নরেশ ডাকাত গল্পের পঞ্চম পর্ব

in hive-129948 •  10 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,

আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে গল্পের পঞ্চম পর্ব উপস্থাপন করছি। আশা করি, গল্পটি আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-jason-negonga-195925990-11491665 (1).jpg

সোর্স


মহারাজের একটি কন্যা ছিল নাম ছিল অনুপমা। অনুপমা দেখতে খুবই সুন্দর ছিল সে সবসময় সাধারণ জীবন যাপন করতে পছন্দ করত। কিন্তু মহারাজ সেটি পছন্দ করত না কারণ সে রাজকুমারী। রাজকুমারীর সাধারণ জীবন যাপন করা মোটেও শোভা পায় না। তাকে বারবার বলা সত্বেও অনুপমা মহারাজকে বলে, তার সাধারণভাবেই চলাফেরা করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ হয়। রাজকুমারী হওয়ার কারণে তাকে সব সময় রাজপ্রাসাদেই থাকতে হতো সে বাইরে কোথাও একা একা যেতে পারত না। কিন্তু অনুপমার সব সময় রাজ প্রাসাদের বাইরে যেতে মন চাইতো। অনেক সৈন্য থাকার কারণে সে ইচ্ছাটা অনুপমার পূরণ হয়নি। সে অনেকবার চেষ্টাও করেছে বাইরে যাওয়ার জন্য কিন্তু সে ব্যর্থ হয়েছে। রাজকুমারীর একটা ভালো বন্ধু ছিল নাম ছিল পিউ। পিউ সব সময় রাজকুমারীর সঙ্গেই থাকতো। একদিন রাজকুমারী পিউকে বলে, তুই আমার একটা কথা রাখবি। পিউ বলে, কি এমন কথা তুমি বলো রাজকুমারী। যেভাবে হোক আমাকে রাজ প্রাসাদের একটু বাইরে নিয়ে যাবি আমার না খুব বাইরে যেতে ইচ্ছা করে। পিউ বলে, এটা তো কোনদিনও সম্ভব নয় রাজকুমারী। রাজকুমারী বলে, আমি কোন কথা শুনতে চাই না তুই যেভাবে হোক আমাকে বাইরে নিয়ে চল। আমি কথা দিচ্ছি কেউ জানতে পারবে না আমরা দ্রুতই ফিরে আসবো। পিউ বলে, রাজকুমারী মহারাজ যদি কোন ভাবে জানতে পারে তাহলে আমার গর্দান নিয়ে নেবে। তুমি আমাকে ক্ষমা কর আমি মহারাজের অনুমতি ছাড়া আমি তোমাকে বাইরে নিয়ে যেতে পারবো না। রাজকুমারী অনুপমা বলে, তুই আমার বন্ধ না তুই যদি আমার বন্ধু হতি তাহলে অবশ্যই তুই আমার কথা ফেলতে পারতি না।


কথাটি বলার পর রাজকুমারী জানালার পাশে যে মুখ অন্ধকার করে দাঁড়িয়ে থাকে। পিউ কাছে যে রাজকুমারীকে বলে, রাজকুমারী আর মন খারাপ করতে হবে না আমি তোমাকে বাইরে নিয়ে যাব। ঈশ্বর না করুক মহারাজ জানো না জানতে পারে আর জানলে না জানি আমার কি হবে। রাজকুমারী পিউকে জড়িয়ে ধরে বলে তুই সত্যি বলছিস আমাকে তুই বাইরে নিয়ে যাবি। পিউ বলে, হ্যাঁ আমি তোমাকে বাইরে নিয়ে যাব কিন্তু খুব অল্প সময়ের জন্য। রাজপ্রাসাদের পিছন থেকে একটি গোপন রাস্তা ছিল সেখান থেকে বাইরে যাওয়া যেত। সেখান থেকে রাজকুমারী এবং পিউ তারা দুজনে রাজপ্রাসাদের বাইরে বের হয়। বাইরে বের হতেই রাজকুমারী আনন্দে লাফালাফি করতে থাকে। পিউ তখন রাজকুমারীকে বলে চিৎকার করো না আশেপাশে পাহারাদার রয়েছে। তোমার চিৎকার তারা শুনতে পারলে তারা এখানে পৌঁছে যাবে এরপর আমাদের বন্দি করে আবারো রাজপ্রাসাদের নিয়ে যাবে। এরপর তারা দুজনে ছদ্মবেশে গ্রামের ভেতর ঘুরতে থাকে। ঘুরতে ঘুরতে রাজকুমারী দেখতে পায় সেই কুয়াশা জঙ্গল। রাজকুমারী পিউকে বলে, চল জঙ্গল থেকে ঘুরে আসি। তখন পিউ বলে, আমাদের জঙ্গলে যাওয়া ঠিক হবে না এই জঙ্গলে হিংস্র পশুরা থাকতে পারে যেকোনো সময় আমাদের আক্রমণ করতে পারে। রাজকুমারী বলে, এত কেন চিন্তা করছিস কিছুই হবে না চল। তখন পিউ বলে, তুমি আমাকে বলেছ বাইরে নিয়ে যেতে আমি তোমাকে রাজপ্রাসাদের বাইরে নিয়ে এসেছি। অনেকটা সময় পার হয়ে গিয়েছে এখন আমাদের রাজপ্রাসাদে ফিরে যাওয়া উচিত তা না হলে মহারাজ জানতে পেয়ে যাবে।


রাজকুমারী বলে, এই প্রথম আমি রাজপ্রাসাদের বাইরে এসেছি এত দ্রুত আমি রাজপ্রাসাদে যেতে চাই না। বাবা যদি জানতে পারে আমি বাবাকে বুঝিয়ে বলব তুই চিন্তা করিস না চল না জঙ্গল থেকে ঘুরে আসি। এই বলে রাজকুমারী জঙ্গলের ভেতর প্রবেশ করে। জঙ্গলের ভেতর ঘুরতে ঘুরতে তারা পথ হারিয়ে ফেলে এমনটি সময় একটি হিংস্র পশু তাদের উপর আক্রমণ করে। তারা দুজনেই পশুটির হাত থেকে বাঁচার জন্য দৌড়াতে থাকে। আর চিৎকার করতে থাকে বাঁচাও আমাদের বাঁচাও। রাজকুমারী একটি ডালে বেধে মাটিতে পড়ে যায় তখন সেই হিংস্র পশুটি ঝাঁপিয়ে পড়ে রাজকুমারীর উপর। ঠিক তখন এক ব্যক্তি লাফিয়ে পড়ে পশুটির উপর। সে ব্যক্তির সঙ্গে আর পশুর সঙ্গে লড়াই শুরু হয়। পশুটির সঙ্গে লড়াই করতে করতে পশুটি সেই ব্যক্তির বুকে থাবা দেয়। তখন ওই ব্যক্তি হাত দিয়ে পশুটির মুখের চোয়াল ধরে গায়ের সমস্ত জোর দিয়ে পশুটির ঘাড় ভেঙে ফেলে সঙ্গে সঙ্গে পশুটি মারা যায়। তখন ওই ব্যক্তিটি রাজকুমারীকে বলে আপনারা কেন এসেছেন এই জঙ্গলে? কি আপনাদের পরিচয়? তখন পিউ ওই ব্যক্তিকে বলে, এই হল আমাদের রাজকুমারী ছদ্মবেশে আমরা বের হয়েছিলাম। ঘুরতে ঘুরতে আমরা জঙ্গলে প্রবেশ করি কিন্তু জঙ্গল থেকে বেরোনোর রাস্তা আমরা হারিয়ে ফেলি। আর ঠিক তখনই আমাদের উপর এই পশুটি আক্রমণ করে আজ আপনি না থাকলে আজ হয়তো রাজকুমারীকে হারাতে হত। তখন ওই ব্যক্তিটি বলে, আপনি রাজকুমারী আপনার একা একা চলাফেরা উচিত নয়। আমি আপনাকে এই জঙ্গল থেকে বের হবার জন্য সাহায্য করছি। আপনারা দ্রুত এই জঙ্গল থেকে বেরিয়ে যান। তখন রাজকুমারী সেই ব্যক্তিকে বলে, আপনার বুক থেকে অনেক রক্ত বের হচ্ছে? তখন ঐ ব্যক্তিটি বলে, এটা ঠিক হয়ে যাবে আপনারা চলুন। এরপর জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়ে রাজকুমারী। রাজকুমারী জঙ্গল থেকে বেরিয়ে সেই ব্যক্তিকে বলে আপনি কি এই জঙ্গলেই থাকেন? কি নাম আপনার? ব্যক্তিটির রাগান্বিত কন্ঠে রাজকুমারীকে বলে আপনারা এখন আসতে পারেন আর কখনো এই জঙ্গলে প্রবেশ করবেন না।

আজ গল্পের পর্বটি এখানেই শেষ করছি।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!