আমি সামশুন নাহার হিরা
২৬ শে কার্তিক - ১৪২৯ বঙ্গাব্দ।
১১ ই নভেম্বর -২০২২ খ্রিস্টাব্দ।
রোজ- শুক্রবার।
আসসালামুয়ালাইকুম/নমস্কার।
আমি প্রতিদিন বাংলা ভাষায় একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগে ব্লগিং করি বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলা থেকে।হ্যালো “আমার বাংলা ব্লগের” বাংলাদেশ-ভারত এর ব্লগিং প্রিয় ব্লগার সদস্য-সদস্যাগণ শুক্রবার দিনকাল কেমন যাচ্ছে আপনাদের? আমার আজকে শুক্রবারে আলহামদুলিল্লাহ অনেক সুন্দর দিন কাটলো।বাড়ির সবাইকে নিয়ে ভালো-মন্দ সুন্দর একটি দিন অতিবাহিত করেছি।সারাদিন অনেক ব্যস্ত ছিলাম কোন পোস্ট করতে পারি নাই।তাই এখন একটু সময় হওয়ায় চলে আসলাম আপনাদের সাথে ভালো-মন্দ জীবনের না বলা কথা গুলো শেয়ার করার জন্য।
আমি আজ ভিন্ন একটি পোষ্ট আপনাদের সাথে শেয়ার করব।আমি আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার ছোট বেলার একটি মজার ঘটনা।তবে মজার ঘটনা বলা যায় না তেমন একটা।যখন আমার সেই কথা মনে পড়ে অনেক খারাপ লাগে।তখন আমার কাছে এটি তিক্ততার ঘটনা বলা যায়।কিন্তু সময় পেরিয়ে যখন অতীত হয়ে গেছে সে ঘটনাটা আজকাল ভীষণ মনে পড়ে।ঘটনাটা আমার কাছে মনে পড়লে খুব বেশি লজ্জার মনে হয়।কারন আমার ছোটবেলায় একটা পেয়ারা ও লেবু চুরি নিয়ে বাজে একটা অভিজ্ঞতা হয়েছিল।আমার বয়স ছিল ছয় থেকে সাত বছরের মধ্যে।আমাদের বাড়ির পাশে আমাদের একটা পাশের বাড়ির গেইট ছিল।তাদের গেইটের পাশা পাশি রাস্তার ধারে একটা পুকুর ছিল। পুকুরের পাশ দিয়ে একটা পেয়ারা গাছ এবং একটা লেবু গাছ ছিল।আমাদের গ্রামের পুরো এলাকা মিলে একটা ডিপ টিউবওয়েল ছিলো একটু দুরে।সেই ডিপ টিউবওয়েলে মাঝে মধ্যে আমার আপু পানি আনতে যেত কলসি নিয়ে।
আমিও যেতান শখ করে আমার একটা ছোট কলসি ছিল সেটা নিয়ে।এখন আমার প্রতিদিন আসা যাওয়াতে চোখ পড়ে যায় সেই লেবু গাছ আর পেয়ারা গাছের দিকে।কিন্তু উপায় তো নাই কিভাবে পেয়ারা ও লেবু নিতে পারি?রাস্তার দিক থেকে হাত দিয়ে ধরতে পারিনা।কিন্তু লেবু আর পেয়ারা দেখে আমার এমন অবস্থা হয়ে গেল কিছুতে আমার মন মানতেছে না।কথায় বলে না ঘরের জিনিসের চেয়ে পাশের ঘরের জিনিস মজার বেশি।আমার বেলায় ও তা হল।আসলে ছোটবেলায় তো সবারই এই রকম কিছু দুষ্ট-মিষ্টি ঘটনা থাকে।এখন আমার মাথায় একটা বুদ্ধি এলো যেহেতু হাত দিয়ে ধরতে পারিনা রাস্তার দিক দিয়ে।তাহলে একদিন সন্ধ্যাবেলা আমাকে কাজটা করতে হবে।
তখন আমি মাকে বললাম মা আজ আমি পানি আনতে যাব সন্ধ্যা বেলায়।আমি কলসি হাতে নিয়ে এক কলসি পানি নিয়ে ঘরে রেখে এসে আবার পানি আনতে যায়।এবং এদিক ওদিক তাকায় দেখলাম কেউ নেই রাস্তার মধ্যে এবং ওদের বাড়ির বাইরে ও কেউ নেই।মাগরিবের আজান দিয়ে ফেলছে যেহেতু সবাই নামাজ পড়তে চলে গেছে।সেই সুযোগে আমি আর এক কলসি পানি আনতে গেলাম।পানি নিয়ে আসার সময় কলসিটা কোমর থেকে এক সাইডে রেখে দিলাম।সোজা ঢুকে গেলাম ওদের ঘেরাও করা পুকুরের পাড়ে লেবু আর পেয়ারা গাছের কাছাকাছি।আমার ভয়ে এমন হাত-পা কিভাবে কাঁপছিল বলে আমি বুঝাতে পারব না।
এটা ছিল আমার জীবনের প্রথম ঘটনা।এতক্ষণ খাওয়ার জন্য আমার ব্যাকুলতা ছিল।এখন যখন আমি লেবু আর পেয়ারা ছিঁড়তে গেছি তখন আমার হাত পা যেন অবশ হয়ে আসছিল।আমি দুইটা লেবু আর একটা পেয়ারা নিয়ে কোনো রকমের বেঁচে ফিরে আসি।কিন্তু আমার ঘটনাটা এখানে শেষ ছিল না।আমি লেবু নিয়ে বাসায় ফিরে আসি।২/৪ মিনিট পর আমার বড় ভাই বাসায় আসে।বাসায় এসে আমাকে খোঁজ করতে থাকে।তখন আমার মনের মধ্যে একটা ভয় কাজ করছিল।ঠিক যেমনটা ভয় পেয়েছিলাম ব্যাপারটা তেমন হলো।আমি যখন পেয়ারা এবং লেবু নিয়েছিলাম তখন ওদের বাড়ির কেউ একজন আমাকে দেখছিলো।তারা আমার বড় ভাইকে বলে দিছে।কিন্তু ভাই আমার আমাকে খুঁজতে খালি হাতে আসেন নাই। শিবা গাছের ডাল থেকে একটা বড় বেত নিয়ে আসলো।
তখন আমি কি করবো আর বুঝতে পারছিলাম না।বলেছিল তোদের কী খাবারের কোন অভাব রাখছিলাম? আমাদের বাড়িতে কি পেয়ারা গাছ এবং লেবু গাছ ছিল না?এমন কাজ কোনোদিন করবে? তখন আমি কিছু বলতে পারছিলাম না। আমার চোখ দিয়ে পানি যাচ্ছিল আর হাত পা এমন কি পুরা শরীর কাঁপা শুরু করছিল।এমন একটা মাইর দিল আমাকে জিন্দেগি তে যেন আমি চুরির কথা মুখে না আনি।এমন একটা বাজে কাজ/এমন একটা বাজে অভিজ্ঞতা আমার জীবনে বার বার আমাকে মনে করিয়ে দেয়।আসলে এমন ঘটনা হয়তো আমাদের সবার জীবনের কিছু না কিছু থাকতে পারে।
একেক জনের বাজে অভিজ্ঞতা একেক রকমের হয়ে থাকে।তাই আমি ভাবলাম বিষয়টা আপনাদের সাথে শেয়ার করি।আসলে এখানে চুরি করাটা লজ্জার ব্যাপার না।কারণ এটা ছোট বেলায় না বুঝে সবারই হয়ে থাকে।তাই আমার ছোটবেলার এই বাজে এবং তিক্ত অভিজ্ঞতা টা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে নিজেকে অনেক হালকা মনে হচ্ছে।আপনাদের আমার এই বিষয়টি পড়ে কেমন লাগছে জানি না। কিন্তু আমার কাছে নিজেকে খুব হালকা মনে হচ্ছে।ধন্যবাদ সবাইকে আমার বিষয়টি সময় দিয়ে পড়ার জন্য।আজ এখানেই শেষ করছি আমার লেখা।অন্য একদিন উপস্থিত হব নতুন কোন টপিকস নিয়ে।সবাই ভাল থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।ধন্যবাদ সবাইকে।
আমি সামশুন নাহার হিরা।আমার ইউজার আইডি@samhunnahar।আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে।
আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি।ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা।
আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি।তাই আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত।তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।


Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি ঠিকই বলেছেন এরকম ছোটবেলার বেশ কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা আমারও রয়েছে। আসলে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যা সকলের কাছে শেয়ার করা যায় না। আপনার ঘটনাটি ও আসলে বাজে একটা অবস্থা হয়েছিল এবং এটার জন্য আপনাকে মার ও খেতে হয়েছে, এরকম ঘটনাগুলো আসলে সারা জীবনই মনে থাকে সকলের।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মনে পড়লে অনেক দুঃখ লাগে আবার হাসিও পায়। কারণ ওই সময়টাতে এরকম অনেক কিছু করেছিলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে দিদি ছোটবেলায় সবাইই কম বেশী এসব করে, এগুলো খুবই কমন ব্যাপার। আমার তো কত এমন কেস আছে লোকের বাড়ি থেকে করমচা,কুল,পেয়ারা, কৎবেল,আমের আচার, আমশী, আমসত্ত্ব কত কি চুরি করে খেয়েছি। বিটলবন, মশলা লবন তো প্রায় খেয়ে কৌটো ফাকাই করে দিতাম। এগুলো এক একটা মজা। এগুলো শৈশবের আনন্দ। আসলে আপনার দাদার দোষ নেই। ওনাকে ওই ভাবে বলা হয়েছে তাই সম্মানে লেগেছে। কিন্তু পাশের বাড়ির ওরা এমন না করলেই পারত, বরং পরে ডেকে ভালো ভাবে আদর করে বোঝাতেও পারত। যাই হোক দুঃখ নেবেন না এসবে। 😄
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার চুরির মাত্রা তো অনেক বেশি হা হা হা।খাওয়া-দাওয়া তো বেশ করলেন চুরি করে মসলা, লবণ,আমসত্ত্ব।🤭🤭🤭।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে ছোটবেলায় এরকম ধরনের ঘটনাগুলো সবার জীবনে কিছু না কিছু রয়েছে। কারণ ছোটবেলায় আমরা কোনটা মজা আর কোনটা ঠিক বেঠিক কিছুই বুঝতাম না। নিজের কাছে যেটা ঠিক মনে হতো সেটাই করতাম। বিশেষ করে কারো গাছের ফল হলে তো লোভ সামলানো যেতো না। যদিও আপনি অনেক ভয়ে চুরি টা করে বেরিয়ে আসতে পারলেন কিন্তু তাও কেউ একজন দেখে ফেলল। আর আপনার ভাইয়ের এক মাইরের সাথে চুরির নামটা পর্যন্ত ভুলে গেলেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হা হা হা!আপু বিশ্রি একটা কান্ড ছিল অনেক।মনে পড়লে অনেক লজ্জা হয়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আচ্ছা আপু আমার মাথায় এখনো খেলছে না যে আপনি এত ভয় পাচ্ছিলেন কেন!🤔🙄 আরে সামান্য লেবু আর পেয়ারাই তো 😊। ছোট বেলায় এমন দুই একটা ঘটনা না থাকলে হয় নাকি 😅। আমাদের নিয়ে কত বিচার হয়েছে এমন 😉। তবে ভাইয়া ডাল দিয়ে মেরেছিল সত্যি!! এটা কিন্তু একদম ভালো লাগলো না। আচ্ছা আপু এই দিন গুলোর কথা মনে হলে এখন বড্ড হাসি পায় না বলুন তো? হিহিহিহি। আমার তো খুব মজা লাগে।
একটু সংশোধন করে দেবেন আপু 🙏
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হাসি পায় মানে অনেক মজা পাচ্ছি।আর ভাবতেছি জীবন থেকে অনেক মজার কিছু সময় চলে গেল।সেই সময় যদি আবার ফিরে পেতাম বসে বসে ভাবতেছি তাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit