বাড়ি দেখে।সত্যি ই প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক হিসেবে তাকে ধনী বলাই যায়।এই প্রথম দেখলাম বা শুনলাম।অনুভূতি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit