জীবনসঙ্গী গল্প পর্ব -২

in hive-129948 •  last year 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন আজ আমি আপনাদের মাঝে জীবনসঙ্গী গল্পের দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি, আপনাদের গল্পটি ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-maria-lindsey-content-creator-5834144.jpg
সোর্স


সুখে দুঃখে ভালোই দিন কাটছিল তাদের। হঠাৎ একদিন প্রিয়াঙ্কা মাথা ঘুরে পড়ে যায়।সঙ্গে সঙ্গে তার শ্বশুর শাশুড়ি ঠিক পেয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে যেয়ে প্রিয়াঙ্কার শশুর শাশুড়ি কুন্তল কে ফোন দেয়। কুন্তল ঘটনাটি শুনতে পেরে সঙ্গে সঙ্গে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে চলে আসে হাসপাতালে। ততক্ষণে ডাক্তার প্রিয়াঙ্কাকে সব ধরনের ট্রিটমেন্ট করা শেষ। ডক্টর গার্জিয়ান ডাক দিতেই কুন্তল ডাক্তারের সামনে এসে উপস্থিত হয়। কুন্তল খুব ঘাবড়ে যায় কুন্তল ডাক্তার কে জিজ্ঞাসা করে।

কুন্তল : প্রিয়াঙ্কার কি হয়েছে ডাক্তার বাবু?
ডাক্তার: ভয় পাবেন না তেমন কিছু হয়নি এ সময় এমনটা হয়ে থাকে।
কুন্তল : এমন কিছু হয়নি কিন্তু ডাক্তারবাবু আগে পরে তো এমন সমস্যা হয়নি আপনি আমাকে খুলে বলুন কি হয়েছে?
ডাক্তার: সুখবর মিষ্টি খাওয়ান।
কুন্তল: আমি কিছুই বুঝতে পারছি না আপনার কথা এই বললেন কিছু হয়নি আবার বলছেন মিষ্টি খাওয়াতে আমাকে একটু খুলে বলবেন?
ডাক্তার: আপনি বাবা হতে চলেছেন।


কুন্তল ডাক্তারের কাছে তার বাবা হওয়ার কথাটি শুনে খুব আনন্দিত হয়ে পড়ে। পাশে প্রিয়াঙ্কা বসে ছিল সঙ্গে সঙ্গে প্রিয়াঙ্কাকে জড়িয়ে ধরে তার কপালে চুম্বন করে। তারপর ডাক্তারের কাছ থেকে সব পরামর্শ নিয়ে তারা বাড়ির দিকে রওনা হয়। বাড়ি আসার পর কুন্তল সবাইকে মিষ্টিমুখ করায়। কুন্তলের আজ সব থেকে আনন্দের দিন কারণ এই প্রথম সে বাবা হতে চলেছে আর বাবা হওয়ার আনন্দটা আসলে বলে বোঝানো যায়না।


পরের দিন সকালে প্রিয়াঙ্কা ঘুম থেকে উঠে রান্না করতে যায়। রান্নাঘরে যেতেই প্রিয়াঙ্কা দেখতে পায় তার শাশুড়ি রান্নাবান্না করছে। প্রিয়াঙ্কা রান্নাঘরে আসতেই তার শাশুড়ি তাকে বরণ করে তাকে বলে আজ থেকে রান্নাঘরে যাবতীয় কাজের দায়িত্ব আমার। এখন থেকে তুমি খুব সাবধানে থাকবে আর বিশ্রাম করবে। কোন কিছু দরকার হলে আমাকে বলবে না হয় তোমার শ্বশুর কে বলবে। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা কোন কথাই শুনতে চায় না যেহেতু শাশুড়ির বয়স হয়েছে এখন সে এত কাজ করতে পারবেনা তাই সে জোর করে শাশুড়ির কাছে সাহায্য করতে চায়। কিন্তু তার শাশুড়ি ধমক দিয়ে তাকে বলে তুমি আমার মেয়ে আর এমন অবস্থায় মেয়েকে তার মা কাজ করতে দিতে পারে। তুমি যাও বিশ্রাম নাও।


দেখতে দেখতে ছয় মাস হয়ে গেল। কুন্তল এখন অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাড়িতে ফিরে। বাড়িতে এসেই প্রিয়াঙ্কার যত্ন নেয়। কুন্তল এখন থেকেই তার বাচ্চার জন্য খেলনা,জামা, কাপড় কিনতে শুরু করে দিয়েছে। এটি দেখে প্রিয়াঙ্কা শুধু হাসতে থাকে। একদিন রাতে প্রিয়াঙ্কা কুন্তলকে জিজ্ঞাসা করে।
প্রিয়াঙ্কা: হ্যাঁ গো আমার বাচ্চা হওয়ার সময় যদি আমি মারা যাই তাহলে তুমি আমার বাচ্চাকে ফেলে দেবে না তো?
কুন্তল: এ কেমন কথা তোমার এ কথা বলছ কেন তুমি?
প্রিয়াঙ্কা: আমার কেন জানি মনে হচ্ছে তুমি বলো আমার বাচ্চাকে দেখবে তো মানুষের মতন মানুষ করবে তো?
কুন্তল: আমি তোমাকে মরতে দিব না আজ যদি এমন হয় আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমি তোমার সন্তানকে মায়ের অভাব বুঝতে দিব না।
প্রিয়াঙ্কা: আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি। আমি যদি না থাকি তাহলে তুমি আরেকটা বিয়ে করবে কারণ আমি তো জানি তুমি কতটা এলোমেল করো কিছুই মনে থাকে না তোমার।
কুন্তল: প্রিয়াঙ্কা কি হচ্ছে কি চুপ করো, ঘুমিয়ে পড়ো।
প্রিয়াঙ্কা: আজ যে আমার ঘুম আসছে না খুব খারাপ লাগছে।
কুন্তল: আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি তুমি চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করো।


কুন্তল প্রিয়াঙ্কার মাথায় হাত বুলাতে থাকে একটু পরে প্রিয়াঙ্কা ঘুমিয়ে পড়ে। কুন্তল মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে কুন্তল ও প্রিয়াঙ্কার পাশে ঘুমিয়ে পড়ে। হাসি আনন্দে ভালোই দিন কাটছিল প্রিয়াঙ্কার। হঠাৎ প্রিয়াঙ্কা প্রচন্ড ব্যথা ওঠে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি করায়। ডেলিভারির সময় এখনো পাঁচ দিন বাকি আছে। কিন্তু প্রচন্ড ব্যথা ওঠার কারণে আগে থেকেই প্রিয়াঙ্কাকে হাসপাতালে ভর্তি করায়। কুন্তল অফিস থেকে ১০ দিনের ছুটি নেই যাতে এই সময়টাতে প্রিয়াঙ্কার পাশে কুন্তল সব সময় যেন থাকতে পারে। যেদিন থেকে প্রিয়াঙ্কাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে সেদিন থেকেই কুন্তলের খাওয়া নেই ঘুম নেই সব সময় প্রিয়াঙ্কার পাশে থাকছে। কারণ এটাই স্বাভাবিক এই সময়টাতে স্ত্রীর পাশে থাকা সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। একটা মেয়ে সব সময় চায় তার আপন মানুষটি বিপদে আপদে সব সময় তার পাশে থাকুক।
কুন্তল ঠিক সেই কাজগুলোই করছে প্রিয়াঙ্কার পাশে থেকে তাকে সাপোর্ট দিচ্ছে। এটা আমাদের সবার কর্তব্য এই সময়টাতে স্ত্রীর পাশে থাকা।

আজ এখানেই শেষ করছি গল্পের বাকিটা অংশ শীঘ্রই নিয়ে সবার মাঝে হাজির হব সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ভাই যদিও বা আমি আপনার গল্পের প্রথম পর্বটি পড়তে পারিনি। তবে দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। প্রিয়াঙ্কার শাশুড়ির প্রিয়াঙ্কার প্রতি যে ভালোবাসা দেখিয়েছে তা হয়তো অনেকেই দেখাতে পারেনা। অন্যদিকে কুন্তল তার জীবন সঙ্গীর সেবা-যত্ন করার জন্য তাড়াতাড়ি অফিস থেকে ফিরে আসতো ব্যাপারটি সত্যি ভালোলাগার মত। তবে অনেক ক্ষেত্রেই কিন্তু এরকমটি হয় না। তাই আপনার জীবন সঙ্গী গল্পে ভালোবাসার বিশেষ মুহূর্তগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কুন্তল ও প্রিয়াঙ্কার জীবনে কি ঘটতে চলেছে।

ধন্যবাদ দাদা সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য এবং খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্বটি সবার মাঝে উপস্থাপন করব।

জীবনসঙ্গী গল্পের দ্বিতীয় পর্ব পড়ে খুবই ভালো লাগলো ভাই। কুন্তল খুবই কেয়ারিং একজন স্বামী। প্রিয়াঙ্কার প্রতি তার ভালোবাসা যথেষ্ট তা গল্পটি পড়েই বোঝা যাচ্ছে। প্রথমবার বাবা হওয়ার আনন্দটাই অনেক। কুন্তল সব রকম দায়িত্ব পালন করছে প্রিয়াঙ্কার প্রতি। আপনার গল্পের ভালোবাসার মুহূর্ত গুলো পড়তে বেশ ভালই লাগে। তৃতীয় পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাইয়া কুন্তল আর প্রিয়াঙ্কার সামনে কি হতে চলেছে জানার খুবই আগ্রহ।

ধন্যবাদ দাদা আপনাকে খুব শীঘ্রই নতুন একটি পর্ব উপস্থাপন করব সবার মাঝে। আশা করি, পর্বটি সবার ভালো লাগবে।

আগের পর্ব পড়ে খুব ভালো লেগেছিল। আসলে গল্পটি যতই পড়ছি ততই মনের মধ্যে সুখের অনুভূতি হচ্ছে। কুন্তল এবং প্রিয়াংকার ভালোবাসা, তাদের পুরো পরিবারের বন্ডিং সবকিছুই দারুণ। তবে এতো সুখ তাদের কপালে সইবে তো? পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

ধন্যবাদ দাদা আপনাকে সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য।