ক্রিয়েটিভ রাইটিংঃ-অন্যের যে পরিমাণ ক্ষতি করে তার দ্বিগুণ ক্ষতি নিজের হয়ে যায়।

in hive-129948 •  18 hours ago 

শুভ সন্ধ্যা সবাইকে,

আসসালামুয়ালাইকুম প্রিয় ভাই ও বোনেরা। আশা করি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি আল্লাহর অসীম রহমতে বন্ধুরা আপনাদের দোয়ায় অনেক অনেক ভালো আছি। আজকে বন্ধুরা উপস্থিত হয়েছি আবার নতুন একটি টপিক্স নিয়ে। আমি আজকে আপনাদের সাথে একটি জেনারেল রাইটিং পোস্ট লিখব। চেষ্টা করি প্রতি সপ্তাহে ভিন্ন কিছু লিখে আপনাদের উদ্দেশ্যে শেয়ার করার। তাই যে ভাবনা সেই কাজ আর দেরি না করে হাজির হয়ে গেলাম ভিন্ন মাত্রায় লেখাগুলো লিখে শেয়ার করে নিতে। প্রতিনিয়ত সবাই অনেকে ইউনিক পোস্ট শেয়ার করে থাকেন পড়ে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হয়। তাই প্রতি সপ্তাহে সাত দিনে সাত রকমের পোস্ট শেয়ার করি। নিশচয়ই আজকে যে বিষয় নিয়ে লিখবো তা শিরোনাম দেখে বুঝতে পারছেন।

vecteezy_studio-shot-of-asian-man-dynamic-emotional-gestures-ai_26889047.jpg
Image Source Location

আমরা মানুষ জাতি। আমরা সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করি। সামাজিক রীতি নীতি নিয়ম-কানুন মেনে চলার চেষ্টা করি। এই সমাজবদ্ধতা হচ্ছে আমাদের বিপদ-আপদের জন্য। যখন আমরা সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করি তখন সমাজের পুরো মানুষ জন একে অপরের সুখে দুঃখে ছুটে আসেন। তাই মানুষ নিজেদের সুবিধার জন্য সামাজিকভাবে বসবাস করেন। মানুষ চাইলে একা বসবাস করতে পারে। কিন্তু বিপদে পড়লে কেউ কারো কাছে ছুটে যাবে না। সেইজন্য প্রয়োজনে বসে সবার বিচার বিবেক বুদ্ধি সবকিছু বিবেচনা করে একে অপরকে সহযোগিতা করে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। এই যে মানুষের মঙ্গলের জন্য সমাজ ব্যবস্থা এখানে আবার কিছু খারাপ মানুষ এবং ভালো মানুষ রয়েছেন।

যদিও আমরা সামাজিকভাবে বসবাস করি আমাদের সুবিধার জন্য। আসলে সব মানুষরা এক রকম হয় না। সৃষ্টিকর্তা সবার মন কে এক ধরনের করে সৃষ্টি করেনি। এই সামাজিকভাবে বসবাস করার ক্ষেত্রে যেয়ে কিছু মানুষের মন-মানসিকতা খুবই সুন্দর আবার কিছু মানুষের মন মানসিকতা খুবই খারাপ হয়। অনেক মানুষ রয়েছেন অন্যের ভালো-মন্দ কিছুতে সহ্য করতে পারে না। আবার অনেক মানুষ রয়েছেন অন্যদের উন্নতির জন্য সফলতার জন্য সহযোগিতা করে থাকেন। এটা বলার মূল কারণ হচ্ছে উদাহারণ স্বরূপ বলতে চাই। আমাদের পার্শ্ববর্তী বাড়ির পাশের এক বাড়ি ছিল। সে বাড়ির গৃহকর্তির নাম হচ্ছেন রহিমা বেগম। গৃহকর্তার নাম হচ্ছেনমোস্তাফিজ। তাদের তিন ছেলে সন্তান রয়েছে। আবার তিন কন্যা সন্তান রয়েছে।

ওই বাড়ির গৃহকর্তি রহিমার একটি বদ অভ্যাস রয়েছে। আমরা মানুষ জাতি অপরের সাথে পাশাপাশি অবস্থান করি। তখন আমাদের মধ্যে অনেক সময় ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে অনেক সময় ঝগড়াঝাঁটি হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় আমরা ভালো হয়ে যায় এটা সবার ক্ষেত্রে হয়। কিন্তু এই রহিমার একটি বিরাট গুণ ছিল সেটা হচ্ছে গ্রামের যে দুই পরিবারের সাথে ঝগড়া হোক না কেন সেখানে উপস্থিত হতে হবে রহিমাকে। অর্থাৎ এমন কোন ঝগড়া যাবে না কিংবা এমন কোন সমস্যা ছিল না যেখানে রহিমা বেগমের অবশ্য সেখানে যেয়ে কথা বলতে হতো। সামান্য একটি বিষয় দুই পক্ষের মধ্যে এমনভাবে ঝগড়া লাগায় দিত বলার মতো না।

গ্রামের প্রতিটি মানুষের মুখে মুখে ওর বদনাম ছিল। একজনের পক্ষে যেয়ে একেক রকমের কথা বলবে আবার অন্যজনের পক্ষে গিয়ে তার বিপক্ষে বলবে। এভাবে দেখবেন যে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ ভালোই গিট লাগিয়ে দিয়ে ঝামেলা করে দিয়ে দিত। এখন কথা হচ্ছে সেই তো সারা জীবন মানুষের ক্ষতি করে আসসে। তা আমরা ছোটবেলা থেকে দেখে আসছিলাম। গ্রামের এমন কোন পরিবার নেই যেখানে বউ শাশুড়ি বলেন সন্তান কিংবা মায়ের সাথে বলেন অথবা ভাইয়ে ভাইয়ে বলেন ঝগড়াঝাঁটি হলে সেখানে রহিমা বেগমকে উপস্থিত থাকতে হয়। এর জন্য মানুষ তাকে অনেক বেশি কঠোর কথা ও শোনাতেন। কিন্তু এ ধরনের বেহায়া টাইপেসের মহিলা গুলোর কোন তুলনা হয় না। সেই রহিমা বেগমের হাসবেন্ড ঠিক রহিমা বেগমের মত অবস্থা। রহিমা বেগমের এই ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রতি তার হাজবেন্ডের অনেক বেশি সাপোর্ট ছিল।

এখন কথা হচ্ছে রহিমা বেগম সারাজীবন মানুষের ক্ষতি করে আসছে। কিন্তু কথা হচ্ছে যে অন্যের ক্ষতি করে তাকে সৃষ্টিকর্তা কখনো ছাড়ে না। এমন পরিবার আছে রহিমা বেগমের কারণে একদম তছনছ হয়ে গেছে। সেটা হাজবেন্ডের স্ত্রীর সম্পর্ক বলেন সেটা কোন নতুন মেয়ে বিয়ে দিয়েছে সে স্বামীর সাথে বলেন। এ ধরনের ঝামেলাগুলো রহিমা বেগম খুব সুন্দর ভাবে পরিচালনা করতেন। এখন রহিমা বেহমের যেহেতু বয়স বৃদ্ধি পাচ্ছে আস্তে আস্তে তাকে অসুখে ধরল। তার ছেলে মেয়ে বড় হল দুই ছেলেকে বিয়ে করালো। দুই ছেলে সৌদি আরবে থাকতো। সেখানে দুই ছেলে বিয়ে করল রহিমা বেগমের ধারের কাছেও আসলো না।

প্রথমে তো দুই ছেলে বিয়ে করল সৌদি আরবে রহিমা বেগম টের পেল না। এরপরে এক মেয়ে বিয়ে দিল সে মেয়ের এক বছরের মাথায় সংসার ভেঙ্গে গেল। তারপরে দ্বিতীয় কন্যা বিয়ে দিল সেটা কোন রকমের ছিল। এরপরে তৃতীয় ছেলের জন্য বউ আনল। এখন কথা হচ্ছে সেই অন্যের হাড়ির খবর নিবে কিন্তু তার হাড়ির খবর কেউ নিতে পারবেনা। দুই ছেলের বউ তো সৌদি আরব দেশে নাই। এখন সবচেয়ে ছোট ছেলেকে বিয়ে করালো।এখন ছোট ছেলের বউকে গ্রামের মানুষের সাথে একদম মিশতে দেয় না একদম ঘরের ভিতর। কোথাও আসা-যাওয়া করতে দেয় না। কিন্তু সেই অন্যের ঘরের বউদেরকে নিয়ে অনেক টেনশন লাগিয়ে থাকেন। এখন তার ঘরের বউয়ের কাছে কেউ আসতে পারে না।

এরপর হচ্ছে তিন নাম্বার মেয়ে বিয়ে দিল। সেই মেয়ের বিয়ের দুই মাসের মাথায় ভাঙ্গন দিতে শুরু করল। এখন কথা হচ্ছে সে তো গ্রামের হাজারো স্বামী স্ত্রীর সংসার ভেঙেছে। হাজারো মেয়েদের সংসার ভেঙেছে। হাজারো সংসারের মধ্যে ছেলের বউ এবং শাশুড়ির মধ্যে ঝগড়া লাগিয়ে দিয়েছে। এখন সেই শান্তি পাবে কোথায় থেকে। সেই পায় না ছেলের বউয়ের কাছ থেকে শান্তি। পায় না তার মেয়েরা শ্বশুরবাড়ি থেকে শান্তি। তাই একটু ভেবেচিন্তে করা উচিত। কারণ মা বাবা যদি পাপ করে সেগুলো তাদের সন্তানদের উপরে পড়ে যাই। এখন আপনার আদরের সন্তান যখন ভালো থাকবে না তখন আপনি কখনো ভালো থাকতে পারবেন না। অন্যের মা-বাবার আদরের সন্তানদেরকে নিয়ে সেই গুটি চালিয়েছেন।

সেই জন্য সেই ফলগুলো তাকে বসিয়ে ভোগ করতে হবে। যারা অন্যের সংসার নষ্ট করে অন্যের সুখ নষ্ট করে সৃষ্টিকর্তা তো কখনো তাদেরকে সুখে শান্তিতে রাখতে পারেনা। কারণ সৃষ্টিকর্তা সময়ের কাজ সময়ে করে থাকেন। যদিও সৃষ্টিকর্তার কাজ একটু ধীরে ধীরে কিন্তু সে কাজের ফলাফল বেশ ভয়ংকর হয়ে থাকে। তাই আমাদের সবার উচিত অন্যের ক্ষতি না করা। তাহলে নিজের ক্ষতির পরিমাণ আরো অনেক বেশি হয়ে যাবে। আশা করি বন্ধুরা আমার আজকের লেখা আপনাদের কাছে পড়ে ভালো লাগবে। সময় দিয়ে দেখার জন্য সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

লেখার উৎসনিজের অনুভূতি থেকে
ইমেজ সোর্সভিক্টিজি ডট কম
অবস্থানকক্সবাজার, বাংলাদেশ
ক্যাটাগরিক্রিয়েটিভ রাইটিং


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀


আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

Banner_PUSS1.png

PUSS_Banner_2nd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

জি আপু একদম ঠিক বলেছেন আসলে অন্যের ক্ষতি কেউ যদি চায় সেই ক্ষতি আসলে দ্বিগুণ হয়ে নিজের উপরে ফিরে। এরকম অসংখ্য উদাহরণ দেখেছি আমি। বাস্তবিক বিষয়ে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে এ বিষয়টি তুলে ধরার জন্য ভালো থাকবেন আপু।

অনেক সুন্দর একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। আসলে এটাই সত্যি যে কেউ অন্যের ক্ষতির করতে চাইলে তার নিজের ক্ষতি আগে হয়ে যায়। ধন্যবাদ আপনাকে।

আমার ডেইলি টাস্ক

1000007235.jpg

আসলে আমার মনে হয় যে সমাজের প্রায় এই ধরনের শ্রেণীর লোকের সংখ্যা অনেক বেশি। আসলে তারা কখনো বোঝেনা যে তারা যদি মানুষের ক্ষতি করে তাহলে তার দ্বিগুণ ক্ষতি তার জীবনে হয়। আপনি আজ দারুন একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করলেন। আর আপনার পোষ্টের প্রায় সব কথাগুলোই একদম সঠিক কথা। এত সুন্দর একটা পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।