শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের দ্বাদশ পর্ব

in hive-129948 •  5 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের দ্বাদশ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-cottonbro-3692609.jpg
সোর্স


সুলতানার মৃত্যুর পর থেকে ফাতেমা খাওয়া-দাওয়া সব কিছু ছেড়ে দেয়। ফাতেমা ঘরের একটি কোণে সবসময় বসে থাকতো আর মায়ের ছবির দিকে তাকিয়ে কান্না করতে থাকতো। এমনভাবে বেশ কিছুদিন কেটে যায় হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে ফাতেমা। সঙ্গে সঙ্গে রাতুল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায় ডাক্তার তাকে দেখে রাতুলকে বলে ভয়ের কিছু নেই। ঠিক মতন খাওয়া দাওয়া ঘুম পড়লে সে সুস্থ হয়ে উঠবে। রাতুল চাকরিজীবী মানুষ ছিল আর বাড়িতে তেমন কেউ ছিল না। যার জন্য ফাতেমাকে সারাদিনের ভেতর খেয়াল রাখতে পারতো না। তখন
সে একটি লোক ঠিক করে ফাতেমাকে দেখে শুনে রাখার জন্য। তারপরেও কোন উন্নতি হচ্ছিল হয় না।দিন যত যাচ্ছিল ততই ফাতেমা অসুস্থ হয়ে পড়ছিল। একদিন সুইটি রাতুলকে বলে তুমি ফাতেমাকে নিয়ে অযথা চিন্তা করছো। রাতুল বলে চিন্তা তো অবশ্যই হবে ওর মা মারা যাওয়ার পর থেকে ও যেন কেমন হয়ে গিয়েছে। এমনভাবে চলতে লাগলে আমি হয়তো ফাতেমাকে ও হারিয়ে ফেলবো। তুমি চিন্তা করো না আমি ওকে আজ থেকে দেখাশোনা করবো। রাতুল বলে সে কিভাবে সম্ভব তোমার অফিস হয়েছে তোমার ঘর হয়েছে। সুইটি বলে তুমি কোন চিন্তা করো না সবকিছু আমি সামলে নিব। রাতুল সুইটি কে বলে এটা হয় না আমি অবিবাহিত ছেলে তুমি আমার বাড়ি যাওয়া আসা করলে লোকে তোমাকে কথা শোনাবে তোমাকে অপমান করবে। সুইটি বলে সেটা তোমার দেখার বিষয় না আমার কি হবে কি না হবে সেটা আমি বুঝে নেব। আমরা সুলতানা ীকে বাঁচাতে পারিনি আর যে বেঁচে আছে তাকেও যদি হারিয়ে ফেলি। রাতুল বলে জানি না তোমাকে কিভাবে বুঝাবো কিন্তু তুমি যেটা করছ একটু ভেবে চিন্তা করবে।


সুলতানা অফিস থেকে কিছুদিনের জন্য ছুটি নেয়। আর এই ছুটিটা নিয়েছিল একমাত্র ফাতেমার জন্য যাতে সে সব সময় ফাতেমার সঙ্গে থাকতে পারে। সুইটি সকালে রাতুলের বাড়িতে যে দেখতে পায় ফাতেমা বিছানায় শুয়ে আছে। সুইটি ফাতেমাকে ডাক দিতেই চোখ মেলে দেখে সুইটি আন্টি। ফাতেমা সুইটিকে সবসময় আন্টি বলে ডাকতো। ফাতেমা সুইটিকে দেখে হাত নেরে তার কাছে আসতে বলে। সুইটি কাছে যেতেই ফাতেমা তাকে জড়িয়ে ধরে আর কান্না করতে থাকে। সুইটি তখন তাকে সান্তনা দেওয়ার চেষ্টা করে তাকে বোঝানোর চেষ্টা করে। অবশেষে ফাতেমার কান্না থামাতে পারে সুইটি। সুইটি ফাতেমাকে খাওয়ার অনুরোধ করে কিন্তু ফাতেমা খেতে চায় না। অনেক জোরাজোরির পর ফাতেমা বলে খাবার খাওয়ার সময় আমার মায়ের কথা মনে পড়ে খুব। তখন আমার আর কিছু খেতে ইচ্ছা করে না। জানো আন্টি আমার যখন খাইতে ইচ্ছা করত না ।তখন মা আমাকে জোর করে গালে তুলে খাওয়াতো। মা চলে যাওয়ার পর এখন আমাকে কেউ আর গালে তুলে খাওয়ায় না। সুইটি বলে আমি তো তোমার আর একটা মা আমি তোমাকে আজ থেকে গালে তুলে খাওয়াবো। তুমি খাবে তো? ফাতেমা কিছুই বলে না শুধু চুপচাপ সুইটির দিকে তাকিয়ে থাকে। সুইটি ফাতেমার জন্য কিছু খাবার তৈরি করে আনে আর এনে সুইটিকে গালে তুলে খাইয়ে দেয়। এরপর তাকে নিয়ে ঘুরতে যাওয়া তার সঙ্গে খেলা করা সবকিছু সুইটি করতো। আস্তে আস্তে ফাতেমা তার মায়ের মৃত্যু সোক থেকে বেরিয়ে আসতে পারে।


প্রতিদিন এই বিষয়গুলো রাতুল ফলো করতো সুইটি কিভাবে আস্তে আস্তে ফাতেমার জীবনে ঢুকে গিয়েছে। একদিন ফাতেমার অফিসের ছুটি শেষ হয়ে যায় সে ফাতেমাকে জানাই কাল থেকে তার অফিস রয়েছে। বলার সঙ্গে সঙ্গে ফাতেমার মুখ অন্ধকার হয়ে যায়। তখন সুইটি কপালে চুম্বন করে বলে চিন্তা করো না।অফিস শেষ করে আমি আসবো তোমার সঙ্গে খেলা করব তোমাকে খাইয়ে দেবো। এখন থেকে প্রতিদিন আমি তোমাকে স্কুলে আগায় দিয়ে আসবো। তোমাকে অনেক বড় হতে হবে মায়ের মুখ উজ্জ্বল করতে হবে তোমাকে। ফাতেমা সুইটিকে বলে তুমি আমাকে খুব ভালোবাসো তাই না আন্টি? সুইটি বলে হ্যাঁ আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি। এভাবে চলতে থাকে বেশ কিছুদিন একদিন ফাতেমা রাতুলকে বলে। কিছুদিন হলো আন্টি আমাদের বাড়িতে আসছে না আন্টির কি হয়েছে? রাতুল বলে তোমার আন্টি খুব চাপের ভেতর আছে কিছুদিন পর আবার আসবে তোমার সঙ্গে খেলা করবে তোমাকে খাইয়ে দেবে। ফাতেমা বলে আন্টিকে তুমি নিয়ে এসো তা নাহলে আমি খাওয়া-দাওয়া কিছুই করবো না। এই বলে ফাতেমা তার রুমে চলে যায়। রাতুল তার জন্য খাবার তৈরি করে খাওয়াতে যায় তখন ফাতেমা চিৎকার করে বলে আমি আন্টির হাতে খাব তোমার হাতে নয়। যতক্ষণ না পর্যন্ত আন্টি আমাকে খাইয়ে না দিচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি কিছুই খাব না। রাতুল অনেক জোর করে কিন্তু কোনভাবে ফাতেমাকে খাওয়াতে পারে না অবশেষে রাতুল সুইটিকে ফোন দেয়। আর সব বিষয়টি খুলে বলে অবশেষে সুইটি রাত এগারোটার সময় রাতুলদের বাড়িতে এসে। সুইটি ফাতেমাকে ডাক দেয় সঙ্গে সঙ্গে ফাতেমা রুম থেকে দৌড়ে চলে আসে। এসেই সুইটিকে জড়িয়ে ধরে আর বলে তুমি আমাকে ফেলে কোথায় চলে গিয়েছিলে। তুমি জানো না তোমাকে ছাড়া আমার কিছু ভালো লাগে না। আমাকে কথা দাও তুমি আমাকে ছেড়ে কোনদিন কোথাও যাবে না। সুইটি রাতুলের দিকে তাকিয়ে থাকে। ফাতেমা আবার কথাটি বলে এরপর সুইটি বলে আমি তোমাকে ছেড়ে কোথাও কোনদিন যাব না। আমার ভুল হয়েছে আমাকে ক্ষমা করে দাও। ফাতেমা হেসে দিয়ে বলে আচ্ছা ঠিক আছে এবারের মতন তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। সুইটি ফাতেমার কপালে চুম্বন করে আর বলে এবার চলো আমি তোমাকে খাইয়ে দিচ্ছি। সুইটি ফাতেমাকে রাতে খাওয়া-দাওয়া করিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়। তখন হঠাৎ রাতুল সুইটিকে ডাক দিয়ে তার কাছে আসতে বলে।

আজ গল্পের পর্বটি এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Plz complete your PUSS Promotion.
MANDATORY RULES FOR GETTING VOTES
Tweet from own Twitter handle:
https://x.com/home
Comments & give Bullish or Bearish votes on CMC:
https://coinmarketcap.com/currencies/pussfi/
0nce a day click the 🚀 button in Dexscreener:
https://dexscreener.com/tron/th95pufvckttytg6drlsyghwanx24feejb
PLEASE share Screenshot in comment after completing the task then the post will nominated.