লাইফ স্টাইলঃ-রাঙ্গামাটি থেকে নিয়ে আসা গিফট।

in hive-129948 •  8 months ago 

আসসালামু আলাইকুম,


প্রিয় কমিউনিটির সকল ব্লগার ভাই ও বোনেরা আশা করি আপনারা সকলেই ভাল আছেন। সবার দিনকাল কেমন যাচ্ছে বন্ধুরা নিশ্চয়ই ঈদের কেনাকাটা নিয়ে বেশ ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন? ব্যস্ত হওয়ারই কথা হঠাৎ দেখতে দেখতে রোজা প্রায় শেষের দিকেই। কখন যে রোজা চলে যাচ্ছে সেটা টেরও পেলাম না। সত্যি কথা বলতে এবারের রোজা গুলো বেশ ভালই উপভোগ করতে পেরেছি। কারণ গরমের তাপমাত্রা কম ছিল সবকিছু মিলিয়ে বেশ ভালোই লাগলো। আশা করি ঈদের দিন গুলো বেশ ভালোই কাটাতে পারব সবাই মিলে। অগ্রিম শুভকামনা রইল সবার জন্য যাতে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদের দিন গুলো আনন্দে কাটাতে পারেন।

a13.jpg

বন্ধুরা আজকে আমি শেয়ার করব আপনাদের সাথে কিছু গিফট পাওয়ার অনুভূতি। আপনারা তো অবশ্যই জানেন উপহার পেতে সবাই পছন্দ করে। যদি হয় পছন্দের মানুষ থেকে পছন্দের কিছু জিনিস উপহার হয় তাহলে বেশ ভালই লাগে। তবে উপহার বা গিফট পাওয়ার ধরন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। সেটা যে ধরনের হবেই হোক উপহার হলেই বেশ ভালো লাগে। কিছুদিন আগে আমি রাঙ্গামাটি ভ্রমণে গিয়েছিলাম সেই বিষয় আপনারা অনেকেই জানেন। তবে রাঙ্গামাটিতে বেশ কিছু জিনিস আছে যেগুলো অনেক ফ্রেশ বলতে হয়। সেখান থেকে অনেক কিছু কেনাকাটার ইচ্ছে ছিল আমার। যদিও বাচ্চাদেরকে নিয়ে এত ঝামেলা করতে পারি নাই কেনাকাটা করতে পারি নাই।

a2.jpg

রাঙ্গামাটি ভ্রমণ থেকে আসার পরেই আবারও সপ্তাহ দুয়েক পরেই আমার হাজব্যান্ড একটা টিম নিয়ে আবারও রাঙ্গামাটিতেই ভ্রমনে গেলেন। তাদের একটা সংগঠন আছে সবাই যেহেতু যাচ্ছেন উনিও আবার গেলেন ভ্রমণে। পরিবারকে নিয়ে যাওয়ার একটা আলাদা মজা। এছাড়াও আবার সংগঠনের পক্ষ থেকে যখন একই সমমনা মানুষকে নিয়ে যাওয়া হয় তখন আরেক ধরনের ভালো লাগা কাজ করে। উনি যখন যেতে চাইলেলন আমিও উৎসাহ দিলাম যাওয়ার জন্য। সবাই মিলে চলে গেলেন রাঙ্গামাটি ভ্রমণে। আমি আর বাচ্চারা বাসায় ছিলাম। তবে কিছুক্ষণ পরপর আমাকে ফটোগ্রাফি শেয়ার করে তাদের মুহূর্ত গুলো শেয়ার করছিলেন। আমাদের সাথে ভিডিও শেয়ার করছিলেন। তাছাড়া ভিডিও কলের মাধ্যমে অনেক কিছু শেয়ার করছিলেন বেশ ভালই লাগছিল।

a .jpg

a1.jpg

উনারা যখন চলে আসবেন সবাই রাঙ্গামাটির মেইন বাজারে চলে গেলেন জিনিস কেনার জন্য। তখন আমাকে জানানো হয় আসলেই কি কিনবে? বিশেষ করে আমি বলছিলাম কালো বিনি চা্উল আনার জন্য। কারণ আমাদের এখানে কালো বিনি চাল তেমন একটা পাওয়া যায় না। কালো বিনি চাল আনার কারণ হচ্ছে আমার মেয়ে কালো বিনি চাউলের গুঁড়া দিয়ে ভাপা পিঠা খাবে। আদিলাকে নিয়ে যখন স্পীক আপ একাডেমিতে যাই তখন সেখানে একটি রাখাইনদের দোকান আছে পাশে। শীতকালে এক কর্ণারে বসে তারা কালো বিনি চাউলের ভাপা পিঠা গুলো তৈরি করে বিক্রি করে। হঠাৎ একদিন দেখি আদিলা এবং তার বাবা আমার জন্য বিনি চাউলের ভাপা পিঠা গুলো নিয়ে আসে। আমি তো খেয়ে এই পিঠা পুরো ফিদা।

a3.jpg

a4.jpg

তখন আমি আদিলার আব্বুকে বললাম এত স্বাদের পিঠা এত কম করে আনলে হয়? হি হি হি। এরপরেই আবার যখন আমি আদিলাকে নিয়ে স্পীক আপ সেন্টারে যাই তখন সেইখান থেকে আবারও মা মেয়ে তিনজনে মিলে বেশ ভালো মত খেয়ে নিলাম পিঠা। কিন্তু পিঠা গুলো এত স্বাদের একবার খেয়ে স্বাদ মিটানো যায় না। তো চিন্তা করলাম যে কালো বিনি চাউল ঘরে এনে ভাপা পিঠা গুলো তৈরি করব। সেই চিন্তা ভাবনা করে আমি রাঙ্গামাটি থেকে আমার হাজব্যান্ডকে বললাম কালো বিনি চাউল আনতে। উনি সাথে নিয়ে আসলো কালো বিনি চাল। সেই সাথে নিয়ে আসলো সাদা বিনি চাউল এবং লাল বিনি চাউল।

a6.jpg

a7.jpg

আপনারা অবশ্যই দেখতে পাচ্ছেন ফটোগ্রাফির মাধ্যমে আসলে আমি এত গুলো আনতে বলি নাই। উনি এত জিনিস নিয়ে আসলো আমার জন্য। প্রিয় কিছু জিনিস যখন উপহার পাই প্রিয় মানুষের কাছ থেকে তখন বেশ ভালই লাগে। তবে আর একটা কথা বলছিলাম রাঙামাটির আনারস নিয়ে আসার জন্য। সত্যিই আনারস খেতে এত সুস্বাদু ছিল অন্য রকমের একটা স্বাদ পেয়েছিলাম। কারণ আমরা বাজার থেকে যে আনারস গুলো কিনে এনে খাই সেগুলো হয়তো দেখতে ফ্রেশ। কিন্তু এই আনারস যখন খেয়েছিলাম এত ফ্রেশ আনারস কি জিনিস তা বুঝতে পেরেছি খেয়ে। রাঙামাটির আনারস খেতে এত সুস্বাদু খেতেই থাকছিলাম আমি। অনেক ভালো লাগছিল আমার খেতে।

a8.jpg

বিশেষ করে আমি আনারস আনতে বলছিলাম। তো উনি মেয়েদের জন্য ব্যাগ নিয়ে আসলো খুব সুন্দর সুন্দর। সেই সাথে আমার জন্য একটি হ্যান্ড ব্যাগ নিয়ে আসলো বেশ ভালো লাগছিল আমার। এছাড়াও দেখতে পাচ্ছেন রাঙ্গামাটির শুকনো বড়ই গুলো নিয়ে আসলো। সেখান থেকে আবার তেঁতুল নিয়ে আসলো। সবচেয়ে বেশি ভালো লাগলো আদা গুলো। এত তরতাজা ছিল এত ঘ্রাণ আদা গুলোর মধ্যে অনেক বেশি ঝাঁস ছিল। অনেক গুলো আমি ব্লেন্ডার করে ফ্রিজের মধ্যে রেখে দিয়েছিলাম। তাছাড়া এখনো অনেক গুলো থেকে গেছে এগুলো ব্লেন্ডার করে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। দেশি আদার ঝাঁস অনেক বেশি। বন্ধুরা আমি ভাবতেও পারি নাই এত গুলো উপহার এক সাথে পাবো।

a11.jpg

যদিও পরিবারের সবাই ভোগ করবে নেই খাবার গুলো। কিন্তু এই ধরনের জিনিস গুলো উপহার পেতে আমার বেশ ভালোই লাগে। মেয়েদের ব্যাগ গুলো দেখে আমার বেশ ভালই লেগেছিল। যদিও ব্যাগ বাচ্চাদের নামে আনলেও কাজটা হচ্ছে আমার হি হি হি। আমাদের এখানকার জিনিস এবং রাঙ্গামাটির জিনিসের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। কারণ এই জিনিসগুলো পাহাড়ের ঢালে চাষ করা হয়। এই জিনিস গুলো সরাসরি যেহেতু নিয়ে আনছে অনেক ফ্রেশ ছিল সব জিনিস। তেঁতুল দিয়ে চাটনি করেছিলাম বেশ ভালো লাগছিল খেতে।

a10.jpg

আর এত জিনিস দেখে বাচ্চারা মহা খুশি। কারণ বাচ্চারা যখন তাদের পছন্দের জিনিস গুলো পেয়ে যায় বেশ লাফালাফি করে। আমার মেয়েরাও তাই করেছিল বিশেষ করে আদিলা অনেক বেশি খুশি হয়েছিল। যখন তার জন্য কালো বিনি চাউল আনছিল। অবশ্যই আমি ইতোমধ্যে সেই বিনি চাউল গুড়া করে আদিলাকে পিঠা তৈরি করে খাওয়াইছিলাম। এছাড়াও সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিল তারা ব্যাগ গুলো পেয়ে। আমার ছোট মেয়ে লাল কালারের জিনিস বেশি পছন্দ করে তাই তার জন্য লাল ব্যাগ নিয়ে আসলো মেয়ের বাবা। আদিলা পিংক কালারের জিনিস খুব বেশি পছন্দ করেন তাই আদিলার জন্য পিঙ্ক কালারের ব্যাগ নিয়ে আসলো।

a12.jpg

আর আমার পছন্দের কথা কি বলবো যখন আমার হজব্যান্ড কোন কিছু পছন্দ করে আমার জন্য নিয়ে আসেন তখন ভালই লাগে। সে ক্ষেত্রে ওনার পছন্দ হচ্ছে আমার পছন্দ। তবে বিশেষ করে আমি যখন কেনাকাটা করতে যাই তখন আমি আমার হাজব্যান্ড কে নিয়ে যাই সাথে। আমি মনে করি আমার চেয়ে উনি আমার জন্য পছন্দের জিনিস বেশি পছন্দ করে নিতে পারেন। বিশেষ করে আমি যখন থ্রি-পিস কিনতে যাই তখন আমি মেয়ের বাবাকে নিয়ে যাই। কারণ উনার পছন্দ করা থ্রি পিস গুলো আমার বেশ ভালোই লাগে আমার গায়ে বেশ ভাল লাগে।

a9.jpg

ব্যাগটাও আমার বেশ ভালোই লেগেছিল। সবকিছু মিলিয়ে বেশ ভালো লাগছিল জিনিস গুলো পেয়ে। আশা করি বন্ধুরা আপনাদেরও ভালো লাগবে আমার ব্লগিংটা পড়ে। আসলেই উপহার পাওয়া জিনিস বলে কথা। আমার এত ভালো লাগছিল সেই অনুভূতিটা আমি ধরে রাখতে পারি নাই। তাই চিন্তা করলাম সেই বিষয়টি আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলে আরও ভালো লাগবে। অসংখ্য ধন্যবাদ বন্ধুরা সবাইকে সব সময় সহযোগিতা করে পাশে থাকার জন্য।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Eh2qs4cCyucf3FD7ahStNw2cTHPk2QiaQacbQjJNEWnuhyjY1PXfUUMr27ifyD15nkQhFHksgx6bm9BxYLdCkQDMy8JhQrktZHYy6njdzRU4bQ9b1d2xjCdoVzCDDY85pLPq2s7FhKBwPjpuHdozHaReDxEaFH2aYse13zaqogf9utVshuSban6ex1saRA.png

ডিভাইসের নামWiko,T3
মডেলW-V770
Locationকক্সবাজার-
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিলাইফ স্টাইল


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা। আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

New_Benner_ABB1.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বাহ অনেক কিছু দেখছি। শুধু বাচ্চারা কেনে আমি নিজেও তো খুশি হয়ে গেলাম। বেশি ভালো লাগলো আপু আপনার রাঙ্গামাটি থেকে নিয়ে আসা গিফট টা দেখে। আর বেশি ভালো লাগলো অনেক সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনি আজকের পোস্ট। সব মিলে অসাধারণ।

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আপনারও ভালো লাগার জন্য।

আপু,আমি তো অবাক হয়ে গেলাম আপনার জন্য ভাইয়ার নিয়ে আসা এত এত গিফট দেখে।যদিও ভাইয়া আপনার আর মেয়েদের জন্য এসব এনেছে তাই আপনারা খুশি হয়েছেন,কিন্তু আপনাদের খুশি দেখে ভাইয়া আরও অনেক বেশি আনন্দিত হয়েছে আমার মনে হয়। আসলে আমরা যে জায়গায় থাকি সেখানে যেগুলো পাওয়া যায় না, অন্য জায়গা থেকে নিয়ে আসা লাগে। আর যেহেতু রাঙামাটি থেকে এসব কিছু প্রয়োজনীয় জিনিস ভাইয়া এনেছে সে হিসেবে আপনার অনেক উপকার হলো। আদিলা মণি তাহলে কালো বিন্নি চালের ভাপা পিঠা পছন্দ করে। যদিও আমি কখনো খাই নি,তবে আপনার বাসায় আমার এই পিঠা খাওয়ার দাওয়াত নিয়ে নিলাম,হাহাহা।তা যাইহোক আপু,খুব ভালো লাগলো আপনার অনুভূতি পড়ে।

কালো বিন্নি চালের ভাপা পিঠা খুবই মজার হয় ভাইয়া। একবার খেলে আর ভুলতে পারবেন না।

বাহ অনেক কিছু তো দেখতে পাচ্ছি ৷ কিছুদিন আগে তো আপনার পোষ্টে এসব ভ্রমনের কাহিনী পড়েছিলাম ৷ আজকে আবার অনেক কিছু গিফট দেখে ভালো লাগলো ৷ আচার,বড়ই,আনাড়স সবমিলে অনেক কিছু ৷

হ্যাঁ ভাইয়া এই গিফট গুলো আবার আনছিল যখন আপনার ভাই সবার সাথে ভ্রমণে গেলেন।

এবারের রোজা গুলো যেন খুব দ্রুতই শেষ হয়ে যাচ্ছে। গিফট পেতে আসলেই খুব ভালো লাগে। রাঙ্গামাটি থেকে খুব সুন্দর গিফট পেয়েছেন তাহলে। খুব সুন্দর গিফট দিয়েছে ভাইয়া আপনাকে। ব্যাগ গুলো খুবই সুন্দর হয়েছে।

অনেক ধন্যবাদ আপু আমার গিফট গুলো দেখে আপনার ভালো লাগার জন্য।