বৈরী পরিবেশ ও প্রবাসীর পাওয়া না পাওয়ার হিসাব।

in hive-129948 •  20 days ago 

কেমন আছেন আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা? আমি ভালো আছি। আশাকরি আপনারা ও ভালো আছেন।


কয়েকদিন হোলো সৌদি আরবে এসেছি। আসলে ব্যক্তিগত ইবাদতের কারণে এখানে আসা। সেই কারণে আমি খুব একটা বেশি মানুষকে জানাইনি। শুধু যাদেরকে না জানালেই নয় তাদেরকে জানিয়েছি বিষয়টা। নতুন একটা দেশে এসে এখন পর্যন্ত নানারকম পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি। নতুন দেশ, নতুন পরিবেশ, নতুন পরিস্থিতি, নতুন মানুষ, নতুন ভাষা সবকিছু এখানে নতুন মনে হচ্ছে। এখানে আসার পরে মনে হচ্ছে আসার প্রস্তুতিটা যথাযথভাবে নেয়া হয়নি। এখানে আসার আগে লোকাল ভাষা সম্বন্ধে কিছুটা ধারণা নেয়া দরকার ছিলো। যাইহোক তারপরও যে খুব বেশি সমস্যা এখন পর্যন্ত হয়েছে তা নয়। আর এই সমস্যা না হওয়ার পেছনে যেই মানুষগুলোর মূল কৃতিত্ব তারা হচ্ছে প্রবাসী বাংলাদেশীরা।

এই অকাল মৃত্যুর পেছনে দায়ী কে_20240613_200331_0000.png

ক্যানভা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে।

আমি বর্তমানে মক্কা নগরীতে আছি। এখানে একটু আশেপাশে তাকালেই দুএকজন বাংলাদেশী সবসময় চোখে পড়বে আপনার। প্রত্যেকটা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই আপনি কোন না কোন বাঙালিকে পেয়ে যাবেন। তাই এখন পর্যন্ত তাদের সাহায্যেই এখানে মোটামুটি নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পেরেছি। তবে যখন এই মানুষগুলোর দিকে তাকাই তখন আমি অবাক হয়ে যাই। কারণটা হচ্ছে এখানের এই প্রচন্ড গরমেও এই মানুষগুলো কিভাবে টিকে থাকছে। কিভাবে এই ভয়ঙ্কর আবহাওয়ার ভেতরেও তারা কাজ করে দেশে টাকা পাঠাচ্ছে। এটা চিন্তা করলে আসলেই অবাক হতে হয়। রুম থেকে যখন বের হয়ে মসজিদের দিকে রওনা দেই তখন শুধু মনে হতে থাকে কখন এ রাস্তাটা ফুরোবে। কারণ এখানকার যে গরম সেটা আমাদের কল্পনারও অতীত।


হোটেল রুম এবং মসজিদ দুই জায়গায় শীততাপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার ভিতর থাকার কারণে খুব একটা বেশি সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু সমস্যাটা তখনই টের পাচ্ছি যখন রাস্তায় বের হচ্ছি। হোটেল থেকে বাইরে বের হওয়ার সাথেই মনে হয় আগুনের হলকা এসে গায়ের চামড়া পুড়িয়ে দিচ্ছে। অথচ এই প্রচন্ড উত্তপ্ত পরিবেশেও দেশের এই মানুষগুলো কি অবলীলায় পরিশ্রম করে চলেছে। সম্পূর্ণ বৈরী এই পরিবেশের ভেতরেও তারা হাসিমুখে আমাদেরকে সাহায্য সহযোগিতা করে চলেছে। কিন্তু বিনিময়ে তারা কি পায়? পরিবার-পরিজনের কাছে তারা তো শুধুই টাকার একটা মেশিন। দেশের এয়ারপোর্টে যখন তারা পা দেয় তখন তাদেরকে কামলা বলে গালি দেয়া হয়। দেশের শিক্ষিত সমাজে তাদের কোন মূল্যায়ন নেই। এই লোকগুলোর পাওয়ার খাতাটা আসলেই শূন্য। তারা যেনো এই পৃথিবীতে শুধু দিতেই এসেছে।


বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে যে সমস্ত মানুষ উন্নত বিশ্বের দেশগুলোতে যায় তাদের কাছ থেকে দেশ খুব একটা বেশি উপকৃত হয় না। কারণ তারা পরিবার নিয়ে সেখানে গিয়ে সেটেল হয়। দেশের সাথে তাদের খুব একটা বেশি যোগাযোগ থাকে না। হয়তো ২/৪ বছর পরে একবার দেশে আসে কিছুদিনের জন্য। কিন্তু মধ্যে প্রাচ্যের দেশ গুলোতে যে মানুষগুলো পরিশ্রম করে চলেছে। তারা তাদের অর্জিত আয়ের শতকরা ৯০ ভাগ টাকা দেশে পাঠিয়ে দেয়। তাদের পাঠানো টাকায় দেশের রিজার্ভফুলে ফেপে ওঠে। কিন্তু তাদের কোনো মূল্যায়ন করা হয় না। তাদের প্রসঙ্গ আসলে তখন কিছু মানুষজন তাদের মূল্যায়নের বুলি কপচায়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কোন কিছুই বাস্তবায়ন হয় না। এই মানুষগুলো সব সময় অবহেলায় রয়ে যায়। কিন্তু বাস্তবে এদের পরিস্থিতি দেখার পরে এদের জন্য মনে এক ধরনের শ্রদ্ধাবোধ তৈরি হয়েছে। আসুন আমরা আর কিছু না পারি অন্তত এদেরকে প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে শিখি। তাহলেই হয়তো এই লোকগুলোর মুখে একটু হাসি ফুটে উঠবে।

আজকের মত এখানেই শেষ করছি। পরবর্তীতে আপনাদের সাথে দেখা হবে অন্য কোন নতুন লেখা নিয়ে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।



logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

standard_Discord_Zip.gif


break .png

Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



🇧🇩🇧🇩ধন্যবাদ🇧🇩🇧🇩


@rupok

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

সৌদি প্রবাসীদের সম্পর্কে আপনার এই লেখাগুলো পড়ে বেশ ভালো লাগলো। আসলে যারা প্রবাসে যায় তারা কেমন যেন টাকার মেশিন হয়ে যায়। সেখানে তাদের বলতে কিছুই থাকে না,সব সময় চেষ্টা করে পরিবারের জন্য কিছু করার। চেষ্টা করে থাকে কিভাবে বেশি আরনিং করে পরিবারকে পাঠানো যায়। তবে এত কিছু সত্বেও অনেক সময় তারা তাদের প্রাপ্য সম্মানটুকু পায় না। প্রবাসীরা অনেক টাকাই দেশের মধ্যে পাঠাই কিন্তু দিনশেষে তাঁরা তাঁদের দেশের কাছ থেকে প্রাপ্য সম্মানটুকু পায় না। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে নিজে থেকে প্রবাসীদের কষ্ট দেখে তাদের নিয়ে এই বক্তব্য গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আসলেই ভাই যেকোনো দেশে যাওয়ার আগে সেই দেশ এবং সেই দেশের ভাষা সম্পর্কে মোটামুটি ধারণা নিতে পারলে খুব ভালো হয়। যাইহোক সৌদি আরবে প্রচুর গরম পড়ে। এতো কষ্ট করে টাকা উপার্জন করার পরেও যদি পরিবারের মানুষ না বুঝে,তাহলে কষ্টের কোনো সীমা থাকে না। তাছাড়া আমাদের দেশের এয়ারপোর্টে তো মধ্যপ্রাচ্যে থাকা প্রবাসীদের কোনো দাম দেয় না। এককথায় বলতে গেলে একেবারে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে। এমন ঘটনা আমি সামনা-সামনি অনেক দেখেছি। যাইহোক সবার শুভবুদ্ধির উদয় হোক সেই কামনা করছি। আপনার জন্য অনেক অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল ভাই।