"দুষ্টু প্রেমের গল্প" পর্ব -৩

in hive-129948 •  2 years ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি" দুষ্টু প্রেমের গল্প "পর্ব তৃতীয় অংশটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-shubham-sharma-2912692.jpg
সোর্স

নয়ন বিকাল বেলাতে তার বন্ধুদের সাথে নিয়ে বৃষ্টির বাড়ির সামনে গেল। বৃষ্টির বাড়ির সামনে যেতেই নয়ন বৃষ্টির কে ফোন করলো কিন্তু বৃষ্টি ফোনটি ধরল না । নয়ন আবার চেষ্টা করলো এবার বৃষ্টি ফোনটি ধরলো আর বলল ।



বৃষ্টি: হ্যাঁ বল আমি একটু কাজ করছিলাম তাই ফোনটা ধরতে পারিনি কোথায় তুমি?
নয়ন: আমি তোমার বাসার সামনে তুমি বের হও।
বৃষ্টি :আচ্ছা ঠিক আছে আমি তৈরি হয়েই আসছি তুমি একটু দাঁড়াতে লাগো।

এই বলে ফোন কেটে দিল আর নয়ন অপেক্ষা করছিল। কিছুক্ষণ পর বৃষ্টি এলো বৃষ্টিকে দেখেই সে একটি হাসি দিল তারপর তারা সবাই একটি পার্কে ঘুরতে গেল। পার্কে ৫০ টাকা টিকিট কেটে তারা সবাই পার্কের ভেতরে প্রবেশ করল। পার্কের একটি জায়গায় তারা দুজনে বসলো আর নয়নের বন্ধুরা ঘুরতে লাগলো। তারা বসে বসে গল্প করছিল তার মধ্যেই নয়ন বৃষ্টিকে বলল।



নয়ন: তুমি যে আমার সাথে এসেছো তোমার বাবা জানতে পারলে তোমায় বকা দিবে।
বৃষ্টি : না আমি বাবাকে বলে এসেছি আমার বন্ধুদের সাথে আমি ঘুরতে যাচ্ছি।
নয়ন:ও আচ্ছা। বৃষ্টি তোমায় একটা কথা বলবো?
বৃষ্টি: বলো কি বলবে।
নয়ন : মানে আমি বলতে চাচ্ছি, না থাক পরে একদিন বলব । চলো বাড়ির দিকে রওনা হই কারণ সন্ধ্যা হতে আর কিছুটা সময় বাকি আছে। সন্ধ্যা হয়ে গেলে তোমার বাবা তোমাকে বকা দেবে আমি চাইনা, যে আমার জন্য তুমি তোমার বাবার কাছে বকা খাও।
বৃষ্টি :আর একটু সময় থাকি ।
নয়ন :আজ নয় অন্য আরেকদিন আসবো এখন চলো।
বৃষ্টি :আচ্ছা ঠিক আছে।

তারা দুজনে বাড়িতে চলে এলো। নয়ন রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে পাঁচ মিনিটের মতন বৃষ্টির সাথে কথা বলে সে ঘুমিয়ে পড়ে। প্রতিদিনের মতন তার বাবার নীতিকথা শুনে ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে স্কুলে রওনা হলো। স্কুল শেষ করে বাড়িতে ফিরে দেখে বৃষ্টি অনেক বার ফোন করেছে। নয়ন এটি দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি কে ফোন দেয় বৃষ্টিও ফোনটি ধরে । নয়ন শুনতে পায় বৃষ্টি কান্নাকাটি করছে তখন নয়ন বৃষ্টিকে জিজ্ঞাসা করে।



নয়ন: কি হয়েছে তুমি কান্না করছো কেন?
বৃষ্টি :আমার ইচ্ছা হচ্ছে আমি কান্না করছি তাতে তোমার কি। তুমি ফোন করেছো কেন সেটা বল?
নয়ন: তুমি জানো না তুমি কান্না করলে আমার ভালো লাগে না । বলো কি হয়েছে বাবা বকা দিয়েছে?
বৃষ্টি: বাবা বকা দিবে কেন।
নয়ন: তাহলে কান্না করছো কেন?
বৃষ্টি :আমি তোমাকে সকাল থেকে ফোন করছি তুমি ফোনটা ধরলে না কেন?
নয়ন: আসলে কাল রাতে তোমার সাথে কথা বলার পর ।আমার ফোনে চার্জ ছিল না তাই আমি সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় ফোনটি চার্জে দিয়ে স্কুলে চলে যাই।আর এই কারণে আমি তোমার ফোন ধরতে পারিনি। আমাকে ক্ষমা করে দাও? পরবর্তীতে এমনটা হবে না।
বৃষ্টি: ঠিক আছে ক্ষমা করে দিতে পারি কিন্তু এই ভুলের জন্য তোমাকে শাস্তি পেতেই হবে।
নয়ন:তোমার শাস্তি আমি মাথা পেতে নিলাম বলো আমাকে কি করতে হবে।
বৃষ্টি :কাল আমার জন্মদিন তুমি তোমার বন্ধুদের সবাইকে নিয়ে আমার জন্মদিনে আসবে।
নয়ন: আচ্ছা ঠিক আছে আসবো।

এরপরে আরো কিছু সময় কথা বলার পরে বৃষ্টির মা তাকে রাতে খাবার খাওয়ার জন্য ডাক দেয় তাই সে ফোনটি কেটে দিয়ে চলে যায় খাবার খেতে। অন্যদিকে নয়নও তাড়াতাড়ি খাওয়া-দাওয়া শেষ করে ঘুমিয়ে যায়। সকাল হতেই নয়ন তার বন্ধুদের নিয়ে বাজার থেকে বৃষ্টির জন্য একটি শাড়ি কিনে নিয়ে আসে।সেদিন সে আর স্কুলে যায় না। বিকাল হতে ই নয়ন তার ভাই বন্ধুদের সবাইকে নিয়ে বৃষ্টির বাড়ি তে যায়। বৃষ্টি নয়ন কে দেখতে পেয়ে খুবই খুশি হয় এরপরে সবাই মিলে জন্মদিনের কেক কাটে। বৃষ্টি একে একে সবাইকে কেক খাইয়ে দেয় আর যখন নয়নকে খাইয়ে দিতে আসে তখন বৃষ্টি নয়নের কানের কাছে যে বলে এখন কেক খাও একটু পরে আমার হাতে মার খাবে। এরপরে অনুষ্ঠান শেষ করে নয়ন চলে যাচ্ছিল তখন বৃষ্টি সবার নজর আড়াল করে নয়নের হাতটি ধরে আড়ালে নিয়ে যায়। নয়ন একটু অবাক হয়ে যায় কারণ আড়ালে নিতেই বৃষ্টি তাকে ইচ্ছামত চর, কিল, ঘুসি মারতে থাকে আর বলতে থাকে তুমি আমার ফোন ধরনি এই জন্য তোমাকে শাস্তি দিলাম।


এরপরে নয়ন বাড়িতে চলে আসে এবং বন্ধুরাও বাড়িতে চলে যায়। বাড়িতে আসতেই বৃষ্টি ফোন দেয় নয়ন কে নয়ন ফোনটি ধরে বলে।



নয়ন: হ্যাঁ বৃষ্টি বল।
বৃষ্টি :তুমি কি আমার উপরে রাগ করেছো।
নায়ন: মোটেও না।
বৃষ্টি তোমাকে একটা কথা বলার আছে।
নয়ন: বল কি বলবে।
বৃষ্টি: আমি একজনকে ভালোবাসি তোমাকে কোনদিন বলা হয়নি আজ বললাম।
নয়ন :ও আচ্ছা কাকে ভালোবাসো তুমি?
বৃষ্টি :নামটি পরে একদিন বলব আজ নয়।

অনেকটা সময় কথা বলার পর বৃষ্টি ফোনটি কেটে দেয়। আর অন্যদিকে নয়ন ফোনটি বিছানার উপর ফেলে দিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে আর কান্না করতে থাকে। আর ভাবতে থাকে বৃষ্টি কি বোঝে না যে আমি ওকে কতটা ভালোবাসি ও কেমন করে এমনটা করতে পারলাম আমার সাথে। সে কিছুই ভেবে পাচ্ছি না হঠাৎ সে তার হাত কেটে ফেলে প্রচুর রক্ত বের হচ্ছিল আর যন্ত্রণা হচ্ছিল। কিন্তু এ যন্ত্রণা থেকেও তার মনের যন্ত্রণা দ্বিগুণ ছিল সে ভাবতে থাকে এর থেকে মরে যাওয়া অনেক ভালো। কিছুক্ষণ পরে সে বুঝতে পারে তার রুমে কেউ আসছে তাই সে সঙ্গে সঙ্গে বাথরুমে চলে যায় ব্যান্ডেজ নিয়ে। বাথরুম থেকে বের হয়ে এসে দেখতে পায় তার বড় আপু দাঁড়িয়ে আছে। বড় আপু জিজ্ঞাস করে তোর হাতে কি হয়েছে? নয়ন বলে খেলতে যে পড়ে গেছিলাম তাই ব্যান্ডেজ দিয়েছি। এই বলাতে তার বোন ও বিষয়টি মেনে নেয় আর বলে খাবার খেয়ে নিতে।


আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দুষ্টু প্রেমের গল্পের তৃতীয় পর্ব পড়ে খুবই ভালো লেগেছে আমার কাছে। বৃষ্টি এবং নয়ন খুবই ভালো বন্ধু হয়ে গিয়েছে এবং তারা পার্কে গিয়েছিল ঘোরাঘুরি করার জন্য। বৃষ্টির জন্মদিনে নয়ন এবং তার বন্ধুরা যায় সেখানে তারা ভীষণ ভালো মুহূর্ত অতিবাহিত করেছিল। পরে রাতে যখন তারা কিছুক্ষণ কথা বলে এরপর নয়ন তার হাত কেটে ফেলে এটা জেনে খুবই খারাপ লেগেছে। সে ভাবতে থাকে বৃষ্টি কি তার মনের কথা বোঝেনা। যাই হোক পরবর্তী পর্বে কি হবে তা দেখারই অপেক্ষায় আছি।

ধন্যবাদ আপু আমার পোস্টে পড়ার জন্য