সবাই কেমন আছেন?
আশা করি বন্ধুরা আপনারা সকলেই ভাল আছেন? আমিও ভাল আছি সৃষ্টিকর্তার অসীম রহমতে আপনাদের দোয়ায়। আশা করি পরিবার পরিজনকে নিয়ে আপনাদের সময় ভালো যাচ্ছে। বন্ধুরা সব সময় চেষ্টা করি আপনাদের সাথে ভিন্ন ভিন্ন টপিক্স নিয়ে উপস্থিত হওয়ার। আজকে আমি আবার উপস্থিত হয়েছি নতুন একটি বিষয় আপনাদের সাথে শেয়ার করতে। যদিও আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম গত তিনটি পর্ব। সমাজের অসহায় এতিম সখিনার জীবনের গল্প। আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম যেহেতু সখিনার দ্বিতীয়বার ডিভোর্স হয়ে গেল। তাছাড়া তার বাবা অসুস্থ হয়ে পড়লো সেই সাথে।
যেহেতু বয়স বাড়তেছে তাই অসুস্থতা যেন তার পিছু নিলো। এদিকে সখিনার বড় ভাইকেও বিয়ে করালো তার বাবা। সখিনার আরও ছোট বোনেরাও উপযুক্ত হয়ে গেল বিয়ের জন্য। কিন্তু সখিনার একজন বাচ্চা নিয়ে ঘরে ফিরে এলো তার বাবার বাড়িতে। তার বাবা খুবই চিন্তায় পড়ে গেলেন যেহেতু মা মরা মেয়ে তার দায়ভার কে নেবে সে চিন্তায়। হয়তো বাবা যতদিন আছেন ততদিন তার চিন্তা ভাবনা করবেন। এরপরে তো কেউ আর তার চিন্তা করবে না। সত্যিই তো এই পৃথিবীতে বাবা-মায়ের কোন তুলনা হয় না। যতদিন বাবা আছেন ততদিন সখিনার মাথায় একটু ছায়া আছে।
এভাবে কাটতে লাগলো সখিনার জীবন। হয়তো এভাবে যেতে যেতে তার ছেলেটি ৪-৫ বছর বয়সে হয়ে গেল। কিন্তু সখিনার আর বিয়ে হলো না। এভাবে সখিনার বাবারও জীবন জটিল হতে থাকলো। সখিনার বাবার আস্তে আস্তে বয়স বাড়তে থাকলো এবং অসুস্থতা বাড়তেই থাকলো। তাদের পরিবারে দারিদ্রতা নেমে আসলো। কারণ টাকা-পয়সা ধন সম্পদ সব সময় একই অবস্থায় থাকে না। একদিন সখিনার বাবাদের বাড়িতে জমি জমার কাজ করার জন্য কিছু লোক নিয়ে আসলো দূর থেকে সখিনার বাবা। তো সেখানে একজন লোক বেশ কিছুদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছিল সখিনার বাবার বাড়ির জায়গা জমিনে।
ছেলেটি অবিবাহিত ছিল। গরিব ঘরের ছেলে দিনমজুরের কাজ করে তার মা বাবা কেউ ছিল না। কিন্তু সখিনার বাবার সেই ছেলেটিকে অনেক বেশি পছন্দ হলো সখিনার জন্য। যেহেতু অনেক পরিশ্রম করে ছেলেটি। এদিকে সখিনার একটা মাত্র বড় ভাই সেই ও বিয়ে করে আলাদা হয়ে গেছে। সখিনার বাবার অবস্থা দিন দিন খারাপ হতে যাচ্ছে। তাছাড়া ছোট ছোট সব বাচ্চারা সখিনার বাবার ঘরে। আর সখিনার যেহেতু আগে দুইটি বিয়ে ভেঙ্গে গেল সেখানকার একটি সন্তানও আছে চার পাঁচ বছরের। তখন তার বাবা সিদ্ধান্ত নিল সেই ছেলেটির সাথে সখিনা বিয়ে দেবে। তখন সখিনার বাবা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিলো আবার। যেহেতু ছেলেটি অবিবাহিত তাই তার নামে কিছু জায়গা জমি লিখে দেবে সেই চিন্তা করলো সখিনার বাবা। এভাবে সখিনাও রাজি হয়ে গেল বিয়ে করতে।
ছেলেটি যেহেতু গরিব ঘরের ছেলে একটি ভালো পরিবারের মেয়ে পেয়ে বিয়ে করল। ছেলেটি চিন্তা করল না তার একটি ছেলে আছে কিংবা সখিনা দুইবার বিয়ে করেছে সে চিন্তা করে নাই। এভাবে তাদের জীবন চলতেই থাকে খুব সুখের। সেই ছেলে সখিনাকে অনেক বেশি ভালোবাসতো। কিন্তু তার মধ্যেও কিছু বদ অভ্যাস ছিল। কথাই বলে যার একবার কপাল ফাটে সে কপাল ভাঙতে থাকে জোড়া লাগে না আর। যাক কষ্ট করে কোন রকম সব মানিয়ে নিতে থাকলো সখিনা। বাবার বাড়ির পাশে একটা ঘর করে দিল সখিনাকে। সেখানে সখিনা দিন যাপন করতে থাকলো স্বামীর সাথে আগের ছেলে সন্তানও আছে সখিনার।
সখিনার হাজব্যান্ড কোথাও বের হলে একটি না একটি ঘটনা করে আসে ঘরে। সেটার জন্য সখিনার বাবাকে এবং সখিনাকে ছোট হতে হয় সমাজে। বলতে পারেন একটু বদ মেজাজি সকিনার স্বামী তাছাড়া কিছু খারাপ অভ্যাস ছিল। যেহেতু দুইবার আগে বিয়ে হয়ে গেল সখিনার ভালো ছেলে পাবে কোথায়। তার অনেক লম্বা জীবন পরেই থাকলো তাই সখিনাকে সেই ছেলেটির সাথে বিয়ে দিয়ে কোন রকম মানিয়ে নেওয়া চেষ্টা করল। এভাবে সখিনার স্বামীর ঘরে দুইটা কন্যা সন্তানের জন্ম হলো এবং দুটি ছেলে সন্তানের জন্ম হলো। বেশ কিছুদিন গেল তাদের সংসারে বলতে পারেন সংসার ভরপুর হয়ে গেছে। হাজবেন্ডের অপকর্মগুলো তার মেনে নিতে খুবই কষ্ট হয়।
কষ্ট হলেও কি করবে মানিয়ে নিতে হচ্ছে। সবাই সখিনাকে বলতেছে মানিয়ে নেওয়ার জন্য। কোন কিছু কথা কাটাকাটি হলে সখিনা অনেক মারধর করতো। সখিনা সেই ঘটনা গুলো তার বাবা এবং ভাইদেরকে যদি বলে তাহলে তারাও সান্ত্বনা দিত সখিনাকে। এভাবে দেখতে দেখতে ছেলে মেয়েরাও বড় হয়ে গেল। সখিনা এবং সখিনার হাজবেন্ডের বয়স বাড়তে থাকে। কিন্তু সখিনার হাজবেন্ডের একটা বদ অভ্যাস ছিল সেই অন্য নারীদের প্রতি আসক্ত ছিল। অন্য নারীদের সাথে তার সম্পর্ক ছিল কিংবা নারী দেখলে রাস্তার মধ্যে তাদের ঘায়ে হাত দিত। রাস্তাঘাটে নারীদের গায়ে হাত দিত এমন খারাপ অবস্থা শুনলে সখিনা কাঁদতে থাকে। এছাড়া অনেক বার সখিনার স্বামীকে অপমান হতে হয়ছে।
যেহেতু সন্তানেরা বড় হতে থাকলো। সেই সাথে স্বামীর এমন অপকর্মগুলো সখিনাকে সমাজে নিচু চোখে দেখতেছে। তাছাড়া সখিনার বাবাকে সবাই চিনে এবং ভাল পরিবারের মেয়ে সখিনা। এভাবে চলতে থাকে সখিনার আর স্বামীর সংসার জীবন।
কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ে অনেক বড় ধরনের একটি ঘটনা ঘটে যায় আবার ও সখিনার জীবনে।
লেখার উৎস | গ্রামের বাস্তব একটি গল্প |
---|---|
ইমেজ সোর্স | কেনভা দিয়ে তৈরি |
অবস্থান | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
ক্যাটাগরি | গল্প লেখা |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
https://twitter.com/nahar_hera/status/1769448348959003080?t=3JjLyuVvjjotQIfMTJTOYg&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপু এই গল্পের আগের কিছু পর্ব আমি পড়েছিলাম।এই পর্ব পড়ে মনে হলো সখিনা হয়তো এবার ভালো থাকবে৷ কিন্তু তা আর হলো না। যাইহোক পরবর্তীতে কি ঘটনা ঘটবে সেটা জানার অপেক্ষায় রইলাম আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সখিনার জীবনটা এমনই ছিল আপু দুঃখে ভরা ছিল জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুবই সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করছেন আপনি৷ এই গল্প পূর্ববর্তী পর্ব আমার পড়া হয়েছিল৷ আজকে এর চতুর্থ পর্ব পড়েও খুবই ভালো লাগলো৷ সখীনার কথা শুনে অনেকটা খারাপ লাগছে৷ তার আগেও বিয়ে হয়েছিল এবং সে বিয়ে গুলো ভেঙ্গে গিয়েছিল। পরবর্তীতে তার বিয়ের জন্য এসেও বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল। তার যে ভাই ছিল সেও বিয়ে করে তাদের থেকে আলাদা হয়ে গিয়েছে। তখন থেকেই তাদের পরিবারের কষ্ট আরো অনেক বেশি পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়ে যাচ্ছে৷ তবে সেই অবিবাহিত ছেলেটি তাদের বাড়িতে কাজ করত। তাকে সখিনার বাবার পছন্দ হয় এবং তিনি চিন্তা করেন যে তার সাথে সখীনার বিয়ে দিবেন৷ সখিনাও তাতে রাজি হয়ে যায়৷ তখন সখীনার বাবা ভাবেন যে অবিবাহিত ছেলের নামে কিছু জায়গা লিখে দিবেন৷ অসংখ্য ধন্যবাদ এই গল্পটি শেয়ার করার জন্য৷ পরবর্তী পর্ব দেখার আশায় রইলাম৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক ধন্যবাদ ভাইয়া সময় দিয়ে বিস্তারিত পড়ার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit