হ্যালো বন্ধুরা,
আপনার সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আমাদের মাঝে 'ভালোবাসি তোমাকে' গল্পের সপ্তদশ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে।তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
শুভ বাড়িতে ফিরে মনিকার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। মনিকা কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়িতে চলে আসছে। শুভ মনিকা কে ডাক দিয়ে বলে তোমার সঙ্গে কিছু কথা আছে। মনিকা বলে আমি ফ্রেশ হয়ে এসে তারপর তোমার সব কথা শুনছি। তখন শুভ জোর গলায় বলে আমি তোমার সঙ্গে এখনই কথা বলতে চাই। মনিকা একটু অবাক হয়ে যায় সে বুঝতে পারে না হঠাৎ করে শুভ এত জোরে কেন তার সঙ্গে কথা বলছে। মনিকা শুভর কাছে এসে শুভকে বলে আচ্ছা ঠিক আছে বলো কি বলতে চাও। তখন শুভ বলে তুমি কি কাউকে ভালোবাসো? মনিকা বলে হঠাৎ এসব প্রশ্ন কেন করছ। শুভ বলে আমি যেটা বলছি তুমি তার উত্তর দাও? আমি কি তোমাকে জোর করে বিয়ে করেছি? আমি কি তোমাকে নির্যাতন করি? মনিকা বলে কি সব বলছো তুমি? আমি ঠিকই বলছি মনিকা বলো তুমি সত্যিটা আমি শুনতে চাই। শুভ বলে তোমার আমার বিবাহের আগে তোমার কি কারো সঙ্গে সম্পর্ক ছিল? মাঝেমধ্যে তোমার ফোনে কেউ একজন ফোন দেয় তুমি কথা বল। যার সঙ্গে তুমি ফোনে কথা বলো সেই কি তোমার ভালোবাসার মানুষটা। মনিকা শুভর কথার উত্তর দেয় না চুপচাপ শুধু শুভর কথা শুনতে থাকে। শুভ রাগান্বিত হয়ে মনিকাকে চড় দেয়। মনিকা কে বলে চুপ করে আছো কেন উত্তর দাও আজ তোমার বলতেই হবে।
তখন মনিকা শুভকে বলে হ্যাঁ যে অপরিচিত মানুষটার সঙ্গে আমি ফোনে কথা বলি সেই আমার ভালোবাসার মানুষ। তোমার সঙ্গে বিবাহের আগে আমার ওর সঙ্গে সম্পর্ক ছিল। আমি তোমাকে কোনদিন ভালবাসতে পারিনি শুভ। আমি যখনই তোমাকে ভালোবার চেষ্টা করেছি বারবার শুধু আমার ভালবাসার মানুষটার কথা মনে পড়েছে। শুভ বলে আমি কি জানতে পারি সে ভালোবাসার মানুষটি কে? তখন মনিকা বলে সে আর কেউ নাই আমি যেখানে চাকরি করি সেই কোম্পানির মালিক নাম জয়। শুভ হাসতে থাকে আর বলতে থাকে হ্যাঁ জয় বাবু খুবই ভালো একটা মনের মানুষ। উনি খুব হ্যান্ডসাম অনেক টাকা পয়সা আছে ওনার। উনি আজ যদি আমাকে কথাগুলো না বলত তাহলে আমি কোনদিনই হয়তো বুঝতে পারতাম না। আমি বুঝতে পারতাম না তোমার ভালোবাসা। মনিকা অবাক হয়ে যায় আর শুভকে বলে তুমি জয়কে কিভাবে চিনো? শুভ বলে জয় বাবু আমাকে ফোন করেছিল উনার সঙ্গে দেখা করতে বলেছিল তারপর আমি ওনাকে চিনি। বিশ্বাস করো মনিকা উনি খুব ভালো মানুষ,খুবই ভালো মানুষ। শুভ মনিকাকে বলে আমাদের বিবাহ এত বছর হয়ে গেল আমি তোমাকে বুঝতেই পারলাম না।যে তুমি আমাকে ভালোবাসো কি বাসো না। আর আমি এতটাই স্বার্থপর যে নিজের বিষয়টা উসুল করার জন্য তোমাকে ব্যবহার করছি। আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি মনিকা আমি তোমাকে মুক্ত করে দিলাম তুমি চাইলে এখনই তোমার ভালোবাসার মানুষটির কাছে যেতে পারো।
মনিকা শুভর মুখে এসব কথা শুনে সে অবাক হয়ে যায়। তখন মনিকা শুভকে বলে দেখো আমি তোমাকে ঠকাইনি। আমি তোমাকে অনেকবার বলার চেষ্টা করেছি কিন্তু বারবার তোমার ভালবাসার কাছে আমি হেরে গেছি। তখন শুভ মনিকাকে বলে তুমি জিতেছো কারণ আজ তুমি তোমার ভালোবাসার মানুষটির কাছে যেতে পারবে। মনিকা শুভকে বলে তুমি এমন করে কেন বলছো দেখো আমরা সবাই একসঙ্গে থাকবো। আর আমি তোমাকে এই অবস্থায় রেখে কোথাও যেতে পারবো না। তখন শুভ মনিকাকে বলে দেখো মনিকা এভাবে থাকা যায় না তুমি একটা মন দুজনকে কোনোদিন দিতে পারবে না। আর এতে আমার কষ্ট হবে তুমি চিন্তা করো না আমি ভালো থাকবো। দেখো আজ আমার খুবই ভালো লাগছে কারণ আজ আমি সত্যিটা জানতে পেরেছি। আজ আমি তোমার ভালবাসার মানুষটির হাতে তোমাকে তুলে দিতে পারছি। এর থেকে পৃথিবীতে বড় আনন্দের আর কিছুই হয় না। শুভ জয় কে ফোন দিয়ে তার বাসার সামনে আসতে বলে আর তাকে সবকিছু জানিয়ে দেয়। শুভর মুখে জয় এই কথাটি শোনার পর জয় দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে তার গাড়িটি নিয়ে চলে আসে শুভর বাসার সামনে এসে মনিকাকে ফোন দেয় আর বলে চলে এসো। মনিকা যাবার সময় শুভকে বলে তুমি খুব বড় মনের মানুষ আমি তোমাকে কোনদিন ভুলতে পারবো না। শুভ মনিকাকে বলে আমাকে মনে রেখো না এতে তোমার কষ্ট বাড়বে তুমি খুব ভালো থেকো সুখে থেকো।
মনিকা চলে যায় জয়ের সঙ্গে আর শুভ কান্নায় ভেঙে পড়ে। চিৎকার করে বলতে থাকে কি ছিল আমার অপরাধ। আমি তো তোমাকে ভালবেসে ছিলাম শুধু তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম। আমি এখন কি নিয়ে থাকবো আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেল। সেদিনের পর থেকে শুভ খাওয়া দাওয়া ঘুমানোর সবকিছু ছেড়ে দেয়। শুধু চিন্তা করতে থাকে মনিকার কথা। এমন ভাবে চলতে চলতে শুভ অসুস্থ হয়ে পড়ে। অনেকদিন অর্পা শুভর খোঁজখবর না পেয়ে সে চলে আসে শুভর বাড়িতে। এসেই দেখতে পায় শুভ অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে বিছানায়। সঙ্গে সঙ্গে শুভকে নিয়ে চলে যায় হাসপাতালে। এদিকে মনিকা ভালোবাসার মানুষটাকে কাছে পেয়ে সে খুব খুশি হয়। সে কোনদিন ভাবতে পারিনি এমন ভাবে আবার তার ভালোবাসার মানুষটাকে ফিরে পাবে। মনিকা জয়কে বলতে থাকে আসলে শুভ খুব ভালো মনের মানুষ। তখন জয় মনিকাকে বলে দেখো মনিকা যাকে তুমি ছেড়ে এসেছ তার কথা আর বলবে না। আমি ভুলে যেতে চাই তোমার জীবনে আমি ছাড়া অন্য কোন পুরুষ ছিল। মনিকা আবারো বলে জয়কে জয় তুমি জানো না শুভ সত্যিই খুব ভালো মানুষ। তখন জয় সহ্য করতে না পেরে সঙ্গে সঙ্গে মনিকার মুখে চড় দেয় আর রাগান্বিত কন্ঠে বলে তোকে বারবার বলেছি জয়ের কথা আমি শুনতে চাই না। মনিকা জয়ের ব্যবহারে খুব কষ্ট পায় কারণ সে ভাবতে পারেনি জয় তার গায়ে হাত তুলবে।
শুভ একেবারে উচিত কাজটাই করেছে। কারণ মনিকা যেহেতু জয়কে ভালোবাসে,তাহলে তাকে আটকে রেখে কোনো লাভ নেই। কিন্তু মনিকাকে শুভ যতোটা ভালোবাসে,জয় কখনো মনিকাকে সেভাবে ভালোবাসতে পারবে না। মনিকা জয়ের সাথে কতদিন থাকতে পারে,সেটাই এখন দেখার বিষয়। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
"এই গল্পের দুনিয়ার সাথে আবার মিলিত হওয়ার চেষ্টা করুন। ধন্যবাদ পড়ে ছিলাম 🙏
@xpilar.witness ভোট করুন, https://steemitwallet.com/~witnesses"
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit