আসসালামুয়ালাইকুম/ আদাব,
প্রিয় কমিউনিটির সকল সম্মানিত ব্লগার ভাই ও বোনেরা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আপনাদের দিনকাল ভালোই কাটলো শত বিষন্নতার মাঝেও। তবে আপনাদেরকে ভালো আছেন কিনা সেটা জিজ্ঞেস করতেও খুবই দ্বিধান্বিত আমি কারণ যা পরিস্থিতি গেল। কারণ দেশের যে পরিস্থিতি যাচ্ছে যে পরিস্থিতি গেল আমরা সবাই ভালো নেই। আমাদের উপর যে ঝড় গুলো বয়ে গেল সত্যি আমরা শারীরিকভাবে সুস্থ থাকলেও মানসিকভাবে অনেক অসুস্থ হয়ে পড়েছি। হঠাৎ করে দেশের এমন পরিস্থিতি আমরা আসলে কারো কাছে কাম্য ছিল না। আমরা কেউ কল্পনা করি নাই আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশে এমন একটি ঘটনা ঘটে যাবে। কোন মুহূর্তের জন্য আমরা কেউ কল্পনা করিনি এমন খারাপ পরিস্থিতি। একদিকে দেশের পরিস্থিতি এত খারাপ ছিল অন্যদিকে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যাওয়া সব কিছু মিলিয়ে এই শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশে কাটালাম একটি সপ্তাহ।
দিনগুলো এত কষ্টের মধ্যে কাটিয়েছি সত্যিই এই দিনগুলোর বর্ণনা দেওয়া খুবই জটিল এবং দুর্বিষহ। বৃহস্পতিবার যখন হ্যাংআউটে জয়েন করার জন্য অপেক্ষা করেছিলাম তখন দেখি সবার অনুপস্থিতি। শুনেছিলাম এর আগে মোবাইলের নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে গেছিল। কিন্তু আমার ওয়াইফাই লাইন তখনো কাজ করছিল। হঠাৎ করে যখন হ্যাংআউটে জয়েন করতে চেয়েছিলাম তখন জয়েন হওয়া যাচ্ছিল না। ওয়াইফাই কানেকশন খুবই স্লো হয়ে গেছিল। যখন চিন্তা করলাম যে আসলে ওয়াইফাই ডিস্টার্ব করতেছে মনে হয় সেই জন্য মোবাইলে একটি ডাটা কিনে নিলাম। কোন রকম কষ্ট করে যখন হ্যাংআউটে জয়েন হলাম তখন আমরা মাত্র চারজন ছিলাম। আমরা দুইজন বাংলাদেশী ইউজার এবং আর তিনজন ইন্ডিয়ান ইউজার ছিলেন। পরশ দাদা আমাদেরকে বললেন ইন্টারনেট যেহেতু কাজ করতেছে না তখন আজকে হ্যাংআউট হবে না।
তখন হ্যাংআউট থেকে বেরিয়ে পড়লাম আসলে আমরা মাত্র সাতজন জয়েন হতে পেরেছিলাম। ইতোমধ্যে সবার ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে গেছিল। এরপরে আমার কিছুক্ষন ইন্টারনেট চলছিল হঠাৎ করে বন্ধ হয়ে যায়। তো আমি চিন্তা করলাম সেই সময় আমার ওয়াইফাই রাউডার হয়তো ডিস্টার্ব করতেছে মাঝে মাঝে এমনই হয় তাই আমি একটু নেড়েচেড়ে দিলাম। ঠিক করে দেওয়ার পরেই যখন ইন্টারনেট আসতেছে না তখনই বুঝতে পারলাম ওয়াইফাই কানেকশন চলে গেল। পুরো রাত অপেক্ষা করেছিলাম আসবে কিনা কিন্তু তখনও আসলো না। এরপরই সকাল থেকে শুরু হয় ভয়াবহ অবস্থা। আমার হাজব্যান্ড কে বললাম একটি পত্রিকা আনার জন্য। কিন্তু আগের দিন মোবাইলে যা দেখছিলাম আসলে একটুও শান্ত ছিলাম না। এমন কিছু পরিস্থিতি দেখছিলাম এমন কিছু ভিডিও দেখছিলাম যা শরীরের লোমগুলো খাড়া হয়ে গেছিল।
সত্যি পুরো পরিবেশটা একদম অশান্ত হয়ে গেছিল। চারদিকে মারামারি গোলাগুলি খুবই খারাপ অবস্থা ছিল। সেদিন বৃহস্পতিবার আমাদের কক্সবাজারেও অনেক গোলাগুলি হতাহত এর খবর শোনা গেছিল। এখানেও নিহত হয় এবং শতাধিক আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন অনেকে। যখন থেকে ইন্টারনেট বন্ধ হওয়ার কারণে অনেক বেশি বিষন্নতায় ছিলাম। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগছিল দেশের খবরা খবর গুলো পাচ্ছিলাম না। এর পরেই সারাদিন কোন পেপার পড়তে পারি নাই। পেপার সকাল ৮টার আগেই শেষ হয়ে যায়। কোনরকম শুয়ে বসে দিন কাটালাম। পরের দিন শুক্রবার আসলো এরপর একটা পত্রিকা পেলাম এবং কিছু খবরা খবর জানতে পারলাম আসলে খুবই খারাপ অবস্থা ছিল ঢাকা শহরের। সারাদিন ইন্টারনেটের মধ্যেই সময় কাটাতাম। হঠাৎ করে যখন ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায় কমিউনিটিতে সময় দিতে পারি নাই আমার জন্য দিনগুলো খুব কষ্টকর ছিল। আমি জানি এমন অবস্থা সবার হয়েছে।
আসলে শুধু আমার জন্য না পুরো দেশবাসীর জন্য খুব খারাপ পরিস্থিতি ছিল। এখনো ভয়ে আছি।এখনো আতঙ্কে আছি আসলে এখনো আমাদের পরিবেশটা একদম থমথমে অবস্থা। আমরা বলতে পারছিনা এখনো আমরা সুস্থ আছি। পারিপার্শ্বিক দিক দিয়ে এখন আমরা ভালো আছি সেটা বলতে পারছি না। তবে ইন্টারনেট আসার কারণে কিছুটা স্বস্তি পেলাম। কারনে স্বস্তি পেয়েছি কমিউনিটিতে সময় দেওয়ার ব্যস্ত থাকার। ব্যস্ত সময় এবং ফ্রি সময় কেমন খারাপ যায় সেটা তিলে তিলে বুঝতে পেরেছি। একদিকে বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ মেয়েদের বাবার অফিস বন্ধ। ইন্টারনেট বন্ধ সেখানে সময় দিতে পারিনি। তবে ইন্টারনেট আমার জন্য ফেসবুক কিংবা ইউটিউব এ সময় দেওয়ার জন্য নয় কমিউনিটিতে সময় দেওয়ার জন্য জরুরি ছিল। কারণ এখানে সময় কাটাতে পারলে মানসিকভাবে অনেক শান্তি পায় স্বস্তিগুলো খুঁজে পাই সেজন্য। সময় গুলো কাটালেও আসলে আমার জন্য খুবই কষ্ট হয়েছিল।
আপনাদের কার সময় গুলো কেমন কাটালো জানালে অনেক ভালো লাগবে বন্ধুরা। আপনারা অনেকেই আছেন যেগুলা আপনারা সরাসরি বাস্তব চিত্রগুলো দেখেছেন ঢাকা শহরে। আমরা খবরে মধ্যে দেখেছি এবং নিউজ এর মধ্যে দেখেছি। মাঝে মধ্যে ঘরে অস্থিরতা কাজ করলে সমুদ্র সৈকতে যেয়ে সময় কাটিয়েছি। তবে আবার বাসায় ফিরে এসে অস্বস্তিকর অবস্থা। আজকে যখন হঠাৎ করে ইন্টারনেট পেলাম তখন নিঃশ্বাস ফিরে আসলো একটু স্বস্তি পেলাম। হঠাৎ করে ইন্টারনেট আসার সাথে সাথেই ডিস্কোডে চলে আসলাম সবার সাথে একটু কথা বলে শান্তি পেলাম।
যখন ইন্টারনেট পেলাম তখন পোস্ট লেখা শুরু করে দিলাম। আশা করি বন্ধুরা সবার মতামত গুলো জানালে ভালো লাগবে। সবার মতামতের মাধ্যমে জানতে পারবো সবার অনুভূতিগুলো। সবাই নিশ্চয়ই নিরাপদে ছিলেন ভালো ছিলেন এমনটাই আশা করছি। ধন্যবাদ সবাইকে বন্ধুরা ভালো থাকবেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে।
লেখার উৎস | নিজের অনুভূতি থেকে |
---|---|
ইমেজ সোর্স | কেনভা দিয়ে তৈরি |
অবস্থান | কক্সবাজার, বাংলাদেশ |
ক্যাটাগরি | ক্রিয়েটিভ রাইটিং |
সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।
🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন আপু আমরা একদম বন্ধ পরিবেশে এক সপ্তাহ ছিলাম।দেশের এমন পরিস্থিতে কি যে অসহায় মুহূর্ত কাটিয়েছি।খুবই কষ্টের মধ্যে দিন কেটেছিল।আজকে ইন্টারনেট আসার পর আপনাদের সকলের সাথে কথা বলার পর একটু যেনো সস্থি ফিরে পেলাম।ধন্যবাদ আপু পোস্টটি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এমন পরিস্থিতি আপু আর কোন দিন দেখিনাই এই জীবনে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
https://x.com/nahar_hera/status/1816183595419197693?t=QxI7s1CKTc-ScxIgls03_Q&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit