শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণ পর্ব: ৬

in hive-129948 •  4 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলা ভ্রমণের ষষ্ঠ পর্বটি উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের সবার ভালো লাগবে। তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।



শান্তিনিকেতনে সুন্দর সুন্দর ঘোড়ার জায়গা রয়েছে। এইসব জায়গাগুলো ঘুরতে এক দুই দিনে সম্ভব নয় বেশ কয়েকদিন লেগে যাবে। যাইহোক, এখানকার লোকের মুখে জানতে পারলাম আরো একটি বৌদ্ধ মূর্তি রয়েছে সেটি এর থেকে অনেক বড়। আমরা দেরি না করে সেখানকার উদ্দেশ্যে রওনা করলাম। আমরা যেখানে যাচ্ছি তার নাম হচ্ছে বোলপুর। এখানে আপনাদের আরেকটি কথা জানিয়ে রাখি বোলপুরে একটি সৃজনী শিল্প গ্রাম রয়েছে। আসলে এটি একটি পার্ক এই পার্কে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে গ্রাম্য পরিবেশ। যেহেতু আমাদের এই জায়গাটিতে প্রথম যাওয়া তার জন্য আকর্ষণটা বেশি ছিল। আর লোকের মুখে এত প্রশংসা শুনেছি তার জন্য আমাদের ইচ্ছাশক্তিটা আর বেড়ে গেল। বোলপুর যেতে আমাদের ৪৫ মিনিট সময় লেগেছিল। এখানে আরেকটি সমস্যা হয়েছিল লোকের মুখে শুনলে লোকে আমাদের আমরা যে বৌদ্ধ প্রতিমা টা দেখে এসেছি সেটির কথাই বলছে। এখানে আমরা একটু অবাক হয়ে গেলাম অনেকেই বলছে দুইটি বৌদ্ধ প্রতিমা রয়েছে কিন্তু আমরা দেখতে পেয়েছি একটি। এখানেও কিন্তু আদিবাসী গ্রাম রয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম সেখানে হয়তো বৌদ্ধ প্রতিমা দেখতে পাব। লোকের মুখে শুনতে শুনতে আমরা পৌঁছে গেলাম সেই আদিবাসী গ্রামে। এখানকার আদিবাসীদের ও বাড়িঘর মাটির তৈরি আর এই গ্রামটি অনেক বড়। গ্রামের আঁকাবাঁকা পথ বেয়ে আমরা যেতে লাগলাম কিন্তু কোথাও সেই বৌদ্ধ প্রতিমা দেখতে পেলাম না।


পরবর্তীতে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আমরা সৃজনী শিল্প গ্রামে যাব। এই পার্কটি অনেকটা দূরে ছিল না পাঁচ মিনিটের পথ ছিল কিন্তু আমাদের সময় লেগেছিল একটু বেশি। আগেই বলেছি অচেনা পথ তাই আমাদের একটু সময়ও লেগেছিল। আর এই পৌষ মেলার সময়টিতে এখানে অনেক লোকের আনাগোনা হয়ে থাকে। যার কারণে এখানে পুলিশ প্রশাসন রাস্তায় ব্রাকেট দিয়ে রেখেছে। যাই হোক, একটু সময় লাগলেও আমরা পৌঁছে গেলাম পার্কে। পার্কের ভেতরে প্রবেশ করতে গেলে ৩০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে তারপর ভেতরে প্রবেশ করতে হবে। আমরা টিকিট কাটার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে পড়লাম ভেতরে কিন্তু অনেক লোকের আনাগোনা দেখতে পেলাম। এখানে একটি চমৎকার ঘটনা ঘটেছিল আমরা এত সময় ধরে যে বৌদ্ধ প্রতিমা দেখার জন্য খুঁজছিলাম। সেটি কিন্তু এই পার্কেই দেখতে পেলাম। পরবর্তীতে চিন্তা করে দেখলাম আসলে দুইটি বৌদ্ধ প্রতিমার কথা বলা হয়েছে সেটি হল সোনাঝুরি হাটের ওখানে একটি আরেকটি বোলপুরে। যাইহোক, আমরা দুজনে ৬০ টাকা দিয়ে টিকিট কেটে ভেতরে প্রবেশ করলাম। ভিতরে প্রবেশ করতেই কিছু শিল্প কার্যগুলো দেখতে পেলাম। মাটির তৈরি খড়ের তৈরি কিছু পুতুল এখানে দেখতে পেলাম এবং তার সঙ্গে নকশা। সৃজনী শিল্প গ্রামের প্রথম ছোঁয়া কিন্তু গেট থেকেই শুরু হয়েছে। এই পুতুলগুলো দেখে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে যাচ্ছিলো। ছোটবেলায় মাটি দিয়ে এমন অনেক পুতুল তৈরি করে খেলা করেছি। গেট থেকে ভেতরে একটু যেতেই শুনতে পেলাম বাউল গান হচ্ছে। আমি গান প্রিয় মানুষ কোথাও গান হলে আমি সেখানে দৌড়ে চলে যাই। গান শুনতে এবং গাইতে দুটোই কিন্তু আমার খুবই ভালো লাগে। দাদাকে বললাম তুমি এখানে থাকতে লাগো আমি একটু গান শুনে আসি। এই বলে চলে গেলাম গান শুনতে। দেখতে পেলাম একটি ব্যক্তি দোতারা বাজিয়ে বাউল গান পরিবেশন করছে। ওনার এই গান শোনার জন্য অনেকেই এখানে ভিড় করেছে। কেউ খুশি হয়ে তাকে টাকা দিচ্ছে কেউবা খাবার কিনে দিচ্ছে। আর এই পৌষ মেলায় এমন বাউল শিল্পী অনেক জায়গায় দেখা যায়। তারা কিন্তু এই মেলাতে গান পরিবেশন করেন। সেখানকার সেই মুহূর্তের কিছু ফটো আমি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করছি। আশা করি, আপনাদের ভালো লাগবে।

IMG20241225130648.jpg

IMG20241225130017.jpg

IMG20241225130805.jpg

IMG20241225130634.jpg

IMG20241225130623.jpg

IMG20241225130812.jpg

IMG20241225130752.jpg

IMG20241225130731.jpg

IMG20241225130214.jpg

IMG20241225130931.jpg

IMG20241225130907.jpg

IMG20241225131421.jpg

IMG20241225131356.jpg
ক্যামেরা পরিচিতি: oppo
ক্যামেরা মডেল: oppo A53s 5G
ক্যামেরা দৈর্ঘ্য:3.37mm
তারিখ:২৫.১২.২০২৪
সময়:১২.০০মিনিট
স্থান:শান্তিনিকেতন

আজ এখানে শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

শান্তিনিকেতনে পৌষ মেলা ভ্রমণ করেছেন এবং সেখান থেকে বেশ দারুন দারুন ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার এই ফটোগ্রাফি আর ঘুরাঘুরি সব মিলে যেন আমাদের অনেক কিছু দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। অনেক অনেক ভালো লাগলো চমৎকার এই পৌষ মেলা ভ্রমন পোস্ট দেখে।

কষ্ট করে বোলপুরে গেলেও, শেষ পর্যন্ত সেখানকার পার্কে ঢুকে যে বৌদ্ধ প্রতিমা দেখতে পেয়েছেন, এতে করে কষ্টটা একেবারে সার্থক হয়েছে। যাইহোক ফটোগ্রাফি গুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো দাদা। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

অনেক সুন্দর করে শান্তিনিকেতন পৌষ মেলায় ভ্রমণ করার ষষ্ঠ পর্ব সবার মধ্যে ভাগ করে নিলেন আপনি। আপনার প্রতিটা পর্বের মতো এই পর্বটা অনেক সুন্দর ছিল। আপনি ভ্রমন করার পাশাপাশি খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। যেগুলো শেয়ার করলেন দেখে অনেক বেশি ভালো লাগলো।