ট্রাভেলিংঃ- কক্সবাজার বৌদ্ধ মন্দিরে ঘোরাঘুরি।

in hive-129948 •  7 months ago 

সবাইকে শুভ সন্ধ্যা,


প্রিয় কমিউনিটির সকল ব্লগার ভাই ও বোনেরা আশা করি ভালো আছেন। প্রিয় বন্ধুরা আমিও ভাল আছি আপনাদের দোয়ায়। আপনারা কেমন আছেন এবং আপনাদের দিনকাল কেমন যাচ্ছে? আশা করি পরিবার-পরিজনকে নিয়ে আপনারা বেশ ভালোই আছেন এবং সুস্থ আছেন। আস্তে আস্তে গরমের তীব্রতা বেড়ে যাচ্ছে সামনে রমজানের দিন। সবকিছুতে একমাত্র সৃষ্টিকর্তা সহায়। সৃষ্টিকর্তার উপর ভরসা ছাড়া আর কিছু করার উপায় নেই। সবকিছু মিলিয়ে আমরা ভালো থাকার চেষ্টা করি। কারণ মানব জীবন মানে হচ্ছে দুঃখ এবং হাসি, কান্না সবকিছু মিলিয়ে হচ্ছে এই জীবন সংসার। হঠাৎ দুঃখে ঢেকে যায় জীবন। আবার দেখবেন হঠাৎ আপনার জীবন সুখে কানায় কানায় ভরপুর।

f.jpg

যাক বন্ধুর অনেক কথাই বলে ফেলেছি। এত ব্যস্ততার মাঝে এই শহরের ভিড়ে সারাদিন ঘোরাঘুরি করি বাচ্চাদেরকে নিয়ে এদিক-ওদিক বিভিন্ন কাজে। সংসারের কাজকর্ম নিজের ব্যক্তিগত কাজ। আত্মীয়-স্বজনদের সাথে যোগাযোগ। সামাজিক দায়বদ্ধতা সবকিছু মিলিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। সামাজিক দায়বদ্ধতা বলতে তো বুঝতে পারছেন একটা মানুষকে সামাজিকভাবে বসবাস করতে গেলে অনেক কিছু মেইন্টেইন করে চলতে হয়। তারপরও নিজের ভালো লাগা এবং মন্দ লাগা বিষয় গুলো একটু খুঁজে নিতে হয়। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব কক্সবাজার শহরের ভিতরে বৌদ্ধ মন্দিরে ঘোরাঘুরির একটি মুহূর্ত।

f1.jpg

আমাদের কক্সবাজার শহরের কিছু দূরে আলাদা ইউনিয়ন চৌফলদন্ডী ইউনিয়নে বৌদ্ধদের বসবাস। তাদের জীবিকা প্রাধনত নদীকে ঘিরে। পাশে বাঁকখালী নদী আছে। তারা বিশেষ করে নাপ্পির কাজ করে। এই নাপ্পি দেশ বিদেশে অনেক মূল্যবান। তাদের প্রচুর অর্থ সম্পদ এই নাপ্পির ব্যবসা করে। এই শহরের মহেশখালী উপজেলাতেও বৌদ্ধদের বসবাস। এছাড়াও এখানে রয়েছে রামু ক্যান্টনমেন্টের পাশে বৌদ্ধদের আলাদা একটি বসবাস। বেশ কিছু জায়গায় তারা ছিন্ন বিচ্ছিন্ন ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। আমাদের এখানে বাংলাদেশে যেহেতু সব ধর্মাবলম্বীদের মানুষের বসবাস। আমরা সবার সাথে বেশ ভালো ভাবে মিশি। এখানে আমাদের কোন ভেদাভেদ নেই আমরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই সবার সাথে একই সাথে মেলামেশা করি। আমরা ধর্মকে নিজস্ব ক্যাটাগরির মধ্যে রেখে সকল ধর্মের উৎসবকে আমরা নিজেদের উৎসব হিসাবে পালন করি।

f2.jpg

সকল ধর্মের উৎসবকে আমরা সম্মান করি। ধর্ম যার যার উৎসব সবার এই নীতি নিয়ে আমাদের বাংলাদেশের মানুষের বসবাস। তবে সেটা আজকে শুধু বাংলাদেশ নয় পুরা বিশ্বজুড়ে এখন ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একই নীতিতে আমরা অঙ্গিকার বদ্ধ বেশ ভালই লাগে। বৌদ্ধদের বিভিন্ন অনুষ্ঠান থাকে যেগুলো এই বৌদ্ধ মন্দিরের মধ্যে হয়ে থাকে। মহেশখালীতে আদিনাথ মন্দির ছাড়া এখানে বৌদ্ধ মন্দির কক্সবাজারে। এছাড়াও রামু বৌদ্ধ মন্দির টিও বড়। তবে কক্সবাজারের এই বৌদ্ধ মন্দির খুবই আদি এবং অনেকটা পুরাতন। এই বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের যখন কোন বড় ধরনের উৎসব হয় বিশেষ করে পানি খেলা উৎসব। এই পানি খেলা উৎসব টি বিশেষ করে এই বৌদ্ধ মন্দিরে অনুষ্ঠিত হয়।

f3.jpg

এই মন্দিরে চৌফলদন্ডীর সব বৌদ্ধরা একত্রিত হয়। আমাদের কক্সবাজারের বার্মিজ মার্কেট এলাকায় টেকপাড়ায় বৌদ্ধদের অনেক বেশি বসবাস। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মহেশখালীর এবং কক্সবাজারের সকল বৌদ্ধরা একত্রিত হয়। বৌদ্ধদের পানি খেলা উৎসব আমার কাছে বেশ ভালই লাগে। তাদের পানি খেলার বিষয়টা অবশ্যই অনেকেই জানেন। এটা আসলে আলাদা ভাবে অনেক কিছু জানার ব্যাপার-স্যাপার আছে। সেই দিকে এখন যাচ্ছি না। আমি আরও একবার গিয়েছিলাম এই বৌদ্ধ মন্দিরে। মেয়েকে নিয়ে স্পীক আপ একাডেমিতে যেতে হয়। যেহেতু স্পীক আপ একাডেমি বৌদ্ধ মন্দির সড়কে। একদম পাশাপাশি না হলেও একটু দূরে বলতে হয়। যখন ক্লাস শেষ হয়ে যায় একদিন তখন সেখানে ঘুরতে যাওয়ার মনস্থির করলাম।

f5.jpg

যদিও এখন উৎসব নাই অনেক স্থির একটি পরিবেশ এখানে এখন। মাঝে মাঝে পর্যটকরা সেখানে ঘুরে আসে যায়। আপনার অবশ্যই ফটোগ্রাফির মাধ্যমে বুঝতে পারবেন অনেক পুরাতন একটি মন্দির। এই পুরাতন মন্দির কে ঘিরে পাশাপাশি আরও একটি মন্দির স্থাপন করা হয়েছে। যেটা খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। বিশেষ করে যেই প্রধান স্থাপনাটি রয়েছে সেটা কাঠের। এখন যেটা করেছে ইটের উপর। মন্দিরের পাশাপাশি অনেক বৌদ্ধদের বসবাস আছে। বিশেষ করে যারা পুরোহিত রয়েছেন তারা এই এরিয়ার ভিতরে বসবাস করে।

f6.jpg

জায়গাটি খুবই নিরিবিলি একটি জায়গায়। যখন ঢুকে পড়লাম গেটের সামনে তখন জুতা গুলো খুলে নিতে বলল। যেহেতু সব ধর্মের একটি পবিত্রতা আছে। জুতো নিয়ে তো কোন মসজিদ মন্দিরে ঢোকা নিষেধ। তো প্রথমে আমাকে বলল জুতা গুলো সেখানে রাখলে টাকা দিতে হবে। আরেক জনে বলল টাকা দিতে হবে না। পরের জনে বললেন টাকা না দিলে দায়বার কে নিবে। তখন আমি চিন্তা করলাম টাকার বড় বিষয় না সব জুতা যেহেতু ভাল মানের ছিল হাতে নিলাম। কেউ নিয়ে গেলে আবার কাকে খুঁজবো।

f7.jpg

ভাবলাম যাক হাতে নিয়ে যায় হাতে নিয়ে ঢুকে পড়লাম। কিছু দূর যেয়ে একটা জায়গার মধ্যে জুতা গুলো রেখে দিয়ে মা মেয়ে তিনজনে বেশ ঘোরাফেরা করলাম। এদিক ওদিক ঘোরাফেরা করার পরেই বেশ কয়েকটি ফটোগ্রাফিও নিয়েছি। ফটোগ্রাফি নিয়েছি মন্দিরের বিভিন্ন চারপাশের এরিয়া সমূহের। নতুন স্থাপনা আছে সেটা অনেক সুন্দর সাজানো ছিল। সেটা নিয়ে আমি আপনাদের সাথে পরে শেয়ার করব। আজকে শেয়ার করেছি পুরাতন মন্দিরের পরিবেশ গুলো।

f8.jpg

আমি যখন গিয়েছিলাম তখন প্রায়ই বিকেল বেলা। তখন চারপাশের বাচ্চারা বেশ খেলাধুলা করছিল। নিরিবিলি পরিবেশে বেশ ভালই লাগছিল জায়গাটিতে। আশা করি আপনারা বুঝতে পারছেন বৌদ্ধ মন্দিরের জায়গাটি কি রকম। সময় দিয়ে আমার পোস্ট ভিজিট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।

f4.jpg

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Eh2qs4cCyucf3FD7ahStNw2cTHPk2QiaQacbQjJNEWnuhyjY1PXfUUMr27ifyD15nkQhFHksgx6bm9BxYLdCkQDMy8JhQrktZHYy6njdzRU4bQ9b1d2xjCdoVzCDDY85pLPq2s7FhKBwPjpuHdozHaReDxEaFH2aYse13zaqogf9utVshuSban6ex1saRA.png


ডিভাইসের নামWiko,T3
মডেলW-V770
Locationবৌদ্ধ মন্দির কক্সবাজার
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিট্রাভেলিং


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার লেখা পড়ার জন্য।

💘ধন্যবাদ সবাইকে💘

@samhunnahar

8DAuGnTQCLptHK3w4xbU3SMDsfFVWre2qvkWUixoMRzeeZoCuh45w2th51sZxD9m4AHXDbDbD7JGWe3gRWQNaZipS3P1MH2KAaqanaf5DUhvHCc3V1FJvDr4cvMYfB2M2Sdh6yqjU5MspgYd7CawGzHKz3TJSmUa5b5zmmxhgdL.png

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার কাছে অনেক ভাল লাগে। আমি সব ধরনের ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি গান গাইতে এবং কবিতা আবৃত্তি করতে ভীষণ ভালবাসি। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

Steem_Pro.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলেই আপু জায়গাটি দেখেই বোঝা যাচ্ছে নিরিবিলি একটা জায়গা। বৌদ্ধ মন্দিরে আজ পর্যন্ত কখনো যাওয়া হয়নি তবে আপনার পোস্টটি দেখে অনেক কিছু উপলব্ধি করতে পেরেছি ধন্যবাদ আপনাকে এমন সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

বেশ নিরিবিলি জায়গাটি দেখতে ভালো লাগে। ঘোরাফেরা করতে ভালো লাগে। ধন্যবাদ সময় দিয়ে পড়ার জন্য।

প্রথমের কথা গুলো দারুন বলেছেন ৷ এটা সত্যি আপু আমাদের জীবনে ভালো মন্দ সবমিলে চলতে হবে ৷ আর ব্যস্ততা জীবনের বড় অংশ ৷
সংসার জীবন হোক বা ব্যাক্তিগত জীবন সময় সবসময় এক যায় না ৷ তাই হতাশা না হওয়াই ভালো ৷
যা হোক আপনি কক্সবাজার বৌদ্ধ মন্দিরে ঘোরাঘুরি করেছেন আপনার দুই মেয়ে ৷ দেখা বোঝা যাচ্ছে অনেক ভালো একটা সময় অতিবাহিত করেছেন ৷ আর ফটোগ্রাফি গুলো ও বেশ দারুন ছিল ৷ একটা জিনিস ভালো লাগলো জুতা খুলে প্রবেশ করছেন ৷ দিনশেষে সৃষ্টিকর্তা একটাই ধর্মের ভিত্তিতে আলাদা মাত্র ৷ তাই সব ধর্মে শ্রদ্ধার সঙ্গে দেখা উচিত ৷ অনেক ভালো লাগলো আপু কক্সবাজার বৌদ্ধ মন্দিরে ঘোরাঘুরি করার পোষ্ট টা পড়ে ৷
অনেক অনেক ধন্যবাদ ৷

ভীষণ ভালো লেগেছে আমার পোস্ট পড়ে আপনি খুব সুন্দর অনুভূতি প্রকাশ করলেন। অবশ্যই এটা আমাদের দায়িত্ব এবং কর্তব্যের মধ্যে পড়ে। সব ধর্মের প্রতি সকল মানুষের আমাদেরকে সম্মান প্রদর্শন করা উচিত।

মহেশখালী আদিনাথ মন্দিরে আমরা গিয়েছিলাম। তবে এবারে সময়সল্পতার কারণে কক্সবাজার বৌদ্ধ মন্দিরে যাওয়ার ইচ্ছা থাকলেও যেতে পারিনি। আপনার আজকের এই পোস্টের মাধ্যমে দেখতে পেলাম। যাইহোক ধন্যবাদ আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ভালো থাকবেন ফ্যামিলির সবাইকে নিয়ে সবসময় এই কামনা করি।

হ্যাঁ আর একবার আসলে যেতে পারবেন ভাইয়া। এই জায়গা এত বেশি দূরে না খুব কাছাকাছি একটি জায়গা।

জি আবার গেলে ঘুরে আসবো।্

Posted using SteemPro Mobile

কক্সবাজার আমি যখন ভ্রমণ করতে গিয়েছিলাম তখন এই বৌদ্ধ মন্দিরে আমিও ভ্রমন করেছি। আসলে মন্দিরটি একদম নিরিবিলি এবং খুবই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন জায়গা। আজকে আপনার মাধ্যমে আবারো ফটোগ্রাফি দেখতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো।

Posted using SteemPro Mobile

বাহ! তাহলে তো আপনি দেখেছেন ভালো লাগলো শুনে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে সময় দিয়ে আমার ব্লগিং পড়ার জন্য।