জীবনসঙ্গী গল্প পর্ব-৪

in hive-129948 •  last year 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে জীবনসঙ্গী গল্পের চতুর্থ পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি, আপনাদের গল্পটি ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-liza-summer-6383210.jpg
সোর্স


হঠাৎ একদিন কুন্তল বাসায় এসে প্রিয়াঙ্কাকে বলল। কোম্পানির কাজের জন্য তাকে বাইরে যেতে হবে। কথাটি শোনার পর প্রিয়াঙ্কা একটু অবাক হয়ে যায়। কারণ তার বিবাহ অনেক বছর হয়েছে কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোম্পানির কাজের জন্য কোনদিন বাইরে যেতে হয়নি। কিন্তু নতুন সম্পর্ক হওয়ার পর থেকে এখন সে বেশিরভাগ সময় বাইরে কাটায় আর আজ কুন্তল বাসায় এসে বলল কোম্পানি কাজের জন্য তাকে কিছুদিনের জন্য বাইরে যেতে হবে। প্রিয়াঙ্কা জিজ্ঞাসা করে কতদিনের জন্য যাচ্ছ আর কোথায় যাচ্ছ? উত্তরের কুন্তল বলে।
কুন্তল: ১৫ দিনের জন্য আর কাজের জন্য দিল্লিতে যেতে হবে।
প্রিয়াঙ্কা: আচ্ছা ঠিক আছে। কবে যেতে হবে?
কুন্তল: কাল সকালে।
প্রিয়াঙ্কা: কাল সকালে যেতে হবে তুমি তো আগে আমাকে বলোনি।
কুন্তল: আমি তোমাকে বলতে ভুলে গেছি।
প্রিয়াঙ্কা: হ্যাঁ এখন তুমি আমাকে অনেক কিছু বলতে ভুলে যাও যা আগে কখনো হয়নি।
কুন্তল: তারমানে তুমি কি বলতে চাও?
প্রিয়াঙ্কা: আমি কিছুই বলতে চাই না শুধু তোমাকে মনে করিয়ে দিলাম।
কুন্তল: আজকাল অফিসের অনেক কাজের চাপ তাই তোমাকে বলতে ভুলে গেছি।
প্রিয়াঙ্কা: ঠিক আছে এসব কথা বাদ দাও। আমি তোমার জামা কাপড় গুছিয়ে দিচ্ছি।


সকাল হতে হতেই কুন্তল সবাইকে বিদায় জানিয়ে রওনা করলো দিল্লির উদ্দেশ্যে। দমদম এয়ারপোর্টে এসে কুন্তল অপেক্ষা করতে লাগলো তার নতুন প্রেমিকের জন্য। কুন্তলের নতুন প্রেমিকার নাম ঐশী। যাই হোক কিছু সময়ের মধ্যে ঐশী এসে হাজির হলো। এরপর তারা দুজনে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা করলো।
যাই হোক এর মধ্যে বলে রাখি আসলে কোন কোম্পানির কাজের জন্য কুন্তল দিল্লিতে যায়নি। আসলে ঐশীর ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করছিল তাই তার ইচ্ছাটা পূরণ করার জন্য সে এমন কাজ করতে বাধ্য হয়। যাই হোক অবশেষে তারা দিল্লিতে একটি হোটেলে ওঠে। খুব ভালোই দিন কাটছিল তাদের দুজনের। একদিন প্রিয়াঙ্কা কুন্তলের ফোনে কল দেয় কিন্তু কুন্তল রিসিভ করে না। বারবার ফোন দেওয়ার কারণে ঐশী কুন্তলকে বলে ফোনটা রিসিভ করতে কিন্তু কুন্তল রিসিভ করে না। তখনো এসে কুন্তলকে বলল।


ঐশী: কি ব্যাপার কুন্তল তুমি ফোন কেন রিসিভ করছো না?
কুন্তল: আসলে ফোনটা রিসিভ করছি না একটি কারণে।
ঐশী: কি সেই কারণ আমাকে বলো।
কুন্তল: আসলে এই ব্যক্তিটি আমার কাছে টাকা ধার চেয়েছিল কিন্তু আমি না দিয়েই দিল্লিতে চলে এসেছি।
ঐশী: ঠিক আছে তুমি ফোনটা রিসিভ করে বল তুমি বাইরে আছো বাড়িতে যেয়ে দিতে পারবে।

ঐশীর অনেক জোড়া জরির কারণে অবশেষে প্রিয়াঙ্কার কল রিসিভ করে।
প্রিয়াঙ্কা: হ্যাঁ গো তুমি কেমন আছো?
কুন্তল: হ্যাঁ আমি ভালো আছি। হঠাৎ ফোন করেছ?
প্রিয়াঙ্কা: তুমিতো দিল্লিতে পৌঁছানোর পর আমাকে আর কল দিলে না তাই বাধ্য হয়ে আজ তোমায় কল করলাম।
কুন্তল: আমি দিল্লিতে এসে খুব টায়ার্ড হয়ে পড়েছিলাম। আর অফিসের কাজে এত যে চাপ সেটা আমি তোমাকে বলে বোঝাতে পারবো না সময় করে উঠতে পারছি না।
প্রিয়াঙ্কা: এতটা কাজের চাপ যে এক মিনিট ফোন করা যায়নি।
কুন্তল: আসলে তুমি বুঝতে পারছ না।
প্রিয়াঙ্কা: এখন আমি তোমাকেই বুঝতে পারিনা।
কুন্তল: কথা বলা হয়েছে হাতে অনেক কাজ আছে আমার পরে কথা হবে।


আসলে ঘটনাটি আপনাদের একটু খুলে বলি কারণ বুঝতে ভালো হবে। আসলে ঐশী জানে না কুন্তল বিবাহিত। এদিকে কুন্তল ও বলেনি সে বিবাহিত। সবসময় এ বিষয়টি গোপন করে রাখতাম যাতে তাদের এই সম্পর্কের ভেতর কোন সমস্যার সৃষ্টি না হয়। সময় যত সামনের দিকে আগাচ্ছে ততই ঐশী
কুন্তলের প্রেমে পড়ছে। দেখতে দেখতে ১৫ দিন পার হয়ে গেল তারা দুজনে আবার যার যার বাসস্থানে ফিরে গেল। বাড়িতে এসে কুন্তল প্রিয়াঙ্কাকে সময় দিত না তার সাথে কথাটুকু বলতো না সারাদিন ফোনে ঐশীর সাথে কথা বলতো আর তাকেই সময় দিত।


একদিন কুন্তল অফিস শেষ করে বাড়িতে এসে ফ্রেশ হতে চলে যায় বাথরুমে। তখনই হঠাৎ কুন্তলের ফোন বাঁচতে শুরু করে। প্রিয়াঙ্কা ফোনটা রিসিভ করতেই ওপার থেকে একটি মেয়ের কন্ঠ ভেসে আসে। একটু অবাক হয়ে যায়। প্রিয়াঙ্কা মেয়েটির কাছে পরিচয় জানতে চাইলে। ঐশী তার পরিচয়টা দেয়। ঐশী আরো বলে সে কুন্তলের গার্লফ্রেন্ড। এই কথাটি শোনার পর প্রিয়াঙ্কার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ার মতন অবস্থা আগে থেকেই সে সব কিছুই জানতো কিন্তু সে ভাবতো হয়তোবা কুন্তল তার বিশ্বাসটা রাখবে। কিন্তু কুন্তল রাখতে পারেনি প্রিয়াঙ্কার বিশ্বাসটা।

আজ এখানেই শেষ করছি গল্পের বাকিটা অংশ শীঘ্রই নিয়ে সবার মাঝে হাজির হব সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

যদিও প্রিয়াঙ্কা সন্দেহ করেছিল তার হাজবেন্ডের উপর, কিন্তু সে ভেবেছিল বিশ্বাসটা হয়তো রাখবে, কিন্তু সবশেষে তো দেখছি বিশ্বাস টাই রাখল না তার হাজবেন্ড। ঐশী দিখছি প্রিয়াঙ্কা কে আবার তার পরিচয় দিয়েছিল। আপনি অনেক সুন্দর করে এই গল্পটার চতুর্থ পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন দেখে অনেক ভালো লেগেছে। দেখা যাক এই গল্পটির পরবর্তী পর্বে কি হয়। আশা করছি খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন। সেই পর্যন্ত অধীর আগ্রহে থাকলাম।

খুব শীঘ্রই গল্পের বাকি পর্ব উপস্থাপন করব। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য।

প্রিয়াঙ্কা এবং কুন্তলের সম্পর্কটা প্রথম প্রথম তো অনেক ভালো ছিল, কিন্তু এখন তো দেখছি তাদের জীবনে অন্য একজন ঢুকে গিয়েছে। যদিও এখানে ওই মেয়েটারও কোন দোষ নেই, কারণ সে জানে কুন্তল অবিবাহিত। প্রিয়াঙ্কা কিন্তু সবশেষে এই বিষয়টা বুঝে গিয়েছে। আর ঐশীর সাথে কথা বলার পর তো আরো বেশি স্পষ্ট সে। এখন তো আমি ভাবছি এই গল্পটির পরবর্তী পর্বে কি হতে চলেছে। অপেক্ষায় থাকলাম ভাই পরবর্তী পর্ব টা দেখার।

এই গল্পের আগের তিনটি পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছিল। আজকেও তার ব্যতিক্রম নয়। এমন ঘটনা বর্তমানে অহরহ ঘটে চলছে। বাড়ির বউকে কাজের কথা বলে বাসা থেকে কয়েকদিনের জন্য বের হয়ে যায় গার্লফ্রেন্ড বা অন্য কোনো মেয়ে নিয়ে। এই ধরনের কাজগুলো খুবই নিকৃষ্ট। কুন্তল খুবই বাজে কাজ করেছে। যার কোনো ক্ষমা নেই। আসলে কাউকে ঠকিয়ে কেউ কখনো জিততে পারে না। কুকর্মের বিচার একদিন ঠিকই পাবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।