শিক্ষক ক্লাসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছিল।ক্লাস চলাকালীন সময়ে একটি বালক ক্লাসের দরজায় এসে হাজির হলো।দরজায় দাড়িয়ে বালকটি বললো স্যার আমি কি আসতে পারি?শিক্ষক বালকটিকে ভেতরে প্রবেশ করার অনুমতি দিলেন।বালকটি ক্লাসে ডোকার পর শিক্ষক বললেন হাত পাতো! শিক্ষকের কথায় ছেলেটি হাত পেতে দিলো।শিক্ষক ততক্ষণে ছেলেটির হাতে কাঠের স্কেল দিয়ে জোরে জোরে দুটি আঘাত করলো।তারপর শিক্ষক বালকটিকে ব্রেঞ্চে বসতে বললেন।ছেলেটি পেছনের ব্রেঞ্চ এ গিয়ে বসলেন।এবং তার হাতের দিকে একবার তাকিয়ে দেখলেন।ছেলেটির হাত বেশ লাল হয়ে গিয়েছে।চোখের কোনায় জল গড়িয়ে এলো ক্ষনিকেই।তবুও ছেলেটি লাস্ট ব্রেঞ্চের একটি সিটে বসেই শিক্ষকের পড়ায় মনোযোগ দেয়।
পরদিন আবারো ছেলেটি ক্লাসে আসতে দেরি করলো।এবারে শিক্ষক বললেন তোমার আবারও ক্লাসে। আসতে দেরি হলো কেন?আসো কাছে আসো!ছেলেটি শিক্ষকের কাছে এসে দাঁড়াল,শিক্ষক বললো হাত পাতো!ছেলেটি হাত পাতলো এবং গতকালের মত আজকেও দুটি সজোড়ে স্কেলের বারি খেলো।এভাবেই বালকটি প্রায় প্রতিদিনই ক্লাসে দেরি করে আসতো।শিক্ষক এবারে ছেলেটির প্রতি বিরক্ত হয়ে বলেন!তুমি প্রতিদিন এরকম দেরিতে কেন আসো?ছেলেটি শিক্ষকের কথায় উত্তর না দিয়ে চুপচাপ মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে।শিক্ষক অন্যান্য দিনের মত তাকে একই শাস্তি প্রধান করেন।এরকম শাস্তি দেওয়ার পরেও বালকটি প্রতিদিন ক্লাসে দেরিতে আসে এবং ক্লাসে এসেই শিক্ষকের সামনে তার হাত পেতে দাড়িয়ে যায়।আর প্রতিনিয়ত শিক্ষক ছেলেটির হাতে কাঠের স্কেল দিয়ে সজোরে আঘাত করে।এরপর ছেলেটি চুপচাপ ব্রেঞ্চে গিয়ে বসে পরে।কিছুতেই ছেলেটির দেরিতে স্কুলে আসা বন্ধ হচ্ছিলো না।ছেলেটির সহপাঠীরা ভাবে যে হয়তো শিক্ষকের মার খেতে তার ভালোই লাগে।তার কি অপমান গায়ে লাগেনা!!নাকি তার কোন লজ্জা সরম কিছুই নেই।সকলের ভেবে নেয় সে একজন অবাধ্য ছেলে। শিক্ষক তাকে প্রতিনিয়ত শাস্তি প্রদান করতে থাকে।কোন কোন দিন শিক্ষক ছেলেটিকে মাঠের মধ্যে কান ধরিয়ে দাড় করিয়ে রাখে।এরপরও ছেলেটি কোনদিন সময় মতো ক্লাসে উপস্থিত হতে পারতো না।
একদিন শিক্ষকের ঘুম ভাঙতে একটু দেরি হয়ে যায়।তারপর শিক্ষক তার সাইকেল চালিয়ে স্কুলের দিকে যাচ্ছিল,হটাৎ করে শিক্ষক লক্ষ্য করলেন! ক্লাসে দেরিতে যাওয়া ছেলেটি একটি বাড়িতে প্রবেশ করছে।শিক্ষক দাড়িয়ে গেলেন এবং কিছুক্ষন অপেক্ষা করলেন।হটাৎ শিক্ষক দেখতে পেলো যে ছেলেটি একটি হুইল চেয়ার ঠেলতে ঠেলতে বাড়ির বাহিরে বেরিয়ে আসলো।হুইল চেয়ারে তার চেয়ে কয়েক বছরের বড় একজন প্রতিবন্ধী বালক বসেছিল।শিক্ষক অভাক হয়ে কৌতুহল বসত ছেলেটিকে অনুসরণ করতে লাগলেন।অবশেষে দেখতে পেলেন ছেলেটি প্রতিবন্ধী বালকটিকে একটি প্রতিবন্ধী স্কুলে নামিয়ে দিয়ে আসলো।এটা দেখার পর শিক্ষক সাইকেল নিয়ে নিয়ে স্কুলে চলে যায়।
আজকে কেন যেন শিক্ষকের পাঠ দানে কোন মনোযোগ নেই।শিক্ষকের ভেতরে যেন একটা অপরাধ কাজ করছিলো, বারবার শিক্ষক ক্লাসের ভেতর থেকে দরজার দিকে তাকাচ্ছিলো,মূলত শিক্ষক অপেক্ষা করছিল কখন ছেলেটি আসবে।অবশেষে ছেলেটি ক্লাসে এসে হাজির হলো এবং শিক্ষিত সামনে এসে তার হাত পেতে দিলো।
এবারে শিক্ষক ছেলেটিকে না মেরে কাঠের স্কেলটি ছেলেটির হাতে তুলে দিলেন এবং শিক্ষক ছাত্রের সামনে হাঁটু গেরে বসে পড়লেন।তারপর শিক্ষক ছেলেটির সামনে নিজের হাত দুটি পেতে দিলেন।ছেলেটি তখন অবাক দৃষ্টিতে শিক্ষকের দিকে তাকিয়ে রইলো।তখন শিক্ষক বললেন আমার ভুল হয়েছে আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও।আমি সবসময় কেবল তোমাকে দেরি করে ক্লাসে আসায় শাস্তি দিয়েছি।কিন্তু কখনোই দেরি করে ক্লাসে আসার কারণ খুঁজে দেখার চেষ্টা করিনি।
আমাদের জীবনটা এমনই আমার শুধু মানুষের দোষ খুঁজে বেড়াতে পছন্দ করি।ভুল খুঁজতে পছন্দ করি ভুলের জন্য প্রাপ্য শাস্তি দেওয়ার জন্য মাতোয়ারা হয়ে পরি।কিন্তু কখনোই খুঁজতে চেষ্টা করিনা সেই ভুলের কারণ।কখনোই অনুসন্ধান করিনা ভুলের পেছনে লুকিয়ে থাকা গল্পঃ।
ধন্যবাদ সবাইকে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য।সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন, শুভ কামনা রইলো সকলের জন্য
গল্পটি অনেক শিক্ষনীয়। না জেনে কাউকে আঘাত করা উচিত না। একদিকে ছাত্রের মহত্বের পরিচিয় পাওয়া যায় অন্যদিকে শিক্ষকের অপরাদ বোধ ভালবাসায় জন্ম নেয়। ধন্যবাদ ভাইয়া অসাধারণ লিখেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ আপু পোস্টটি সম্পূর্ণ পরে গঠনমূলক একটি মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন ভাই। আসলে শিক্ষকের উচিত ছিল দেরি করে আসার কারণ টা আগে থেকে বের করা। যাই হোক তিনি নিজের ভূল বুজতে পেরেছেন এটাই অনেক।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হুমম ভাই অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভীষণ ভালো শিক্ষা নেবার মত একটা কন্টেন্ট। শিক্ষক নিজের অজান্তেই ছাত্র কে প্রতিনিয়ত মেরে গেছে কিন্তু যদি শিক্ষক প্রথমেই তার দেরিতে আসার কারণ অনুসন্ধান করত তাহলে হয়তো ছেলেটি অত শাস্তি পেত না । এমনকি শিক্ষক কেও নিজের ভুল স্বিকার করে ছেলেটির কাছে নত হয়ে শাস্তি দাবি হওয়ার প্রয়োজন ছিলো না ।অনেক শিক্ষামূলক একটা পোস্ট করেছেন ভাইয়া।একদম ঠিকই বলেছেন কেউ কোনো ভুল করলে তারসঠিক ভুল অনুসন্ধান করে শাস্তি দেয়া উচিত।শুভেচ্ছা নিবেন ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে একটি গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আপনার গল্পের মাঝে অনেক শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে।আমরা আমাদের জীবনে চলার পথে ছোটখাট ভুল গুলোকে এড়িয়ে যাই।সেদিন যদি শিক্ষক তার ছাত্রের দেরি হওয়ার কারণ না জানতে পারত তাহলে হয়তো আজীবন তার কাছে অজানাই রয়ে যেত। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি বেশ সুন্দর সুন্দর গল্প লিখেন। গল্প গুলোর বিষয়বস্তু শিক্ষণীয় হয়ে থাকে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সুন্দর করে গুছিয়ে গল্পটি লিখেছেন। শিক্ষণীয় বিষয় ছিল। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ আপনাকে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit