হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো' গল্পের একাদশ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
সুলতানা সব সময় আনমনা হয়ে বসে থাকতো আর সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতো বেঁচে থাকার জন্য। দিন যত যেতে থাকে ততই সুলতানা আরো বেশি অসুস্থ হতে শুরু করে। একদিন সুলতানা রাতুলকে রাতে বলে।
সুলতানা: তোমার সঙ্গে আমার কিছু কথা ছিল?
রাতুল: হ্যাঁ বলো কি বলতে চাও।
সুলতানা:তুমি আমাদের যেভাবে আগলে রেখেছো। তার জন্য কথাটা কিভাবে বলবো বুঝতে পারছি না।
রাতুল: তুমি নির্বিধায় বলতে পারো।
সুলতানা: আমি জানি কিছুদিন পর তোমাদের সবাইকে ছেড়ে আমি হয়তো অনেক দূরে চলে যাব। এতটাই দূরে চলে যাবো চাইলেও আর ফিরে আসতে পারবো না। আমার একটা ইচ্ছা ছিল ফাতেমার জন্মগ্রহণ করার পর থেকে আমি তার জন্মদিন পালন করতে পারিনি। ভেবেছিলাম একদিন খুব বড় করে আমার মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠান করব। কিন্তু সে ভাগ্য সৃষ্টিকর্তা আমাকে দেয়নি।
রাতুল: তুই কেন এত চিন্তা করছো অবশ্যই সে ইচ্ছা তোমার পূরণ হবে। তোমার ইচ্ছা পূরণ করার দায়িত্বটা আমার। ওর জন্মদিন কত তারিখে?
সুলতানা: আর মাত্র ৫ দিন পর ফাতেমার জন্মদিন।
রাতুল: তাইলে তুমি এত চিন্তা করছ কেন ওর জন্মদিন খুব ধুমধাম করেই পালন করব তুমি চিন্তা করো না।
সুলতানা: আমার মন বলছে সেই দিনটি হয়তো দেখতে পারবো না।
রাতুল: তুমি একদম বাজে কথা বলো না যাও রুমে যেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।
এক একটা দিন যেতে থাকে আর সুলতানা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে থাকে। পাঁচ দিন পর রাতুল খুব ধুমধাম করে ফাতেমার জন্মদিনের উৎসব পালন করে। আর ঠিক সেদিনই ফাতেমার শেষ দিনটি ছিল হয়তো। সেদিন সকাল থেকেই সুলতানা বিছানা ছেড়ে উঠতে পারছিল না। তার শরীর একদম ভেঙ্গে পড়েছিল। সন্ধ্যার সময় রাতুল বড় একটি কেক নিয়ে এসে হাজির হয়। অনেকেই ছিল সেই অনুষ্ঠানে সুইটি ও ছিল। রাতুল সুইটিকে সবটাই জানিয়ে ছিল সুইটি রাতুলকে বড় করে অনুষ্ঠান করার কথা বলে। সুলতানার উপর যে রাগ সুইটির ছিল সে রাগটা এখন ভালোবাসায় পরিণত হয়েছে। অফিস শেষ করে সুইটি তার কাছে এসে তার সাথে ভালো মন্দ দুটো কথা বলে তারপর সে বাড়িতে যেত। যাই হোক, সন্ধ্যার সময় ফাতেমার জন্মদিনের অনুষ্ঠান শুরু হল। সুলতানা কে সুইটি ধরে নিয়ে এসেছিল কারণ সে এতটাই দুর্বল হয়ে গিয়েছিল সে নিজে নিজে উঠতে পর্যন্ত পারছিল না। অনেক কষ্টে সুলতানা তার মেয়ের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নেয়। রাতুল এরপর ফাতেমাকে কেক কাটার কথা বলল ফাতেমা কেক কাটলো আর এক টুকরো কেক তার মায়ের গালে উঠিয়ে দিল। সুলতানার তখন দু চোখের জল চলে এলো। এরপর সুলতানা ও ফাতেমাকে এক টুকরো কেক তার গালে তুলে দিল। তুলে দিতেই সুলতানা মাটিতে পড়ে গেল।
সুলতানা বুঝতে পারে তার পৃথিবীতে বেঁচে থাকার সময় ফুরিয়ে এসেছে। মাটিতে পড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাতুল দৌড়ে এসে তার মাথাটা রাতুলের কোলের উপর রাখে সুইটি তার হাতটি ধরে রাখে। সুলতানা রাতুলকে বলে রাতুল আমার সময় শেষ। আমি জানি, তুমি আমাকে খুব ভালবাসতে এবং এখনো তুমি আমাকে খুব ভালবাসো। তোমাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। আমিও তোমাকে ভালবাসতাম কিন্তু বলতে পারেনি। পারলে তুমি আমাকে ক্ষমা করে দিও। আমি মরে যাওয়ার পর আমার মেয়েটা অনাথ হয়ে যাবে তুমি ওকে ফেলে দিও না। তুমি আমাকে কথা দাও তুমি আমার মেয়েকে মানুষের মতন মানুষ করবে। তুমি ছাড়া এই পৃথিবীতে ওর আর কেউ নেই। কথা দাও রাতুল তুমি আমার মেয়েকে মানুষরে মতন মানুষ করবে? রাতুলের দু চোখ বেয়ে জল পড়তে থাকে আর বলতে থাকে। আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমি তোমার মেয়েকে মানুষের মতন মানুষ করব। আমি ওকে আমার নিজের মেয়ের মতোই মানুষ করব। সুলতানা বলে আমি আজ নিশ্চিন্ত হলাম আমার মেয়েটা একটা আশ্রয় পেল। সুলতানা বড় বড় নিশ্বাস নিতে থাকে আর সুইটিকে বলে। আমি জানি, আমার উপর তোমার খুব রাগ। রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক ভালোবাসার মানুষটিকে অন্যের সঙ্গে দেখলে খুব রাগ হয়। আমি জানি, তুমি রাতুল কে খুব ভালোবাসো আর রাতুল ও তোমাকে ভালোবাসে। তোমরা দুজনে আমার মেয়েটাকে দেখে রেখো। কথাগুলো বলতে বলতে হঠাৎ সুলতানা নিস্তব্ধ হয়ে যায়। রাতুল ফাতেমাকে জড়িয়ে ধরে তাকে সান্ত্বনা দিতে থাকে। কিন্তু সে বুঝতে পেরেছে তার মা তাকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে গিয়েছে। সেখান থেকে আর তার মা ফিরে আসবে না। তাকে আর আদর করবে না, তাকে আর গালে তুলে খাইয়ে দেবে না, কোলের উপর মাথা রাখিয়া ঘুম পাড়িয়ে দিবে না। যেহেতু সুলতানা মুসলমান ছিল যার কারণে সে তার ধর্মের নিয়মকানুন মেনে তাকে দাফন করে। সেখানে সবাই সাদা পোশাক পড়ে সুলতানার জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করে। সে সবকিছু তার ধর্ম অনুযায়ী করে যাতে সুলতানার আত্মা শান্তি পায়।
শুধু তোমাকেই ভালোবাসবো গল্পের একাদশ পর্বটা অনেক সুন্দর করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। কিন্তু এই গল্পের একাদশ পর্ব পড়ে আমার কাছে অনেক বেশি খারাপ লেগেছে। বিশেষ করে সুলতানার মৃত্যুর খবরটা শুনে চোখে জল চলে আসলো। ফাতেমা এই ছোট বয়সে তার মাকে হারিয়ে ফেলেছে। এখন শুধু রাতুল রয়েছে তার জীবনে। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার কাছে এই গল্পটা পড়তে অনেক ভালো লাগে। এর আগের পর্বগুলো আমার পড়া হয়েছে। তবে এই গল্পটা পড়ে আমার কাছে অনেক খারাপ লেগেছে। সুলতানা এরকম ভাবে মারা গিয়েছে এটা ভাবতেই খারাপ লাগছে। রাতুল এখন ফাতেমার দায়িত্ব নিয়েছে এটা দেখে খুব ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আপনার লেখা প্রতিটা গল্পই আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। এই গল্পের বেশ কিছু পর্ব পড়েছিলাম। আজ একাদশ পর্ব পড়ে যেমন ভালো লেগেছে তেমনি খারাপ ও লেগেছে। অবশেষে সুলতানা তার মেয়েকে রাতুলের হাতে দিয়ে মারা গেলো। এটা খুবই দুঃখজনক ব্যাপার। ফাতেমার জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে। এই ধরনের গল্প পড়তে খুব ভালো লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর গল্প শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সময় করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য এবং আপনার মূল্যবান কথাগুলো আমার সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দেখতে দেখতে আপনি শুধু তোমাকে ভালোবাসবো গল্পের অনেকগুলো পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। একাদশ পর্বটি অনেক সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন। গল্পটি পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। তবে এর আগের পর্বগুলো ও আমার তেমন একটা পড়া হয়নি তবে চেষ্টা করব সবগুলো পর্ব পড়ে নেওয়া। ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ আপনাকে সময় করে আমার পোস্টটি করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit