আরো একটি অগ্নি দুর্ঘটনা অতঃপর........

in hive-129948 •  4 months ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কিছুদিন আগে বেইলিরোডে ঘটে গেলো স্মরণ কালের এক ভয়াবহ অগ্নি দুর্ঘটনা। রেস্টুরেন্টে খেতে গিয়ে এতগুলি মানুষের আগুনে পুড়ে মৃত্যু বাংলাদেশ আগে কখনো দেখেনি। তবে এই অগ্নি দুর্ঘটনা এবারেই কিন্তু প্রথম নয়। প্রতিবছরই আমাদের দেশে বেশ কিছু বড়সড়ো অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সেই দুর্ঘটনাগুলোতে প্রচুর মানুষ তাদের জীবন হারায়। বহু পরিবার নিঃস্ব হয়ে যায়। তারপর যথারীতি দেশের মানুষ মিডিয়া সবাই সরব হয়ে ওঠে। তবে কিছুদিন গেলে সবার কন্ঠ স্থিমিত হয়ে যায়। সাধারণ মানুষজন পুরনো ইস্যু ভুলে নতুন ইস্যুর দিকে মনোযোগ দেয়। এভাবেই বহু বছর ধরে চলে আসছে।

IMG_20240301_123724.jpg

গতকাল একটা খবর দেখলাম। রাজধানীর ডেমরায় একটি বিল্ডিংয়ে আগুন লেগেছে। সেখানে ক্রীড়া সামগ্রী রাখার গোডাউন ছিলো। মূলত সেখান থেকেই আগুনের সূত্রপাত। এবারও ফায়ার সার্ভিস দ্রুত এই আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে ব্যর্থতাটা মূলত ফায়ার সার্ভিসের নয়। ব্যর্থতাটা পুরো সিস্টেমের। ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে সেখানে পানির অপ্রতুলতা আগুন নিয়ন্ত্রণের দেরি হওয়ার মূল কারণ। তাছাড়া আরও বেশ কিছু কারণ রয়েছে। যেমন নিয়ম মেনে বিল্ডিং না করা। এই সমস্ত কারণেও তাদের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক সময় লেগে গিয়েছে। এই বিষয়গুলোর কোনটাই নতুন নয়। প্রত্যেকটা অগ্নিকাণ্ডের পরে এই বিষয়গুলো সামনে উঠে আসে। কিছুদিন সবাই চিৎকার চেঁচামেচি করে। পরে আবার ভুলে অন্য কাজে মনোনিবেশ করে। কিন্তু সিস্টেম সেই আগের মতই রয়ে যায়।


প্রত্যেকটা অগ্নিকাণ্ডের পরে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কিন্তু সেই তদন্ত কমিটির সুপারিশ কখনোই বাস্তবায়ন হয় না। আর এই অগ্নিকাণ্ডের পেছনে দায়ী ব্যক্তিদের কখনোই সাজা হয় না। এই কারণে এই অগ্নিকাণ্ড এখনো ঘটছে ভবিষ্যতেও ঘটতে থাকবে। কারণ দায়ী ব্যক্তিরা বা দোষী ব্যক্তিরা সবসময় ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। কিন্তু যেই মানুষটা তার প্রিয়জনকে হারাচ্ছে, যে সন্তান তার বাবা-মা মাকে হারাচ্ছে, যে বাবা-মা তার সন্তানকে হারাচ্ছে, যে পরিবার তাদের একমাত্র উপার্জন ক্ষম ব্যক্তিটিকে হারাচ্ছে তাদের কথা কি কেউ চিন্তা করে? সরকারের নীতি নির্ধারক মহলে তাদের কথা চিন্তা করার মতো কি কেউ আছে? এখন পর্যন্ত তেমন কাউকে চোখে পড়েনি। যে দু চারজন মানুষ এইগুলি নিয়ে সরব হয়ে ওঠে তারাও একসময় হতাশ হয়ে হাল ছেড়ে দেন। কিন্তু কোন কিছুরই উন্নতি হয় না। বিল্ডিং গুলো সেই আগের মতই জরাজীর্ণ থেকে যায় যেখানে অগ্নি নির্বাপনের ব্যবস্থা থাকে না বা কোন ফায়ার এক্সিট থাকে না। প্রত্যেকটা আবাসিক এলাকার ভেতরে জলাধার থাকা উচিত ছিলো যেটা নেই বা যেটার ব্যবস্থা করার কথা ও কারো মাথায় আসে না। দেশের ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্ট কে আরো লোকবল এবং উন্নত যন্ত্রপাতি দিয়ে শক্তিশালী করে গড়ে তোলা সেটাও হয়ে ওঠেনা।


মোটকথা সাধারন জনগণের জন্য ভালো হয় এমন কোন কিছুই হয় না। শুধু সময় অসময়ে কিছু তাজা প্রাণ ঝরে যায়। এইবার বেলিরোডে অগ্নিকাণ্ডের পরে পুলিশ বেশ তৎপর হয়ে উঠেছিলো। সেটার পেছনে অবশ্য বিশেষ কারণ ছিলো। কারণটা হচ্ছে ডিআইজি পদমর্যাদার এক ব্যক্তির মেয়ে মারা গিয়েছিলে আগুনে পুড়ে। সেই কারণে বেইলিরোডের অন্যান্য রেস্টুরেন্ট মালিকদেরও বেশ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এমনটাও শোনা গিয়েছে পুলিশ গিয়ে প্রতিটা হোটেল রেস্টুরেন্ট থেকে চাঁদা তুলেছে। নাহলে হুমকি দিয়েছে রেস্টুরেন্ট বন্ধ করে দেয়ার। কাজের কাজ তো কিছু হয়নি উল্টো ব্যবসায়ীদেরকে হয়রানি করা হয়েছে। তবে এখনো আশা রাখি হয়তো কোনদিন সত্যিকারের জনবান্ধব কোন সরকার ক্ষমতায় আসবে। হয়তো কোনদিন সত্যি কারের জনদরদী কোন নেতাকে আমরা পাবো যিনি সাধারণ মানুষের দুঃখ কষ্ট বুঝবেন। যিনি এই সমস্ত অগ্নিকাণ্ডের পেছনে দায়ী ব্যক্তিদেরকে খুঁজে বের করে সাজার ব্যবস্থা করবেন। সেই পর্যন্ত আমাদেরকে নিরব দর্শক হয়েই হয়তো থাকতে হবে।


আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।


ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত ডিভাইসHuawei nova 2i
ফটোগ্রাফার@rupok
স্থানঢাকা

logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশেষ করে ঢাকার অধিকাংশ বিল্ডিং নিয়ম না মেনে তৈরি। এবং তাতে পর্যাপ্ত ফায়ার প্রটেকশন ব‍্যবস্থা নেই। ব‍্যাপার টা খুবই দুঃখজনক। গতকাল রাতে হঠাৎ নজরে আসে ঘটনাটা। তখন আগুনটা দেখে আমার বেশ ভয় করছিল। ঠিকই বলেছেন ভাই বাংলাদেশে যদি কখনো জনগণবান্ধব সরকার আসে তখন এই চাঁদাবাজদের আড্ডা শেষ হবে। এসব সমস‍্যার সমাধান হবে হয়তো।

Posted using SteemPro Mobile

আসলে ভাইয়া কয়েকদিন পরপরই ভয়ংকর অগ্নিকাণ্ডের খবর আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে দেখতে পারছি। আসলে এরকম অগ্নিকাণ্ড মানে অনেক মানুষের জীবন বিসর্জন এবং দেশের জন্য এক অপরনীয় ক্ষতি হয়ে যাওয়া। আমার কাছে মনে হচ্ছে আমাদের দেশের একটি কুচক্রী মহল তারা সুপরিকল্পনা করেই এভাবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অগ্নিকাণ্ড ঘটাচ্ছে।

Posted using SteemPro Mobile

এগুলো আমাদের দেশের নিত্য দিনের ঘটনা। বিশেষ করে রমজান মাসের আগেই বা রমজান মাস আসলে এই ধরনের ঘটনাগুলো বেশি ঘটে যায়। তবে যখন ঘটনা গুলো ঘটে তখন খুব বেশি সচেতন হয়ে পড়েন প্রশাসন। এর পরে দেখবেন কিছুদিন পরে আবারও সবকিছু আগের নিয়মে চলে। এদেশের নিয়মতান্ত্রিকভাবে রোলস মেনে বিল্ডিংগুলো তৈরি করা হয় না। যার কারণে আগুন ধরলেই ভালোভাবে কাজ করতে পারে না জায়গার অভাবে। তাছাড়া গোডাউন গুলো যেখানে সেখানে করা হয়। সবকিছু মিলিয়ে এদেশের আইন প্রয়োগ কিংবা প্রশাসনের সুস্থ পরিচালনার অভাবেই এই ধরনের ঘটনা গুলো ঘটেই থাকে। এর কারণে সাধারণ জনগণ ভোগান্তিতে পড়ে যায় বেশি। গতকালকের ঘটনাটি জানিনা অগ্নিকাণ্ডের। কিন্তু আপনার মাধ্যমে জানতে পেরেছি।

ইউটিউবে নিউজটা দেখে ভীষণ খারাপ লেগেছিল। ডেমরা আমার বাসা থেকে মোটামুটি কাছাকাছি এবং প্রায়ই যাওয়া হয় সেখানে। প্রচুর ঝুঁকিপূর্ণ বিল্ডিং রয়েছে সেখানে। বিশেষ করে শেখের জায়গার দিকে একেবারে অপরিকল্পিত বিল্ডিং রয়েছে অনেকগুলো। যাইহোক একের পর এক অগ্নিকাণ্ড ঘটেই চলেছে। এতে করে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গদের কিছু যায় আসে না। মাঝখান দিয়ে ভুক্তভোগী আমরা। আমাদের দেশের জনসাধারণের একেবারেই দাম নেই তাদের কাছে। তাইতো কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। যাইহোক সময়োপযোগী একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

Posted using SteemPro Mobile

Thank You for the delegation. Please join our discord channel.

যতই তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক না কেন দাদা, মানুষের দুর্নীতি যতদিন না শেষ হবে ততদিন কোন কিছুর সমাধান হবে না। তবে আমারও মনে হয় যে, অপরিকল্পিত বিল্ডিং তৈরি করার ফলে এরকম মাঝেমধ্যে অগ্নিকাণ্ড হচ্ছে। এতে করে সব থেকে বেশি ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছে সাধারণ জনগণ। আর একটা কথা যেটা বেশ ভালো লাগলো সেটা হল, জলাধার থাকা উচিত প্রত্যেকটা এলাকাতে। এতে করে অগ্নিকাণ্ড হলেও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কিছুটা কম হবে। তবে দাদা মানুষ আসলে কোনদিনও প্রকৃত অর্থে সচেতন হবে না, যতদিন না পর্যন্ত তার নিজের সাথে এরকম কোনো ঘটনা ঘটবে। এটা বেশ দুঃখজনক বিষয় আমাদের জন্য।