ভালবাসা?

in hive-129948 •  2 years ago 

ইমরানের সাথে শা/ রীরিক স/ ম্পর্ক করার দুই মাস পর নিহিতা বুঝতে পারলো তার মাঝে একটি জীবনের অস্তিত্ব বড় হচ্ছে । সে আরও সিউর হলো প্রেগন্যান্সির পজিটিভ রিপোর্ট দেখে ।
ইমরানের সাথে বেশ কয়েকবার শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হয়েছে নিহিতা । রিলেশনের এক বছর না হতেই , শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য ইমরান বেশ তোরজোর শুরু করে । রিলেশন টিকিয়ে রাখতে ইমরানের আবদার পূরণ করতে বাধ্য হয় নিহিতা ।
ঈদানীং ইমরানের ফোন বন্ধ থাকে । ঠিক মতো নিহিতার সাথে যোগাযোগ করে না । নিহিতা কলেজ, প্রাইভেটে যেতে পারে না লজ্জায় । দিন দিন নিহিতার শারীরিক পরিবর্তন স্পষ্ট পরিলক্ষিত হচ্ছে । নিহিতা ঢিলেঢোলা পোশাক পড়ে যতটুকু সম্ভব ব‍্যপারটা অন‍্যদের থেকে আড়াল করার চেষ্টা করে । তবুও সেদিন নিহিতার রুমমেট হঠাৎ জিজ্ঞেস করলো
-কিরে নিহিতা , তোর চেহারা এমন হয়ে যাচ্ছে কেন ! আর এত শুকিয়ে যাচ্ছিস যে ! খালা বলল তুই নাকি ঠিক মতো খাওয়া দাওয়াও করছিস না ? আবার কলেজেও নাকি যাচ্ছিস না ! কোনো সমস্যা ?
নিহিতা কৃত্রিম হাসি দিয়ে বলল
-না আপু, তেমন কিছু না । এই তো আগামীকাল থেকে কলেজে যাবো ।
পড়াশোনার সুবাদে ম‍্যাসে থাকে নিহিতা । ফ‍্যামিলি থেকে দূরে । ফ‍্যামিলির সাথে থাকলে হয়তো সবাই এতদিন সব কিছু জেনে যেত । ফ‍্যামিলির নজর থেকে বাঁচলেও রুমমেটদের নজর এড়িয়ে যেতে পারছে না ।
রাতে নিহিতা ইমরানকে কল দিল । রিং হচ্ছে কিন্তু ইমরান ফোন রিসিভ করছে না ।
বেশ কয়েকবার কল দেওয়ার পর ইমরান কলটা রিসিভ করলো ।
নিহিতা কেঁদে দিয়ে বলল
-তুমি আমার সাথে এমন করছো কেন ? আমি কি দোষ করেছি !
ইমরান বিরক্ত গলায় বলল
-দেখ নিহিতা , এমন বাচ্চাদের মতো নেকামি কান্না আমার একদম পছন্দ না । কান্না থামাও নয়তো ফোন রাখলাম !
আর শোনো , এতবার কল দিবা না । আমার জাস্ট বিরক্ত লাগে ।
-শোনো ইমরান , তোমার সাথে আমার একটা জরূরী কথা আছে !
-এত না প‍্যাচিয়ে বলে ফেল !
-আমি প্রেগনেন্ট !
ইমরান অবাক হয়ে বসা থেকে দাঁড়িয়ে পড়লো । ইমরান রাগন্বিত হয়ে বলল
-দেখ নিহিতা ! ফাইজলামি একদম ভালো লাগছে না । আমি ফোন রাখছি ।
-না প্লিজ !
-তাছাড়া কি করবো ! তোমার এই বকবকানি শুনবো বসে বসে !
-ইমরান আমি সিরিয়াস বলছি ।
ইমরান শান্ত হয়ে বলল
-আচ্ছা , আগামীকাল কলেজ গেটে দেখা কর । তখন সব কথা হবে ।
নিহিতা ফোনটা পাশে রেখে বিছানায় মুখ গুজে কাঁদতে শুরু করলো । তারপর দৌড়ে ওয়াশ রুমে গেল । কারণ রুমমেটরা যখন তখন চলে আসতে পারে । আর কান্না করা দেখলে তো হাজার প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে । তার চেয়ে বরং ওয়াশ রুমে নিজের আবেগটা চোখের পানির মাধ্যমে ঝড়ায় । আমরা কষ্টের কারণ গুলো অন‍্যর মাধ্যমে পাই । কিন্তু কষ্ট গুলো আমরা নিজেরা তৈরী করি । কোনো কষ্টের মূহুর্তে আমরা চাইলেই কষ্টের বাইরে থাকতে পারি । কিন্তু না ! ছোট ছোট কষ্ট গুলোকে আমরা বড় করে ফেলি । কষ্ট গুলোকে খুব ভাবি । আমরা আসলে কষ্টের মাঝে থাকতে পছন্দ করি । নিহিতা ওয়াশ রুম থেকে এসে দেখলো রুমমেটরা সবাই রুমে এসে হাজির । একজন বলল
-কিরে এত সময় ওয়াশ রুমে কি করছিলি ? তোর ফোনটা বেশ কয়েকবার রিং হয়ে কেটে গেল ।
নিহিতা দৌড়ে যেয়ে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো মা ফোন করেছে । নিহিতা ভেবেছিল ইমরানের কল হবে । আশাহত হয়ে মাকে কল দিল ।
-কিরে কখন থেকে কল দিচ্ছি , ধরছিস না কেন ?
-মা , একটু ব‍্যস্ত ছিলাম বুঝতে পারিনি ।
-আচ্ছা ঠিক আছে । শোন তুই যত তাড়াতাড়ি পারিস বাড়ি চলে আয় । তোর বড় বোনের বিয়ে ঠিক হয়েছে ।
নিহিতা চমকে উঠলো ! এই অবস্থায় কোনো মতেই বাড়িতে যাওয়া যাবে না । তাহলে এক কেলেঙ্কারি কান্ড হয়ে যাবে ।
-কিরে কথা বলিস না কেন ?
-মা , আমার তো পরীক্ষা চলছে , এখন বাড়ি যাওয়া সম্ভব না । আপুর বিয়ে কবে ?
-সামনের মাসের শেষের দিকে ।
-আমি তাহলে বিয়ের কয়েকদিন আগে আসবো ‌ ।
-আচ্ছা , সাবধানে থাকিস ।
নিহিতা ফোনে কথা বলা শেষ করতেই রুমমেট অবনি বলল
-কিরে নিহিতা ! তোর তো এখন কোনো এক্সাম নাই । তাহলে মায়ের কাছে মিথ্যা বললি কেন ?
নিহিতা কোনো কথা বলছে না দেখে , অবনি নিহিতার বেডে এসে হাত ধরে বলল
-কি হয়েছে তোর ! বল আমায় !
অবনি আরও অবাক হলো নিহিতার চোখে জল দেখে । অবনি নিহিতার দুই সেমিস্টার উপরে পরে । নিহিতার সাথে বেশ ভালো সম্পর্ক অবনির ।
-কিরে কথা বলছিস না কেন ?
নিহিতা চোখের পানি মুছে বলল
-আপু একটু ছাদে যাবেন ?
অবনি আর নিহিতা ছাদে বসে মনোমুগ্ধকর পরিবেশ উপভোগ করছে । পরিবেশটা মনোমুগ্ধকর হলেও নিহিতার কাছে তার বিপরীত ।
অবনি বলল
-কি রে কিছু বলছিস না কেন ?
-আপু একটা ঘটনা ঘটে গেছে !
-আরে না বললে বুঝবো কিভাবে আর সলভই বা কিভাবে করবো ।
-আপু আমি প্রেগনেন্ট !
নিহিতার মুখে কথাটা শুনে অবনি অবাকের আরও একধাপ উপরে পৌঁছালো ।
অবনি অবাক হয়ে বলল
-কি বলিস এসব ! কিভাবে সম্ভব !
-আপনাকে ইমরানের কথা বলেছিলাম না ! শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য ও বেশ কয়েকদিন ফোর্স করছিল । এক পর্যায়ে রিলেশন ব্রেকআপ করতে চাইছিল । কিন্তু আপু আমি তো ওকে সত্যি খুব ভালোবাসতাম । তাই রিলেশন কন্টিনিউ করতে !
নিহিতা হু হু করে কেঁদে দিল । আর কিছু বলতে পারছে না । অবনি বলল
-ইমরান জানে তোর এই অবস্থার কথা ?
নিহিতা মাথা দুলিয়ে বোঝালো হ‍্যা !
-ইমরান কি বলল ?
-ও আগামীকাল দেখা করতে বলেছে । আর আমি জানি ও আমাদের রিলেশনের ব‍্যাপারে এত সিরিয়াস না । বিষয়টি পরে বুঝতে পারলাম । ইমরান ইদানীং আমার সাথে তেমন যোগাযোগ করে না । আপু আমি এখন কি করবো বুঝতে পারছি না । আমার মনে হচ্ছে আমি পাগল হয়ে যাচ্ছি ।
নিহিতা অবনিকে জড়িয়ে ধরে আবার কেঁদে দিল । অবনি বলল
-দেখ একদম কাঁদবি না । আমি আছি তো তোর পাশে । সব ঠিক হবে ।
পরের দিন নিহিতা ইমরানের জন্য অপেক্ষা করছে । প্রায় ঘন্টা খানেক দেরি করে ইমরান আসলো ।
-দেখ নিহিতা , গতকাল রাতের কথা যদি সত্যি হয় তাহলে এখানে আমার কিছু করার নেই । ভুল দুজনেরই ।
নিহিতা বলল
-তাহলে চলো বিয়ে করে ফেলি !
-হোয়াট ! এখন বিয়ে করে তোমাকে খাওয়াবো কি ! আর আমার বাসা থেকে কখনোই এটা মেনে নেবে না । সব চেয়ে বড় কথা হচ্ছে , সামনে আমার পুরো লাইফ পড়ে আছে । এখন বিয়ে করে আমি আমার ভবিষ্যত নষ্ট করতে পারবো না ।
-এসব তুমি কি বলছো ! তুমি তো আমাকে ভালোবাসো , আর আমার মাঝে যে তোমার অস্তিত্ব বড় হচ্ছে সেটার কি কোনো ফিলিংস নেই তোমার কাছে ?
-এসব আবেগি কথা বাদ দাও । এবরশন করে নাও । যা খরচ হয় আমি দিব ।
-ইমরান প্লিজ আমাকে বুঝতে চেষ্টা কর ! এখন যদি তোমাকে আমার পাশে না পাই তাহলে আমি সত্যিই অসহায় হয়ে যাবো ।
-আচ্ছা , আপাতত ম‍্যাসে যাও । আমি পরে বিষয়টি ভেবে বলবো ! আর আমি নিজেই ডাক্তারের সাথে কথা বলবো ।
দুপুরে নিহিতা ম‍্যাসে ফিরে অবনিকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই যাচ্ছে । কোনো কথা বলছে না । কেউ বলছে নিহিতার ভূতে ধরেছে , জ্বিনে ভর করেছে ইত্যাদি । কিন্তু অবনি বুঝতে পারছে যে ইমরানের সাথে ওর খারাপ কিছু হয়েছে । যার কারণে নিহিতা সেটা মেনে নিতে পারছে না ।
রুম থেকে সবাই চলে গেলে অবনি বলল
-কি হয়েছে বলবি তো ! ইমরান কি বলেছে ?
নিহিতা চোখের পানি মুছে বলল
-ও আসলে আমাকে ভালোবাসে না আপু । ও এবরশন করতে বলছে ।
-শোন , ভুল যেহেতু করেছিস , এখন আর এইটা ছাড়া উপায় নেই ।
-নিহিতা , ইমরানের ছবি আছে তোর কাছে ?
-হ‍্যা , কিন্তু কেন ?
-দেখি বের কর , ছেলেটাকে দেখবো !
নিহিতার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে স্কিনে তাকাতেই অবনির দুইবার হার্ট মিস হওয়ার উপক্রম হলো , খুব পরিচিত মুখটা দেখে ! এটা কিভাবে সম্ভব ! না এটা কিছুতেই হতে পারে না ।
চলবে...
.

পর্ব এক-
পরবর্তী পার্টের জন্য লাইক ও ফলো করুন।

FB_IMG_1679146477746.jpg
(Photo taken from Facebook)

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

গাইডলাইন না জেনে যেথায় সেথায় যেভাবে সেভাবে পোস্ট করা ঠিক নয়। এতে করে নিজের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। আশা করছি বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আপনার পোস্টের লেখাগুলো শতভাগই চৌর্যবৃত্তি করা।
এ ধরনের পোস্ট আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে রাখা হয় না। নতুন ইউজার হওয়ার কারণে শুধুমাত্র আপনার পোস্ট Mute করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আবার একই ধরনের কাজ করলে আপনার একাউন্ট কমিউনিটি থেকে ব্যান করা হবে।

কমিউনিটির নিয়মাবলী ভালোভাবে পড়ে নিন
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22

যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।

Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493

Source:

https://www.facebook.com/Story.2115/posts/673847494530231