হ্যালো বন্ধুরা,
আপনার সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে এই গল্পের পঞ্চম পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সোর্স
মিরা ও বিজয় জোছনা রাতে ছাদের উপর গল্প করতে করতে কখন যে সকাল হয়ে গেল তারা দুজনে কেউ বুঝতে পারল না। সকাল হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজয় বলল চলো রুমে যাই। বন্ধুরা আবার আমাদেরকে না দেখলে উল্টোপাল্টা কথা বলবে। মিরা বলে তুমি ঠিকই বলেছ বন্ধুরা আমাদেরকে না দেখলে বাজে কথা বলতে পারে চলো আমরা রুমে যাই। বিজয় তার রুমে চলে আসে আর মিরা তার রুমে চলে যায়। বিজয় রুমে এসে তার পকেট থেকে ফোনটি বের করতেই দেখে অসংখ্যবার তার মা ফোন করেছে। আসলে বিজয়ের ফোন সাইলেন্ট ছিল যার কারণে ফোন আসাতে শুনতে পারেনি। সঙ্গে সঙ্গে মাকে বিজয় ফোন দেয়। ফোন দিতেই মা বলে সারারাত কোথায় ছিলে ?তুমি ঠিক আছে তো?বিজয় বলে আমি একদম ঠিক আছি তুমি চিন্তা করো না। মা বলে সারারাত ধরে তোমাকে ফোন দিয়েছি ফোন ধরণী টেনশন তো হবে কারণ আমি যে তোমার মা। বিজয় বলে মা এত কেনো টেনশন করছো।আমি বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম আর ফোন সাইলেন্ট ছিল যার জন্য শুনতে পারিনি। মা তুমি যখন তখন আমাকে ফোন দিবে না আমার ডিস্টার্ব হয়। এই কথাটি শোনার পর মায়ের বুকটা ভেঙে গেল। অনেকক্ষণ চুপ থাকার পর মা বলল তুমি অনেক বড় হয়ে গিয়েছো আজ বুঝতে পারলাম। ঠিক আছে মা ফোন দিলে যদি তোমার ডিস্টার্ব মনে হয় তাহলে তোমাকে আর ফোন দিব না। বিজয় বলে মা তুমি এমন করে কেনো বলছ। আমি তো এমনি বলেছি তুমি কষ্ট পেয়ে না। মা বলে তুমি আমার সন্তান তোমার কথায় আমি কখনো কষ্ট পেতে পারি। বন্ধুদের সঙ্গে গেছো আনন্দ করো সময় মত খাওয়া-দাওয়া করবে। এই বলে মা ফোনটি রেখে দেয়।
মায়ের সঙ্গে কথা বলা শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ের বন্ধুরা বিজয়কে জিজ্ঞাসা করল সারারাত কোথায় ছিলে বাবু? বিজয় বলে সারা রাত কোথায় থাকবো ছিলাম তো রুমে। বন্ধুরা বলে বাবু তুমি যদি রুমে থাকতে তাহলে আমরা কি বাইরে ছিলাম। সত্যি করে বলো সারারাত কোথায় ছিলে কার সঙ্গে ছিলে? বন্ধুদের জোরাজুরির কারণে বিজয় সত্যি কথাটা বলেই দিলো। বিজয় বলে সে আর মিরা দুজনে ছাদে গল্প করছিল। গল্প করতে করতে কখন যে সকাল হয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না। বন্ধুরা হাসতে থাকে আর বলতে থাকে প্রথম প্রথম প্রেম করলে কখন যে রাত শেষ হয়ে যায় বোঝাই যায় না 😄😄😄। বিজয় বন্ধুদের কথা শুনে খুবই লজ্জা পায়। দেখতে দেখতে তিন দিন কেটে যায়। সবাই রওনা দেয় বাড়ির উদ্দেশ্যে সবাই যার যার বাড়িতে পৌঁছে যায়। কিন্তু বিজয় ও মিরা তারা কিন্তু বাড়িতে একটু দেরি করেই পৌঁছায়। বুঝতেই পারছেন নতুন ভালোবাসা কিছুতেই ছেড়ে যেতে মন চাচ্ছিল না। অবশেষে তারা দুজন দুজনার বাড়িতে এসে পৌঁছালো। বাড়িতে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ের মা বিজয়কে বলল ফ্রেশ হয়ে আসো আমি তোমার জন্য খাবার তৈরি করছি। তখন বিজয় মাকে বলে মা আমি খাব না? মা বলে অনেকদূর জার্নি করে এসেছ খাবে না কেনো। বিজয় বলে আমি বাইরে থেকে খেয়ে এসেছি তোমরা খাওয়া-দাওয়া করে নাও। আর মা কিছু টাকা বেঁচেছে টাকাগুলো নাও। তখন মা বলে যে টাকা বাঁচিয়ে এনেছো সে টাকা তোমার কাছে রেখে দাও তোমার কাজে লাগবে। বিজয় তার কাছে টাকাগুলো রেখে দেয় আর ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।
বিজয়ের ফোনে ফোন আসতে থাকে কিন্তু বিজয় কোনটি রিসিভ করেনা। কারণ বিজয়ের শরীর প্রচন্ড টায়ার্ড ছিল যার কারণে বিছানায় শুয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে পড়ে। ফোন যখন বেজে যাচ্ছে তখন বিজয়ের মা রুমে এসে ফোনটি রিসিভ করে। রিসিভ করতেই ওপার থেকে একটি মেয়ের গলা ভেসে আসে। মেয়েটি আর কেউ নয় মেয়েটি হল মিরা। মিরা বলে বাবু তুমি বাড়িতে যে আমাকে ফোন করলে না কেন কি করছো তুমি? তখন বিজয়ের মা বলে বিজয় ঘুমিয়ে পড়েছে। তখন মিরা খুবই লজ্জা পায় সঙ্গে সঙ্গে ফোনটি রেখে দেয়। ফোনটি রেখে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মা ও ফোনটি রেখে দেয় আর হাসতে থাকে। কারণ তার মা বুঝতে পেরেছে তার বিজয় প্রেমে করছে। ফোনটি রেখে হাসতে হাসতে বেরিয়ে যায় রুম থেকে।তখন দাদুর সঙ্গে দেখা দাদু বলে কিরে দিদি ভাই তুই হাসছিস কেনো কি হয়েছে? এখন মা বলে দাদু তোমার বিজয় প্রেম করছে। এই কথাটি শোনার পর দাদুও খুব খুশি হয় সেও হাসতে থাকে আর বলতে থাকে আমাদের বিজয় অনেক বড় হয়ে গিয়েছে। যাইহোক পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সকালের খাবার খেয়ে কলেজে চলে যায়। রাতের ঘটনা মা বিজয়কে কিছুই বলেনা। যার জন্য বিজয়ও কিছু বুঝতে পারে না অন্যদিনের মতন সে খাবার খেয়ে চলে যায় কলেজে।
কলেজে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মিরা বিজয়কে ডাক দেয়। মিরা বিজয়কে ডাক দিয়ে বলে রাতে তোমার ফোন কোথায় ছিল? বিজয় বলে কেনো আমার পাশেই ছিল। তাহলে আমি যখন ফোন করেছিলাম তখন তুমি কোথায় ছিলে? বিষয় বলে আমি তো ফ্রেশ হয়ে শুয়ে পড়ি আর কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম আমি নিজেও জানিনা কেনো কি হয়েছে? মিরা বলে আমি তোমাকে ফোন করেছিলাম আর ফোনটি তোমার মা রিসিভ করে। বিজয় বলে কি বলছ কি তুমি? তারপর তুমি কি কথা বলেছিলে আমার মায়ের সঙ্গে। মিরা বলে হ্যাঁ আমি তো জানি না যে তোমার মা রিসিভ করেছে। আমি যে তোমাকে বাবু বলে ডাক দিয়েছি আর তখনই মা বলে বিজয় ঘুমিয়ে পড়েছে। তখন বিজয় মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে মাটিতে আর বলতে থাকে আমার খুব লজ্জা করছে আমি মায়ের সামনে কিভাবে দাঁড়াবো। তার জন্য তো ভাবি আজ কেনো মা আমাকে দেখে হাসছিল হাসার কারণটা আমি এখন বুঝতে পারলাম। মিরা বিজয়কে বলে মা যেহেতু বুঝেই ফেলেছে মাকে মিথ্যা কথা বলো না আমাদের সম্পর্কের কথা মাকে জানিয়ে দাও। বিজয় বলে সেটা আমি কোনদিনও বলতে পারব না। মিরা বলে কেন বলতে পারবে না। বিজয় বলে আমার খুব ভয় করছে আর লজ্জাও করছে মায়ের সামনে কিভাবে দাঁড়াবো আমি। তখন মিরা বলে তোমার কিছু বলতে হবে না আমি মাকে সবকিছু বলব। এই বলে মিরা বিজয়ের হাতটি ধরে বলে চলো এখনই তোমার মায়ের সঙ্গে দেখা করব আর আমাদের সম্পর্কের কথা জানাবো। তখন বিজয় বলে এখন নয় মা এখন বাড়িতে নাই। মিরা বলে মা বাড়িতে নাই কোথায় গেয়েছে? বিজয় বলে আমার মা পরের বাড়িতে কাজ করে। তখন মিরা সঙ্গে সঙ্গে বিজয়ের হাতটি ছেড়ে দেয় আর বলে তোমার মা পরের বাড়িতে কাজ করে। বিজয় বলে হ্যাঁ আমার মা পরের বাড়িতে কাজ করে আর সেই টাকা দিয়ে আমি পড়াশোনা করি। কথাটা শোনার পর মিরা বিজয়কে বলে আমি একটু ফ্রেশ হতে যাচ্ছি।
বিজয় আর মিরার প্রেম তো ভালোই চলছিলো। কিন্তু বিজয়ের মা পরের বাড়িতে কাজ করে বলে,মিরা ব্যাপারটা ভালোভাবে নিলো না। আমার মনে হয় মিরা এই সম্পর্কটা নষ্ট করে দিবে। তখন বিজয় খুবই কষ্ট পাবে। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit