রেসিপি- ঝাল ঝাল মজাদার কচু শাক রান্না।

in hive-129948 •  last year 

ঝাল ঝাল মজাদার কচু শাক রান্না রেসিপি।

pi8.jpg

হ্যালো বন্ধুরা!

সবাই কেমন আছেন নিশ্চয় সকলে ভালো আছেন কর্মব্যস্ততা নিয়ে? আমি সামশুন নাহার হিরা @samhunnahar। আমি প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে ব্লগিং করে যাচ্ছি। নিজের প্রাণের ভাষা প্রিয় ভাষা বাংলা ভাষায়। বাংলা ভাষায় ব্লগিং করতে পেরে অনেক বেশি ভালো লাগে। কারণ নিজের মনের অনুভূতি গুলো উজাড় করে দিয়ে সবার সাথে শেয়ার করতে পারি। তো সেজন্য অনেক ভালো লাগে এমন সুন্দর একটি কমিউনিটিতে কাজ করতে পেরে। নিজেকে অনেক বেশি গর্বিত মনে করি। আজকেও নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। প্রতি সপ্তায় একটি করে রেসিপি শেয়ার করি। আজকে নতুন একটি রেসিপি নিয়ে উপস্থিত হয়েছি।

pi7.jpg

আমি আজকে যে রেসিপিটি আপনাদের সাথে শেয়ার করব সেই রেসিপিটা হচ্ছে কচু শাক রান্না রেসিপি। আমরা অবশ্যই কম বেশি সকলেই কচু শাক অনেক বেশি পছন্দ করি। এই বর্ষার সিজনে পর্যাপ্ত পরিমাণ কচু শাক পাওয়া যায়। তাই বলতে গেলে গ্রামীণ মানুষের খুব কমন একটি খাবার বলতে হয়। যখন তাদের কোন খাবারের সংকুলান হয় বিশেষ করে তরকারির তারা খুব সহজে কচু শাক রান্না করে খেয়ে থাকেন। আমরা যেগুলোকে সহজ মনে করি আসলে এত সহজ না। কচু শাক গ্রামে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাওয়া যায় তা ঠিক কিন্তু খুব মূল্যবান একটি খাবার। কচু শাকে এত পরিমাণ ভিটামিন আছে শরীরের জন্য এত উপকারী বলার মত না। তাই সবারই উচিত কম বেশি কচু শাক খাওয়ার অভ্যাস করা। আমি তো প্রায় সময় রান্না করি কচুশাক বিভিন্ন ভাবে। তবে আজকে আমি যে রেসিপিটি করেছি সেটি আমি আপনাদের সাথে ধাপে ধাপে শেয়ার করব।

pi9.jpg


রেসিপি তৈরির উপকরণ সমূহ

pi.jpg

উপকরণপরিমাণ
কচু শাক৫০০ গ্রাম
আমের আচারঅল্প পরিমাণ
পেঁয়াজ২ টি
রসুন৮ কোয়া
লবণস্বাদমত
কাঁচা মরিচ৮ টি
আদাএক টুকরো
লাল মরিচ আধা ভাঙ্গা৩ চামচ
হলুদ গুঁড়া১ চামচ
জিরা গুঁড়া১ চামচ
গরম মসলাএক চামচ
ধনে গুঁড়া১ চামচ
সরিষার তেলপরিমাণ মত
ধনে পাতা কুচিঅল্প


ঝাল ঝাল মজাদার কচু শাক রান্নার ধাপ সমূহ


রন্ধন প্রক্রিয়া-১

প্রথমে কচু শাক গুলো বটি দিয়ে সাইজ করে কেটে নিয়েছি। একটি কে তিন টুকরো করে নিয়েছি। এভাবে সব শাক বটি দিয়ে কেটে নিয়েছি এবং কেটে নেওয়ার পরে একটা গাবলাতে নিয়ে ধুয়ে নিয়েছি ভালো করে। ধুয়ে নেওয়ার পরে একটি রান্নার পাত্রে নিয়ে নিলাম।

pi1.jpg


রন্ধন প্রক্রিয়া-২

পরিমাণ মতো পানি নিয়ে সিদ্ধ করেছি। হালকা সিদ্ধ হয়ে আসলে সেখানে আমি এক চামচ পরিমাণ হলুদ দিয়েছি কারণ শাকের কালার টা সুন্দর হওয়ার জন্য। আপনারা হলুদ না দিলেও পারবেন আপনাদের পছন্দ মত। সিদ্ধ করার সময় আমি অল্প পরিমাণ আমের আচার দিয়েছি যাতে করে গলা না চুলকায়। তাছাড়া আমের আচার দিলে ভালো একটি ফ্লেভার আসে খেতে অনেক ভালো লাগে।

pi2.jpg


রন্ধন প্রক্রিয়া-৩

এভাবে সিদ্ধ করা শেষ হয়ে আসলে একটি চামচ দিয়ে ভালো করে নেড়ে ছেড়ে ভেঙে নিয়েছি। যেহেতু কচু শাক এভাবে ভেঙ্গে রান্না করতে হয় তাহলে খেতে অনেক ভালো লাগে। তাছাড়া শুধু ডাটা রান্না করলে কিন্তু ডাটা কিছুটা আস্ত রাখা যায়। কিন্তু কচু শাক যদি ভর্তা করতে হয় তাহলে এভাবেই ভেঙ্গে ফেললে একটু খেতে ভালো লাগে। তেলে দেওয়ার জন্য একটা রান্নার পাত্র চুলায় বসায় দিলাম তাতে পরিমাণ মত তেল দিলাম।

pi3.jpg


রন্ধন প্রক্রিয়া-৪

তেল গরম হয়ে আসলে উল্লেখিত পরিমাণ কাঁচা মরিচ, আদা ও রসুন এবং পেঁয়াজ তেঁতো করে নেওয়া সব উপকরণ দিয়ে দিলাম। ভালো করে তেলের মধ্যে সিদ্ধ করে নিতে হবে। পেঁয়াজ, আদা,রসুন সিদ্ধ হয়ে আসলে সাথে দিয়ে দেব ধনিয়ার গুঁড়া, জিরা গুঁড়া এবং লাল মরিচ। সাথে আবারো দিয়ে দিলাম পরিমাণ মতো লবণ এবং হালকা আমের আচার।

pi4.jpg


রন্ধন প্রক্রিয়া-৫

এখন সব মশলা ভালো করে কষিয়ে নেওয়ার পরে শাক ঢেলে দিলাম। শাক ঢেলে দিয়ে সব মসলার সাথে মিশিয়ে ভালো করে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এবং লবন ঠিক মতো হয়েছে কিনা সেঁকে দেখতে হবে।

pi5.jpg


রন্ধন প্রক্রিয়া-৬

সিদ্ধ করা হয়ে আসলে এবং সেঁকে দেখলাম সব কিছু ঠিকঠাক আছে এবার নামায় ফেলতে হবে। এখন দিয়ে দেব কুচি করে রাখা ধনে পাতা। ধনে পাতা দিয়ে আর বেশিক্ষণ রাখব না চুলা অফ করে দিয়ে চুলা থেকে শাক নামায় ফেলব।

pi6.jpg


পরিবেশনা

ঝাল ঝাল করে কচু শাক রান্না আমার অনেক পছন্দের একটি শাক। আমি যেহেতু ঝাল একটু বাড়ায় দিয়েছি খেতে আমার অনেক ভালো লেগেছে। তাছাড়া কচু শাক অনেক আয়রন সমৃদ্ধ একটি খাবার। এছাড়া অন্যান্য পুষ্টিগুণে ভরা একটি শাক। বেশ ভালো লাগে আমার খেতে। প্রায় সময় বাজার থেকে এনে রান্না করে থাকি।

pi9.jpg

pi7.jpg

pi8.jpg

আশা করি আমার আজকের রেসিপিটা আপনাদের অবশ্যই ভালো লাগবে। কারণ কচু শাক কম বেশি সকলেই পছন্দ করে তাই বললাম। যেহেতু ঝাল ঝাল করে রান্না করেছি আরও দারুন ছিল খেতে। অনেক ধন্যবাদ সবাইকে আমার আজকের রেসিপি টি সময় দিয়ে দেখার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png


ক্যামেরার বর্ণানাঃ
ডিভাইসের নামWiko,T3
মডেলW-V770
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিরেসিপি

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

আজ এখানে আমার লেখা সমাপ্তি করছি। আবার উপস্থিত হব নতুন কোন ব্লগ নিয়ে। সবাই সুস্থ থাকবেন আর ভাল থাকবেন।


💘ধন্যবাদ সবাইকে💘

@samhunnahar

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। আমি সব ধরনের ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি গান গাইতে এবং কবিতা আবৃত্তি করতে ভীষণ ভালবাসি। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Ehur2Z3EsVgTD2AcTmkokXePYxgzpSqwnBNBj3ZteFgQGBvoV1Gau6PdZ2iRjGoCbkshRWuRQSfGSpuzhGGAeLA4Vf5U1Hc8iJwwxD89QHRxVn1je1P4CmpDJ3i8T6K3VVLivshpofZcmEc1F66yhadmSAKB5S67TB9CT5ts8F67pFjTnJQ9RnA2Qqq1Qc1.gif

20230713_213736_0000.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঝাল ঝাল মজাদার কচু শাক রান্না খুবই দুর্দান্ত হয়েছে। আমাদের মাঝে চমৎকার ভাবে আপনারা উপস্থাপন করেছেন। কচুর শাক স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। আমাদের মাঝে সুন্দর করে উপস্থাপন করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ আমার রেসিপি দেখার জন্য।

image.png

আপু আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ঝাল ঝাল কচুর শাক এর রেসিপি। দেখে মনে হচ্ছে খুব সুস্বাদু হয়েছে । কচুর শাক এ রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন। কচু শাক শহরের তেমন একটা পাওয়া যায় না কিন্তু গ্রামে অনেক জায়গায় পাওয়া যায়। আপু আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এতো সুন্দর একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া আমার ঝাল ঝাল কচু শাক রান্না রেসিপি আপনার ভালো লাগার জন্য।

আপু আপনার রেসিপি দেখে লোভ লেগে গেল। সত্যি আপু কচুশাকে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন। সত্যি এই শাক গ্রামে পাওয়া গেলেও শহরে তেমন পাওয়া যায় না। তবে কচুশাকের ভিতর আমের আচার দিয়েছেন এটা আমি নতুন শিখলাম। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ সুস্বাদু একটি রেসিপি শেয়ার করার জন্য।

কচু শাকের ভিতর আমের আচার দিলে নতুন একটা ফ্লেভার আসে খেতে অনেক ভালো লাগে এভাবে তৈরি করে দেখবেন আপু।

ঝাল ঝাল মজাদার কচু শাক রান্না দেখে জীভে পানি চলে আসছে। যদিও কচুর শাক এখন তেমন একটা পাওয়া যায় না। তবে আপনার দের এলাকায় আসলে আপনার হাতে কাকড়ার রেসিপির ও কচুর শাখ খাব।🤪🤪

অবশ্যই খাওয়াবো ভাইয়া আমাদের এখানে প্রচুর কচু শাক পাওয়া যায় চলে আসেন।

ঝাল ঝাল মজাদার কচু শাকের রেসিপি দেখে লোভনীয় লাগছে। ঝাল ঝাল কোন কিছু খেতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। আপনার রেসিপিটি দেখে খুব খেতে ইচ্ছে করছে। খেতে মনে হয় খুবই মজাদার হয়েছে। রেসিপি ধাপ গুলো খুব সুন্দর ভাবে বর্ণনা করেছেন। ঝাল ঝাল কচু শাকের রেসিপি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

অনেক ধন্যবাদ আপু ঝাল ঝাল কচু শাকের রেসিপি ভালো রাখার জন্য। চলে আসেন তাহলে আপু।

আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ঝাল ঝাল মজাদার কচু শাক রান্না রেসিপি। আসলে এভাবে কখনো কচু শাক রান্না করে খাওয়া হয়নি। তবে কচু শাক ঘুটে খাওয়া হয়েছে। আসলে আপনার তৈরি রেসিপি দেখে মনে হচ্ছে খেতে বেশ সুস্বাদু লাগবে। তবে চেষ্টা করব আপু আপনার তৈরি রেসিপি দেখে রেসিপি তৈরি করে খাওয়ার জন্য। ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট তৈরি করে শেয়ার করার জন্য।

অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া তাহলে তো এভাবে তৈরি করে খেতে পারেন ভালো লাগবে খেতে।

ঝাল ঝাল কচুর শাক রান্নার দারুন একটা রেসিপি আজকে আপনি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। যেহেতু গ্রামে বসবাস করি তাই এই রেসিপিটা খাবার সৌভাগ্য আমার অনেকবার হয়েছে।

একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া গ্রামে প্রচুর শাক পাওয়া যায় গ্রামের মানুষ এভাবে বেশি তৈরি করে।

আপনি জাল ঝাল করে কচুর শাকের রেসিপি করেছেন। কচুর শাক খেতে আমি অনেক পছন্দ করি। আমরা সবাই জানি কচুর শাকের মধ্যে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন আছে। তবে আপু আমি কখনো কচুর শাকের মধ্যে আচার দিয়ে রান্না করিনি। তবে আপনার কচুর শাকের ঝাল ঝাল রেসিপি দেখে খেতে মন চাইতেছে। আর বর্ষার সময় তাজা কচুর শাক বেশি পাওয়া যায়। অনেক সুন্দর করে রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

একদম আপু বর্ষাকালের কচু শাক খেতে অনেক ভালো লাগে কারণ অনেক তাজা থাকে তাই।

ঝাল ঝাল মজাদার কচুর শাক রান্নার রেসিপি দেখে আমার তো লোভ লেগে গিয়েছে। আপনি খুবই মজাদার ভাবে এই কচুর শাকের রেসিপিটা তৈরি করেছেন। আমার তো দেখেই খুব খেতে ইচ্ছে করছে। উপস্থাপনাটা অনেক সুন্দর করে আপনি অনেক সুন্দর করে করেছেন। কচুর শাক কিন্তু আমাদের শরীরের জন্য অনেক বেশি উপকারী। কচুর শাকের উপকারিতা অনেক বেশি হয়ে থাকে। আর তাই আমাদেরকে কচুর শাক প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে।

মাঝে মাঝে কচু শাক খাওয়া অনেক ভালো শরীরের জন্য উপকার ধন্যবাদ আপু।

আমি তো বাড়িতে বেশিরভাগ সময় কচুর শাক রান্না করার জন্য বলে থাকি। কারণ কচুর শাক চোখের জন্য অনেক বেশি উপকারি। আর আমার কাছে কচুর সাথে তো অনেক বেশি ভালো লাগে যে বলে বোঝাতে পারবো না। অনেক বেশি সুস্বাদু মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে খুবই মজা করে খাওয়া হয়েছিল। গরম গরম ভাতের সাথে এই কচুর শাক খেতে খুবই ভালো লাগবে। কালারটাও অনেক বেশি সুন্দর হয়েছে। পরিবেশন টাও খুব সুন্দর করে করেছেন

কচুর শাক আমার অনেক প্রিয়। তবে বর্ষাকালে আমাদের গ্রাম অঞ্চলের তাজা কচুর শাক পাওয়া যায়। আজকে আপনি খুব সুন্দর করে ঝাল-ঝাল করে কচুর শাকের রেসিপি করেছেন। তবে যেভাবে কচুর শাক রান্না করা হয় খেতে কিন্তু মজাই লাগে। আর আপনার রেসিপি দেখে বোঝা যাচ্ছে খেতে অনেক মজাই হয়েছে। অনেক সুন্দর করে রেসিপিটি শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।