শুভ দুপুর সবাইকে,
সবাই কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন ব্যস্ততম সময়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি সুস্থ আছি পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুন্দর সময় কাটাচ্ছি। বন্ধুরা হাজির হয়ে গেছি প্রতিদিনের ধারাবাহিকতায় একটি লাইফ স্টাইল পোস্ট নিয়ে। যেটা আমি প্রতি বুধবারে আপনাদের সাথে শেয়ার করে থাকি। সেই রুটিন অনুযায়ী আজকে আবারো আরেকটি বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য উপস্থিত হয়েছি। চেষ্টা করি জীবনের ভালো মন্দ বিষয়গুলো প্রতিনিয়ত আপনাদের সাথে ঘুরে ফিরে শেয়ার করার। তবে চেষ্টা করি সপ্তাহে সাত দিন আপনাদের সাথে ভিন্ন ভিন্ন পোস্ট শেয়ার করে নিতে। আজকে যে বিষয়ে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব তা খুব ভালো লাগার একটি বিষয়। নিশ্চয়ই বন্ধুরা আপনারা শিরোনাম দেখে কিছুটা আন্দাজ করতে পারছেন।
গত জানুয়ারির ১ তারিখ আমার হাজবেন্ডের জন্মদিন ছিল। প্রতি বছর কিছু না কিছু সারপ্রাইজ দেওয়ার চেষ্টা করি। এবারেও কিছু গিফট করার ইচ্ছে ছিল প্ল্যান করে থাকছিলাম কিছু একটা দিব। যখন কিনতে যাব সমস্যাটা তখন হয়ে গেল। এত শরীর খারাপ লাগছিল কিছুই ভালো লাগছিল না। তবে বাসায় ভালো-মন্দ রান্না করে খেয়েছিলাম সবাই। মেয়েরাও বেশ ভালো মনে রাখে জানুয়ারির ১ তারিখ তাদের বাবার জন্মদিন। জন্মদিন আসার দুই তিন দিন আগে থেকে মেয়েরা অনেক বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। বিশেষ করে তাদের বাবার জন্য তারা গিফট কার্ড তৈরি করেছিল। দুই মেয়ে দুই ধরনের গিফট কার্ড তৈরি করেছে এবং সেখানে কিছু লিখে দিছে। তাছাড়া ও মেয়েরা একজনে এক এক রকমের চকলেট নিয়ে বাবাকে গিফট করলো। বিষয়টা খুবই আনন্দের ছিল। আসলে ছোট বাচ্চাদের মনে এত ছোট ছোট বিষয়গুলো খুবই মনে থাকে।
তাদের জন্মদিন যেমন তাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাদের মা-বাবার জন্মদিনের গুরুত্ব তাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে এই বিষয়টা আমি এইবারে লক্ষ্য করেছি ছোট মেয়ের কাছে বেশি। ছোট মেয়ে বেশ উত্তেজিত ছিল। একদম ছোট মেয়ে সে কিছু বোঝেনা। সে আমাদের কাছ থেকে কিছু টাকা নিয়ে অল্প অল্প জমা করে রাখে। যেহেতু বড় মেয়ে জমা করে টাকা অযথা খরচ করে না। সেই বিষয়ে ছোট মেয়ে ও খুব বেশি পাকাপোক্ত হয়ে গেছে। বড় মেয়ে কিছুটা খরচ করলেও ছোট মেয়ে একদম খরচ করে না। সেই খুব যত্ন সহকারে একদম গোপনে টাকাগুলো লুকিয়ে রাখে হা হা হা। তবে তার এই সঞ্চয় মনোভাবটা আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। ছোটকালে আমিও এমন ছিলাম টাকা জমা করে রাখা আমার বেশ অবশ্যাস ছিল।
তবে একটি বিষয় আমার কাছে খুবই আবেগী মনে হলো তা হলো বাবাকে গিফট কার্ড দেওয়ার সময় সে ১০০ টাকা দিল হি হি হি। আসলে ছোট মানুষের কাছে ১০০ টাকা মানে বিরাট অংকের টাকা। বাবা তো ভীষণ খুশি হয়ে গেল আর আমারও ভালো লাগলো। সেই সাথে সেই চকলেট দিল। তবে বড় মেয়ে চকলেট বক্স দিছে গিফট কার্ড দিছে। আমার ইচ্ছে ছিল আমি কিনতে বের হব। কিন্তু এত খারাপ লাগলো আর বের হওয়া সুযোগ হলো না। ভাবছিলাম পরের দিন যাব। কিন্তু ছোট মেয়ে আর একটি কান্ড করে বসলে আমার সাথে। সে আমার কাছে ৮৫০ টাকা হাতে দিয়ে বলল ওর বাবার জন্য একটা ঘড়ি কিনে দিতে। ওরে বাবা! আমি তো শুনে অবাক হয়ে গেছি।
একটা ৫-৬ বছরের বাচ্চা তার বাবার জন্য ৮০০ টাকা খরচ করবে বিরাট একটি ব্যাপার তাই না? আমি বললাম তোমার ঘড়ি দিতে হবে না তোমার বাবার অনেক ঘড়ি আছে। সেই বলে কি! থাকুক আমি দিবোই দিবো। তুমি আমাকে মার্কেটে গিয়ে একটি ঘড়ি কিনে দেবে পছন্দমত। এখন আমি মেয়েকে তো বোঝানো শুরু করে দিলাম সে কিছুতেই শুনে না। আমি বললাম গত বছর বেশ ভালো মানের দুইটা ঘড়ি নিছি ঢাকা থেকে আমরা হাজব্যান্ড ওয়াইফ দুইজনে। সে বিষয়টা অবশ্যই বাচ্চারা জানে। এরপরও আরো দুই একবার ঘড়ি নিয়েছে। কিন্তু মেয়েকে কিছুতে বোঝাতে পারি না। সে অনেক কান্না শুরু করে দিল। অবশেষে গোপনে বিষয়টা আমি তাদের আব্বুকে বললাম। মেয়ে তো জানতে পারলে কান্না শুরু করে দেবে যেহেতু সারপ্রাইজ ছিল।
সেই জন্য তার বাবাকে আগে থেকে বলা যাবে না। মেয়ে বলল আব্বুকে বলতে হবে না ওকে সারপ্রাইজ দিবো। আমি মেয়ের বাবা থেকে গোপনে জানলাম। সে আমাকে বলল ছোট মেয়ের টাকা খরচ করতে হবে না। আর যদি সে বেশি কান্নাকাটি করে তাহলে একটা শার্ট কিনতে বলো। সেই বিষয়টি আমি মেয়েকে বললাম কিন্তু মেয়ে কিছুতে রাজি হয় না ঘড়ি দেবে সেই। অবশেষে ওর বাবা বলল আমাকে, ঠিক আছে যখন ঘড়ি দিতে চাই তাহলে আরো কিছু বেশি টাকা দিয়ে একটা মোটামুটি ভালো মানের ঘড়ি নিও। আমিও সেই চিন্তা করে মেয়েদেরকে নিয়ে ঘড়ির মার্কেটে গেলাম। সেখানে বেশ ভালো মানের ঘড়ি ছিল। প্রতিটি ঘড়ি দেখতে আমার খুবই পছন্দ হয়েছিল। এক একটি এক এক মডেলের ঘড়ি দেখতে দারুন ছিল। তাছাড়া অনেক দামি ঘড়িও ছিল ৮ হাজার দশ হাজার এমন।
দামি ঘড়ি যেহেতু আছে আমি সেই দামের দিকে আর যাচ্ছিলাম না। যেহেতু মেয়ের ইচ্ছেটে পূরণ করতে হয় সেজন্য আমি মিডিয়াম প্রাইস এর মধ্যে একটি ঘড়ি দেখছিলাম। যেহেতু মেয়েদের বাবা কালো ঘড়ি অনেক পছন্দ করেন তাই আমি কালো ফ্রেমের ঘড়ি নিলাম। তাছাড়া ঘড়ির চেইন একটু গোল্ডেন টাইপের ছিল। অবশেষে পছন্দ হয়ে যায় ৩০০০ এর ভিতরে একটি ঘড়ি। বাকি টাকা গুলো আমি আমার কাছ থেকে দিয়ে ঘড়ি নিয়ে আসলাম। মেয়ে তো অনেক খুশি যেহেতু সেই ৮০০ টাকা দিয়ে ঘড়ি কিনলো বাকি টাকাগুলোতে আমার পকেট থেকে গেল হা হা হা। মেয়ে অবশেষে ঘড়িটি কিনে তার বাবাকে গিফট করল। বাবা মেয়ের সেই সুন্দর একটি মুহূর্ত আমি দেখলাম দুই জনের মুখে বেশ আনন্দ ছিল।
তবে বাবা একটু অদ্ভুত হয়ে গেল। কারণ এত ছোট মেয়ে আমার জন্য এত টাকা ছাড় দিল এরকম চিন্তা করে। বাবা ও অনেক খুশি হয়ে মেয়েকে অনেক কিছু স্টিকার কিনে দিল মার্কেটে নিয়ে গিয়ে। সেই দিনটি আমার কাছে খুবই ভালো লাগছিল। এমন সুন্দর একটি ভালো লাগার মুহূর্ত বন্ধুরা আমি আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিলাম। আশা করি আপনাদের সবার কাছে ভালো লাগবে।
ডিভাইসের নাম | Wiko,T3 |
---|---|
মডেল | W-V770 |
Location | কক্সবাজার |
ফটোগ্রাফার | @samhunnahar |
ক্যাটাগরি | লাইফ স্টাইল |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা। আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
জানুয়ারি মাসের এক তারিখ ভাইয়ার জন্মদিন ছিল শুনে ভালো লাগলো। বাচ্চারা অনেক বেশি এক্সাইটেড ছিল তাদের বাবার জন্মদিন নিয়ে, এটা তো পোস্টটা পড়ে ভালোভাবেই বুঝতে পারলাম। ভাইয়ার জন্মদিন উপলক্ষে দেওয়া উপহারটা খুব সুন্দর ছিল। অনেক সুন্দর করে এটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন আপু। যা দেখে আমার কাছে খুব ভালো লেগেছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাচ্চারা অনেক আগে থেকেই দিনটি মনে রাখছিল। কেউ চকলেট গিফট দিল। আর্ট করে গিফট দিল। আবার ঘড়ি কিনে দিলো বিষয়টি আমার কাছে খুবই ভালো লাগছিল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে ছোট ছোট ভালো লাগা গুলো অনেক আনন্দ এনে দেয়। আরে আনন্দের মাঝখানে বাধা দেওয়াটা মোটেই কাম্য নয়। ঘরে যতই ঘরে থাকুক না কেন ভালোলাগা বলে একটা বিষয় রয়েছে বাচ্চাদের মনে। বিষয়টা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন এবং বাবুদের ভালো লাগার অনুভূতিটা আমাদের মাঝে শুভ সকাল করেছেন দেখে ভালো লাগলো। ঘড়ি হাতে দেওয়ার মধ্যে ভালোলাগা থাকে এই বিষয়টা বাবুরা বুঝেছে। তাইতো গিফট করতে চাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ ভাইয়া আপনি ঠিক বলছেন বচ্চারা অনেক উত্তেজিত ছিলো সেই বিষয়ে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার আজকের টাস্কঃ-
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু আপনার পোস্ট পড়ে আমার তো ভীষণ ভালো লাগলো। সত্যি মেয়েরা বাবা-মাকে অনেক ভালোবাসে। ভাইয়ার জন্মদিনে সোনা মনিরা অনেক সুন্দর উপহার দিয়েছে। দোয়া করি আপনার পরিবারটা যেন সারাটা জীবন এরকম সুখে থাকে। আমার তো গল্পটা পড়তে পড়তে মনের ভিতর অন্যরকম অনুভূতি জাগলো আপনার না জানি কত ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার অনেক ভালো লাগছিলো আপু বাচ্চাদের এমন কিছু কাজ দেখে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন ছেলে মেয়ের কাছে মা-বাবা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মা বাবারা যাই করে না কেন ছেলেমেয়েরা তাই দেখে অভ্যস্ত হয়ে পড়ে। ঠিক তেমনি আপনার মেয়েদের বাবার জন্মদিনের মুহূর্তটা দেখে ভীষণ ভালো লাগলো। বিশেষ করে ছোট ছোট হাতে বাবার জন্মদিনে কিছু কাগজ দিয়ে লেখালেখি করলো সেটা একটু বেশি ভালো লাগলো। যাইহোক শেষমেষ আপনার টাকা দিয়ে হলেও ঘড়িটা গিফট করতে পেরেছে দেখে আরো ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু আমার থেকে টাকা নিয়ে ঘড়ি কিনে দিলাম অবশেষে। বাচ্চারা অনেক খুশি হয়েছিল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সন্তানের কাছ থেকে উপহার পাওয়ার আনন্দটা সত্যি অন্যরকমের। আর এই আনন্দ লাখ টাকার চেয়েও বেশি। সত্যি আপু ভাইয়ার জন্মদিন উপলক্ষে আপনার মেয়েরা দারুন একটি উপহার দিয়েছে দেখে অনেক ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু আমার মেয়েদের জন্য দোয়া করবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাচ্চাদের মধ্যে সঞ্চয়ের মনোভাব রয়েছে এটা শুনে ভালো লাগলো। বাচ্চাদের কাছ থেকে উপহার পাওয়াটা অনেক আনন্দের বিষয়। ভাইয়া জন্মদিন উপলক্ষে খুব সুন্দর উপহার দিয়েছে বাচ্চারা। ঘড়িটাও খুব সুন্দর হয়েছে। আপনাদের এই আনন্দের মুহূর্তগুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু বাচ্চারা টাকা নিয়ে খরচ করে না তেমন। তারা নিজের মতো করে সেগুলো জমা করে রাখে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Twitter Link
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়ার জন্মদিন উপলক্ষে মেয়েদের তরফ থেকে ঘড়ি গিফট দেওয়া হয়েছিল দেখে খুব ভালো লাগলো। বাচ্চারা তো দেখছি জেদ ধরে বসে ছিল তাদের বাবাকে ঘড়ি গিফট করার জন্য। আপনার মেয়ে অনেক খুশি হয়েছিল ঘড়িটা কিনতে পেরে এটা বুঝতেই পারছি। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর করে এটা আমাদের সবার মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঘড়ি যখন কিনতে হবে না বলছিলাম তখন ছোট মেয়ে তো খুব কান্না শুরু করে দিছিল বাধ্য হয়ে ঘড়ি কিনতে গেছিলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit