"বারবিকিউ পার্টি শেষ পর্ব"

in hive-129948 •  last year  (edited)

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন আজ আমি বারবিকিউ পার্টি শেষ পর্বটি উপস্থাপন করছি।আশা করি,আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

IMG20231225190450-01.jpeg
বারবিকিউ পার্টি আয়োজন করা হয়েছিল ২৫ তারিখে কারণ সেদিন ছিল বড়দিন। সকাল থেকেই আমাদের কার্যক্রম শুরু হয়ে গেল আমি আর নিলয় দাদা সকাল বেলাতে মাংস কেনার জন্য বাজারে গেলাম পথে আমাদের সাথে যোগ হলো ডিপ্রো দাদা। দাদাকে ও সঙ্গে করে নিয়ে গেলাম আমাদের সঙ্গে। আমরা প্রথমে প্রায় পাঁচ কেজির মতন খাসির মাংস কিনলাম এবং ষোল পিসের মতো লেগ পিস কিনলাম মুরগির । এসব কেনার পর ডিপ্রো দাদাকে দিয়ে দিলাম দাদা বাসায় নিয়ে সেগুলো পরিষ্কার করতে লাগলো আর আমি আর নিলয় দাদা চলে গেলাম কয়লা কিনতে। সবথেকে দরকার হলো কয়লা কারণ এটা না হলে বারবিকিউ তৈরি হবে না। বাইকে করে প্রায় ২০ মিনিটের পথ পেরিয়েছে পৌঁছে গেলাম কয়লার গোডাউনে। এখানে এসে মনে পড়ে গেল হীরার কথা তাই আমি একটু হীরা খোঁজার চেষ্টা করলাম কিন্তু এত পরিমানে কালি এখানে ছিলো যে হীরা তো খুঁজা দূরের কথা কয়লাতে হাত দিতে পারলাম না 😁😁😁। যেহেতু আমাদের কোন আইডিয়া ছিল না এত কেজি মাংসতে কত কেজি কয়লা লাগবে। তাই দোকানদারের কাছ থেকে শুনে কয়লা কিনলাম ১০ কেজির মত।


বাসায় এসে ছাদে আবার সেগুলো সূর্যের আলোতে মেলে দিলাম যাতে রাতে সেগুলো জ্বালাতে কোন সমস্যায় না হয়। যেহেতু দাদা দের বাসায় এগুলো করা হচ্ছে সেহেতু দিদি ও মাঝেমধ্যে আমাদের একটু সাহায্য করে দিচ্ছিল কারণ আমরা তো তেমন জানতাম না সেহেতু দিদি আমাদের বলে দিচ্ছিল আর আমরা সেগুলো করছিলাম। আমরা এসে দেখলাম ডিপ্রো দাদা টুকিটাকি সব কাজই সেরে ফেলেছে। আমি লেগ পিস গুলো চিরে দিলাম যাতে করে মসলা গুলো ভালোভাবে মাংসের ভেতর ঢুকতে পারে। একে একে ষোল টি পিস আমি কেটে ফেললাম আর এখন সেগুলো মেরিনেট করার পালা। বড় একটি পাত্র নিয়ে নিলাম যাতে ভালোভাবে মেরিনেট করতে পারি। খুব ভালোভাবে আমি আর ডিপ্রো দাদা দুজনে মিলে মেরিনেট করছিলাম আর নিলয় দাদা মসলা গুলো দিয়ে দিচ্ছিল আর দিদি পরিমাণ বলে দিচ্ছিল।
IMG20231225125204.jpg

IMG20231225125017.jpg

IMG20231225124957.jpg

IMG20231225124333.jpg

IMG20231225132915.jpg

IMG20231225132901.jpg

IMG20231225132309.jpg

IMG20231225132240.jpg

IMG20231225132138.jpg

IMG20231225131735.jpg

IMG20231225131401.jpg

IMG20231225125528.jpg
মেরিনেট করা হয়ে গেলে দু'ঘণ্টার মতন সেগুলো রেখে দিলাম যাতে ভালোভাবে মসলা গুলো মাংসের ভিতর ঢুকে যেতে পারে। সন্ধ্যা হতেই শুরু হয়ে গেল আমাদের কার্যক্রম। প্রথমে ছাদে একটি লাইট দিয়ে দিলাম যাতে আলোকিত হয় । এরপর একে একে সব মাল জিনিস ছাদের উপরে নিয়ে এলাম।ডিপ্রো দাদা ও নিলয় দাদা দুজনে কয়লা জানানোর চেষ্টা করল। প্রথমে সব কয়লা দেওয়া হয়নি অল্প কিছু কয়লা জানানো হয়েছিল। খেয়াল রাখতে হবে কয়লাগুলো যেন দাউদাউ করে না জ্বলে ওঠে। কারণ অতিরিক্ত তাপ লাগলে মাংসগুলো পুড়ে যাবে তাতে কোন স্বাদও লাগবে না। তাই একটু নিভু নিভু ভাব রেখে মাংসগুলো খুব সময় নিয়ে এপিঠ ওপিট করে ছেকে নিতে হবে এবং মাঝেমধ্যে ঘি অথবা সরিষার তেল দিয়ে মাংসের গায়ে প্রলেপ দিতে হবে এতে করে মাংসের স্বাদটাও খুব ভালো হবে। যাইহোক প্রথমে একটু সময় লেগেছিল কারণ প্রথমে একটু সময় লেগেই থাকে আর যেহেতু আগেই বলেছি সময় নিয়ে করা সব থেকে ভালো। প্রথমে তিন পিস দেওয়া হয়েছিল আর যখন তিন পিস হয়ে গিয়েছিল তখন প্রথমে বড় দাদাকে দেয়া হয়েছিল। আমরা সবাই দাদার দিক তাকিয়ে ছিলাম কারণ দাদার মুখ থেকে শুনতে চেয়েছিলাম যে কেমন হয়েছে। দাদা খেয়ে আমাদেরকে বলল যে খুব ভালো হয়েছে কিন্তু ঝালটা একটু কম । তাই পরবর্তীতে আবার ঝাল দিয়ে মেরিনেট করে নিলাম। এরপর একে একে সবাই আমরা খেয়েছিলাম। দুঃখের বিষয় নিলয় দাদা তেমন খেতে পারেনি কারণ দাদার কিছুদিন আগে জ্বর হয়েছিল আর সেই জন্য তার জিহ্বার স্বাদ কমে গিয়েছিল আর নাক দিয়ে কোন গন্ধ নিতে পারছিল না। ছোট দাদাকে খুব মিস করছিলাম কিন্তু ছোট দাদা সেই সময় দিল্লিতে ছিল এ কারণে দাদা আমাদের সাথে থাকতে পারেনি কিন্তু আমাদের ইচ্ছে ছিল দাদা আসলে আবারও এমন একটি পার্টির আয়োজন করা হবে।

IMG20231225195557.jpg

IMG20231225195544.jpg

IMG20231225190447.jpg

IMG20231225190426.jpg

IMG20231225184458.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি:oppo
ক্যামেরা মডেল:oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য: 3.37mm
তারিখ:২৫.১২.২০২৩
সময়:০৮.৩৪মিনিট


বড় দাদা তিন পিসের মতন খেয়েছিল আর দিদি এক পিস আর নিলয় দাদা এক পিস। স্বাগতা দিদি তখন বাবার বাড়িতে ছিলো দিদিকে ফোন করা হয়েছিল দিদি বলেছিল সকাল বেলাতে দিদি আসবে তাই দিদির জন্য দু-পিস রেখে দেওয়া হয়েছিল। আর সব কয় পিস আমি আর ডিপ্রো দাদা দুজনেই খেয়ে ফেলেছিলাম কারণ আমরা দুজনেই খেতে খুব ভালোবাসি আরো যদি হয় মাংস তাহলে তো আর কোন কথাই নেই। খাওয়া-দাওয়া শেষ করতে করতে একটু রাত হয়ে গিয়েছিল কিন্তু তারপরও আনন্দটা অনেক হয়েছিল। হোটেলে খাবার থেকে এই যে বাড়িতে নিজেরা করে যে আনন্দটা আমরা উদযাপন করেছিলাম সেটি কিন্তু হোটেলে পাওয়া কোন দিনই সম্ভব হতো না। আর এই আনন্দটা করার জন্য দাদা নিজে থেকেই আমাদের বারণ দিয়েছিল হোটেলে যেতে। বাড়িতে এসবের আয়োজন করতে বলেছিল এতে করে আনন্দটা ও বেশি হয়েছিল।

আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঘরোয়া পরিবেশ এভাবে বারবিকিউ পার্টি করতে অনেক বেশি ভালো লাগে। কিছুদিন আগে আমরা নিজেরাও করেছিলাম, আর খুব মজা করে খেয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে এই বিষয়টি তুলে ধরার জন্য। ভালো থাকবেন সর্বদায় এই কামনা করি।

বারবিকিউ পার্টি নিয়ে দারুণ একটি পোস্ট শেয়ার করেছেন দাদা। বড়দিন উপলক্ষ্যে বারবিকিউ পার্টির মাধ্যমে বেশ আনন্দ করেছেন বোঝা ঝাচ্ছে। আপনার বড় দাদা একদম ঠিক করেছেন হোটেলে যেতে বারণ করে। নিজেরা বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করে যে আনন্দ পেয়েছেন,তা হোটেলে সম্ভব ছলনা। ছবি গুলোও অনেক সুন্দর হয়েছে। অনেক ধন্যবাদ, পোস্টটি শেয়ার দেয়ার জন্য।

পাঁচ কেজি খাসির মাংস, তারপর আবার এতগুলো লেগ পিস! আমি তো চিন্তা করছি, এত মাংস খেয়েছিলে কি করে? তবে একটা বিষয় শুনে বেশ মজা পেলাম ভাই, যে কয়লার গোডাউনে গিয়ে হিরে খুঁজছিলে🤭🤭। মাঝে মাঝে কয়লার খনিতে হীরা পাওয়া যেতে পারে তবে কয়লার গোডাউনে না ভাই। হা হা হা...🤣 আসলে বাড়ির ছাদে এরকম পার্টি করার যে মজা সেটা কিন্তু রেস্টুরেন্ট থেকে পাওয়া যায় না। সেই দিক থেকে ঠিকই করেছ বাড়ির ছাদে বারবিকিউ পার্টি করে।

এখানে এসে মনে পড়ে গেল হীরার কথা তাই আমি একটু হীরা খোঁজার চেষ্টা করলাম কিন্তু এত পরিমানে কালি এখানে ছিলো যে হীরা তো খুঁজা দূরের কথা কয়লাতে হাত দিতে পারলাম না 😁😁😁।

দাদা পরবর্তীতে হীরা পেলে আমাকে একটু জানাবেন, তাহলে আমিও খুঁজবো 😂। যাইহোক বাসায় এমন আয়োজন করলে প্রচুর আনন্দ করা যায় এবং বেশ তৃপ্তি সহকারে খাওয়া যায়। আমাদের বড় দাদা সেজন্যই আপনাদেরকে এমন চমৎকার আইডিয়া দিয়েছিল। বারবিকিউ পার্টি করতে ভীষণ ভালো লাগে আমার। এবছর শীতে দুইবার বারবিকিউ পার্টি করেছিলাম আমরা। তবে নিলয় দাদার মুখে রুচি ছিলো না বলে একেবারেই খেতে পারলো না,এটা জেনে ভীষণ খারাপ লাগলো। যাইহোক এতো সুন্দর মুহূর্ত আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।