"দুষ্টু প্রেমের গল্প" শেষ পর্ব

in hive-129948 •  2 years ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন ?আশা করি, আপনারা সবাই ভাল আছেন সুস্থ আছেন।আজ আমি "দুষ্টু প্রেমের গল্প"শেষ পর্বটি সবার মাঝে উপস্থাপন করছি আশা করি সবার ভালো লাগবে।

pexels-shubham-sharma-2912692.jpg সোর্স



নয়ন রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে রুমে এসে ঘুমিয়ে পড়ল সেদিন আর বৃষ্টির সাথে কথা হলো না। সকাল হতেই বৃষ্টি নয়ন কে ফোন দিল। বিছানার কাছেই ফোনটি ছিল নয়ন ফোনটি রিসিভ করে বলল।


নয়ন: শুভ সকাল বৃষ্টি।
বৃষ্টি :শুভ সকাল ।তুমি আমার সাথে একটু দেখা করতে পারবে পার্কে?
নয়ন: হ্যাঁ পারব কিন্তু কেন?
বৃষ্টি: তোমায় বলেছিলাম না আমি একজনকে ভালোবাসি আজ সে আসছে তাই তোমার সাথে পরিচয় করিয়ে দেব তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো।
নয়ন :আচ্ছা ঠিক আছে আমি তৈরি হয়ে আসছি।


এই বলেই ফোনটি কেটে দিল। তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নয়ন বাইকটি বের করে পার্কের দিকে গেল। পার্কের ভেতরে ঢুকে অনেকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করছিল কিন্তু কোথাও বৃষ্টিতে খুঁজে পেল না। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ সে দেখতে পায় লাল রঙের শাড়ি পড়ে একটি মেয়ে একা একা বেঞ্চে বসে আছে। মেয়েটিকে দেখে নয়ন একটু অবাক হয়ে যায় কারণ যে শাড়িটি বৃষ্টির জন্মদিনে বৃষ্টিকে দিয়েছিল সেই একই রঙের শাড়ি পড়ে মেয়েটি বসে আছে। নয়ন মেয়েটির কাছে যেতেই দেখতে পায় সে আর কেউ নয় তার ভালোবাসা বৃষ্টি বসে আছে। বৃষ্টির কাছে যেয়ে বৃষ্টির পাশে বসে পড়ে আর বলে।


নয়ন: আজ শাড়িটি পড়ে তোমায় খুব সুন্দর লাগছে।
বৃষ্টি :ধন্যবাদ।
নয়ন আচ্ছা তোমার সেই ভালোবাসার মানুষটি কোথায়?
বৃষ্টি: এই গাধা তুমি কি বোঝনা আমি শুধু তোমাকেই ভালবাসি।
নয়ন: কি সত্যিই তুমি আমাকে ভালোবাসো?
বৃষ্টি: হ্যাঁ ভালোবাসি তুমি বুঝতে পারো না।
নয়ন: আমি কি করে বুঝবো। তুমিই তো কাল বললে তোমার ভালোবাসার মানুষটির সাথে দেখা করাবে।
বৃষ্টি:হ্যাঁ বলেছিলাম তোমাকে রাগানোর জন্য ।আচ্ছা তোমার হাতে কি হয়েছে?
নয়ন: তেমন কিছু না খেলতে যে পড়ে গেছিলাম।
বৃষ্টি: আমার বিশ্বাস হয়না তুমি কি করেছো সত্যি করে বলো।
নয়ন :তুমি যখন কাল বললে তুমি একজনকে ভালোবাসো কথাটি শুনে আমার খুব খারাপ লাগছিল মনে হচ্ছিল এ জীবন শেষ করে ফেলব। আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনি হাত কেটে ফেলেছি ।
বৃষ্টি: এই পাগল তোমার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আমি বাঁচবো কি করে আর কোনদিন যেন এমনটা করা না হয়।
নয়ন: আমি কথা দিচ্ছি আর কোনদিন এমনটা করবো না।
বৃষ্টি: মনে থাকে যেন। এই শোনো না সকাল থেকে কিছু খাইনি আমার খুব ক্ষুদা লেগেছে চলনা কিছু খেয়ে আসি।
নয়ন: হ্যাঁ আমারও খুব ক্ষুদা লেগেছে চলো।


এই বলে তারা দুজনে খাবার খেতে চলে গেল খাবার শেষ করে আরো কিছু সময় দুজনে একসাথে পার্কে ঘোরাঘুরি করলো। তাদের প্রেমের সম্পর্ক দীর্ঘ এক বছর পণ্য হলো হঠাৎ একদিন বৃষ্টি নয়ন কে ফোন দিয়ে বলে।


বৃষ্টি :নয়ন আমাকে বাঁচাও?
নয়ন: কি হয়েছে তোমার কোথায় আছো তুমি?
বৃষ্টি: আমি বাসার একটি রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছি তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো।
নয়ন:আমি আসছি।


এই বলে নয়ন ফোনটি কেটে দিল আর তাড়াতাড়ি বাইক নিয়ে বৃষ্টির বাড়ির দিকে রওনা হলো কিছু পথ যেতেই দেখে বৃষ্টি রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছে আর কান্না করছে। বৃষ্টিকে দেখতে পেয়ে বাইক থামিয়ে দিল বৃষ্টি নয়ন কে দেখতে পেয়ে দৌড়ে এসে বাইকের পিছনে বসে আর বলতে লাগলো তাড়াতাড়ি চলো তা না হলে আমাদের ওরা ধরে ফেলবে। নয়ন কিছুই বুঝতে পারে না বৃষ্টির কথা শুনে সে বাইক চালাতে শুরু করে। বাইকের লুকিং গ্লাসের দিকে তাকিয়ে দেখে পেছন থেকে বৃষ্টির বাবা-মা গাড়িতে করে তাদের ধরার চেষ্টা করছে। বৃষ্টি বলে তাড়াতাড়ি চালাও নাহলে বাবা-মা ধরে ফেলবে। তারপর বাইকের গতি বাড়িয়ে দিল কিছুদূর যেতেই তারা স্টেশনে পৌঁছে গেল। স্টেশনে যে তারা দ্রুত একটি ট্রেনে উঠে পড়ল। ট্রেনে উঠেই তারা একটি সিটে পাশাপাশি বসলো আর তখন নয়ন বৃষ্টি কে বলল।


নয়ন: আচ্ছা আমাকে খুলে বলতো কি হয়েছে তোমার?
বৃষ্টি: তোমার সাথে কথা শেষ করে আমি রুমে যাচ্ছিলাম।দেখি মা-বাবা এখনো জেগে আছে তারা কি জানো বলছে আমি একটু ভালো করে শুনতেই শুনতে পেলাম। তারা আমার আসল মা-বাবা না তারা আমার কাকা কাকিমা। ছোটবেলায় আমার মা বাবা দুজনেই মারা যায় তারা ছোটবেলা থেকে আমাকে লালন পালন করে বড় করেছে শুধু আমার সম্পত্তির লোভের জন্য। তারা বলছিল কাল সকালে আমাকে একটি দলিলে স্বাক্ষর করতে হবে আর যদি না করি তাহলে আমাকে মেরেও ফেলতে পারে তাই আমি ভয় পেয়ে তোমাকে ফোন দেই।
নয়ন :তুমি ভয় পেয়ো না আমি তোমার সঙ্গে সব সময় থাকবো সব সময় তোমাকে চোখে চোখে রাখব কারণ আমি যে তোমাকে বড্ড বেশি ভালোবাসি।


কথা বলতে বলতে বৃষ্টি নয়নের কাঁধে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়ল নয়নও ঘুমিয়ে পড়ল। এক ঘন্টা পর ট্রেন টি থেমে যায় আর হালকা ঝাকুনিতে তাদের দুজনের ঘুম ভেঙ্গে যায় । তারা দুজনে ট্রেন থেকে নেমে প্রথমে একটি মন্দিরে যে বিবাহ করে নেয় ।এভাবেই কাটতে থাকে তাদের বাকি দিনগুলো আর এর মাঝেই বৃষ্টির মা-বাবাকেও পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এখন তারা সুখের শান্তিতে বসবাস করছে।

আজ এখানেই শেষ করছি ।সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। নয়ন এবং বৃষ্টির মিল হয়েছে শুনে খুব ভালো লাগলো। আসলে বৃষ্টির জানতো না তার মা-বাবা দুজন ছোটকালে মারা গেল। কাকা কাকি তাকে মানুষ করেছে সম্পত্তির লোভে। যাক শেষ পর্যন্ত তাদেরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে শুনে ভালোই লাগলো। সুন্দর করে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

ধন্যবাদ আপু

আপনার দুষ্ট প্রেমের গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো। নয়ন এবং বৃষ্টি তাদের প্রেম হয়েছে। আসলে কিছু কিছু প্রেম আসে মুখ দিয়ে বলতে পারে না। একটা জিনিস খুব খারাপ লাগলো বৃষ্টির মা-বাবা বলে যাদেরকে জানতো। তারা আসলে তার মা বাবা না সম্পত্তির লোভে বৃষ্টিকে লালন পালন করেছে। এবং সম্পত্তি নিয়ে বৃষ্টিকে মেরে ফেলা মত চিন্তা করল। নয়ন এবং বৃষ্টির মিল হয়েছে শুনে অনেক ভালো লাগলো। খুব চমৎকার একটি গল্প আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।

ধন্যবাদ আপনাকে সময় করে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য এবং আপনার কিছু মূল্যবান কথা আমাকে শেয়ার করার জন্য