আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা? আজকে আমি চতুর্থ বারের মত যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত সৌদি ভিসা সেন্টারে গিয়েছিলাম বায়োমেট্রিক ও iris রেজিষ্ট্রেশনের জন্য৷ ছোটবেলা থেকেই হাত ও পায়ের তালু ঘামানোর পাশাপাশি চামড়া ওঠা রোগের জন্য আমার ফিঙ্গারপ্রিন্ট আসছেনা। এজন্য বারবার ফেরত আসতে হচ্ছে। যাক, সে গল্প আরেকদিন বলবো। আজকে যাওয়া-আসার অভিজ্ঞতা বলি।
আমার বাসা সাভারের আশুলিয়ায়৷ ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ কাজ চলমান থাকায় সচরাচর জামগড়া থেকে বাসে উঠলেও গত একবছর আমি বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করছি। সবাই করে।
আমার অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছিল দুপুর সোয়া দুইটায়। সেই মতে, আমি সাড়ে বারোটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে রিকশায় উঠি। দুইবার রিকশা বদলের পর একটার দিকে জিরাবো বাসস্ট্যান্ডে পৌছাই।
জিরাবো থেকে টঙ্গী স্টেশনরোডগামী মিনিবাস পাওয়া যায় আশুলিয়া মিনি বাস সার্ভিসএর। এই বাসের সুবিধা হল, এগুলো জিরাবো থেকে স্টেশনরোড থেকে আবার ফিরতি রাস্তায় চলে। খুব অল্প সময়েই এইজন্য গন্তব্যে যাওয়া যায়৷ কিন্তু সমস্যা হলো বাস ভর্তি না হলে ছাড়ে না। কখনও ভর্তি হতে ৫ মিনিট লাগে, কখনও আরও বেশি সময় লাগে। কিন্তু আজকে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস হওয়ায় রাস্তায় অনেক জ্যাম ছিল। এই এরিয়াটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া হওয়ায় জ্যামের পরিমাণ সবসময়ই বেশি থাকে।
আমি যখন স্টেশনরোড নামি, তখন সময় বেজে গেছে ২টা। সেখান থেকে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে দিয়ে যায় এমন বাস অনাবিলে উঠলাম। সরকারের সড়ক উন্নয়ন এবং মেট্রোরেল চালু হওয়ায় রাস্তায় জ্যাম না থাকলেও মেট্রোরেলের কারনে যাত্রী কম পাওয়ায় বাসওয়ালারা দাঁড়িয়ে থাকে। এজন্য কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌছাতে আমার বেশখানিকটা দেরি হয়। কিন্তু তাতে কোন অসুবিধা নেই। কারন, আমি আগেও গিয়েছি এজন্য জানি বিষয়টা।
সেখানে গিয়ে সিরিয়ালে দাড়ালাম রাস্তার উপরে। ধাপে ধাপে বাইরের ওয়েটিংরুমে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। আজকে অনেক ভীড় ছিল। কারন অবশ্য জানতে পারিনি। এজন্য অনেক সময় লাগে। আমি সেখানে পৌছাই দুপুর আড়াইটায়। কিন্তু আমার সিরিয়াল আসতে আসতে ঘড়িতে সাড়ে পাঁচটা বেজে গেছে। আমি চাইলে ভেতরের দৃশ্যের ছবিও তুলতে পারতাম। কিন্তু তা নিষেধ। সেখানকার সিকিউরিটির দায়িত্বরত Elite Force এর সদস্যরা নিয়মের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। এজন্য আমি সেখানে গেলে কখনও নিয়ম ভাঙ্গিনা। বরং সবাইকে নিয়ম মানার জন্য উৎসাহ দেই।
যাইহোক, একসময় আমার ডাক আসে আর আমি ভিতরের রুমে অপেক্ষা করে বায়োমেট্রিক রেজিস্ট্রেশনের জন্য গেলাম। কিন্তু আগের মত এবারও আমার ফিঙ্গার আসলোনা। Tasheer Center এর অপারেটর বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছে, তাও হয়নি। তারা খুবই আন্তরিক। ব্যাপারটা আমার ভালো লাগে। অবশ্য তাদের নিয়ে কিছু দুর্নামও আছে। সে বিষয়ে বিস্তারিত একটি লেখা লিখবো। ফিঙ্গারপ্রিন্ট না আসায় আমার খুবই খারাপ লেগেছে। কিন্তু আগেই বলেছি, এই বিষয়ে পরে লিখবো।
মনখারাপ করে সেখান থেকে বের হয়ে আসলাম। সেখানে যাদের বায়োমেট্রিক হয়েছে তাদের একটা ফি জমা দিতে হয়। আমার যেহেতু হয়নি, তাই আমি চলে আসলাম। মন খারাপ করে কিছুক্ষণ বসে ছিলাম। এরপর, ফিরতি পথে বাসায় রওয়ানা দিলাম। আসার পথে রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল। শারিরীক ভাবে ভীষণ ক্লান্ত ছিলাম। বাসেই ঘুম চলে আসে। বাসায় আসতে আসতে নয়টা বেজে যায়। আমি বাসায় না গিয়ে কর্মস্থল ফার্মেসিতে যাই।
এই ছিল আমার আজকের অভিজ্ঞতা। লেখাটি কেমন লেগেছে সে বিষয়ে অবশ্যই আপনার মূল্যবান মতামত দিবেন। সৌদি ভিসা সেন্টার নিয়ে কিছু জানতে চাইলে আমাকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন কোন দ্বিধা ছাড়া। সবাইকে ধন্যবাদ।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit