গল্পলেখাঃ- চির দুঃখী সুমির ভালবাসার গল্প। (২য় পর্ব)।

in hive-129948 •  last year 

আসসালামু আলাইকুম প্রিয় বন্ধুরা


প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল ব্লগার ভাই-বোনেরা সবাই কেমন আছেন? সবাইকে লেখার শুরুতে শুভেচ্ছা ও স্বাগতম জানাচ্ছি আমার আজকের ব্লগিংয়ে। সত্যি কথা বলতে প্রতিনিয়ত আপনাদের সাথে পোষ্টের মাধ্যমে উপস্থিত হতে খুবই ভালো লাগে। কারণ ব্লগিংয়ের মাধ্যমে সবার সাথে ভালো মন্দ শেয়ার করা যায়। সবার কাছ থেকে ভালো-মন্দ কিছু জানা যায়। আসলে ব্লগিং এমন একটি নেশায় পরিণত হয়ে গেছে। শত ব্যস্ততার মাঝেও কাজটি করে নিতে খুবই আনন্দ বোধ করি। তো বন্ধুরা আজকে আবার উপস্থিত হয়ে গেছি আপনাদের সাথে প্রতিদিনের ধারাবাহিক কাজ নিয়ে। আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব একটি গল্প পোস্ট। যদিও এই গল্পের প্রথম পর্ব আমি আপনাদের সাথে আগে শেয়ার করেছিলাম। আজকে আমি এই গল্পের দ্বিতীয় পর্ব আপনাদের সাথে শেয়ার করব। প্রথম পর্বে আপনারা বেশ সুন্দর অনুপ্রেরণা দিয়েছিলেন। তাহলে শুরু করা যাক বন্ধুরা।

vecteezy_a-beautiful-asian-middle-aged-woman-has-a-sad-and-depressed_18974041.jpg

Image Source Location

চির দুঃখী সুমির ভালোবাসার গল্পঃ

আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম সুমি তার থেকে কম বয়সী একটা ছেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। সেই ছেলের পরিচয় অবশ্য আপনাদেরকে দিই নাই। সেই ছেলেটি হচ্ছে সুমির ছোট ভাই সেলিমের বন্ধু রাসেল ছিল। বলতে গেলে সেলিমের বন্ধু রাসেল ছিল তাদের দূর সম্পর্কের চাচাতো ভাই। তো তাদের বাড়ির সাথে একদম লাগাও ছিল তাদের বাড়িটি। মাঝ খানে ছোট একটি রাস্তা ছিল যাতায়াতের। দুই রাস্তার ব্যবধানে রাস্তার এদিক ওদিকে তাদের দুই ঘরের বাড়ির অবস্থান। তো সেলিমের সাথে রাসেল সব সময় বাড়িতে আসতো। গল্প গুজব করত। বলতে গেলে গ্রামের মানুষ যেমনই হয়।

মাঝে মধ্যে সেলিমের সাথে রাসেল রাতেই থেকে যেত তাদের বাড়িতে। সেই অভ্যাসের কারণে সেলিম দুবাইতে চলে যাওয়ার পরেও রাসেল তখনও যাওয়া আসা করে। সেই যাওয়া আসার সাথেই সুমির সাথে গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। কিন্তু সুমির মায়ের কাছে তাদের এমন সম্পর্কের কথা মোটেই জানা ছিল না। কারণ রাসেলকে তাদের পরিবারেরই একজন ছেলে মনে করতেন। তাই রাসেল যাওয়া আসা করলেও সুমির মা সেই গভীরত্ব বুঝতে পারেনি। যদিও সেলিম ছিল না কিন্তু রাসেল মাঝে মধ্যে তাদের বাড়িতে থেকে যেত। তো এভাবে চলছিল সুমি এবং রাসেলের ভালোবাসার সম্পর্ক। কিন্তু এরই মধ্যেই সুমিদের পরিবারের কিছুটা আর্থিকভাবে যখন সচ্ছলতা ফিরে আসে। তখন সবাই চেষ্টা করছিল এবার সুমিকে বিয়ে দেবে।

কিন্তু বিয়ের প্রস্তাব আসলে সুমি কোন মতে বিয়েতে রাজি হয় না। তাছাড়া সুমির বড় বোন রুমির এক দেবর সুমিকে খুব বেশি পছন্দ করতেন। সেই ছেলেটি অবশ্যই একজন উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলের সিনিয়র ইংলিশ টিচার ছিলেন। যেহেতু সুমির পরিবার একটি নাম করা ভালো পরিবার ছিল। তাছাড়া সুমির বোন রুমিও দেখতে খুবই ভালো ছিল গুণবতী রুপবতী ছিল। তাই রুমির দেবর সুমিকে বিয়ে করার জন্য অনেক বেশি আগ্রহ দেখালো। কিন্তু সুমি কোনমতে তাকে বিয়ে করতে রাজি ছিল না। তাই এক সময় সরাসরি না বলে দিল সুমি রুমির দেবরকে বিয়ে করবে না। সেই জন্য অন্যদিকে সুমিকে বিয়ে দেওয়ার জন্য চেষ্টা করছিল। কিন্তু তখন ও কেউ টের পাইনি সুমি আর রাসেলের সম্পর্কের কথা। হয়তো তাদের পরিবার পরে জানতো কিন্তু আমরা কেউ টের পাইনি। অবশেষে একজন ছেলের সাথে সুমির বিয়ে ঠিক হয়ে যায় পারিবারিকভাবে।

ছেলেটাও ভালো ছিল তাই ভালো দেখে ছেলেটিকে বিয়ে দেওয়ার জন্য কাবিন/আকদ হয়ে গেল। এর মাঝে বিয়ের দিন ধার্য করার জন্য সবাই প্রস্তুতি নিল। কিন্তু সেই ছেলেটি যখন বাড়িতে আসলো সুমির স্বামী কিন্তু সুমি তার সাথে কথা বলত না। সুমি সরাসরি বলে দিল সেই ছেলেটিকে তার ভালো লাগেনা। যে ছেলেটার সাথে পারিবারিকভাবে সুমির বিয়ে ঠিক হল এবং কাবিন হয়ে গেল শেষে। তখন ছেলেটি ভাবলো সুমি তাকে পছন্দ করল না কেন এই ঘটনা গুলো খোঁজার চেষ্টা করল। খুঁজার চেষ্টা করতে করতে এক সময় জানতে পারলো সুমি রাসেলের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে আছে। এমন ঘটনা গুলো সুমির পরিবারের সবার সাথে আলাপ করলো সুমির স্বামী।

এমনকি এলাকার সব মানুষের সাথে আত্মীয়-স্বজনদের সাথে কথা গুলো সব জায়গায় ছড়িয়ে দিল। এক সময় ছেলেটি সুমিকে বিয়ে করার জন্য আর রাজি হলো না। বলে দিল তাদের বিয়ে ভেঙ্গে দেবে। এখন যেহেতু সুমির সাথে রাসেলের সম্পর্কের কথা আসলো সুমি অস্বীকার করে নিল। কিন্তু রাসেল কান্নাকাটি শুরু করে দিল। কারণ রাসেল সুমিকে অনেক বেশি পছন্দ করত। যদিও রাসেলদের পরিবারের আর্থিক অবস্থা তেমন ভালো ছিল না। আর রাসেল হচ্ছে সুমির বয়সের ছোট। সবকিছু মিলিয়ে বিশৃংখলার সৃষ্টি হয়ে গেল। ঘটনা অনেক গভীরে চলে গেল। সেটা নিয়ে সামাজিকভাবে বসলো সবাই। এই দিকে সুমির পরিবার সুমিকে চাপ দিচ্ছিল যাতে রাসেলের ভালবাসা অস্বীকার করে সুমি। সেখানে সুমির পরিবার সরাসরি না বলে দিল। সুমিও অস্বীকার করলো রাসেলের সাথে তার কোন সম্পর্ক ছিল না।

কিন্তু মিটিং এর মাঝে রাসেল কোরআন শরীফ নিয়ে শপথ করল সুমির সাথে তার সম্পর্ক ছিল। রাসেল অনেক কান্নাকাটি করল। এভাবেই তাদের সবকিছু শেষ হয়ে গেল। সুমির সাথে রাসেলের আর কোন যোগাযোগ ছিল না। সুমির সেই বিয়ে টা ভেঙে গেল। এভাবে সে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ল। রাসেল ও মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ল। এক সময় সুমি অনেক বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ল। যেহেতু সেই রাসেলকে সত্যি ভালোবাসতো। কিন্তু সামাজিক দায়বদ্ধতা পারিবারিক দায়িত্ব তার সবকিছুর কারণে সেই আর রক্ষা করতে পারল না। রাসেল ও সুমিকে না পাওয়ার যন্ত্রণায় ছটফট করতে থাকলো। বন্ধুরা ঘটনা এখানে শেষ নয় কিন্তু আরো অনেক ঘটনা বাকি রয়ে গেল।

তো বন্ধুরা আজ এই পর্যন্ত। আশা করি পরবর্তীতে আমি আপনাদের সাথে বিস্তারিত শেয়ার করব। সাথে থাকবেন আর ভাল থাকবেন...............


268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

লেখার উৎসনিজের অভিজ্ঞতা থেকে বাস্তব গল্প।
ইমেজ সোর্সভিক্টিজি ডট কম
অবস্থানকক্সবাজার, বাংলাদেশ
রাইটিং ক্রিয়েটিভিটি@samhunnahar
ক্যাটাগরিজেনারেল রাইটিং


সবাইকে অনেক ধন্যবাদ সময় দিয়ে আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য।

268712224_305654151337735_1271309276897107472_n.png

🥀আল্লাহ হাফেজ সবাইকে🥀


আমার পরিচয়
আমি সামশুন নাহার হিরা। আমার ইউজার আইডি @samhunnahar। আমি আমার বাংলা ব্লগে কাজ করছি বাংলাদেশের কক্সবাজার থেকে। আমি বাংলা ভাষায় লিখতে-পড়তে অনেক ভালবাসি। রান্না করতে আমি অনেক পছন্দ করি। তাছাড়া সময় পেলে ভ্রমণ করি আর প্রকৃতিকে অনুভব করি। ফটোগ্রাফি করতে আমার ভীষণ ভাল লাগে। আমি মাঝে মাঝে মনের আবেগ দিয়ে কবিতা লেখার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শখের মধ্যে তো গান গাওয়া অন্যতম। আমার মনের ভাব বাংলায় প্রাকাশ করতে পেরে অনেক আনন্দিত। তার জন্য আমার প্রাণের/ভালবাসার কমিউনিটি "আমার বাংলা ব্লগ"কে অনেক ভালবাসি।

D5zH9SyxCKd9GJ4T6rkBdeqZw1coQAaQyCUzUF4FozBvW7DiLvzq9baKkST8T1mkhiizFXSFVv2PXDydTeMWpnYK2gToiY733FT9uwSdBSXWz7RnGmzsa8Pr9pGoyYaQFsuS3p.png

Steem_Pro.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এই গল্পের প্রথম পর্বটা না পড়ার কারণে দ্বিতীয় পর্ব পড়তে একটু অসুবিধা হয়েছে। তবে দ্বিতীয় পর্বটা পড়ে বেশ কিছু বিষয় বুঝতে পেরেছি। রাসেল ছিল সুমির ছোট ভাইয়ের বন্ধু। আর যেহেতু তাদের বাড়িতে যাওয়া আসা ছিল, আস্তে আস্তে তাদের মধ্যে সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। সুমি কিন্তু পরবর্তীতে গ্রামবাসীদের সামনে বলেছিল, রাসেলের সাথে তার কোন সম্পর্ক ছিল না অথবা নেই। কিন্তু রাসেল তো দেখছি কোরআন শরীফ ছুঁয়ে বলেছিল সুমির সাথে তার সম্পর্ক ছিল। যেহেতু সুমিও অনেক বেশি ভালোবাসত রাসেলকে, তাই তার উচিত ছিল সত্যটা স্বীকার করার। যাইহোক শেষ পর্যন্ত কি হয় এটা দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।

যেহেতু রাসেল কোরআন শরীফ ধরে বলল তখন একটা বড় ধরনের অভিশাপে পরিণত হলো। ধন্যবাদ আপু পাশে থাকবেন পরবর্তী পর্ব পড়ার জন্য।

যদিও আমি আপনার এই গল্পের প্রথম পর্ব পড়িনি। তবে দ্বিতীয় পর্বটি পড়ে বেশ খারাপ লাগলো।সুমি তার বয়সে ছোট একটা ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল এবং সেই ছেলেটি তারই ছোট ভাইয়ের বন্ধু ছিল। যাইহোক পরের পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম আপু। অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

গল্পটি আপু পরবর্তীতে আরো অনেক খারাপের দিকে যায় আশা করি পাশে থাকবেন।

আপু আপনার গল্পের প্রথম পর্ব যদিও আমার পড়া হয়নি। তবে দ্বিতীয় পর্ব পড়ে যা বুঝতে পারলাম। আসলে রাসেল ও সুমি দুজন দুজনকে অনেক ভালো বাসে। তবে সুমির বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর সুমি অসুস্থ হয়ে পড়ল। এদিকে রাসেল সুমিকে না পাওয়া র যন্ত্রণায় ছটপট করতে লাগলো।দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়?

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু গল্পটি পড়ার জন্য। আপনাদের সাথে তৃতীয় পর্ব শেয়ার করব ইনশাল্লাহ।

বেশ রহস্যময় একটা গল্প লিখেছেন আপু।পড়ে খুব ভালো লাগলো।আসলে আমরা অনেক সময় দেখি পরিবারের চাপে মানুষ ভালোবাসার মানুষকে ভুলে যেতে বাধ্য হয়।সুমির ক্ষেত্রেও দেখছি তাই হয়েছে।তবে রাসেল এবং সুমির মধ্যকার ভালোবাসা তো রয়ে গেল।আজকের পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো, পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

একদম ঠিক তাই সুমিও কিন্তু ভুল পথে পা দিয়েছিল তাও সঠিক।

রাসেল সবার সামনে সব কিছু স্বীকার করলেও, সুমি দেখছি বিষয়টা অস্বীকার করেছে। রাসেল সুমির থেকে ছোট হলেও, তারা দুজন কিন্তু একে অপরকে অনেক বেশি ভালোবাসে। তবে সুমি দেখছি অস্বীকার করেছিল বিষয়টা এবং কি বলেছিল তার সাথে রাসেলের কোন সম্পর্ক নেই। এই গল্পের শেষে কি হয় এটা দেখার ইচ্ছে রয়েছে।

অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া পরবর্তী পর্ব শেয়ার করব পড়ার জন্য বেশ ভালো লাগলো।

গল্পটির প্রথম পর্ব যদিও পড়া হয়নি। তবে এই পর্বটা পড়ে বোঝা গেল সুমি আর রাসেলের মধ্যকার সম্পর্ক খুব বেশি ভালোবাসাময় ছিল।সুমি পরিবারের চাপে ভালোবাসা অস্বীকার করে আর রাসেল কোরআন শরীফ ছুঁয়ে স্বীকার করেছে।সত্যি বলতে এর শেষ দেখতে ইচ্ছে করতেছে।আমার মনে হচ্ছে গল্পটা একদম বাস্তব কোনো ঘটনা।যাইহোক ভালো লাগলো পড়ে।

অসংখ্য ধন্যবাদ আপু পড়ার জন্য। শেষ টার পরিণতি আরো অনেক খারাপ আশা করি ভালো লাগবে।

এই গল্পের প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম। যাইহোক এই পর্বটি পড়ে সুমি এবং রাসেলের জন্য খুব খারাপ লাগলো। আসলে ভালোবাসায় বয়স কোনো ফ্যাক্ট না। তারা দুজন দুজনকে মন থেকে ভালোবাসে,এটাই অনেক। সুমির উচিত ছিলো অন্য কারো সাথে কাবিনের আগেই সাহস করে বাসায় সবকিছু বলে দেওয়া। শুনেছি প্রেম করলে নাকি সাহস বাড়ে। কিন্তু সুমি তো রাসেলের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ভরা মজলিসে অস্বীকার করে দিলো। দেখা যাক পরবর্তীতে কি হয়। গল্পটি পড়ে সত্যিই খুব ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।