প্রিয় মানুষটির ক্যান্সার

in hive-129948 •  3 months ago 

আসসালামু আলাইকুম
আমি @sajjadsohan from 🇧🇩.

৩রা আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।

১৮ই সেপ্টেম্বর, বুধবার ।



মার বাংলা ব্লগের সকল সদস্যকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি, আজকে নিজের কিছু মনের কথায় লিখে দেয়ার চেষ্টা করব, নিজের অনুভূতি প্রকাশ করার চেষ্টা করব।


প্রিয় মানুষটির ক্যান্সার

Beige Torn Paper Vision Board Life Goals Photo Collage.jpg


কি অবস্থা সবাই কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালই আছেন, তবে আমি খুব একটা ভালো নেই। আমার সবচেয়ে প্রিয় মানুষ আমার নানী, ছোটবেলায় অ্যাক্সিডেন্টে যখন আমার সবকিছুই উলটপালট হয়ে যায় তখন আমার দায়িত্ব নিয়েছিল আমার নানী, ধরতে গেলে তিনি আমার কাছে আমার বাবা-মা। ছোট থেকে এ পর্যন্ত বড় করে তোলা কিংবা এখন পর্যন্ত আমি যেই অবস্থানে রয়েছে তার সম্পূর্ণ ক্রেডিট আমার নানা-নানির, এ দুটো মানুষ আমার জীবনে খুবই ইম্পরট্যান্ট, আছে তাদের মধ্যেই একজন কঠিন একটা রোগে ভুগছে।


IMG_20240914_152436.jpg

IMG_20240914_152454.jpg


তা নিয়ে অনেকদিন যাবত পেটে ব্যথা বলতো, তবে তিনি নিজেই খুব একটা গুরুত্ব দিত না। যখন ব্যথাটা তীব্র হয়ে যায় তখন তিনি আমাদের কাছে প্রকাশ করে। আমাদের এলাকার স্বনামধন্য একজন ডক্টর যাকে এলাকার সবাই অন্ধ বিশ্বাস করে। আমার ফ্যামিলি সবাই তার ভক্ত প্রথমে তার কাছেই চাই, তিনি কিছু ঔষধ দিলেন, তাতেও যখন ঠিক না হল বারবার তার শরণাপন্ন হলাম।


IMG_20240914_152431.jpg

IMG_20240914_152507.jpg


তিনি শেখ রাসেল হসপিটাল এর পরিচালক, এজন্য তার প্রতি পুরো এলাকাবাসীর একটা অন্যরকম অগাধ বিশ্বাস। প্রায় অনেকগুলো টেস্ট করতে দিলেন যত ধরনের টেস্টের কথা বলা হয়েছে প্রায় সবই করা হলো তিনি প্রত্যেকটা রিপোর্ট দেখেই একই জবাব দিলেন রোগীর কিছুই হয়নি, রোগীর অবস্থা খারাপ দাঁড়াতে পারছে না বসতে পারছেনা কিন্তু ডঃ গোলাম কিবরিয়া কিছুই হয়নি বলে উড়িয়ে দেয়। তারপর জোরপূর্বক নানীকে নিয়ে গেলাম অন্য ডাক্তারের কাছে, যখন অন্য ডাক্তারদের কাছে নিয়ে গেলাম তখন আমাদের চোখ আকাশে।


IMG_20240911_111809.jpg

IMG_20240911_111813.jpg


সব ফ্যাক্টরি বললেন আপনার ক্যান্সার হয়েছে, শব্দটা শোনার পর মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়ল, আমি ঘাবড়ে গেলাম কারণ এই মানুষটা আমার জন্য এতটা করেছে আমার এতটা কাছের তার অসুস্থতা আমার খুবই চিন্তার বিষয়। ক্রস চেক করালাম দুই তিন জন ডাক্তার একই কথা বলল এবং দ্রুত অপারেশন করতে বলল। সরকারি হাসপাতালে সিট পেতে অনেকটা সময় লেগে যাবে বলল ডাক্তাররা। তাই প্রাইভেটেই অপারেশন করতে হবে সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম। অপারেশনের আগেও এতগুলো টেস্ট দেয়া হয়েছে সেগুলো রিপোর্ট পেতে অনেকটা সময় লেগে গেল। এর মধ্যেই রোগী অনেকটা দুর্বল হয়ে পড়ে, শেষে অপারেশনের আরেকটা আগেই হসপিটালে ভর্তি করে দিলাম।


আমি সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলাম, খাওয়া-দাওয়া ঘুম বন্ধু-বান্ধব সবকিছু থেকে ডিসকানেক্ট হয়ে গিয়ে নানীর সেবা করার চেষ্টা করছি, ছেলে মানুষ হিসেবে মহিলা ওয়ার্ডে থাকাটা কষ্ট, এবং বিভিন্ন দিক বিবেচনা করে ভালো একটা কেবিন নিলাম এবং সারাদিন সেখানেই আমার সময় কাটে। সকাল হলেই হসপিটালে চলে যাই এবং রাতের বেলা বাসায় ফিরি। সবাই দোয়া করবেন আমার নানীর জন্য, তিনি যেন সুস্থ সবল ভাবে আবার আমাদের মাঝে ফিরে আসে।


আমি কে?

আমি সাজ্জাদ সোহান
আমি টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং এর একজন শিক্ষার্থী। আমি ঢাকাতে বসবাস করি। আমি ট্রাভেল করতে অনেক ভালোবাসি, এছাড়া অবসর সময়ে মুভি দেখি, ফটোগ্রাফি করি, গান করি। আমি একটু চাপা স্বভাবের তাই কম কথা বলি কিন্তু আমি একজন ভালো শ্রোতা। ভালোবাসি নতুন জিনিস শিখতে, মানুষকে ভালবাসি তাই মানুষের সহযোগিতায় এগিয়ে আসি।


@sajjadsohan (1).gif


image.png



logo.png

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png



VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png


image.png

𝕋𝕙𝕒𝕟𝕜 𝕪𝕠𝕦 𝕖𝕧𝕖𝕣𝕪𝕠𝕟𝕖

115.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

খুবই দুঃখজনক এবং আতংকের একটা বিষয়, অবশ্যই। ক্যান্সার শব্দ শুনলেই সবাই আতকে ওঠে।

আপনার পোস্ট পড়ে আমি ঠিক বুঝে উঠতে পারলাম না ক্যান্সার টা কোথায়! মাফ করবেন।

আশা করি অপারেশন এবং এর পরবর্তী চিকিতসার মাধ্যমে আপনার নানী সুস্থ্য হয়ে উঠবেন ইনশাআল্লাহ।


ক্ষুদে স্বাস্থ্যবার্তা

প্রতিবছর প্রতি ১০০ জনে ১১ জন মহিলা প্রশ্রাবের ইনফেকশানে ভোগেন। তাদের মধ্যে আবার ২৫% রুগী পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে আবার একই রোগে আক্রান্ত হন (প্রশ্রাবের ইনফেকশান)। মুলকথা হচ্ছে, বারবার প্রশ্রাবের ইনফেকশান এর বিষয়টা মহিলাদের জন্যে খুবই সচারচর ঘটে থাকে। সাধারণত, এটা ঠেকানো জন্যে ডাক্তাররা লম্বা সময়ের জন্যে এন্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন। এই লম্বা সময় এন্টিবায়োটিক খাওয়ার জন্যে ঐ ওষুধের কিছু জটিলতা দেখা যেতে পারে। তাহলে উপায়?

স্পেনের Inmunotek S.L. কোম্পানি একটা ভ্যাক্সিন তৈরী করছে। তারা এটার নাম দিয়েছে Uromune । মজার ব্যাপার হচ্ছে এটা কোন ইনজেকশান না (সুইয়ের ভয় নাই)। এটা একটা স্প্রে। স্প্রে নিতে হবে জিহ্ববার নিচে দিন দুই বার করে মোট ৩ মাস। এটার কার্যকারিতা নিয়ে করা স্ট্যাডিগুলো খুবই আশাব্যঞ্জক রেজাল্ট দিচ্ছে। এটা অলরেডি ২৬ টা দেশে পরীক্ষামূলক ভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আরো জানতে এই স্ট্যাডিটা পড়তে পারেন।

এটি প্রথমে পাকস্থলীতে টিউমারের মত দেখা দেয় এবং পরবর্তীতে ক্যান্সারের আকার ধারণ করে, প্রথমদিকে আমরা কেউ বুঝতে পারেনি যখন তীব্র ব্যথা অনুভব করেন তখন আমাদের সাথে শেয়ার করেন এবং পরবর্তীতে আমরা জানতে পারলাম বিষয়টা এত দূরে এসে পড়েছে।

যদিও আমি তখন ছোট কিন্তু আমার কিছুটা মনে আছে। ক‍্যান্সারের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে। আমার বাবা ক‍্যান্সার আক্রান্ত হয়েই মারা যায়। যাইহোক আপনার নানীর জন্য দোয়া করব ভাই। আল্লাহ্ যেন উনাকে সুস্থতা দান করে।

আপনার কমেন্টসটা পড়ে খুব খারাপ লাগলো, খুব কাছের একটা মানুষ আপনি হারিয়েছেন, আমিও খুব কাছের মানুষকে হারিয়েছিলাম, দোয়া করি কোন সন্তান যেন আর অভিভাবকহীন না হয়।

আপনার পোস্ট পড়ে সত্যি অনেক খারাপ লাগলো। আসলে ভাইয়া সৃষ্টিকর্তা কাকে কখনো কি অবস্থায় রাখেন বুঝা মুশকিল। দোয়াকরি আপনার নানি দ্রুত সুস্হ হয়ে উঠবে। আসলে ভাইয়া আমাদের হায়াত নির্ধারিত এর বেশি আমরা কেউ বেঁচে থাকতে পারবো না। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করছি, এবং মোটামুটি এখন আমার নানু ভালো দিকে রয়েছে। আমরা প্রায় 4-5 জন সবকিছু ছেড়ে দিয়ে শুধুমাত্র তার সেবা করার পেছনে ছিলাম। আলহামদুলিল্লাহ এখন তিনি মোটামুটি ভালো আছেন।

আপনার পোস্ট টি পড়ে চোখের কোনে জল চলে এসেছে ভাইয়া।পোস্ট পড়ে বুঝতে পেলাম নানা,নানী আপনার পৃথিবী আর তার মরনব্যাধিতে আপনার অবস্থা কেমন তা তো বুঝতেই পারছি।আমিও আমার শ্বশুরিকে নিয়ে এক মাসের বেশি সময় ঢাকায় ছিলাম ওনিও ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন অবশেষে কেমোথেরাপি সহ্য করতে না পেরে পরপারে চলে গেছেন। প্রার্থনা করি আপনার নানি সুস্থ হয়ে আপনার মাঝে ফিরে আসুক আপনার জীবনটা হাসিখুশিতে ভরে উঠুক। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্ট টি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

অবশেষে কেমোথেরাপি সহ্য করতে না পেরে পরপারে চলে গেছেন

যদিও আমার এই বিষয় সম্পর্কে খুব একটা আইডিয়া নেই, তবে ডাক্তার আমাদের কেউ ও বলেছেন কেমোথেরাপি দিতে হবে এখন তো আপনার কথা শুনে আমি খানিকটা টেনশনে পড়ে গেলাম। যাই হোক দোয়া করবেন আমার জন্য আমার পরিবারের জন্য।