"শীতকালীন জমজমাট বিরিয়ানি পিকনিক"

in hive-129948 •  10 months ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন?আশা করি, আপনার সবাই ভালো আছে সুস্থ আছেন।আজ আমি আপনাদের মাঝে কিছুদিন আগে শীতকালীন বিরিয়ানি পিকনিক করেছিলাম সেই মুহূর্ত আপনাদের মাঝে তুলে ধরছি।আশা করি,আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

IMG20240113231215-01.jpeg



শীতকাল আসলেই মনের ভিতর আনন্দের জোয়ার বইতে থাকে কারণ শীতকাল আসলে অনেক জায়গাতে মেলা হয়ে থাকে আর বিভিন্ন ধরনের খাবার তখন পাওয়া যায় যেমন বিভিন্ন ধরনের পিঠা পাওয়া যায়। শীতকালীন সময়টাতে পিকনিক বেশি দেখা যায় সব জায়গাতে। আমার এখনো মনে পড়ে ছোটবেলায় যখন শীতকাল আসলে বাড়ির দিদারা সবাইকে নিয়ে পিকনিক করত। তখন কার সময় আমরা কেউ টাকা দিয়ে পিকনিক করতাম না সবাই যার যার বাড়ি থেকে চাউল, ডাল, ডিম এগুলো নিয়ে এসে সবাই একসাথে দিয়ে তারপর পিকনিক করা হতো। দিদারা রান্না করত আর আমরা সবাই আগুন জ্বালিয়ে শরীর টাকে ছেঁকে গরম করে নিতাম।


দিন যত গিয়েছে বয়স তত বেড়েছে আর বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেই সময়টা ও পাল্টাতে শুরু করেছে। ছোটবেলায় যেমন যার যার বাড়ি থেকে চাউল,ডাল,ডিম এনে একসাথে করে পিকনিক করা হতো কিন্তু এখন আর সেগুলো করা হয় না। এখন ব্যক্তিগত এক একজনকে কিছু টাকা ধার্য করা হয় আর সেই টাকা উঠিয়ে একসঙ্গে সব কিছু কিনে এনে তারপর পিকনিক করা হয়। কিন্তু বর্তমানে যে টাকা দিয়ে যে পিকনিক আমরা করে থাকি তার থেকে ছোটবেলায় সবাই কিছু না কিছু এনে পিকনিক করতাম সেই আনন্দটা বেশি ছিল কিন্তু এখন সেই আনন্দটা আর পাওয়া যায় না। আগে আমরা পিকনিকে নিজেরাই সবকিছু করতাম দিদাদের সাথে হাতে হাতে সাহায্য করে দিতাম কিন্তু এখন সেইসব কাজগুলো টাকা দিয়ে একজনকে বিয়ে করানো হয় তাই এখন আর সেই পিকনিকের মজাটাই নেই শুধু পিকনিক করতে হয় তাই করা।


যাইহোক এ বছর শীত পড়তেই এলাকার ভাই-বন্ধু সবাই পিকনিক করেছে অনেকবার কিন্তু আমি সেই পিকনিকে অংশগ্রহণ করতে পারিনি আমার ব্যক্তিগত কিছু কাজ থাকার কারণে। তাই আবারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আবার পিকনিক করা হবে আর সবাইকে কিছু টাকা ধার্য করা ও হলো। আমরা ভেবেছিলাম পিকনিকটা আমরা নিজেরাই করব কিন্তু একটা জিনিস সবসময় হয়ে থাকে এলাকায় যদি পিকনিক করা হয় তাহলে এলাকার ছোট বাচ্চারা যারা আছে তাদেরকে রেখে কোনদিন করা যায় না। তার জন্য তাদেরও আমরা পিকনিকে নিয়েছিলাম অবশেষে আমাদের পিকনিকের লোক হয়ে গিয়েছিলো ৫০ জনের মতন। আমরা বিরিয়ানির পিকনিকের আয়োজন করেছিলাম। আপনার নিজেরা রান্না করতে পারি না তার জন্য একজন দক্ষ রাঁধুনি খুঁজে ছিলাম। আর তার থেকে বিরিয়ানি পাকানোর জন্য যাবতীয় একটি লিস্ট করলাম। পিকনিকের দিন সকালবেলায় সব জিনিসপত্র এনে গুছিয়ে রাখলাম আর ডেকারেশন করলাম নিজেরাই। কারণ নিজেদের কাজটা নিজেরাই করার মজাটাই আলাদা। সব ঠিকঠাক করে আমরা রাঁধুনীর জন্য বসে থাকলাম কিন্তু রাঁধুনি আস্তে আস্তে রাত আটটা বেজে গেল।
খুব খুব রাগ হচ্ছিল কিন্তু কিছুই করার ছিল না কারণ আমরা কেউ বিরিয়ানি রান্না করতে পারিনা তাই সব মুখ বুজেই সহ্য করতে হচ্ছিলো। আমরা আগে থেকেই মাংস পিস করে রেখেছিলাম আর রাঁধুনি আসতেই উনি মাংসগুলো মেরিনেট করে কিছুটা সময় রেখে দিলেন এবং তারপর মাংসগুলো কষিয়ে নিলেন।

IMG20240113203527.jpg

IMG20240113201247.jpg

IMG20240113201052.jpg

IMG20240113201016.jpg

IMG20240113170827.jpg

IMG20240113201039-01.jpeg

IMG20240113203355-01.jpeg


পিকনিকে বাচ্চার বেশি আনন্দ করেছিলো। ওদের আনন্দ দেখে আমার খুব ভালো লাগছিল আমার মনে পড়ে যাচ্ছিল আমার ছোট্ট বেলার কথাগুলো। আমরা আমাদের এলাকার স্কুল মাঠে পিকনিকের আয়োজন করেছিলাম কারণ অনেক লোকের আয়োজন ছিল তার জন্য বড় মাঠের প্রয়োজন ছিল তার জন্য স্কুল মাঠ টাই বেছে নিয়েছিলাম। মাঠের এক পাশে আরো একটি বিল্ডিং নির্মাণ করা হচ্ছে আমরা সেই বিল্ডিং এর ছাদে যে আমার সব ফ্রেন্ডরা নাচ-গান করছিলাম আর এই সময়টার স্মৃতি রেখে দেওয়ার জন্য একটি গ্রুপ ছবি করলাম। খুব ভালো লাগছিল নিচে বাচ্চারা গানের তালে তালে যেভাবে নাচ করছিল দেখতে খুবই ভালো লাগছিলো কারণ এই আনন্দটা টাকা দিয়ে কেনা যায় না সত্যিই অসাধারণ ছিলো। একটু প্রবলেম হয়েছিল কারণ অনেকটা সময় লেগে যাচ্ছিল খেতে কিছু বাচ্চারা তো ঘুমিয়ে পড়েছিলো। বিরিয়ানি রান্না শেষ হতে হতে রাত এগারোটা বেজে গিয়েছিলো। ভেবেছিলাম সবার আগে আমি খাব কিন্তু পারলাম না কারণ আগেই বলেছি কিছু বাচ্চারা ঘুমিয়ে গিয়েছিলো তাই তাদেরকে আগে খাওয়ানোর চেষ্টা করলাম। ওদের খাওয়া শেষ হয়ে গেলে তারপর আমরা একসঙ্গে বসে খেয়েছিলাম।

IMG20240113212851-01.jpeg

IMG20240113213020-01.jpeg

IMG20240113220742-01.jpeg

IMG20240113231224.jpg

IMG20240113212322.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি:oppo
ক্যামেরা মডেল:oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য: 3.37 mm
তারিখ :১২.০১.২০২৪
সময়ে :১১.০৪ মিনিট

রেস্টুরেন্ট এর মত তেমন স্বাদ খেতে লাগেনি কিন্তু তারপরেও সবাই মিলে খেয়েছিলাম সেই মজাটা পেয়েছি। সেদিনের সেই সময়টা খুব ভালোই কাটিয়েছিলাম সবার সাথে।

আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

খুব সুন্দর শীতকালীন পিকনিকের যাবতীয় অনুভূতি শেয়ার করেছেন। খুব সুন্দর লোভনীয় বিরিয়ানি বানিয়েছেন। ঠিক বলেছেন আপনি ছোটবেলার মতো পিকনিকের আনন্দ হয়না এখন।শৈশবে চাল,ডাল,ডিম তুলে পিকনিক খেয়ে যে শান্তি, তৃপ্তি হতো এখন আর কোরমা,পোলাওয়ে সেই তৃপ্তি হয় না।ধন্যবাদ দারুণ একটি পিকনিকের মূহুর্তের ফটোগ্রাফি ও অনুভুতি শেয়ার করার জন্য।

চমৎকার একটি পিকনিকের আয়োজন করেছেন ভাইয়া। বেশ ভালো লাগলো আবারো গ্রাম সুন্দর পিকনিকের আয়োজন করতে দেখে যেখানে গ্রামের অনেকজন মিলে একসাথে বিরানি ভাতের ব্যবস্থা করেছেন। আর বিস্তারিত আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন তাই খুশি হলাম।

আরে বাহ দেখছি ভাই আপনারা শীতকালেই খুব সুন্দর একটা পিকনিকের আয়োজন করেছেন। আপনাদের এই পিকনিকে খাওয়ার আইটেম ছিল বিরিয়ানি যেটা আমার খুবই প্রিয় একটি খাবার। ধন্যবাদ ভাইয়া এমন শীতকালে বিরিয়ানি পিকনিক করে সেখান থেকে ফটোগ্রাফার এবং খুব সুন্দর বর্ণনা দিয়ে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

বাহ আপনারা দেখছি অনেকজন মিলে খুব সুন্দর পিকনিকের আয়োজন করেছেন। তবে ঠিক বলেছেন পিকনিকে যদি নিজেরা সবাই মিলে কাজ করে তাহলেই বেশি মজা হয়। যদিও আপনারা অনেকজন মানুষ হওয়াতে অন্য একজনকে দিয়ে রান্না করিয়েছেন। আসলে আমরা টাকা দিয়ে অন্যজনকে দিয়ে কাজ করাতে পারি। কিন্তু নিজেরা সবাই মিলে কাজ করার সে আনন্দটা থাকে না। তবে আপনাদের আয়োজনটা খুবই ভালো লেগেছে।।

ভাই আপনাদের বিরিয়ানির পাতিল দেখে তো আমারই খিদে পেয়ে গেল। আসলেই ছোটবেলায় যখন সবাই মিলে পিকনিক করতাম তখন সেখানে সবাই কাজ করতো। আর এই বিষয়টাই আমাদের জন্য অনেক সুন্দর ছিল। এখন কিন্তু টাকা দিয়ে অন্যজনকে দিয়ে রান্না করালে বিষয়টা ততটা মজাদার হয় না। যাইহোক আপনাদের রান্না করার লোকটা দেখছি আসতে দেরি করে ফেলল। অনেক ভালো লেগেছে আপনার পোস্ট পড়ে।

ঠিক বলেছেন ভাইয়া দিন যত যাচ্ছে বয়স তত বাড়ছে আর বয়সের সাথে সাথে সময়টাও পাল্টে যাচ্ছে। আমরা যখন ছোট বেলায় পিকনিক করেছি তখন একেক জনের বাড়ি থেকে একটা জিনিস আর ক্ষেত থেকে শাকসবজি তুলে এনেছি। কিন্তু এখন আর সেই সময় নেই তাই সবার মাঝে একটা নির্দিষ্ট টাকা দেওয়া হয় আর তা দিয়েই পিকনিকের আয়োজন করা হয়। কিন্তু সেই আনন্দ এখন আর পিকনিকের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যায় না।যাই হোক আপনারা অনেক জন মিলে পিকনিকের আয়োজন করেছেন দেখে খুব ভালো লাগলো। এই খাবারের স্বাদ রেস্টুরেন্টের মতো না হলেও খেতে খুব ভালো লাগে। পিকনিকের খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি ও আপনার অনুভূতি পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ।