পুরী জগন্নাথ মন্দিরে ভ্রমণ পর্ব:৬

in hive-129948 •  6 months ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে পুরী জগন্নাথ মন্দিরের ভ্রমণ আরো একটি নতুন পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



পরের দিন সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম হোটেলের নিচতলাতে সকালের নাস্তা করার জন্য। নাস্তা করার জন্য কিছু পড়াটা ভাজি,ডিম সিদ্ধ, ডিম ভাজি, বেদানার জুস, আলুর দম ইত্যাদি নিলাম। আমার আবার একটা জিনিস আছে আমি খাওয়া-দাওয়া কম করতে পারিনা। কারন পেটে ক্ষুধা রেখে হেসে কথা বলব এটা আমি পছন্দ করি না। যাইহোক সকালে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আবার রুমে যে তৈরি হয়ে নিলাম সূর্য মন্দিরে যাওয়ার জন্য। একে একে আমরা সবাই রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়লাম। যেহেতু আমরা সেখানে কিছুই চিনি না তার জন্য আমরা একটি গাড়ি ঠিক করলাম। কারণ এখানে যদি আপনি কোন কিছু না চিনেন তাহলে কোন একটি গাড়ি ঠিক করলে আপনাকে তারাই তীর্থস্থান গুলো ঘুরিয়ে নিয়ে আসবে।
IMG20231231091605.jpg



যেহেতু আমরা অনেক লোক ছিলাম তার জন্য আমরা একটি মাইক্রো ঠিক করলাম। এখানে তেমন ভালো গাড়ি কিন্তু পাওয়া যায় না কিন্তু তারপরও মোটামুটি ভালো। গাড়িটি ছিল ছয় সিটের আমরা লোক ছিলাম ৮ জন। তার মানে বুঝতেই পারছেন কতটা কষ্ট হয়েছিল যদিও শীতের সময় ছিল। তারপরও মানুষের একটা শরীরের তাপ তো রয়েছে। গরম একটু লাগছিল সেটা বড় কথা নয়।গরম সহ্য করা যায় যদি ভালোভাবে বসা যায়। একদিকে গরম আরেকদিকে সিটের অভাবে চাপাচাপি করে বসা। যাই হোক কষ্ট করে সবাই বসলাম কারণ কোন উপায় ছিল না। কারণ সেই মুহূর্তে অন্য গাড়ি ঠিক করা সম্ভব নয় কারণ এডভান্স কিছু টাকা দেওয়া হয়ে গিয়েছিল।


আমাদের সাথে যে কাকিমা ছিল উনি পুরীতে আগেও এসেছে। মোটামুটি সব জায়গা কম বেশি চেনেন উনি আমাদের যে যে জায়গার কথা বললেন উনি। আমার সেইসব জায়গায় যাওয়ার জন্য গাড়িটি ছাড়লাম। আমাদের গাড়ির ড্রাইভার টি ও ভালো ছিল কারণ উনি বাংলাতে অনেকদিন ছিলেন যার কারণে উনি আমাদের বাংলা ভাষাটা ভালোভাবেই বুঝতে পারছিলেন। যাই হোক গল্প করতে করতে আমরা রওনা করলাম। সূর্য মন্দিরে যাওয়ার আগে এর ভিতর অনেক তীর্থস্থান রয়েছে। সেগুলো দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করলাম। আমরা যে প্রথম যে মন্দিরের গিয়েছিলাম সেখানে জাদুঘর ছিল। প্রথমে আমরা জাদুঘরে প্রবেশ করলাম। তারপর মন্দিরে প্রবেশ করেছিলাম।


যাইহোক প্রথমে যেহেতু জাদুঘরে প্রবেশ করেছিলাম সেই অভিজ্ঞতার কথা আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি। প্রথমে জাদুঘরে ঢোকার জন্য আমাদের টিকিট কাটতে হয়েছিল। টিকিট কেটে তারপর প্রবেশ করলাম। প্রথমে দেখলাম পুরনো দিনের কিছু যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র। অনেক বড় একটি রথের চাকা। কিছু পুরনো দিনের মূর্তি যেগুলো ছিল কষ্টিপাথরের। এখানে বেশিরভাগ ছিল জগন্নাথ মন্দিরের নকশা আর এখানকার যে মন্দিরটিতে আমরা এসেছি সেই মন্দিরের কিছু নকশা। এখানে প্রত্যেকটি ছবির নিচে কিছু কথা লিখে দেওয়া রয়েছে যেটি পড়লে আসলে আমরা বুঝতে পারবো যে এর ইতিহাস সম্পর্কে। আমার কাছে বিষয়টি খুব ভালই লেগেছে কারণ আমরা যেটি দেখতে এসেছি তার ইতিহাস যদি আমরা না জানি তাহলে তার ভিতরটাতে যেতে পারবো না। তাই আমার মনে হয় কোন কিছু করতে হলে বা কোন জায়গায় যেতে হলে আগে থেকে যদি আমরা তার ইতিহাসটা জানতে পারি তাহলে তার প্রতি আগ্রহটা একটু হলেও আমাদের বেড়ে যায়। এখন যেমন মেশিনে প্রত্যেকটি নকশা তৈরি করা হয় আগে কিন্তু এটি হতো না। আগে শিল্পী তার নিখুঁত হাত দিয়ে খুব কষ্ট করে পাথর কেটে কেটে নকশা তৈরি করতো। একটা জিনিস সবসময় লক্ষ্য করে দেখবেন আগের যেসব মন্দির রয়েছে সেসব মন্দিরে প্রত্যেক জায়গাতে নকশা রয়েছে। যার একমাত্র কারণ হলো এর ইতিহাস।ইতিহাস গুলো মন্দিরের পাথর গুলোতে খোদাই করে করে শিল্পীরা নকশা করেছে। শিল্পীদের এই কাজগুলো দেখলে অবাক চোখে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করে। কারণ আমাদের পূর্বপুরুষ কেমন ছিল তারা কি করত এইসব শিল্পীরা তাদের নিখুঁত হাতে তুলে ধরেছে।
IMG20231231114754.jpg

IMG20231231115253.jpg

IMG20231231115724_BURST000_COVER.jpg

IMG20231231115745_BURST000_COVER.jpg

IMG20231231115650.jpg

IMG20231231115526.jpg

IMG20231231114839.jpg

IMG20231231115825.jpg

IMG20231231120049.jpg

IMG20231231115825.jpg

IMG20231231115253.jpg

IMG20231231114522.jpg

IMG20231231115840.jpg

IMG20231231115153.jpg

IMG20231231115137.jpg

IMG20231231120157.jpg

IMG20231231120921.jpg

IMG20231231120843.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি:oppo
ক্যামেরা মডেল:oppo A73 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:4.05mm
তারিখ:১৬.০১.২০২৪
সময়: ১১.৩৩মিনিট
স্থান: ওড়িশা

আজ পর্বটি এখানেই শেষ করছি। পরবর্তী পর্বটি খুব শীঘ্রই আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব। আশা করি, আপনাদের সেই পর্বটি ও খুব ভালো লাগবে ।সেই পর্যন্ত আপনারা সবাই ভাল থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

পুরী জগন্নাথ মন্দিরের ভ্রমণ নিয়ে আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন। অনেক অনেক ভালো লাগলো আপনাদের ভ্রমণ বিষয়ক পোস্ট দেখে। অনেকগুলো ফটো ধারণ করেছেন এবং তা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। শীতের সময় আটজন মিলে গিয়েছেন জানতে পারলাম। যাহোক ফটোগুলো দারুন।

ভাই আপনার মতো আমিও খাওয়া দাওয়া কম করতে পারি না। কারণ পেটে ক্ষুধা থাকলে কিছুই ভালো লাগে না। যাইহোক মানুষ বেশি হওয়ার কারণে গাড়িতে চাপাচাপি করে বসলেও, জাদুঘরে গিয়ে তো অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন ভাই। কতো নিখুঁতভাবে সবকিছু তৈরি করেছিল আগের দিনের শিল্পীরা। মূর্তি গুলো সবচেয়ে বেশি সুন্দর লাগছে। এককথায় আপনারা সেখানে দুর্দান্ত সময় কাটিয়েছেন। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।