অপরূপ প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয্যের লীলাভূমি চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড (Sitakunda) উপজেলা ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে অত্যন্ত পরিচিত এবং জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য। এখানে রয়েছে অনেক গুলো জনপ্রিয় দর্শনীয় স্থান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো চন্দ্রনাথ পাহাড়, মহামায়া লেক, গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত, ঝরঝরি ঝর্ণা , বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত , কুমিরা গাঁট, কদমলদহ ঝর্ণা ট্রেইল এবং সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক।
রাজধানী ঢাকা, কুমিল্লা, নরসিংদী, ফেনী, চট্টগ্রাম বা তার আশপাশ থেকে একদিনে সহজেই সীতাকুণ্ড ঘুরে ফিরে আসা যায়, কিন্তু যদিও একদিনে সীতাকুন্ডের সব জায়গা ঘুরে দেখা সম্ভব না। তবে ডে ট্যুর হিসেবে চন্দ্রনাথ পাহাড়, খৈয়াছড়া ঝর্ণা এবং গুলিয়াখালী সমুদ্র সৈকত বেশিরভাগ ভ্রমণকারীদের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। যদিও খৈয়াছড়া ঝর্না মিরসরাই উপজেলায় কিন্তু সীতাকুন্ড থেকে কাছে হওয়ায় কারনে এবং একদিনে পাহাড়, ঝর্ণা ও সমুদ্র এই দিন ধরণের প্রকৃতির ভ্রমণ অভিজ্ঞতার জন্যে খৈয়াছড়া ঝর্ণাও আমাদের এই ট্যুর প্ল্যানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় সাধারণত। ডে ট্রিপের জন্যে আপনি চাইলে আমাদের মত
অথবা নিজের মতো করে সীতাকুণ্ডের অন্যান্য জায়গা ভ্রমণের জন্যে নির্বাচন করতে পারেন।
আমাদের ভ্রমনঃ
আমি আমার কিছু বন্ধুর সাথে ঢাকার কমলাপুর হতে রাত ১১ টার মেল ট্রেনে সীতাকুণ্ডের উদ্দেশ্যে রওনা করেছিলাম।(বি.দ্র : নারী ভ্রমণকারী নিয়ে মেল ট্রেন পরিহার করা ভালো মনে করি) ট্রেন এ উঠাও একটা এডভেঞ্চার ছিলো ,যা আমাদের কাছে মজার ব্যাপার ছিলো। ট্রেন এর জানাল দিয়ে ট্রেন এ উঠা লেগেছে সবার নাহলে সিট পাওয়া অসম্ভব ছিলো । ট্রেন এ উঠে আমরা আমাদের মতো গান এর আসরে মেতে উঠি এবং আমাদের বগিতে থাকা সবাই আমাদের সাথে সুরে সুর মিলিয়ে তাদের যাত্রা উপভোগ করতেছিলো।অনেক মজা করলাম আমরা সারা রাত জেগে।
সকাল ঠিক ৭ টাহ ৪০ এ আমাদের ট্রেন শীতাকুণ্ড স্টেশন এ থামলো।
স্টেশনে কিছু ছবি তুলে আমরা সিএনজিযোগে প্রতিজন ২০ টাকা করে চন্দ্রনাথ পাহাড় এর পাদদেশে পৌঁছাই। চন্দ্রনাথ পাহাড়ে ওঠার আগে আমরা সবাই কলা আর বনরুটি খেয়েছিলাম। (বি.দ্রঃ পাহাড়ের ওঠার আগে অবশ্যই ভারী পানাহার থেকে বিরত থাকতে হবে )পাহাড়ে ওঠার সাপোর্ট ইকিপমেন্ট হিসাবে লাঠি ভাড়া নিলেভালো হয়, ৪০টাকা জমা দিলে লাঠি নিয়ে পাহাড় থেকে নেমে ওই লাঠি জমা দিলে ২০ টাকা ফেরত দিয়ে দিবে।পাহাড়ে পাদদেশে কিছু দোকান আছে যেখানে আপনারা আপনাদের সাথে থাকা ব্যাগ এবং যেকোনো জিনিস টাকার বিনিময়ে জমা রেখে যেতে পারবেন । যা একটি সুবিধাজনক ব্যাপার।
প্রায় ১১৫২ ফিট উচ্চতার এই পাহাড়টিতে উঠা ছিলো একটি চ্যালেঞ্জি কাজ। নিচ থেকে দেখে এর উচ্চতা ধারনাই করা সম্ভব নাহ।আমি ভেবেছিলাম আমি অনেক সহজে উঠে যাবো , কিন্তু ১০ ভাগ এর এক ভাগ উঠেই আমি ক্লান্ত হয়ে গেছিলাম। কিন্তু আমরা একদম চুরা পর্যন্ত উঠতে সক্ষম হয়েছিলাম। যাহ খুব কম মানুষ পারে।
চন্দ্রনাথ পাহাড়ের চূড়া থেকে নেমে আমরা দুপুরের খাবার খেয়ে নেই।
খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমরা খৈয়াছাড়া ঝর্ণার উদ্দেশ্যে আবার সিএনজিযোগে সীতাকুণ্ড বাজার পর্যন্ত যাই। তারপর বাজারের ভেতর দিয়ে মহাসড়কে গিয়ে উঠি যেখান থেকে খৈয়াছড়া ঝর্ণা পর্যন্ত বাস পাওয়া যায়। বাসে আপনাদের থেকে বেশি টাকা দাবি করবে কিন্তু আপনারা অবশ্যই দামাদামি করে যাবেন আমরা প্রতি জন ষাট টাকা করে গিয়েছিলাম। বাস থেকে নেমে আমরা পায়ে হেঁটে ঝরনার উদ্দেশ্যে রওনা দেই দীর্ঘ পথ হাটার পর আমরা ঝরনার কাছে গিয়ে পৌঁছায় ঝর্ণা সব সময় অনেক কর্দমাক্ত এবং বিপদজনক থাকে। এখানেও আপনারা লাঠি এবং দড়ি নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন তাহলে আপনাদের ঝর্ণাতে ওঠা সহজ হবে। খৈয়াছড়া ঝর্ণার মোট ১৩ টি পর্যায় রয়েছে। আমরা শুধুমাত্র দুইটি পর্যায় উঠতে পেরেছিলাম
ঝরনা ওঠা ছিল অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। কিন্তু আমরা যখন অবশেষে ঝর্ণায় গিয়ে পৌছালাম, ঝরনাটি দেখলাম, বহমান ধারা দেখলাম তখন আমাদের সব কষ্ট যেন ধুয়ে মুছে গেল।
আমরা সকলে ঝর্ণায় গোসল করলাম এবং গোসল করে আমরা খাওয়া-দাওয়া সেরে ফেললাম। তারপর ওখান থেকে আমরা সবাই গুলিয়াখালী সী বিচের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম জায়গাটি ছিল অপরূপ সুন্দর গুলিয়াখালি সী-বিচে আমরা বেশি সময় কাটাতে পারিনি কারণ হচ্ছে আমাদেরকে আবার রাতে ট্রেনে ঢাকা ফিরতে হবে। কিন্তু সমস্যার বিষয় হচ্ছে সীতাকুণ্ড স্টেশনে সন্ধ্যায় যে মেইল ট্রেনটি আসে সেই ট্রেনটি সব সময় সীতাকুণ্ড স্টেশন এ নাও থামতে পারে। যেহেতু আমরা এই দ্বিধা দ্বন্দ্বে ছিলাম তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা বাসে করে চট্টগ্রাম স্টেশনে যাব এবং সেখান থেকে একটি ট্রেনে ঢাকা ফেরত আসবো ।যা ছিল আমাদের ভালো ডিসিশন গুলোর একটি। কারণ ওই দিন সীতাকুণ্ড স্টেশনে মেইল ট্রেনটি থামেনি। যদিও আমাদেরকে চট্টগ্রাম যেতে অনেক কাটখোর পোহাতে হয়েছে এবং চট্টগ্রাম পর্যন্ত যেতে আমাদের প্রত্যেকজনের ১০০ টাকা করে লেগেছে বাসে। আমাদের ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে রাত ১১ টায় রওনা দেয় ঢাকার উদ্দেশ্যে এবং আমরা সকাল ৮ টায় ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এসে পৌঁছায়।
খরচঃ
আমরা যেহেতু সব সময় বাজেট-টুর দেই তাই আমাদের এই গ্রুপরে প্রতিজনের ৮০০ টাকা খরচ হয়েছিল বাসায় যাওয়া পর্যন্ত।
এখন পর্যন্ত চট্টগ্রামে ঘুরতে যাওয়া হয়নি অনেক ইচ্ছা আছে হুট করে একদিন চলে যাব। আপনারা অনেক ইনজয় করেছেন দেখছি। আসলে এই পাহাড়ের নিচ থেকে কখনো পাহাড়ের উচ্চতা বোঝা যায় না উঠতে গেলে বোঝা যায় যে কত কষ্ট। পাহাড় ট্র্যাকিং শেষ করে আপনারা ঝর্ণায় ঠান্ডা পানিতে গা ভিজিয়েছেন এ যেন সকল ক্লান্তি দূর হয়ে গিয়েছে। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে অনেক কিছু জানতে পারলাম ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই জীবনে একটু ঘুরাঘুরির দরকার আছে।আপ্নি সময় পেলে হুট করে কথাও থেকে ঘুরে আসবেন। দেখবেন খুব ভাল লাগবে। আপনি একা হলে কোন ট্যুর গ্রুপ এর সাথে চলে যাবেন আপানার মনের মতো কোন এক গন্তবে । আপনার মন্তব্যটি আমার খুবি ভালো লেগেছে। এই পোস্টটি ছিল আমার প্রথম পোস্ট এবং আপনার মন্তব্যটি হল প্রথম কারোর করা মন্তব্য ধন্যবাদ আপনাকে। আমি আপনাকে ফলো করে দিয়েছি। আশাকরি আমাদের আরও কথা হবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি কমিউনিটি রুলস ভঙ্গ করেছেন। আপনি নিজের ফটো অথবা কঁপিরাইট ফ্রী ফটো ছাড়া আপনার পোষ্টের মধ্যে ব্যবহার করতে পারবেন না।
কমিউনিটির নিয়মাবলী :
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22
যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।
Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493
https://www.youtube.com/watch?app=desktop&v=oczCP04492A
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit