হ্যালো বন্ধুরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি অবহেলা গল্পের চতুর্থ পর্বটি আপনাদের সবার মাঝে উপস্থাপন করছি।আশা করি,গল্পটি সবার ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।
এমন করে কিছুটা দিন চলে যাওয়ার পর হঠাৎ একদিন পায়েল ও দুর্জয়ের দেখা হয়। পায়েলকে দেখি দুর্জয় ডাক দিয়ে বলে।
দুর্জয়: কেমন আছো পায়েল?
পায়েল: সে খবর আপনার শুনে কোন লাভ আছে কি।
দুর্জয়: পায়েল তুমি আমাকে না বুঝেই তুমি আমার উপরে রাগ করে আছো।
পায়েল: হ্যাঁ আপনি তো মহান ব্যক্তি আপনাকে তো আমি বুঝতে পারি না।
দুর্জয়: সেদিনের জন্য আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি।
পায়েল: আমি সেদিনের ঘটনা থেকে কিছু মনে করিনি। সেদিন আমারও ভুল ছিল না বুঝে না জেনে আপনাকে ভালোবাসার কথা বলাটা।
দুর্জয়: সেদিনের পর থেকে এখন পর্যন্ত আমি শুধু তোমার কথাই ভাবছি।
পায়েল: আপনি তো আমাকে ভালোই বাসেনা তাহলে আমার কথা কেন চিন্তা করছেন?
দুর্জয়: আমিও তোমাকে ভালোবাসি কিন্তু বলতে সাহস পায়নি।
পায়েল না বোঝার ভাব করে রাগ করে বলে।
পায়েল: ঠিক আছে দুর্জয় বাবু যেদিন আপনার সাহস হবে সেদিনই আমাকে বলবেন ভালোবাসার কথাটা আজ আমি আসি।
দুর্জয়: এখনই চলে যাবে? আর একটু সময় থাকো না।
পায়েল: হ্যাঁ এখনি চলে যেতে হবে মা আমার জন্য অপেক্ষা করছে দেরি হলে মা চিন্তা করবে।
দুর্জয়: ঠিক আছে সাবধানে যাবে।
পায়েল ও চলে যায় আর দুর্জয় ও বাড়িতে ফিরে যায়। দুর্জয় বাড়িতে যে দেখে তার বাবা খুবই অসুস্থ হয়ে পড়েছে। দুর্জয় তার মায়ের কাছে জিজ্ঞাস করে কিভাবে কি হলো। তার মা উত্তর দেয় তুই যখন বাড়ি থেকে গিয়েছিস তার একটু পরেই তোর বাবা বুকে ব্যথা ওঠে। আমি ভেবেছি হয়তো গ্যাসের ব্যথা হবে ওষুধ খাইয়েছি তারপরেও ব্যাথাটা কমছে না। মা তুমি চিন্তা করো না আমি এক্ষুনি বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাচ্ছি। দুর্জয় তার বাবাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেলে ডাক্তার দেখে বলে রোগীর খুব খারাপ অবস্থা। আপনি যত দ্রুত পারেন ভর্তি করিয়ে দিন। দুর্জয় কোন কথা চিন্তা না করে তার বাবাকে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেয়। ডাক্তার তার বাবাকে দেখে দুজনকে বলে উনি হার্ট অ্যাটাক করেছেন। তবে ভয়ের কোন কারণ নেই সুস্থ হয়ে যাবেন কিন্তু ওনাকে পরিশ্রম করতে দেওয়া যাবে না সব সময় বিশ্রামে থাকতে হবে। কিছুদিন পর দুর্জয় তার বাবাকে নিয়ে বাড়িতে চলে আসে। আর এখন সংসারে যাবতীয় দায়িত্ব এসে পরে দুর্জয়ের উপর।
অনেকদিন হয়ে গিয়েছে দুর্জয় ঠিক মতন ডিউটিতে চায় না। তাই দুর্জয় কে পায়েলের বাবা ডেকে বলে কি হয়েছে দুর্জয় ইদানিং ঠিকমতন তুমি ডিউটি পালন করছো না আমাকে বল কি হয়েছে। স্যার আমার বাবা হার্ট অ্যাটাক করেছিল এখন আমার সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। স্যার একটা কথা বলব আপনার তো এত লোকের সাথে ওঠাবসা তাদেরকে বলে আমাকে একটা চাকরি দেওয়া যায় না। ঠিক আছে দুর্জয়, আমি একটু কথা বলে দেখি কিছু করতে পারি কিনা তোমার জন্য।
কিছুদিন পর পায়েলের বাবা দুর্জয়কে ডেকে বলে একটা চাকরির সন্ধান আমি পেয়েছি আর ওখানে গেলেই তোমার চাকরিটা কনফার্ম হয়ে যাবে। কথাটি শোনার পর দরজায় খুবই খুশি হয়ে যায় ধন্যবাদ জানিয়ে তার ডিউটি করতে চলে যায়। পরের দিন সকালে সে তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে পায়েলের বাবার কথামতো সেই অফিসে চলে যায়। যেই সে অবাক হয়ে যায় কারণ এত বড় অফিস সে আগে পরে কখনো দেখিনি আর এখানে যে কাজ করতে পারবে এটাও সে কল্পনা করতে পারেনি। যাই হোক অফিসে যাওয়ার পর অফিসের স্যারের সাথে কথা বলে। অফিসের স্যার তার সব কাগজ পাতি দেখে তার চাকরিটা কনফার্ম করে দেয় আর বেতনও খুব মোটা অংকের। দুর্জয় চাকরিটি কনফার্ম হওয়ার কথা শুনে আনন্দে আত্মহারা হয়ে পড়ে সঙ্গে সঙ্গে মিষ্টি কিনে নিয়ে পায়েলের বাবার কাছে চলে যায়। পায়েলের বাবার কাছে যেতেই দেখতে পায় পায়েল ওখানে রয়েছে কিন্তু কিছু না মনে করেই পায়েলের বাবাকে প্রণাম করে তার বাবাকে মিষ্টি খাওয়ায় পায়েল কেউ খেতে দেয়।
পায়েল ও মিষ্টি করে তাকে বলে।কী ব্যাপার দুর্জয় বাবু আজ এত খুশি খুশি লাগছে আপনাকে? আমি চাকরি পেয়েছি তাই এত খুশি।
দুর্জয় দেরি না করে পায়েলের বাবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পড়ল ঠিক তখনই পাইল বেরিয়ে পড়ল তার সাথে। একটু দূরে যেতেই পায়েল দুর্জয় কে ডাক দিয়ে বলে।
পায়েল: ওই একটু দাঁড়ান এত দ্রুত কোথায় যাচ্ছেন?
দুর্জয়: এখন শোনার সময় নেই বাড়িতে যেয়ে মা-বাবাকে জানাতে হবে আমার চাকরির কথা।
পায়েল: এখন তো আপনি চাকরি পেয়ে গেছেন এখন তার কোন ভয় নেই এবার তো বলুন আপনি আমাকে ভালবাসেন।
(দুর্জয় কোন কথাই বলতে পারেনা)
পায়েল: চুপ করে আছেন কেন কিছু তো বলুন আপনি কি আমাকে ভালোবাসেন না।
দুর্জয়: হ্যাঁ আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি তোমাকে দূর থেকে ভালবেসে যাব আজীবন আমরা কোনদিন একই ছাদের নিচে বসবাস করতে পারবো না।
পায়েল: কিন্তু কেন পারব না কিসের এত প্রবলেম আপনার?
দুর্জয়: পায়েল যখন আমার খুব খারাপ অবস্থা তখন তোমার বাবা আমাকে চাকরি দেয়। আর যখন আমার বাবার হার্ট অ্যাটাক হলো সংসারে যাবতীয় চাপ যখন আমার মাথার উপর আসলো। তখনো তোমার বাবা আমাকে এই চাকরিটা পাইয়ে দিয়েছে। আর এখন আমি তার মেয়ের সাথে প্রেম করবো সে যদি মেনে না নিতে পারে তাহলে আমি তার কাছে অপরাধী হয়ে যাব। এর থেকে তুমি এক কাজ কর তুমি আমাকে ভুলে যাও আমি কোনদিনও তোমার বাবার সামনে যে বলতে পারব না তোমার কথা।
কথাগুলো শোনার পর পায়েল কান্না করতে থাকে আর ওখান থেকে সোজা বাড়িতে চলে আসে। দুর্জয় ও বাড়িতে যেয়ে তার মা-বাবাকে তার চাকরির খবরটা দেয় তার মা-বাবা খুব খুশি হয়। দুর্জয় প্রতিদিন চাকরিতে যায় এবং মন দিয়ে কাজগুলো করে থাকে তার বসও তার কাজের প্রতি খুশি হয়ে তাকে প্রমোশন করিয়ে দেয়। দেখতে দেখতে প্রায় তিন থেকে চার বছর হয়ে যায়। এখন দুর্জয় ভালো টাকা ইনকাম করে বাড়িতে বিল্ডিং দিয়েছে একটি গাড়ি আছে এখন তার কোন অভাব নেই। হঠাৎ একদিন দুর্জয় পায়েলের বাড়িতে যায়। বাড়িতে যেয়ে দেখতে পায় পায়েলের মা রয়েছে। দুর্জয় পায়েলের মাকে প্রণাম করে বলে কেমন আছেন কাকিমা। হ্যাঁ বাবা ভালো আছি তুমি তো আজকাল আমাদের এখানে আসোই না চাকরি পেয়ে আমাদেরকে ভুলে গেছো। না কাকিমা আপনাদেরকে কিভাবে ভুলে যাই আচ্ছা কাকিমা পায়েল কোথায়? পায়েল বিদেশ পড়াশোনা করতে গিয়েছে কবে ফিরবে তাও জানিনা। কথাটি শোনার পর দুর্জয়ের খুব মন খারাপ হয়ে যায়। দুর্জয় পায়েলের মায়ের কাছ থেকে পায়েলের নাম্বারটি নেয় আর বিদায় জানিয়ে সেখান থেকে চলে আসে।
অবহেলা গল্পটির একটা পর্ব আমি পড়েছিলাম। তবে এর আগের পর্বটা পড়া হয়নি। তবে আজকের এই পর্বটা পড়ে অনেক বেশি ভালো লেগেছে। দুর্জয় অনেক বড় একটা চাকরি পেয়েছে, তা ও পায়েলের বাবার জন্য এটা জেনে ভালো লাগলো। এবং কি দুর্জয় অনেক টাকার মালিক হয়ে গিয়েছে, এখন তাদের কোন কিছুর অভাব নেই, এটা জেনে আরো বেশি ভালো লেগেছে। পায়েলের মার কাছ থেকে পায়েলের নাম্বার নিয়ে দুর্জয় বিদায় নিয়েছিল। এরপরে কি হয়েছিল তা জানার জন্য পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় থাকলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দিদি খুব শীঘ্রই বাকিটা পর্ব সবার মাঝে উপস্থাপন করব আশা করি সবার ভালো লাগবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দুর্জয় পায়েলকে ভালোবাসার শর্তেও সে তাকে আপন করে নিতে চায় না। সে শুধু চায় তাকে দূর থেকে ভালোবেসে যেতে। আসলে যেহেতু পায়েলের বাবা দুর্জয় এর খারাপ সময়ে তার পাশে দাঁড়িয়ে তাকে চাকরি দিয়েছিল, তাই সে তার বাবার সাথে বেইমানি করতে চায় না। যদি দুর্জয় পায়েলের বাবার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়, তাহলে তিনি তাকে অপরাধী মনে করবে, যদি তাদের সম্পর্ক মেনে না নেয় তখন। কিন্তু অবশেষে দুর্জয় প্রতিষ্ঠিত হতে পেরেছে, এই বিষয়টা ভাবতেই ভালো লাগছে। দেখা যাক পরবর্তীতে তাদের ভালোবাসা কি হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ দাদা সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য এবং আপনার মূল্যবান কিছু কথা আমাকে শেয়ার করার জন্য আবারও আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit