'ভালোবাসি তোমাকে ' গল্পের পঞ্চদশ পর্ব

in hive-129948 •  3 months ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনার সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভালো আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি আমাদের মাঝে 'ভালোবাসি তোমাকে' গল্পের পঞ্চদশ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে।তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-lukas-rychvalsky-670720.jpg

সোর্স


মনিকার চাকরির জীবনটা খুব ভালোই চলছিল। সে খুব হ্যাপি ছিল কারণ একদিকে যেমন শুভকে দেখতে পাচ্ছে অন্যদিকে তার নিজের হাত খরচ ও চালিয়ে নিতে পারছে। যাই হোক, এমন ভাবে চলতে চলতে বেশ কয়েকদিন কেটে গেল। এদিকে শুভ পুরোপুরিভাবে সুস্থ হয়ে উঠলো। শুভ তেমন একটি বাইরে যায় না সে ঘরের যাবতীয় কাজ করতে থাকে আর মনিকা চাকরি করে। শুভ যখন সুস্থ হয়ে যায় তখন মনিকে বলে চাকরিটি ছেড়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু মনিকা আপত্তি জানায় সে শুভকে বলে এত ভালো একটি চাকরি সে ছাড়বে না। শুভ আর মনিকার উপর জোর করে না তার কথাই মেনে নেয়। শুভ চায় মনিকার নিজের পরিচয় হোক। একদিন মনিকা রাত করে বাড়িতে ফিরে। শুভ তাকে জিজ্ঞাসা করে এত রাত পর্যন্ত সে কোথায় ছিল। কিন্তু মনিকা তার কোন কথার উত্তর না দিয়ে সোজা রুমে যে ঘুমিয়ে পড়ে। শুভ রুমে যে মনিকা কে ডাক দেয় আর তাকে বলে তুমি কি অসুস্থ? মনিকা শুভকে বলে আমাকে ডিস্টার্ব করো না একটু শান্তিতে ও কি থাকতে পারবো না। মনিকার এমন ব্যবহারে শুভ একটু অবাক হয়ে যায় কারণ বিবাহিত জীবনে মনিকা এখনো পর্যন্ত এমন ব্যবহার করেনি। এরপর আর শুভ কথাই বলে না কারণ সে ভাবতে থাকে হয়তো অফিসে কাজের চাপের কারণে এমনটি হয়েছে।


একদিন শুভর ফোনে এক ভদ্র লোকের ফোন আসছে। লোকটি ছিল শুভর বন্ধু সে এখন অনেক টাকা পয়সার মালিক সে একটি পার্টির আয়োজন করে সেখানে নিমন্ত্রণ করে শুভকে। শুভ রাজি হয়ে যায় কারণ অনেকদিন পর তার সেই বন্ধুর সঙ্গে দেখা হবে সে আর না করতে পারে না। মনিকা বর্তমান খুবই ব্যস্ত থাকে তাকে আর ফোনে বেশিরভাগ সময় পাওয়া যায় না। তাই শুভ মনিকার অফিসের এক কলিককে ফোন দিয়ে বলে একটু কথা বলিয়ে দিতে। এরপর সেই ব্যক্তিটি মনিকাকে শুভর কথা বলে। মনিকা সঙ্গে সঙ্গে ফোন দেয় শুভকে আর রাগান্বিত কন্ঠে শুভকে মনিকা বলে ফোনটা আমার কাছে করতে পারতে তুমি অন্যদের কাছে কেন ফোন করতে গেলে? শুভ মনিকা কে বলে তুমি এত রেগে যাচ্ছ কেন? মনিকা বলে রেগে যাওয়ারই কথা তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছ আমি একটা সম্মান যোগ্য চাকরি করি। আর সেখানে আমার থেকে ছোট লোকদের কাছ থেকে কথা শুনলে আমার সম্মানহানি হয় এটা তোমার বোঝা দরকার। শুভ মনিকা কে বলে আমার ভুল হয়ে গেছে আমি বুঝতে পারিনি কবে কবে তুমি এত বড় হয়ে গেছো।


যাই হোক, মনিকা বলে ফোন দিয়েছো কেন সেটা বল? শুভ বলে আমার এক ফ্রেন্ড পার্টির আয়োজন করেছে আমাদের নেমন্তন্ন করেছে তাই বলছিলাম তুমি আজ যদি অফিস থেকে একটু আগে আসতে তাহলে আমরা দুজনে যেতে পারতাম। তখন মনিকা বলে আমি তোমাকে বলতে ভুলে গেছি আজ বাড়িতে ফিরতে আমার একটু লেট হবে। শুভ বলে কেন? মনিকা বলে আমি স্যারের সঙ্গে এক পার্টিতে যাব স্যার আমাকে নিয়ে যাবে। শুভ মনিকাকে বলে আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে নয় আমি একা একা যাব। মনিকা শুভকে বলে ঠিক আছে সাবধানে যাবে। মনিকার অফিস ছুটি হতেই মনিকার বস অর্থাৎ জয়। জয় ও মনিকা, তারা দুজনেই পার্টি উদ্দেশ্যে রওনা করলো। আর অন্যদিকে শুভ ও রওনা করলো পার্টির উদ্দেশ্যে। আপনাদের বোঝার জন্য একটা কথা বলি অনেকদিন একই প্রতিষ্ঠানে কাজ করার কারণে জয় ও মনিকার ভিতর তাদের একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর আগে থেকেই জয় ও মনিকার প্রেম ভালবাসা ছিল কিন্তু হঠাৎ মনিকার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পরে তাদের ভালবাসাটা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু শুভর দুর্ঘটনার পর যখন মনিকা চাকরি পায় তখনই আবার জয়ের সঙ্গে আস্তে আস্তে ঘনিষ্ঠ হতে শুরু করে। আর এখন শুভর প্রতি ভালবাসাটা অনেকটাই কমে গেছে।


জয় ও মনিকা, তারা পার্টিতে জয়েন করে। এদিকে শুভ পার্টিতে জয়েন করে। এখানে একটু কথা বলি। শুভ তার বন্ধুর পার্টিতে এসেছে। এই একই পার্টিতে জয় ও মনিকা ও এসেছে। জয়ের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক থাকাতে জয়কে নিমন্ত্রণ করে শুভর বন্ধু । একই পার্টিতে শুভ মনিকা কে দেখে চমকে যায়। মনিকা কে দেখে তার খুব ভালো লাগে। মনিকাকে দেখে জয় তার কাছে যেতে থাকে কিন্তু মনিকা সেটি দেখে না। সে অন্য দিক ফিরে বন্ধুদের সাথে আড্ডায় মজে থাকে। শুভ যখন মনিকা কে পেছন থেকে ডাক দিতে যাবে তখনই সে শুনতে পায় মনিকার মুখে কিছু কথা। যেটি শোনার পর শুভ ভেঙে পড়ে কারণ সে ভাবতে পারেনি মনিকার মুখে সে এই কথাটি শুনতে পারবে। মনিকা তার বন্ধুদের কে বলছিল তার স্বামী মস্ত বড় একটি কোম্পানিতে চাকরি করে। আর তার স্বামী এতটাই হ্যান্ডসাম যে কেউ দেখে প্রেমে পড়ে যাবে। তার বান্ধবীরা তাকে বলে একদিন তার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে। তখন মনিকা বলে তার স্বামী বিদেশে বড় একটি কোম্পানিতে চাকরি করে যদি দেশে আসে তাহলে অবশ্যই পরিচয় করিয়ে দেবে। এই কথাগুলো শোনার পর শুভ অনেকটা অপমানিত হয় কারণ মনিকা শুভর পরিচয়টা গোপন করেছে যেটা করা উচিত ছিল না। শুভ সেখান থেকে সঙ্গে সঙ্গে সোজা বাড়িতে চলে আসে।

আজ এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনেকদিন ধরে খুব সুন্দর একটি গল্প আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করে চলেছেন দাদা। আপনার এই গল্পটা আমি বেশ কয়েকবার পড়েছি কিন্তু সম্পন্ন পর্বগুলো পড়া হয়নি। আজকে আবারো পড়ার সুযোগ মিললো। বেশি দারুন একটি গল্প শেয়ার করেন। শুভ ও মনিকার কথোপকথন বেশ ভালো লাগলো। এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ দাদা।

আপনাকেও ধন্যবাদ দাদা। সময় করে আমার গল্পটি পড়ার জন্য আর আপনার মূল্যবান কিছু কথা আমাকে শেয়ার করার জন্য।

মনিকা তো দেখছি শুভকে কোনো পাত্তা দিচ্ছে না। ঘরের বউ যদি এমন করে তাহলে যেকোনো পুরুষ কষ্ট পাবে। মনিকা জয়ের প্রতি দুর্বল বলেই শুভকে কোনো দাম দিচ্ছে না। তবে মনিকা এবং শুভ এভাবে কয়দিন সংসার করতে পারবে সেটাই দেখার বিষয়। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।

এই গল্পের আগের পর্ব গুলো পড়েছিলাম আর গল্পটা সত্যিই খুব সুন্দর। তবে শুভর জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে। শুভর তো কোনো দোষ ছিল না,তাহলে মনিকা কেন তার সাথে এভাবে প্রতারণা করছে। সে যদি জয়কেই ভালোবাসবে তাহলে শুভ কে বিয়ে না করলেই পারতো। শুভর জায়গায় যে কেউ থাকলে তার বউ এর মুখ থেকে এমন মিথ্যে কথা শুনলে কষ্ট পেতো। গল্পটির পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।