"জীবনসঙ্গী গল্প শেষ পর্ব"

in hive-129948 •  last year 

হ্যালো বন্ধুরা,

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি,আপনারা সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের মাঝে জীবনসঙ্গী গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আশা করি, আপনাদের গল্পটি ভালো লাগবে তাই বিলম্ব না করে আমার পোস্ট লেখাটি শুরু করছি।

pexels-katerina-holmes-5911018 (1).jpgসোর্স


ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দুদিন পর হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয় কুন্তলকে। এত বড় সমস্যা হয়ে যাওয়ার পরেও কুন্তল একটা বারের জন্য ও কথা বলেনি প্রিয়াঙ্কার সাথে তার যেটা সব সময় বজায় রেখে। কিন্তু প্রিয়াঙ্কা তেমনটা করতে পারেনি কারণ হাজার হলে ও কুন্তল তার স্বামী। প্রিয়াঙ্কা সব সময় তাকে সময় মতন ওষুধ খাওয়ান, স্নান করানো,খাবার খাওয়ানো সবগুলোই করতো। একদিন প্রিয়াঙ্কা কুন্তলকে ওষুধ খাওয়াতে গেল কিছুতেই কুন্তল ঔষধ খাচ্ছিল না। তখন প্রিয়াঙ্কা জোর করে গালের ভেতর ঔষধ দিয়ে দেয়। বাধ্য হয়ে কঙ্কালের ঔষধ খেতে হয়। এমন করে প্রতিনিয়ত প্রিয়াঙ্কা জোর করেই কুন্তলকে ঔষধ খাওয়ায়।


দেখতে দেখতে তিন মাস হয়ে গেল এখন কুন্তল অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছে। কুন্তল একদিন ডাক্তারের কাছে গেল। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পর ডাক্তার কুন্তলকে দেখে বলল ।সে টাইম এর আগেই অনেকটাই সুস্থ হয়ে উঠেছে। ডাক্তার আরো বললো ভাগ্য করে এমন একটা বউ পেয়েছে। যার সেবায় আপনি অতি দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠতে পেরেছেন। আপনি যখন অসুস্থ ছিলেন আপনার স্ত্রী হাসপাতালে সারাটা রাত আপনাকে জেগে জেগে পাহারা দিয়েছে ।আপনার কখন কি হয় সেটা সব সময় সে খেয়াল রেখেছে। আসলে আপনি সত্যিই ভাগ্যবান।


কথাগুলো শোনার পর থেকে কুন্তলের প্রিয়াঙ্কার প্রতি ভালোবাসা বেড়ে যায়। সে ভাবতে থাকে আসলেই সে এতদিন ভুল করেছে তাকে সে অনেক কষ্ট দিয়েছে। সে বুঝতে পারে এমন বিপদের সময় সে যদি তার পাশে এসে না দাঁড়াতো তাহলে আজ হয়তো সে পৃথিবীর মুখ আর দেখতে পেতো না। কুন্তল ভাবে বাড়ি ফিরে প্রিয়াঙ্কার কাছে ভুল স্বীকার করবে আর ক্ষমা চাইবে। কিন্তু বাড়ি ফিরে এসে দেখে প্রিয়াঙ্কা বাড়িতে নেই। তার মা-বাবার কাছে জিজ্ঞাসা করে সে কোথায় গিয়েছে। কুন্তলের প্রশ্নের উত্তরে মা বাবা বলে প্রিয়াঙ্কা তার বাবার বাড়িতে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে কুন্তল প্রিয়াঙ্কাকে ফোন করে কিন্তু ফোন ধরছিল না প্রিয়াঙ্কা। বিষয়টি কুন্তল বুঝতে পারে সে কেন ধরছে না সে আর দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে রওনা হয় প্রিয়াঙ্কার বাড়ির উদ্দেশ্যে।


কিছু সময়ের মধ্যে কুন্তল প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে পৌঁছে কলিং বেল বাজায়। প্রিয়াঙ্কা দরজা খুলতেই দেখে কুন্তল দাঁড়িয়ে আছে। কুন্তল কে দেখে প্রিয়াঙ্কা একটু অবাক হয়ে যায়। প্রিয়াঙ্কা দরজা খুলতেই কুন্তল তার হাত জড়িয়ে ধরে বলে।
কুন্তল: প্রিয়াঙ্কা তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও? আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি তুমি ফিরে চলো।
প্রিয়াঙ্কা: একি করছো তুমি কেন ক্ষমা চাচ্ছ আমার কাছে।এমনটা করো না আমার পাপ হবে।
কুন্তল: তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও? আমি তোমার সাথে খুব অন্যায় করেছি।
প্রিয়াঙ্কা: তুমি কোন অন্যায় করোনি।
কুন্তল: হ্যাঁ আমি অন্যায় করেছি। আমি তোমার বিশ্বাস রাখতে পারেনি। আমি তোমাকে কষ্ট দিয়েছি প্রতিনিয়ত কিন্তু তারপরও তুমি আমাকে ভালবেসে গিয়েছো কিন্তু আমি এতটাই বোকা যে তোমার ভালোবাসা বুঝতে পারেনি। তুমি এরপরেও কোনদিন আমাকে ছেড়ে চলে যাওনি। আজ আমি আমার ভুল বুঝতে পেরেছি তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও আর ফিরে চলো তোমার সাজানো ঘরে।
প্রিয়াঙ্কা: ঠিক আছে আমি তোমাকে ক্ষমা করে দিলাম। তুমি কি ভেবেছিলে আমি তোমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছি?
কুন্তল: হ্যাঁ ডাক্তারের কাছ থেকে বাড়িতে এসে দেখি তুমি নেই।মা-বাবা বলল তুমি এখানে চলে এসেছো। আমি ভাবলাম তুমি হয়তো আমার উপর রাগ করে চলে এসেছো।
প্রিয়াঙ্কা: হা হা হা হা তুমি অনেক বোকা। তোমার সম্পর্কে এত কিছু জানার পরেও আমি যখন তোমাকে ছেড়ে যায়নি তখন। তুমি কি করে ভাবতে পারলে যে এখন আমি তোমাকে ছেড়ে চলে আসব। তুমি আমাকে ভালবাসতে নাই পারো কিন্তু আমি তোমাকে আমার প্রাণের থেকে বেশি ভালোবাসি।
কুন্তল: আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি তুমি আর আমার কাছ থেকে এমন ব্যবহার কোনদিনই পাবে না। আমি বুঝতে পেরেছি তুমি একমাত্র আমার ভালোবাসা।

সেদিনের পর থেকে তারা সুখেই সংসার করছে আর একে অপরের সুখ দুঃখের সাথী হচ্ছে। শেষে একটা কথাই বলতে চাই আসলে সত্যিকারের ভালোবাসা কোনদিন ছেড়ে যায় না। আজ এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই প্রার্থনা করি।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এই গল্পের প্রতিটি পর্ব পড়ে খুবই ভালো লেগেছে ভাই। আসলেই সত্যিকারের ভালোবাসার মৃত্যু নেই। প্রিয়াংকার মতো বউ একমাত্র যারা ভাগ্যবান তারাই পায়। অবশেষে কুন্তল নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে এবং তারা সুখের সংসার করছে, এটা জেনে ভীষণ ভালো লাগলো। গল্পের হ্যাপি এন্ডিং হয়েছে, তাই বেশি ভালো লেগেছে। যাইহোক ছয় পর্বের এতো সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে। আশা করি সামনে আরো সুন্দর সুন্দর গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করবেন।

ধন্যবাদ দাদা আপনাকে সময় করে আমার পোস্টটি দেখার জন্য এবং আপনার মহামূল্যবান কিছু কথা আমাকে শেয়ার করার জন্য।