লাইস্টাইলঃ- ফুড ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠানে প্রথম স্থান অর্জন করার অনুভূতি।

in hive-129948 •  5 days ago 

সবাই কেমন আছেন?

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় কমিউনিটির সম্মানিত ব্লগার ভাই ও বোনেরা। বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন পরিবারের সবাইকে নিয়ে নিশ্চয়ই অনেক ভালো আছেন? আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি পরিবারের সবাইকে নিয়ে সুস্থ আছি। আমি আজকে আবার নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হয়ে গেছি আপনাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। সবাইকে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম জানাচ্ছি বন্ধুরা আমার আজকের নতুন ব্লগে। আমি আজকে আপনাদের সাথে যে বিষয়ে শেয়ার করব তা হচ্ছে ফুড ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলাম এবং সেখানে প্রথম স্থান অর্জন করেছি। আমি গতকালকের পোস্টে শেয়ার করেছিলাম গতকাল থেকে অনেক বেশি ব্যস্ত ছিলাম। যেহেতু বড় মেয়েদের স্কুলে ইংলিশ ভার্সনে ফুড ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তার জন্য সকল গার্ডিয়ানকে পিঠা তৈরি করে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

f2.jpg

f3.jpg

কিন্তু অনেক বেশি খারাপ লাগছিল আসলে পিঠা তৈরি করব সেই মন মানসিকতা একদম ছিল না। তাছাড়াও এত ভারী কাজ করতে শরীরে অনেক বেশি ক্লান্ত লাগে খুবই খারাপ অবস্থা হয়ে যায়। সেই জন্য একটু প্রথমে না বলছিলাম কিন্তু মেয়ে মন খারাপ করে সেই বলে অবশ্যই পিঠা বানিয়ে দিতে হবে স্কুলে নিয়ে যেতে হবে। আমিও চিন্তা করলাম যে আসলে মেয়ে মন খারাপ করে বসে থাকবে তাই কিছু একটা তৈরি করে নিয়ে গেলে ভালো হয়। সেজন্য গতকালকে আমি অনেক ব্যস্ত ছিলাম। এত গরমের মধ্যে কাজ করা খুবই কষ্টকর হয়ে যায়। রান্না ঘরে গেলে গরমের কারণে পুরো শরীর ঘেমে যাই এবং মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। একটু পর পর থেমে থেমে কাজগুলো করেছিলাম। আমি মূলত দুই আইটেমের পিঠা নিয়ে গেছিলাম। তার মধ্যে একটি আইটেম হচ্ছে দুধ চিতই পিঠা এবং অন্যটি হচ্ছে চিকেন ঝাল পুলি পিঠা।

f.jpg

f1.jpg

এখন তো শীতের আগমন সব জায়গায় পিঠা পুলির উৎসব শুরু হয়ে গেছে ইদানিং। যখন স্কুলে শুরু হয়ে গেল তখন তো আস্তে আস্তে সব জায়গায় শুরু হয়ে যাবে। দুধ চিতই পিঠা খেতে বেশ ভালো লাগছে আমার। বিশেষ করে দুধের মধ্যে আমি অনেকগুলো উপকরণ দিয়েছিলাম তাই খেতে খুবই ভালো লাগছিল বেশ সুন্দর একটি ফ্লেভার ছিল। এছাড়াও চিকেন পুলি পিঠা খেতে খুবই সুস্বাদু ছিল। বিশেষ করে ভিতরে চিকেনের যে পুর দিয়েছিলাম সেটা বেশ দারুন ছিল খেতে। দুধ চিতই কালকে তৈরি করে নিয়েছিলাম। যদি কালকে তৈরি না করতাম আসলে এত সকালে উঠে পিঠা তৈরি করে নিয়ে যাওয়া খুবই জটিল হয়ে যেত। বিশেষ করে চিতই পিঠা তৈরি করেছিলাম সন্ধ্যার পরে। দুধের মধ্যে পিঠা গুলো দিয়েছিলাম রাতে ঘুমানোর আগে।

f8.jpg

তাছাড়া রাতে ঘুম যাওয়ার আগেই চিকেন পুলি পিঠাগুলো আমি তৈরি করে নিয়েছিলাম। হালকা করে ভেজে ফ্রোজেন করে রাখছিলাম। এরপরে সকালে উঠে একদম কড়া করে ফ্রাই করে গরম গরম নিয়ে গেছিলাম। পিঠাগুলো নিয়ে গেছিলাম স্কুলের প্রাঙ্গনে বিশেষ করে সেখানে প্রত্যেকটা শ্রেণীর জন্য খুব সুন্দর করে কর্নার সাজানো ছিল। আমরা নিয়ে গেছিলাম ক্লাস ফোর এর সেই কর্নারে। একেকটি কর্নার এর মধ্যে ২-৩ জন করে টিচার নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। তারা খাবারগুলো বেশ সুন্দর করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখছিলেন এবং খাবারের নাম গুলো ঠিক করে রাখছিলেন। বেশ কিছুক্ষণ পরে বাংলা মিডিয়ামের টিচারেরা চলে আসলেন সেখানে খাবারগুলো খেয়ে খাবার মান বিচার করার জন্য। তবে গত বছর যে পরিমাণ অংশগ্রহণ করেছিলে সেই পরিমাণ এই বছরে খুবই কম ছিল।

f7.jpg

তবে একটা বিষয় খেয়াল করে দেখলাম যে প্রত্যেকটি কর্নারে যেয়ে দেখলাম সেখানে অনলাইন থেকে বেশিরভাগ খাবারগুলো অর্ডার করা হয়েছে। কারণ এত ডেলিসিয়াস খাবার গুলো কখনো এত সকালে ছোট বাচ্চার মা দের পক্ষে তৈরি করা সম্ভব ছিল না। খাবারের ডেকোরেশন এবং খাবারের মান গুলো দেখে বেশ বুঝতে পেরেছি প্রায় প্রত্যেকটি খাবার অনলাইন থেকে সংগ্রহ করা। যেগুলো ঘরের খাবার ঘর থেকে নিয়ে গেছে সেগুলো অবশ্যই বোঝা যায়। যাক বন্ধুরা সেদিকে আর যাচ্ছি না। মেইন কাজ ভালো খাবার কোথায় থেকে খাবার আনলো সেটা মূল বিষয় নয় খেতে পারলেই বেশ ভালো এবং খাবারের মান ভালো হলে তাতে তারা ভালো নাম্বার দিবেন।

f9.jpg

f4.jpg

এখন আমাদের কর্নারে টিচার চলে আসলেন খাবার গুলোর গুণাগুণ এবং স্বাদ যাচাই করার জন্য। তখন আমার পর্বে আসে আমি প্রথমে দুধ চিতই পিঠা খেতে দিলাম। টিচার খেয়ে আমাকে জিজ্ঞেস করল কি কি উপকরণ দিলাম। আমি সব উপকরণের কথা বললাম। এরপরে আমি চিকেন পুলি পিঠা দিলাম তাদেরকে। সেটাও খেয়ে মাশাল্লা তাদের বেশ ভালো লাগলো। আমাকে দশের মধ্যে আট দিল সেটা অবশ্য আমি খেয়াল করিনি আমার মেয়ে আদিলা খেয়াল করেছে।

f6.jpg

অবশেষে আমাদের খাবারের মানগুলো যাচাই বাছাই করার পরে আমরা সব খাবারগুলো নিয়ে বাচ্চাদের ক্লাস রুমে চলে গেলাম। সেখানে সবার খাবার গুলো সবাইকে ভাগাভাগি করে দিলাম। আমরা বাচ্চারা গার্ডিয়ান সহ খাওয়া দাওয়া করলাম সেই সাথে টিচারদেরকে খাবার দিলাম। অবশেষে আমাদের খাওয়ার পর্ব শেষ এর পরেই পুরস্কার বিতরণের পর্ব। আর সব চেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে এবারে পার্টিসিপেট তেমন ছিল না। অনুষ্ঠান শুরু হয় ১২ টার দিকে সেখানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখা হয়। অবশেষে সবাইকে সকল অংশগ্রহণকারীদেরকে একটি করে সার্টিফিকেট দিয়েছিল সেই সাথে আমাকেও দিল। সবাইকে সার্টিফিকেট দেওয়ার পরে আবার প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় স্থান যারা অর্জন করেছেন তাদের নাম ঘোষণা করার পর্ব।

f5.jpg

পর্যায়ক্রমে ছোট দের আগে দিলেন এরপর বড়দের নাম ঘোষণা করছিল। যখন চতুর্থ শ্রেণীতে আসলো তখন তৃতীয় এবং দ্বিতীয় পুরস্কারের নাম ঘোষণা করা হলো। প্রথম স্থানে আমার নামটি ঘোষণা করার পরে বেশ ভালো লাগলো। বিশেষ করে আমার মেয়েরা অনেক বেশি খুশি হয়েছিল। তো আমি পুরস্কারটা নিয়ে চলে আসলাম বাসায়। যেহেতু অনেক বেশি অস্থিরতা কাজ করছিল সকাল থেকে গরমে খারাপ অবস্থা। ইদানিং গরমে যেতে পারি না প্রচুর পরিমাণ মাথা ব্যাথা শুরু হয়ে যায়। সেজন্য সেখানে আর অপেক্ষা না করে দ্রুত বাসায় চলে আসি। সত্যি কথা বলতে কোন কিছুতে যখন কষ্ট করা হয় সে কষ্টের ফলাফল যখন ভালো আসে তখন অনেক বেশি ভালো লাগে।

f10.jpg

f11.jpg

তা অবশ্যই আপনারা সবাই বুঝতে পারছেন কষ্টের ভালো ফলাফল কত সুস্বাদু কত সুমিষ্ট হয় কত ভালো লাগার অনুভূতি কাজ করে। আশা করি বন্ধুরা আমার বিস্তারিত লেখাগুলো পড়ে আপনারা বুঝতে পারছেন। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি সময় দিয়ে আমার আজকের ব্লগ ভিজিট করার জন্য।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1Eh2qs4cCyucf3FD7ahStNw2cTHPk2QiaQacbQjJNEWnuhyjY1PXfUUMr27ifyD15nkQhFHksgx6bm9BxYLdCkQDMy8JhQrktZHYy6njdzRU4bQ9b1d2xjCdoVzCDDY85pLPq2s7FhKBwPjpuHdozHaReDxEaFH2aYse13zaqogf9utVshuSban6ex1saRA.png

ডিভাইসের নামWiko,T3
মডেলW-V770
Locationকক্সবাজার
ফটোগ্রাফার@samhunnahar
ক্যাটাগরিলাইফ স্টাইল


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

আমার পরিচয়


hira.jpeg

আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে ভালবাসি। আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ভ্রমণ আমার প্রিয় একটি নেশা। আমি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।
D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

New_Benner_ABB1.png

Banner_PUSS1.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সত্যি আপু কষ্টের ফল সব সময় ভালো হয়। আসলে কষ্ট করলে সবকিছু অর্জন করা যায়। ফুড ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠানে প্রথম স্থান অর্জন করার আনন্দ সত্যি অনেক বেশি। অনেক অনেক শুভকামনা এবং ভালোবাসা রইলো আপু।

আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ আপু আমাকে অনেক বেশি অনুপ্রাণিত করলেন।

অনেক ভালো লাগলো আপু আপনি ফুল ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠানে প্রথম হয়েছিলেন জেনে। আসলে কোন কিছুকে অংশগ্রহণ করে যদি বিজয়ী হওয়া যায় তাহলে অনেক ভালোলাগা মনের মধ্যে কাজ করে। আশা কর্ম পরবর্তীতে এমন সুন্দর সুন্দর অনুষ্ঠানে আপনি অংশগ্রহণ করবেন।

শত কষ্টের মাঝেও এই হচ্ছে মনের অনেক বেশি অনুপ্রেরণা।

আরে বাহ! আপু, প্রথম স্থান অধিকার করায় অভিনন্দন আপনাকে। আপনার কষ্ট আসলেই স্বার্থক হয়েছে, কারণ আমি বেশ ধারণা করতে পারছি আপনি এবং আপনার মেয়ে কি পরিমাণ খুশি হয়েছিলেন ১ম স্থান অধিকার এর ঘোষণা দেয়ার পর!! আর দুধ চিতই সারা রাত ভিজলেই পরের দিন সকালে নরম হয় খেতে। বাকিদের অনলাইন থেকে আনা খাবারের বিষয় এ আমিও কিছু না বলি। সততার পথে থাকা এখন একটি রেয়ার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

হ্যাঁ আপু মা মেয়ে সবাই অনেক বেশি আনন্দিত ছিলাম। অনেক মজা হয়েছিল পিঠাগুলো খেতে।

ঠিক বলেছেন আপু কষ্ট করলে সেটার ফল পাওয়া যায়। আপনাকে অভিনন্দন জানাই ফুড ফেস্টিবলে আপনি প্রথম হয়েছেন। খুব সুন্দর গিফট পেয়েছেন। ১০ নম্বরের মধ্যে আট পেয়েছেন। যাই হোক আপনার জন্য শুভকামনা রইল আপু।

আপনার জন্যও অনেক দোয়া এবং শুভকামনা রইল আপু।

ফুড ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠানে প্রথম স্থান অর্জন করেছেন এই জন্য আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাই। ফুড ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠানে প্রথম স্থান অর্জন করছেন শুনে খুব ভালো লাগলো। আসলে কোন অনুষ্ঠানে বিজয়ী হতে পারলে নিজের কাছে খুবই ভালো লাগে। প্রথম স্থান অর্জন করার অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই আপু।

কষ্ট করলে যখন কোন কিছুতে সফলতা আছে সেই হাসিটা খুবই আনন্দের হয়।

অভিনন্দন আপনাকে, কষ্টের ফল সব সবই সুখকর এবং মিঠা হয়, এটাই প্রকৃত সত্য।

দোয়া করবেন ভাইয়া আমার জন্য যাতে জীবনে হাসিখুশিতে থাকতে পারি সব সময়।

প্রথমে অভিনন্দন জানাচ্ছি আপু প্রথম স্থান অধিকার করার জন্য। যেকোনো জায়গা থেকে সফলভাবে নিজেকে তুলে ধরতে পারলে নিজের কাছে অনেক ভালো লাগে। ফুড ফেস্টিভ্যাল অনুষ্ঠানে আপনি প্রথম স্থান অধিকার করেছেন যেটা আপনার প্রাপ্য। আপনার অর্জন দেখে অনেক ভালো লাগলো আপু ধন্যবাদ

বেশ ভালো লাগছিল ভাইয়া এই সফলতা অর্জনে অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

শুকরিয়া আপু আপনি আরও বেশি সফলতা অর্জন করবেন সেই কামনাই করি।