গত সপ্তাহে সজীব দা ইন্ডিয়াতে এসেছিল এটা হয়তো আপনারা অনেকেই এতদিনে জেনে গেছেন। আমার টাইটেল এবং কভার ফটো দেখে আপনারা হয়তো বুঝতে পেরে গেছেন আজকে আমি কি নিয়ে লিখতে চলেছি। কিন্তু সবাইকে একটা অনুরোধ টাইটেলের সঙ্গে পোস্টের মিল খুজতে যাবেন না। হ্যাঁ, টাইটেলে দাদাকেই আমি অতিথি হিসেবে বলেছি। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমাদের বাড়িতে আসা সব অতিথিরা "আসলেই অতিথি হয়না"। সেরকমই সজীবদা আসলে আমার অতিথি নয়, নিজের দাদার মতোই দেখি,এবং এর যথেষ্ট কারণ আছে।সেই কারণগুলি নিয়ে বিস্তারিত পরে একদিনকে আলোচনা করব। আগে আজকের কাহিনী শেষ করি।
যাওয়া আসার দিনগুলি বাদ দিয়ে বাকি ৪-৫ দিনের মধ্যে মাঝের দুটি দিন দাদা আমাকে সময় দিয়েছিল। এই দুই দিনের মধ্যে প্রথম দিন পুরোটাই আমার সাথে কাটিয়েছে এবং পরের দিন বিকেলের কিছু সময় একসাথে থাকতে পেরেছিলাম। কারণ বাকি টাইমটা দাদার অন্য কিছু কাজ ছিল।
তো এই দুই দিনের কাহিনী আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব। আজকে বলবো প্রথম দিনের কিছু কথা।
গত বুধবার অর্থাৎ 10th আগস্ট আমরা দেখা করি। দাদা তার পরিচিত এক দাদার বাড়িতে ছিল, তার বাড়ি কাঁকিনাড়া। তো আমরা ঠিক করি আমরা কলকাতার মধ্যে কোথাও একটা পুরো দিনটা কাটাবো। আমার বাড়ি অর্থাৎ কৃষ্ণনগর থেকে কলকাতা যেতে গেলে কাকিনাড়া পরে মাঝখানে। তাই দাদাকে বলেছিলাম যে আমি কৃষ্ণনগর থেকে ট্রেনে উঠে তোমাকে জানিয়ে দেবো তুমি সেই ট্রেনেই উঠে পড়ো তাহলে আমাদের একসাথে দেখা হয়ে যাবে। কিন্তু আমরা আসলে কোথায় সেই দিন টা কাটাবো সেটা আমরা দুজনে কেউই ভেবে উঠতে পেরেছিলাম না। অনেক রকম ভাবনাচিন্তার পরও যখন কেউ ডিসিশন নিতে পারলাম না, তখন আমরা দুজন মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম আগে তো বাড়ি থেকে বেরোই, তারপর বেরিয়ে ভাবা যাবে কোথায় আমরা ঘুরবো।
তো প্ল্যান মাফিক আমি কৃষ্ণনগর থেকে ট্রেনে উঠে দাদাকে বলে দিলাম। তারপর দাদার স্টেশনে যখন ওই ট্রেনটি পৌঁছল দাদা আমার কথা মতো আমি যে বগিতে উঠতে বলেছিলাম সেখানেই ওঠে। তারপর দাদার সঙ্গে দেখা হলো। যেতে যেতে আমরা ভাবনা চিন্তা করছিলাম যে সেদিনটা কোথায় কাটানো যায়। অনেক ভাবনা-চিন্তা হিসেবে নিকেশের পরেও আমরা কিছু ফাইনাল করতে পেরেছিলাম না। এদিকে আমাদের নামার স্টেশন চলে আসে। ট্রেন থেকে নেমে আমরা ঠিক করি যে সর্বপ্রথম বাবুঘাট ও প্রিন্সেপ ঘাটে যাবো। আমরা দমদম স্টেশনে নেমেছিলাম। সেখান থেকে আমরা মেট্রো অর্থাৎ পাতাল রেলে করে এসপ্ল্যানেড স্টেশনে নামি। মেট্রো ট্রেনে চড়ার সময় সজীবদার একটা আলাদা এক্সাইটমেন্ট কাজ করছিল। তার কারণ দাদার জীবনে সেটাই ছিল প্রথম মেট্রো ট্রেন চড়ার অভিজ্ঞতা। যাইহোক এরপরে আমরা এসপ্ল্যানেড স্টেশনে নেমে বাবু ঘাটের উদ্দেশ্যে বাসে উঠলাম।
দুঃখের বিষয় সেদিনকে আমাদের বৃষ্টিতে প্রচন্ড নাজেহাল হতে হয়েছিল। দমদম স্টেশনে নামা থেকে বৃষ্টিতে ভিজতে শুরু হয়েছিল আমাদের। তো যাইহোক,বাস থেকে বাবুঘাটে নেমে আমরা সেখানে অল্প কিছু সময় কাটালাম এবং কিছু ফটো তুললাম।
তারপর সেখান থেকে আমরা প্রিন্সেপ ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। হাঁটা পথে মিনিট দশেক লাগে প্রিন্সেপ ঘাট যেতে। কিন্তু আবার অঝোরে বৃষ্টি নামে। সেই সময় বৃষ্টির জোর এতই ছিল যে ছাতা থাকা সত্ত্বেও আমাদের বেশ ভিজতে হয়েছিল। কোন উপায় না দেখে আমরা দুই ভাই একটা বট গাছের নিচে খানিকক্ষণ দাঁড়ালাম।
কিন্তু তাতে খুব একটা লাভ কিছুই হলো না। এভাবে প্রায় দশ মিনিট বৃষ্টি পড়ার পর খানিকটা বেগ কমলো তারপরে আমরা আবার সামনের দিকে রওনা দিলাম। প্রিন্সেপ ঘাটে গিয়ে আমরা একটি বেঞ্চ দেখে বসলাম। সেখানে আমরা সাথে করে কিছু খাওয়ার নিয়ে গেছিলাম। যাতে করে বসে বসে গল্প করতে করতে এবং খেতে খেতে সময় কেটে যায়। সেখানে আমরা প্রায় দু'ঘণ্টা মতো বসে বেশ কিছু গল্পগুজপ হাসিঠাট্টা করে সময় কাটালাম।
দাদার সাথে এই নিয়ে আমার দ্বিতীয়বার দেখা। প্রথম দেখাটা হয়েছিল প্রায় বছর পাঁচেক আগে। এর মাঝখানে আর কোন দেখা হয়নি । তবে যোগাযোগটা ছিল । কিন্তু এই দিনকে যখন প্রথম দাদার সাথে দেখা করি বা এতটা সময় কাটাই একবারও মনে হয়নি যে ছেলেটার সঙ্গে আমার জীবনে দ্বিতীয় বার দেখা, যেন মনে হচ্ছিল এর আগেও অনেকবার দেখা করেছি আমরা একসাথে অনেক সময় কাটিয়েছি, কখনো পর বলে মনে হয়নি। দাদার সাথে যে দুটো দিন কাটিয়েছি সত্যি কথা বলতে খুবই ভালো একটা সময় কাটিয়েছি।
যাইহোক,প্রিন্সেপ ঘাটে বসে গল্প করার মাঝেও বেশ কয়েকবার বৃষ্টিও আসে। এরপর আমরা সেখান থেকে বেরিয়ে অন্য কিছু কাজের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। বেরোনোর পথে রাস্তায় আইসক্রিম দেখলাম, দুজনেরই খেতে ইচ্ছে হওয়ায় কিনে খেলাম।
তো বন্ধুরা এই ছিল আমার দাদার সাথে কাটানোর প্রথম দিনের মুহূর্তগুলি। আজকে এখানেই শেষ করছি দেখা হবে আগামী পর্বে।
দিন | 10th August,2022 |
---|---|
ক্যামেরা পরিচিতি | POCO M3 |
Location | দমদম মেট্রো স্টেশন |
প্রিন্সেপ ঘাট |
লেখা গুলো পড়ছিলাম আর ঐ দিনের প্রতিটা মুহূর্ত যেন চোখের সামনে ভেসে উঠছিল। কত কি বলেছি আর কত কিই না করেছি 🤪। আসলে কিছু কিছু সম্পর্ক তৈরি হতে কোন ব্লাড কানেকশন লাগে না ভাই। এগুলো গড গিফটেড। আর দিন শেষে আমি একটা কথা মনে প্রাণে বিশ্বাস করি এখন, ভালোর সাথে ভালো কেউই থাকবে সব সময়। হয়তো এই ভালো মানুষ গুলোর জন্যই আবার কোন একদিন এভাবেই ছুটে বেড়াবো। 😊😊।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তাড়াহুড়ো করে পোস্টটা লিখতে গিয়ে অনেক কিছুই বাদ পড়ে গেছে দাদা।থাক সেগুলো পরে লিখবো😬।
টান থাকা ভালো, টান থাকলে বারবার ফিরে যাওয়া যায়😌।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit