রোকেয়া দিবসে স্মরণ করছি মহীয়সীকে।

in hive-129948 •  13 days ago 

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভালো আছেন। আজ ৯-ই ডিসেম্বর, বেগম রোকেয়া দিবস। এই দিনটির তাৎপর্য আমার কাছে অন্যরকম। যেহেতু আজ বেগম রোকেয়া দিবস, তাই আমি উনাকে নিয়ে কিছু লেখার চিন্তা করেছি।



Begum_Rokeya.jpg

Source with Licences

বেগম রোকেয়ার জীবন সম্পর্কে কম বেশি আপনারা সবাই জানেন। দুই বাংলার আপামর নারী জাগরণে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। নারী শিক্ষার জন্য তিনি যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন তা ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। একটি শিক্ষিত জমিদার পরিবারে জন্ম হয়েও তিনি নিজে সামাজিক বাধ্যবাধকতা এবং কুসংস্কারের জন্য শৈশবে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারেননি। তিনি চাননি এই ধারা অব্যাহত থাকুক। তাই তার স্বামীর উৎসাহে নিজে এই দেওয়াল ভাঙার উদ্যোগ নেন।

তার প্রচেষ্টায় বাঙালি নারী সমাজের মধ্যে শিক্ষার প্রসার ঘটে। সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল থেকে বর্তমানে দুই বাংলায় হাজার হাজার গার্লস স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিটি নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যেন স্মরণ করিয়ে দেয়, একদা তাদের জন্য সংগ্রাম করেছিল রোকেয়া সাখাওয়াৎ হোসেন নামের এক মহীয়সী।

তিনি যে সময় নারী শিক্ষা প্রসারের জন্য উদ্যোগ নিয়েছিলেন তখন আমাদের এই অঞ্চল ছিল পুরোপুরি কুসংস্কারাচ্ছন্ন। হিন্দু নারী সমাজ এবং মুসলিম নারী সমাজ হয়েছিল সমান ভাবে অবহেলিত। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা গ্রহণ নারীদের জন্য এক প্রকার নিষিদ্ধ ছিল। বেগম রোকেয়ার মত যারা নিজ উদ্যোগে শিক্ষা গ্রহণের চেষ্টা করেছিলেন তাদেরকেও সামাজিকভাবে হেয় করা হতো। বেগম রোকেয়া সবার আগে এ প্রথাটি ভাঙতে চেয়েছিলেন। তিনি নারীদেরকে জাগার আহ্বান করেন। নিজেদের অধিকার বুঝে নেওয়ার জন্য শিক্ষার যে কোন বিকল্প নেই তা তিনি বোঝানোর চেষ্টা করেন। খুব শীঘ্রই তিনি সফল হতে শুরু করেন এবং সাখাওয়াৎ মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন।

বেগম রোকেয়া একাধারে সমাজ, রীতি, ধর্ম, কুসংস্কার এবং পুরুষ আধিপত্যবাদীদের বিরুদ্ধে একক ভাবে লড়াই করেছেন। শিক্ষানুরাগী মানুষরা তাকে সাহায্য করেছে কিন্তু সমাজ তাকে সেভাবে মেনে নিতে পারেনি। কারণ সমাজের নীতি নির্ধারক আধিপত্যবাদী পুরুষরা নারী শিক্ষা বিষয়টাকে গ্রহণ করতে পারেনি। তারা জানত নারীরা যদি শিক্ষিত হয় তবে নারীরা নিজেদের অধিকারের বিষয় সচেতন হবে। তাদেরকে আগের মত দাঁসীর মতো ব্যবহার করা যাবে না। এই জন্য তারা বহুবার বাধার সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু বেগম রোকেয়া ছিলেন উদ্যমী। তিনি তার লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন। যার ফলে আজ বাংলাদেশে পুরুষের তুলনায় নারী শিক্ষার হার বেশি।

১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তিনি ইন্তেকাল করেন। ৯ ডিসেম্বরে তার জন্ম এবং একই তারিখে তার মৃত্যু হয়েছে বিধায় এই দিনটিকে বেগম রোকেয়া দিবস হিসেবে পালন করা হয়। দিনটি আমার কাছে আরও বিশেষ তাৎপর্য রাখে কারণ একই দিনে আমারও জন্ম হয়েছে। আমি গর্ববোধ করি বেগম রোকেয়া যেদিনে জন্ম নিয়েছেন আমিও সেদিনই জন্ম নিয়েছি বলে। তার প্রতি জ্ঞাপন করি অজস্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।


PUSS_gif.gif

নিজের সম্পর্কে
আমি মুহাম্মদ সাব্বির আকিব। জন্মসূত্রে একজন বাংলাদেশি। জেলাঃ চাঁদপুর, থানাঃ ফরিদগঞ্জ। থাকি ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার আশুলিয়া থানাধীন দক্ষিণ গাজীরচট নামক স্থানে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে রসায়নে স্নাতক (সম্মান) সম্পন্ন করেছি। বর্তমানে একটি ফার্মেসিতে ফার্মাসিস্ট হিসাবে কর্মরত রয়েছি। বিবাহিত এবং আল্লাহ একটি পুত্র সন্তানের জনক করেছেন, আলহামদুলিল্লাহ।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  


Screenshot_20241209-220114.png

Tweet from own a/c


Screenshot_20241209-220211.png

CoinMarketCap Post


Screenshot_20241210-010153.png

Screenshot_20241210-010113.png

DSC Vote Screenshot

আজ রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আমাদের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বেশ দারুন একটি অনুষ্ঠান পালিত হচ্ছে। আপনি দেখছি আজকে খুবই সুন্দর করে বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন কে নিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য শেয়ার করেছেন, দেখে বেশ ভালো লাগলো আমার কাছে। আসলে এই কবি নারী জাগরণের অগ্রদূত হিসেবে কাজ করছিলেন।

উনাকে নিয়ে পর্যাপ্ত আলোচনা এখন আর হয় না। যা খুবই দুঃখজনক। ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া। তার জন্মদিন উপলক্ষে আজকে আপনি বেশ সুন্দর একটি পোস্ট উপস্থাপন করেছেন। শ্রদ্ধার সাথে তাকে স্মরণ করে আমরাও। কারন এমন একজন মহিলা বাঙালি জন্মগ্রহণ করেছিল বলেই নারীদের মান সম্মান এবং অধিকার নিশ্চিত হয়েছিল।

একদম ঠিক বলেছ। ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকিয়াকে জন্মদিনে তাকে গভীরভাবে স্মরণ করছি।তিনি না আসলে হয়তো আজকের সমাজে নারীদের অধিকার থাকতো না।তার অবদানের ফলে আজ সমাজে নারী পুরুষ সমান ভাবে অবদান রাখতে পারছে। বেগম রোকেয়াকে নিয়ে খুব সুন্দর সুন্দর কথা লিখেছেন ভাইয়া, পড়ে অনেক ভালো লাগলো।

ঠিক বলেছেন ভাই। আপনাকে ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

বাংলাদেশের নারী জাগরণের অগ্রদূত বলা হয় বেগম রোকেয়া কে। নারী শিক্ষার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান। এছাড়াও তার লেখা অনেক উপন‍্যাস প্রবন্ধ এগুলোও রয়েছে। আজ উনার জন্মদিন এটা আপনার পোস্ট থেকেই জানতে পারলাম। বেশ সুন্দর লিখেছেন ভাই উনাকে নিয়ে।

ধন্যবাদ ভাই। আমার লেখা থেকে উনার জন্ম তারিখ জানতে পেরেছেন ভেবে আমার খুব ভালো লাগছে। সুন্দর মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।