হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে জীবনসঙ্গী গল্পের পঞ্চম পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি, আপনাদের গল্পটি ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
কুন্তল ফ্রেশ হয়ে আসার পর প্রিয়াঙ্কা বলে তার ফোনে কে যেন ফোন দিয়েছে। কুন্তল সঙ্গে সঙ্গে ফোনটি হাতে নিয়ে দেখতে পায় ঐশী ফোন করেছ। তখন সে ঐশীর কাছে ফোন করে না কারণ সেখানে প্রিয়াঙ্কা ছিল। কুন্তল অপেক্ষা করতে থাকে কখন প্রিয়াঙ্কা রুম থেকে বের হয়। একটু পর প্রিয়াঙ্কা রুম থেকে বের হয়ে যায় আর এই সুযোগে কুন্তল ঐশীকে ফোন দেয়। ফোনটি ঐশী রিসিভ করে রাগান্বিত কন্ঠে বলে।
ঐশী: এতক্ষন কোথায় ছিলে? আর কে ফোন ধরেছিল তোমার?
কুন্তল: আমি ওয়াশ রুমে ছিলাম। ফোনটা ধরেছিল আমাদের বাড়ির কাজের মেয়ে।
ঐশী: কাজের মেয়ে তোমার ফোন ধরার সাহস পায় কি করে।
কুন্তল: মেয়েটি আমাদের বাড়ি অনেকদিন ধরে কাজ করে আর ওকে এতটা ভালবাসি যার কারণে এতটা সাহস পেয়ে গিয়ে।
ঐশী: কাজের মেয়েকে এতটা প্রশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।
কুন্তল: তুমি রাগ করোনা আমি ওকে শাসন করব।
ঐশী: ঠিক আছে। তুমি কি আমার সাথে দেখা করতে পারবে?
কুন্তল: এ কি কথা বলছ তুমি। তুমি আমাকে ডেকেছ আর আমি না এসে থাকতে পারি কোথায় হাসতে হবে বলো?
ঐশী: আজ সন্ধ্যা গঙ্গার ঘাটে।
কুন্তল: ঠিক আছে।
কুন্তল আর ঐশী ফোনে কথা বলছে তখন হঠাৎ প্রিয়াঙ্কা রুমে এসে পড়ে। কুন্তল তাড়াহুড়ো করে ফোনটি কেটে দেয়। প্রিয়াঙ্কা বিষয়টি দেখতে পায় আর সঙ্গে সঙ্গে কুন্তল কে বলে।
প্রিয়াঙ্কা: কার ফোন ছিল গো?যার কারণে আমাকে দেখে ফোনটি কেটে দিলে।
কুন্তল: আমার এক বন্ধুর ফোন ছিল। সে আমাকে এখন তার সাথে দেখা করতে যেতে বলছে।
প্রিয়াঙ্কা: কুন্তল তুমি আজকাল অফিস থেকে এসে বাড়িতে একটুও সময় দাও না। কি হয়েছে তোমার আগে তো তুমি এমনটা করতে না।
কুন্তল: আমি তো সব সময় তোমাদের সময় দিয়ে থাকি মাঝেমধ্যে তো আমারও একটু বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ইচ্ছে করে। সারাদিন অফিস করে আমি বন্ধুদের সময় দিতে পারি না আজ আমার বন্ধুরা ডাকছে আর তুমি বাধা দিচ্ছ।
প্রিয়াঙ্কা: আমি তোমাকে বাধা দিচ্ছি না শুধু তোমাকে মনে করিয়ে দিচ্ছি যে আগে তুমি কেমন ছিলে আর এখন কেমন হয়ে গেছো।
কুন্তল: আগেও যেমনটা ছিলাম এখনো তেমনি আছি ঠিক আছে। তুমি যখন বারণ করছো তাহলে আমি বন্ধুর সাথে দেখা করতে যাব না ওদেরকে বারণ করে দিচ্ছি যে আমি আড্ডা দিতে আসছি না।
প্রিয়াঙ্কা: না না তুমি তোমার বন্ধুকে বরণ করো না তুমি যাও।
একটু পর রেডি হয়ে কুন্তল বেরিয়ে পড়ল ঐশীর সাথে গঙ্গার ঘাটে দেখা করার জন্য। গঙ্গার ঘাটে এসে কুন্তল দেখতে পায় ঐশী তার জন্য অপেক্ষা করছে। গঙ্গার ঘাটের বসে তারা একে অপরের সুখ-দুঃখের কথা বলতে লাগলো। অনেকটা সময় তারা গঙ্গার ঘাটে পার করলো। ঐশী তার ঘড়িতে দেখল রাত দশটা বাজতে গিয়েছে তখন সে কুন্তলকে বলল আমাদের এখন যাওয়া উচিত। তখন কুন্তল ঐশীকে বলল হ্যাঁ অনেক রাত হয়েছে হোটেল থেকে কিছু খেয়ে তোমাকে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আমি বাড়িতে ফিরব। তারা একটি রেস্টুরেন্টের যে খাবার খেয়ে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা করলো।
আবার এদিকে প্রিয়াঙ্কা কুন্তলের জন্য না খেয়ে অপেক্ষা করছে। রাত তখন ১২.৩০ মিনিট বেজে গিয়েছে এখনো কুন্তল বাসায় ফেরেনি। প্রিয়াঙ্কা খুব দুশ্চিন্তা করতে থাকে কারণ এত রাত পর্যন্ত কুন্তল কোনদিন বাইরে থাকেনি। প্রিয়াঙ্কা কুন্তলের আশার অপেক্ষা করতে করতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ে সে নিজেও জানে না। হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠলো প্রিয়াঙ্কার ঘুম ভেঙ্গে গেল সঙ্গে সঙ্গে সে দরজার খুলল। দরজা খুলতে প্রিয়াঙ্কা কুন্তলকে প্রশ্ন করে।
প্রিয়াঙ্কা:এত রাত পর্যন্ত কোথায় ছিলে তুমি?
কুন্তল: বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে দিতে অনেক রাত হয়ে গেল।
প্রিয়াঙ্কা: ঠিক আছে খেতে এসো। আমি তোমার জন্য না খেয়ে বসে আছি।
কুন্তল: তুমি খেয়ে নাও প্রিয়াঙ্কা আমি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি।
প্রিয়াঙ্কা: তুমি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছো। তুমি জানো যে তুমি না খাওয়া পর্যন্ত আমি খাই না সেটা জেনেও তুমি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছো।
কুন্তল: কে বলে তোমাকে আমার জন্য না খেয়ে বসে থাকতে। ন্যাকামি করো না তো আমার ঘুম আসছে আমি ঘুমাতে যাচ্ছি।
প্রিয়াঙ্কা: বিবাহর পর থেকে আজ পর্যন্ত আমি তোমার জন্য না খেয়ে বসে থেকেছি। তুমি বাইরে থাকলে আমি সব সময় চিন্তায় থেকেছি। আজ তুমি আমাকে এমন কথা বলতে পারলে।
কুন্তল: নেকা নেকা কথা বলোনা। আমি তোমাকে বলছি আজ থেকে তুমি আর আমার জন্য অপেক্ষা করবে না তোমার ক্ষুধা লাগলে খেয়ে নিবে।
প্রিয়াঙ্কা: তুমি আর এখন আমায় আগের মতন আর ভালোবাসো না।
প্রিয়াঙ্কাকে ধাক্কা দিয়ে কুন্তল রুমে চলে গেল। অন্যদিকে প্রিয়াঙ্কা অঝোরে কাঁদতে থাকলো আর মনে মনে ভাবতে থাকে এ কি আমার সেই ভালোবাসা। যাকে ভালবেসে আমার সবকিছু বিসর্জন দিলাম আর সে আজ এই প্রতিদান দিল। এসব চিন্তা করতে করতে কখন যে রাত পার হয়ে গেল প্রিয়াঙ্কা বুঝতে পারল না। সকালে কুন্তল যখন অফিসে চলে গেল তখন প্রিয়াঙ্কা ঐশীকে ফোন করলো। ও বলে রাখি প্রিয়াঙ্কা যখন ঐশীর সাথে কথা বলে তখন সে বিষয়টি বুঝতে পারে আর ঠিক তখনই ঐশীর নাম্বারটি তার ফোনে সেভ করে নেয়। যাই হোক ঐশী ফোনটা রিসিভ করল।
ঐশী: হ্যালো কে বলছেন?
প্রিয়াঙ্কা: আমি কুন্তলের স্ত্রী বলছি।
ঐশী: আমি ঠিক বুঝতে পারলাম না।
প্রিয়াঙ্কা: তুমি কুন্তল নামে যে ছেলেটির সাথে কথা বল আমি তার বিবাহিত স্ত্রী।
ঐশী: কিন্তু আমি তো জানি কুন্তল অবিবাহিত।
প্রিয়াঙ্কা: তোমাকে সে মিথ্যা বলেছে। তুমি আমার সংসারটা বাঁচাও বোন। তোমার জন্য আমার সাজানো সংসার আজ ধ্বংসের মুখে তুমি চেষ্টা করলে আমার সংসারটা তুমি বাঁচাতে পারো।
(প্রিয়াঙ্কা কথাগুলো বলতে বলতে অঝোরে কাঁদতে থাকে)
ঐশী: আপনি কান্নাকাটি করবেন না। আমি জানিনা কুন্তল বিবাহিত জানলে আমি কখনো সম্পর্কে জড়াতাম না।আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি আজ থেকে আমি কুন্তলের সাথে কোন রকম সম্পর্ক রাখবো না আর আমি ওকে বুঝিয়ে বলব।
প্রিয়াঙ্কা: ঐশী বোন তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ঐশী ও খুব কষ্ট পায় কিন্তু সে বিষয়টা বুঝতে পারে কারণ সে জেটি করতে যাচ্ছিল সেটি খুবই অন্যায় সে তার ভুল বুঝতে পারে। পরবর্তীতে ঐশী কুন্তলকে ফোন দেয় এবং কুন্তলের নাটকীয় প্রেমের কথা সবকিছু বলে দেয়। বিষয়টি শোনার পর কুন্তল কিছুই বলতে পারেনা কারণ সে ধরা পড়ে গিয়েছে। ঐশীর কথাগুলো শুনে তার প্রচন্ড রাগ হয় সঙ্গে সঙ্গে সে অফিস থেকে গাড়ি নিয়ে বের হয়ে যায় বাড়ির যাওয়ার উদ্দেশ্যে। কিন্তু সে বাড়িতে যেতে পারে না কারণ প্রচন্ড গতি থাকায় তার এক্সিডেন্ট হয়ে যায়। রাস্তায় থাকা লোকজন তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে এবং হাসপাতাল থেকে তার পরিবারকে ফোন দেওয়া হয়। প্রিয়াঙ্কা ঘটনাটি শোনার পর সঙ্গে সঙ্গে চলে আসে হাসপাতালে। এসে ডাক্তারের কাছে শুনতে পায় মৃত্যুর অনেক কাছ থেকে সে ফিরে এসেছে। কিন্তু ভয়ের কোন কারণ নেই পায়ে প্রচন্ড আঘাতের কারণে একটি পা তার ভেঙ্গে গিয়েছে এবং অন্যান্য যে সমস্যাগুলো হয়েছে তা রেস্ট এবং যত্নে নিলে দ্রুতই কভার করা সম্ভব।
You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জীবনসঙ্গী গল্পটার দেখতে দেখতে পঞ্চম পর্ব পেরিয়ে গিয়েছে। এই গল্পটার আগের পর্বগুলো আমার পড়া হয়েছে। যার কারণে আজকের পর্বটা পড়তে অনেক ভালো লেগেছে। প্রিয়াঙ্কা, তাহলে ঐশী কে ফোন দিয়ে সবকিছু বলে দিয়েছিল। আর ঐশীও সব বুঝতে পেরেছিল দেখছি। কুন্তল এক্সিডেন্ট করেছে তার নিজের দোষের জন্য। এরকম মানুষগুলোর সাথে এরকমটাই হওয়া উচিত। আশা করছি পরবর্তীতে কুন্তল তার নিজের দোষ বুঝতে পারবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দিদি, সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এ ধরনের ঘটনা সমাজে প্রায়ই দেখা যায়। বিশেষ করে কিছু কিছু মেয়ে রয়েছে তারা অন্যের পরিবারে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং অন্যের সংসার ভেঙে পর্যন্ত যায় এরকম ঘটনার কারণে। যাই হোক অবশেষে ঐশী নিজের ভুলটা বুঝতে পেরেছে এটাই বড় বিষয়। ধন্যবাদ চমৎকার একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার জীবনসঙ্গী গল্পের ৫ নম্বর পর্বটি পড়ে। ঐশী খুবই ভালো কাজ করেছে। সে কোন দল ও প্রিয়াঙ্কার বিবাহিত জীবন থেকে সরে গেছে। তবে কুন্তল এই নাটকীয় প্রেমের কাহিনীটি করে খুবই খারাপ করেছে। এতে দুটি মেয়েই প্রচন্ড কষ্ট পেয়েছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জীবনসঙ্গী গল্পটার আগের পর্বগুলো পড়া হয়েছিল। যার কারণে আজকের এই পর্বটা পেয়ে অনেক ভালো লেগেছে। ঐশী কিন্তু নিজের অজান্তে এসব কিছু করেছিল, যার কারণে তার নিজের অনেক কষ্ট হয়েছে সম্পূর্ণটা জেনে। আশা করছি প্রিয়াঙ্কার সেবা-যত্ন পেলে কুন্তল তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে এবং নিজের ভুলটাও বুঝতে পারবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দাদা সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই প্রিয়াংকা কুন্তলকে ভালোবেসে জীবনটা বিসর্জন দিয়ে দিল, আর কুন্তল এভাবে প্রিয়াংকাকে ঠকালো। যেটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তবে ঐশী প্রিয়াংকার কথা শুনে, প্রিয়াংকার সংসার বাঁচাতে রাজি হয়,এটা খুব ভালো লেগেছে। আসলে সব দোষ কুন্তলের। কাউকে ঠকিয়ে কেউ কখনো জিততে পারে না। তাইতো এমন দুর্ঘটনা ঘটলো। যাইহোক পরবর্তী পর্বে জানতে পারবো কি কি হলো। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দাদা সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য খুব শীঘ্রই গল্পের পরবর্তী পর্বটি সবার মাঝে উপস্থাপন করব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভালো লাগলো গল্পটি পড়ে। তবে এখানে একটা শিক্ষার বিষয় আছে সেটা হলো নিজের ভুল বুঝতে পারা। যেমন ঐশী নিজের ভুল বুঝতে পারাতে অন্যের সংসার ও রক্ষা হল। ধন্যবাদ ভাই চমৎকার একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit