হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের পঞ্চম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
একদিন রাতুল অফিসের কাজের জন্য বাইরে যায়। সেদিন ছিল রাতুলের কপাল খারাপ কারণ রাস্তায় প্রচুর জ্যাম ছিল। কিছু দূরে যেতে যেতেই ট্রাফিকের সিগনালে তাদের গাড়ি দাঁড়িয়ে যাচ্ছিল। খুব আর্জেন্ট কাজটি ছিল কিন্তু কিছুই করার ছিল না। তাই বসে বসে বোরিং ফিল করছিল আর একা একা রাগেতে বকছিল। শত শত গাড়ির ভেতর হঠাৎ করে একটি মহিলা রাতুলের গাড়ির কাছে আঘাত করে। আঘাত করতেই রাতুল তাকিয়ে পড়ে। দেখতে পায় একটি বোরকা পড়া মহিলা কোলে সন্তান নিয়ে সাহায্য চাইছে। রাতুল এটি দেখে গাড়ির কাচ নামিয়ে তাকে কিছু টাকা দিল। ট্রাফিক ছেড়ে দিল গাড়ির কাচ উঠিয়ে রওনা করলো রাতুল। গাড়ি চলতে চলতে হঠাৎ করেই তার কেনো জানি মনে হল যাকে সে সাহায্য করেছে তাকে খুব চেনা চেনা লাগলো। কোথায় যেন তাকে দেখেছে কিন্তু সে মনে করতে পারল না। অফিসের কাজ সেরে সে বাড়িতে ফিরে খাওয়া দাওয়া করে বিছানায় শুয়ে পড়ে। শুয়ে শুয়ে বই পড়ছিল হঠাৎ তার মনে পড়ে গেল সেই সকালের ট্রাফিকের ভিতর সাহায্য করা মহিলাটির কথা। তার মনে হতে থাকে অনেক বছরের চেনা সে। তখনই হঠাৎ করে সুইটির ফোন আসে। ফোন আসতেই রাতুল ফোনটি রিসিভ করে।
সুইটি: কেমন আছো তুমি?
রাতুল: আমি খুব ভালো আছি। তুমি কেমন আছো?
সুইটি: আমি ও ভালো আছি। তোমার অফিসের কাজ কেমন হলো?
রাতুল: ভালো তবে।
সুইটি: তবে কি হয়েছে?
রাতুল: তেমন কিছু হয়নি।
সুইটি: আমি জানি তোমার কিছু হয়েছে কিন্তু সেটা তুমি আমাকে বলছো না। প্লিজ বল কি হয়েছে অফিসের বিষয় নিয়ে কোন ঝামেলা হয়েছে ?
রাতুল: না সুইটি অফিসের বিষয় নিয়ে কোন ঝামেলা হয়নি।
সুইটি: তাহলে কি হয়েছে?
রাতুল: আজ অফিসের কাজের জন্য যখন বাসা থেকে বেরিয়েছি তখনই রাস্তায় প্রচুর গাড়ির জ্যাম ছিল। হঠাৎ করে একটি মহিলা সন্তান কোলে নিয়ে সাহায্য চায়। আমি তাকে সাহায্য করেছি কিন্তু আমার কেনো জানি মনে হল এই মহিলাটি আমার আপন অনেক পরিচিত।
সুইটি: কি সব বলছো তুমি।
রাতুল: আমি ঠিকই বলছি। আমি রাতে ঘুমাতে পারছি না সবসময় মনে পড়ছে ওই মহিলাটির কথা।
সুইটি: কি সব আজেবাজে চিন্তা করো তুমি। চোখে মুখে জল দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ো সকালে কথা হবে।
রাতুল: আচ্ছা ঠিক আছে।
রাতুল সুইটির কথামতো চোখে মুখে জল দিয়ে সে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে প্রতিদিনের মতন বেরিয়ে পড়ে রাতুল অফিসে। যেতে যেতে ভাবছিল সেই মহিলাটির কথা। হঠাৎ করেই রাস্তার পাশে বসে থাকতে দেখে সেই মহিলাটিকে। সঙ্গে সঙ্গে ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলে রাতুল। গাড়ি থেকে বেরিয়ে সোজা চলে যায় সেই মহিলাটির কাছে। কাছে যেতেই মহিলাটি রাতুলকে দেখে হাঁটতে শুরু করে। তখন রাতুল তাকে ডাক দিয়ে থামতে বলে। কিন্তু মহিলাটি তার কোনো কথার উত্তর না দিয়ে সোজা হাঁটতে থাকে। অবশেষে রাতুল দৌড়ে যে মহিলাটি সামনে যে দাঁড়িয়ে পড়ে। রাতুল মহিলাটিকে বলে। আমি কখন থেকে আপনাকে ডাকছি পিছন থেকে আপনি আমার কথা না শুনে শুধু হাঁটছেন?
কিন্তু মহিলাটি কোন কথার উত্তর না দিয়ে সে আবারও রাহুলকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে লাগে। তখন রাতুল আবারো মহিলাটিকে বলে।আপনি আমার কথার উত্তর না দিয়ে কোথায় চলেছেন। মহিলাটি উত্তর দেয় আমি আপনাকে চিনি না জানিনা আপনার সাথে কেনো কথা বলব? কণ্ঠটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে রাতুল চমকে যায়। কারণ মহিলাটির কণ্ঠটি অবিকল সুলতানার মতন। রাতুল অবাক চোখে মহিলাটির দিকে তাকিয়ে থাকে। তখন মহিলাটি বলে আমার পথ থেকে সরে দাঁড়ান আমাকে যেতে দিন। রাতুল আবারো অবাক হয়ে যায়। তার বারবার মনে হচ্ছিল মহিলাটি আর কেউ নয় সুলতানা। কারণ সুলতানার কন্ঠের সঙ্গে সে খুব পরিচিত। রাতুল মহিলাটিকে বলে আপনার কণ্ঠ অবিকল আমার বন্ধুর মতন। মহিলাটি উত্তর দেয় আপনার ভুল হচ্ছে আমি পথে পথে লোকের থেকে সাহায্য নিয়ে থাকি। আমার কণ্ঠের সঙ্গে আপনার বন্ধুর কন্ঠ কিভাবে মিল হতে পারে। রাতুল হঠাৎ করে মহিলাটিকে বলে আপনি কি সুলতানা। মহিলাটি রাতুলের মুখে নামটি শুনে চুপ হয়ে যায়। রাতুল আবারো বলে কি হলো আপনি যে কোন কথা বলছেন না? মহিলাটি উত্তর দেয় আপনি যে নাম বললেন আমি সে না। রাতুল আবারো বলে আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে আপনি আমার বন্ধু সুলতানা। রাগান্বিত কন্ঠে বলে কতবার করে বলবো আমি আপনার বন্ধু সুলতানা না। তখন রাতুল তাকে সরি বলে সেখান থেকে চলে আসে।
ভাইয়া আপনার গল্প পড়তে সবসময়ই ভালো লাগে। এর আগের পর্ব গুলো পড়া হয়নি তবে এই পর্ব পড়ে অনেক ভালো লাগলো। রাতুল যা ভাবছে তাই হয়তো হবে। এই মহিলা রাতুলের বন্ধু সুলতানাই হবে। হয়তো মেয়েটি পরিস্থিতির শিকার হয়ে এখন তার পরিচয় লুকাতে চাচ্ছে। দেখা যাক পরবর্তীতে রাতুল আবার মহিলাটির খুঁজ নিতে ফিরে আসে কিনা। পরবর্তীতে পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দিদি
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর করে আপনি আজকের গল্পটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। এই গল্পের পঞ্চম পর্বটিও অনেক সুন্দর হয়েছে। রাস্তায় টাকা চাওয়া সেই মহিলাটির কণ্ঠের সাথে দেখছি সুলতানার কন্ঠের অনেক মিল রয়েছে। আমার তো মনে হচ্ছে সেই মহিলাটা সুলতানা হবে। এখন অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বে কি হবে এগুলো জানার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দাদা
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit