শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণ পর্ব: ১১

in hive-129948 •  2 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণের একাদশ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



রেস্ট নেওয়ার পর আমরা বেরিয়ে পড়ি কোপাই নদীর দেখার উদ্দেশ্যে। সৃজনী শিল্প গ্রাম থেকে কোপাই নদীর দূরত্ব তিন থেকে চার কিলোমিটার। কোপাই নদী কে কেন্দ্র করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবিতা রচনা করেছিলেন। আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে। এটি অবস্থান করছে বোলপুরে। একটি সময়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই নদীর তীরে অনেক সময় কাটিয়েছেন। এই নদীর তীরে তিনি অনেক কবিতা ও রচনা করেছেন। শান্তিনিকেতনে গেলে অবশ্যই আপনারা এই কোপাই নদীটি ভ্রমণ করবেন। কোপাই নদীতে যাওয়ার পথে এখানে রাস্তার পাশে অনেক টাটকা খেজুরের রস এবং গুড় দেখতে পাবেন। রাস্তার পাশে ছোট ছোট ঘর তৈরি করে খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে তারা তৈরি করছে খেজুরের গুড়। শান্তিনিকেতনে গেলে আপনার অবশ্যই এই গুড় সংগ্রহ করতে পারবেন। আমরা দোকান থেকে যে গুড় কিনে থাকি তা কিন্তু অনেকটা সময় ভেজাল হয়ে থাকে কিন্তু এখানে আপনার সামনে এটি তৈরি করে আপনাকে প্যাকেজিং করে তারা দিবে। এখানে একটা কথা আমি বলব এখানে টাটকা খেজুরের রস পাওয়া যায় কিন্তু আপনারা মনের ভুলেও সেটি খাবেন না। কারণটি হল খেজুর গাছ থেকে যখন তারা রস সংগ্রহ করে তখন অনেক পোকামাকড় অনেক পাখির এখানে এই রস খাওয়ার জন্য এসে থাকে। অনেক জীবাণু থাকতে পারে তাই কাঁচা রস কখনোই খাওয়া উচিত নয়। রস তাপ দেওয়ার পর সেটি খাওয়া উচিত।


এসব উপভোগ করতে করতে আমরা পৌঁছে গেলাম কোপাই নদীতে। এখানে দেখতে পেলাম এখনো ছোটখাটো একটি হাট বসেছে পাশে সাঁওতালরা নাচ করছে সঙ্গে রয়েছে বাউলের আসর। সব মিলিয়ে কোপাই নদীর তীরে সুন্দর একটি পরিবেশ ফুটে উঠেছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এই কোপাই নদীটি এখন পুরোটাই মারা গিয়েছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যখন তিনি এই কোপাই নদীকে উল্লেখ করে কবিতাগুলো লিখেছিলেন। এখন যদি তিনি বেঁচে থাকতেন তাহলে এই কোপাই নদীকে উল্লেখ করে কোন কবিতাই রচনা তিনি করতেন না। বিষয়টি বলতে খুবই খারাপ লাগছে তাও বলতে হচ্ছে কোপাই নদীটি অবস্থা খুবই খারাপ। কবিতায় লেখা রয়েছে আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, বৈশাখ মাসে তার হাঁটু জল থাকে। এখন সেই কোপাই নদীকে দেখে আমার মনে হল নদী চলছে বাঁকে বাঁকে, কিন্তু নদীর জলের গভীরতা চার ইঞ্চি। এখন এই নদীতে জোয়ার ভাটা ও হয় না। নদীর আশেপাশে অনেক গাছপালা দেখতে পারবেন। বৃষ্টির মৌসুমে এই নদীটি জলে ভরে যায় এবং শীতের সময় জল শুকিয়ে যায়।

IMG20241225150452.jpg

IMG20241225150523.jpg

IMG20241225150437.jpg

IMG20241225150619.jpg

IMG20241225150519.jpg

IMG20241225143357.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি: oppo
ক্যামেরা মডেল: oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:২৫.১২.২০২৪
সময়:০৫:০৪ মিনিট
স্থান:শান্তিনিকেতন


যাই হোক, কোপাই নদীতে এসে নদীর কিনারায় দাঁড়িয়ে কিছু ফটোগ্রাফি করলাম। কোপাই নদীর জলে কিছুটা সময় পা ভিজিয়ে নিলাম। এখানেও কিন্তু কমবেশি পর্যটক এসেছে। নদীর কিনারে বাউল শিল্পীরা বাউল গান পরিবেশন করছেন। কোপাই নদীতে আসার সময় এই নদীকে কেন্দ্র করে আমি মনে মনে অনেক কিছু ভেবেছিলাম। কিন্তু বাস্তবে যখন এই নদীকে আমি দেখতে পেলাম আমার সেই ভাবনা চিন্তা সব ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। আশা করাটা স্বাভাবিক কারণ এই নদীকে কেন্দ্র করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অনেক কবিতা রচনা করেছেন। কিন্তু এখন এই নদীটি সময়ের বিবর্তনে তার গতিপথ হারিয়ে ফেলেছে। এই নদীর মাটি লাল আর নদীর জল খুবই পরিষ্কার। আমি একটি কথা বলবো এই কোপাই নদীতে ঘুরতে আসলে আপনারা এখানে কোপাই নদীর সৌন্দর্যটা দেখতে পারবেন অনেক শান্ত একটি পরিবেশ উপভোগ করতে পারবেন। এখানে দিনের থেকে রাতের সৌন্দর্যটা খুবই সুন্দর কিন্তু সেই সৌন্দর্যটা আমরা উপভোগ করতে পারলাম না।কারণ সন্ধ্যা নামতেই আমরা পৌষ মেলা পিঠা উৎসবে রওনা করলাম।

আজ ভ্রমণ পর্বটি এখানে শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলা ভ্রমণ করে অনেক কিছু দেখার সুযোগ করে দিয়েছেন আমাদের। এর আগে বেশ কয়েকটা পর্ব আমি দেখেছি এবং সেখানেও অনেক কিছু জানার সুযোগ পেয়েছিলাম। আজকে আপনি আমাদের মাঝে ঠিক তেমনি আরেকটি পর্ব উপস্থাপন করেছেন দেখে ভালো লাগলো।

আপনি আজকে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলায় কাটানো আরও একটা পর্ব আমাদের মাঝে অনেক সুন্দর করে শেয়ার করেছেন। যেটা দেখে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। এখন অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী মুহূর্ত দেখার জন্য। আশা করি খুব তাড়াতাড়ি পরবর্তী পর্বটা সবার মাঝে শেয়ার করে নিবেন।

শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমনের ১১ তম পর্বে বিখ্যাত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সুন্দর একটি নিদর্শন ফুটিয়ে তুলেছেন। তা হচ্ছে কোপাই নদী। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এর লেখা , আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে, এই কবিতাটি তিনি যে এই কোপাই নদীর পাড়ে বসেই লিখেছিলেন সেটা জানতে পারলাম এবং নিজের চোখে ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আপনার পোস্টে দেখতে পেলাম। বিভিন্ন তথ্যের সাথে ফটোগ্রাফি গুলিও চমৎকার অ্যাড করেছেন ভাই। শান্তিনিকেতনে পৌষ মেলা ঘোরার পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

দেখতে দেখতে আপনার মেলায় ঘুরাঘুরি করার মুহূর্তের ১১ টা পর্ব পড়ে নিলাম। আমার কাছে তো খুবই ভালো লেগেছে এই পর্বটা। অনেক ভালো মুহূর্ত আপনি শান্তি নিকেতন মেলায় কাটিয়েছেন, এটা পোস্টগুলো দেখে এবং পড়েই বুঝতে পারছি। এখন অপেক্ষায় থাকলাম পরবর্তী পর্বটা পড়ার জন্য।