'তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই' গল্পের তৃতীয় পর্ব।

in hive-129948 •  5 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে 'তোমাকে ছোঁয়ার সাধ্য আমার নেই' গল্পের তৃতীয় পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পের তৃতীয় পর্বটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-vjapratama-935824.jpg

সোর্স


মেয়েটি যখন রাজুকে চড় মারে তখন রাজু প্রচন্ড রাগান্বিত হয়ে মেয়েকে পাল্টা চড় মারতে যায়। তখন রাজু দেখতে পায় সেদিন রাতে বিপদে পড়া মেয়েটিকে। সঙ্গে সঙ্গে রাজু হাতটি নামিয়ে জোড় হাত করে মেয়েটির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে। তখন রাজুর বন্ধুরা অবাক হয়ে যায় কারন আজ পর্যন্ত রাজু কারো কাছে মাথা নত করেনি। রাজুর বন্ধু রাজুকে বলে কি হয়েছে তোর?একটা মেয়ের কাছে মাথা নত করছিস? তখন রাজু বলে, সে সব কথা আমি তোদের পরে বলবো। মেয়েটি রাজুকে বলে, কি বেপার আমি আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন কেন? রাজু বলে আপনি আমাকে চিনতে পারেনি মনে হয়। কিছু দিন আগে রাতে কিছু ছিনতাইকারী আপনাকে আক্রমণ করে। আপনি আমার কাছে সাহায্য চেয়ে ছিলেন কিন্তু আমি আপনাকে সাহায্য করতে পারেনি। সেদিনের পর থেকে আপনাকে আমি অনেক খুঁজেছি কিন্তু কোথাও পায়নি। কারণ আমি আপনার ঠিকানা জানি না। সেই রাতে আমি যদি আপনাকে সাহায্য করতাম তাহলে আজ আপনার এত বড় ক্ষতি হত না। প্লিজ আমাকে ক্ষমা করবেন।


মেয়েটি বলে, সেদিন রাতে আমার যে ক্ষতি হয়েছে সে ক্ষতি আমার যে কোন ভাবে পূরণ হয়ে যাবে। কিন্তু আপনি যে নিজেকে দিনের পর দিন ক্ষতি করছেন সে ক্ষতি কিভাবে পূরণ করবেন। আপনার কথা ঠিক বুঝতে পারলাম না। আপনি যে দিনের পর দিন নেশা করে নিজেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিচ্ছেন এটা কি আপনি ভেবেছেন কখনো? রাজু বলে, কে বলেছে আমি নেশা করি? আপনাকে দেখলেই বোঝা যায় আপনি নেশা করেন। রাজু বলে, সেদিন রাতে আপনার যে ক্ষতি হয়েছে সেটা আমি পূরণ করে দিব। মেয়েটি বলে, তার কোন প্রয়োজন হবে না। রাজু বলে, আমার জন্য সেদিন আপনার ক্ষতি হয়েছে তাই আমার দায়িত্ব সেই ক্ষতিটা পূরণ করা। মেয়েটি বলে, আমি জানি আপনি বড়লোকের ছেলে আপনার কাছে এটা কোন বিষয় না। আমি চাইনা আপনি আমাকে কোন সাহায্য করেন। রাজু বলে, আমি আপনাকে সাহায্য করলে এমন কি হয়ে যাবে? মেয়েটি বলে, আগে ভালো মানুষ হয়ে উঠুন নিজে কিছু উপার্জন করুন তারপর অন্যদের সাহায্য করুন। বাবার হোটেলে খেয়ে বাবার টাকায় সাহায্য করবেন না। যখন নিজে ইনকাম করে লোকদের সাহায্য করবেন তখন আপনার মনের ভিতর শান্তি অনুভব করবেন। আর যদি পারেন তাহলে রাস্তায় ঘাটে মেয়েদের বিরক্ত করা ছেড়ে দিন।


এরপর মেয়েটি সেখান থেকে চলে যায়। মেয়েটির কথা শুনে রাজু কিছুটা সময় নীরবে বসে থাকে। তখন তার বন্ধুরা রাজুকে বলে, চল নেশা করতে যাই। তখন রাজু বলে, তোরা যা আমার ইচ্ছা করছে না। বন্ধুরা বলে, কি এমন হয়েছে যার জন্য তুই আমাদের সঙ্গে যাবি না। রাজু বলে, কি হয়েছে জানিনা কিন্তু মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে আমার কিছুই ভালো লাগছে না। বন্ধুরা বলে, মেয়েটি তোকে কথার জালে ফাঁসিয়েছে। কোন মেয়ে কি বলেছে তার জন্য নেশা করবে না। চল তো নেশা করার সময় হয়ে গেছে। রাজুকে তখন তার বন্ধুরা হাত ধরে উঠাতে যায়। তখন রাজু তাদের হাত সরিয়ে দিয়ে বলে, আমাকে জোর করিস না তোরা যা। রাজুর বন্ধুরা নেশা করতে চলে যায়। আর রাজু সেদিন নেশা করতে না যে সোজা বাড়িতে চলে যায়। রাজু বিছানায় শুয়ে শুয়ে মেয়েটির কথা চিন্তা করতে থাকে। তার প্রত্যেকটি কথা ভাবতে থাকে।


রাজুর মা হঠাৎ করে রাজুর রুমে এসে অবাক হয়ে যায়। তার মা কখনো ভাবতে পারিনি তার ছেলে এত সকালে বাড়িতে ফিরবে। রাজুর রুমে এসে রাজুকে বলে, রাজু তুই কি অসুস্থ? রাজু বলে, কোথায় নাতো আমি তো একেবারেই ঠিক আছি। মা বলে, তুই তো এত সকালে বাড়িতে আসিস না তাহলে আজকে কি হয়েছে আমাকে বল। রাজু বলে, আজ বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ইচ্ছা করেনি তাই বাড়িতে চলে এসেছি। মা আমার খুব ক্ষুধা লেগেছে কিছু খেতে দাও। তার মা আরো অবাক হয়ে যায়। কারণ অনেক বছর কেটে গিয়েছে রাজু তার মায়ের কাছে খাবার চায় না। তাই আজ যখন রাজু তার মায়ের কাছে খাবার চাইল তখন মা একটু অবাক হয়ে গেল। তার মা রাজুকে বলে, আমি এখনই তোর জন্য কিছু খাবার নিয়ে আসছি। সঙ্গে সঙ্গে তার বা খাবার আনতে চলে যায়। কিছুক্ষণ পর তার মা খাবার নিয়ে আসে রাজুর জন্য। রাজু মাকে বলে, মা অনেকদিন হয়েছে তুমি আমাকে খাইয়ে দাও না। আজ আমাকে একটু খাইয়ে দেবে? মার চোখে জল চলে আসে। মা বলে, অবশ্যই দিব আজ কতদিন পর তুই আমার হাতে খেতে চাইলি। আর আমি সেটি না দিয়ে কি পারি। এরপর রাজুর মা নিজ হাতে তাকে খাইয়ে দেয়। আর রাজু ছোট বাচ্চার মত খেতে থাকে।

আজ গল্পের পর্বটি এখানে শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এই গল্পের তৃতীয় পর্ব টা আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে। এখন দেখছি রাজু মেয়েটাকে চিনতে পেরেছে। আর মেয়েটা তাকে ভালো হয়ে যাওয়ার জন্য বলেছে। আর মেয়েটার সাথে দেখা হওয়ার পর রাজু নিজের বন্ধুদের সাথে আড্ডা অথবা নেশা করার জন্যও যায়নি। তার মায়ের কাছে খাবার চেয়েছে এবং নিজের হাতে খাইয়ে দেওয়ার জন্য বলেছে, এসব কিছু আসলেই অবাক করার মত বিষয় ছিল। এখন দেখা যাক পরবর্তীতে কি হবে।

আপনার গল্পের তৃতীয় পর্ব পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া কিছু কিছু মানুষ বন্ধুদের জন্যই খারাপ হয়।তবে রাজু দেখা যাচ্ছে মেয়েটির কথা শোনে ভালো হয়ে গিয়েছে। যাইহোক দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।

আপনি আজকে খুব সুন্দরভাবে এই গল্পের তৃতীয় পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। আমার কাছে আজকের এই পর্বটাও খুব ভালো লেগেছে পড়তে। মেয়েটার কথাগুলো রাজু এখন সারাক্ষণ ভাবছে, আর বন্ধুদের সাথে আড্ডাও দেয় নাই। এগুলো দেখে খুব ভালো লাগে। নিজের মায়ের হাতে খাবার খেয়েছে এখন, যেটা দেখে তার মাও খুব খুশি হয়েছে। অপেক্ষায় থাকলাম এখন পরবর্তীতে কি হয় এটা দেখার জন্য।

রাজু’র জীবনে তো দেখছি পরিবর্তন আসতে শুরু করেছে। আর রাজু’র এই পরিবর্তন হচ্ছে শুধুমাত্র সেই মেয়েটির জন্য। আশা করি এই মেয়ে রাজুকে একেবারে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে পারবে। যাইহোক গল্পটা পড়ে ভীষণ ভালো লাগছে দাদা। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়।