জীবনসঙ্গী গল্প পর্ব-৩

in hive-129948 •  last year 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে জীবনসঙ্গী গল্পের তৃতীয় পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি, আপনাদের গল্পটি ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-maria-lindsey-content-creator-5834144 (1).jpg
সোর্স


হঠাৎ আবারো একদিন প্রচন্ড পেটে ব্যথা ওঠে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিয়ে যায় অপারেশন থিয়েটারে। সবাই খুব দুশ্চিন্তায় ছিল সবাই বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিল। অনেকক্ষণ পর অপারেশন থিয়েটার থেকে ডাক্তার বেরিয়ে এলো। সঙ্গে সঙ্গে কুন্তল ডাক্তারের কাছে জিজ্ঞাসা করে।
কুন্তল: ডাক্তারবাবু প্রিয়াঙ্কা কেমন আছে? বাচ্চা ভালো আছে তো?
ডাক্তার : আপনার ফুটফুটে একটি কন্যা সন্তান হয়েছে। মা এবং মেয়ে দুজনে ভালো আছে।
কুন্তল: আমি কি এখন তাদের কাছে যেতে পারি?
ডাক্তার: একটু পরে আপনি যেতে পারবেন।


কুন্তল খুব খুশি হয় কারণ সে মনে মনে ভেবেছিল তার একটি কন্যা সন্তান হবে। পরিবারের সবাই খুব খুশি হয়। কিছুদিন পর হাসপাতাল থেকে তারা বাড়িতে চলে আসে। তারা ভালোবেসে মেয়ের নাম রাখে রাখি। মেয়ের রাখি যেন সবার চোখের মনি। হঠাৎ একদিন রাখির প্রচন্ড জ্বর হয়। তার বাবা মা পরিবারের সবাই তার সুস্থতার জন্য ছাড়া রাত দিন তার সেবা যত্ন করতে থাকে কিন্তু তারপরেও তার জ্বর একটুও কমে না। শেষে কোন তাই কোন কাজ না হলে প্রিয়াঙ্কা তার মেয়ের জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করতে থাকে আর দুচোখ দিয়েও ঝরে জল ঝরতে থাকে। ঈশ্বরের আশীর্বাদে রাখি আস্তে আস্তে সুস্থ হয়ে ওঠে।


দেখতে দেখতে রাখির পাঁচ বছর হয়ে গেল। রাখি এখন স্কুলে ভর্তি হলো আর যেদিন থেকে রাখি স্কুলে ভর্তি হয় সেদিন থেকে সংসারে আরো কাজের চাপ বেড়ে যায় প্রিয়াঙ্কার। এখন সে মেয়েকে সকাল আটটার দিকে স্কুলের নিয়ে যায় আর বারোটার সময় স্কুল থেকে বাসায় এগিয়ে নিয়ে আসে। আমার অন্যদিকে বয়স্ক শশুর শাশুড়ি তাদের নিয়মিত টাইম মেনে ওষুধ খাওয়াতে হয়। এমন করে সব দিক থেকে প্রিয়াঙ্কার সংসারের উপর খুব চাপ সৃষ্টি হয়ে পড়ে। কিন্তু তারপরেও প্রিয়াঙ্কা হাসিমুখে সবকিছু মেনে নেয় কারণ সে মা। পৃথিবীতে দরদী একমাত্র মা হয় আর কেউ হতে পারে না মায়ের মতন দরদী।


হঠাৎ একদিন রাতে প্রিয়াঙ্কা এবং কুন্তলের মাঝে ঝগড়া হয়। এই প্রথম কঙ্কাল প্রিয়াঙ্কার গায়ে হাত তোলে। ঝগড়ার একমাত্র কারণ ছিল একটি মেয়ে। কুন্তল অফিস থেকে বাড়ি এসে ফ্রেশ হওয়ার জন্য বাথরুমে যায় আর ঠিক তখন তার ফোন বাঁচতে শুরু করে। প্রিয়াঙ্কা ফোনটি রিসিভ করে তখনই সে শুনতে পায় একটি মেয়ের কন্ঠ। মেয়েটি তোর পরিচয় জানতে চাইলে সে কিছুই বলে না দ্রুত ফোনটি কেটে দেয় এবং ফোনটি অফ করেও রাখে। কুন্তল ফ্রেশ হয়ে আসার পর প্রিয়াঙ্কা কুন্তলের কাছে জিজ্ঞাসা করে?
প্রিয়াঙ্কা: হ্যা গো তুমি যখন ফ্রেশ হতে গিয়েছিলে তখন তোমার ফোনে কল এসেছিল আমি রিসিভ করি।
কুন্তল: কে ফোন করেছিল?
প্রিয়াঙ্কা: একটি মেয়ে আমি পরিচয় জানতে চাইলে ফোনটি দ্রুত কেটে দিলাম। তোমার ফোনে ওর নাম সেভ করা নেই কিন্তু দুইটা অক্ষর দিয়ে ওর নাম সেভ করা আছে। আমার তো মনে হয় তোমার পরিচিত?
কুন্তল: আমার পরিচিত কি করে হবে আমি তো কোন মেয়েকে চিনি না।
প্রিয়াঙ্কা: তুমি যদি এই মেয়েকে না চেনো তাহলে তোমার ফোনে তার নাম দুইটা অক্ষরে কেন সেভ থাকবে আর আমি তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে সে কেন কেটে দেবে তুমি সব জানো আমাকে বলো।


এক কথা দুই কথা বলতে বলতে তাদের মধ্যে প্রচুর ঝগড়া হয় ঠিক তখনই প্রিয়াঙ্কার গায়ে হাত তুলে কুন্তল। প্রিয়াঙ্কা প্রচুর কষ্ট পায় কারণ এই প্রথম কুন্তল তার গায়ে হাত তুলল তাও একটি মেয়ের জন্য। সকালে হলে প্রিয়াঙ্কার শ্বশুর শাশুড়ি জিজ্ঞাসা করে রাতে কি হয়েছিল? কিন্তু প্রিয়াঙ্কা কিছুই বলে না। সে মনে করে যে স্বামীর স্ত্রীর মধ্যে এমন টুকটাক ঝামেলা হয়ে থাকে। কিন্তু আজকাল কুন্তল বাইরে থেকে খেয়ে আসে অফিস শেষ হওয়ার পরেও সে অনেক রাত করে বাড়িতে ফেরে। কুন্তল এখন আর আগের মত প্রিয়াঙ্কাকে ভালোবাসে না। প্রিয়াঙ্কা বিষয়টি বুঝতে পারে আর সে জেনে যায় তার স্বামী একটি মেয়ের সাথে ঘুরাঘুরি করছে। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা কুন্তলকে কিছুই বলে না কারণ সে সঠিক সময়ের অপেক্ষা করতে থাকে।

আজ এখানেই শেষ করছি গল্পের বাকিটা অংশ শীঘ্রই নিয়ে সবার মাঝে হাজির হব সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলে এই গল্পটার প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম তবে দ্বিতীয় পর্ব পড়া হয়নি। কিন্তু আজকে তৃতীয় পর্ব পড়ে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে। যদিও প্রথমদিকে ভালো লেগেছে তবে শেষের দিকটা পড়ে অনেক খারাপ লাগলো। আসলে প্রিয়াঙ্কাকে কুন্তল প্রথমবার মারার কারণে তার অনেক বেশি কষ্ট লেগেছে। তাও মেরেছে একটা মেয়ের জন্য। এর ফলে তো প্রিয়াঙ্কার কষ্ট হওয়ারই কথা। এখন সঠিক সময়ে কি হতে চলেছে এটা দেখার জন্যই অপেক্ষায় থাকলাম।

ধন্যবাদ দাদা সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য এবং আপনার মূল্যবান কিছু কথা আমাকে শেয়ার করার জন্য।

জীবনসঙ্গী গল্পটার তৃতীয় পর্বের প্রথম দিকে যখন পড়েছি প্রিয়াঙ্কা এবং কুন্তলের একটা কন্যা সন্তান হয়েছে এটা জেনে খুব ভালো লেগেছিল। কিন্তু তাদের দুজনের ঝগড়ার কথা শুনে অনেক খারাপ লেগেছে শেষের দিকে। ওই মেয়েটা কে ছিল যে কুন্তলকে ফোন করেছিল? আমার তো মনে হচ্ছে কুন্তলের অন্য একটা মেয়ের সাথে সম্পর্ক রয়েছে। যে তার মোবাইলে ফোন দিয়েছিল সেই হচ্ছে এই মেয়েটা। প্রিয়াঙ্কা সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে এখন। দেখা যাক কি হয় তা

ধন্যবাদ দিদি সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য খুব শীঘ্রই জীবনসঙ্গী গল্পের নতুন পর্ব সবার মাঝে উপস্থাপন করব। আশা করি, সবার ভালো লাগবে।

আগের পর্ব পড়ে এটাই ভেবেছিলাম কোনো না কোনো ঝামেলা হবে নিশ্চয়ই। তবে কুন্তল প্রিয়াংকাকে এভাবে ঠকাচ্ছে কিভাবে সেটাই মাথায় আসছে না। প্রিয়াংকা কুন্তলের বাবা মার জন্য নিজের ক্যারিয়ার শেষ করে দিল। পুরো সংসারটাকে আগলে রাখলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কুন্তল পরকীয়ায় জড়িয়ে পরলো। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। যাইহোক পরবর্তীতে কি হয় সেটা জানার আগ্রহ বেড়ে গিয়েছে। আশা করি খুব শীঘ্রই পরবর্তী পর্ব শেয়ার করবেন।

ধন্যবাদ দাদা, সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য। খুব শীঘ্রই জীবনসঙ্গীর গল্পের নতুন একটি পর্ব সবার মাঝে উপস্থাপন করব আশা করি,ভালো লাগবে।

ভাই আপনি আজকে আমাদের মাঝে দারুন একটি গল্প লিখে শেয়ার করেছেন। হয়তো আপনার গল্পের প্রথম পর্ব এবং দ্বিতীয় পর্ব আমি পড়েছিলাম। আসলে ভাই জীবন সঙ্গীকে নিয়ে আপনি বেশ দারুন একটি গল্প শেয়ার করেছেন। কিন্তু শেষের দিকে আমার একটু খারাপ লেগেছিল গল্পটি পড়ে। প্রিয়াঙ্কাকে কুন্তল মারার কারণে সে অনেক কষ্ট পেয়েছিল। এই গল্পে শেষ পর্যন্ত কুন্তল পরকীয়ায় জড়িয়ে পরলো সত্যি এটা জেনে আমার কাছে বেশ খারাপ লেগেছিল। অবশ্যই আপনার শেয়ার করা গল্পের পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।