|| ইসকন মন্দির ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত ||১০% বেনিফিট shy-fox এর জন্য

in hive-129948 •  2 years ago 

নমস্কার বন্ধুরা। প্রত্যেককে জানাই শুভ নববর্ষ। প্রথমেই সকল গুরুজনদের আমি আমার প্রনাম ও শ্রদ্ধা জানাই এবং আমার সকল বন্ধু ও ছোট দের জানাই আন্তরিক ভালোবাসা ।সারা পৃথিবীর বাঙ্গালীদের জন্যে আজকের দিনটি খুবই স্পেশাল। কারণ আজ বাঙালির নববর্ষের সূচনা। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি সকলের যেন এই বছরটি খুব ভালো কাটে।

আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার ইসকন মন্দিরে ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত। গত দুসপ্তাহ আগে রংদোলের কয়েকটা দিন আগে আমি আমার এক পিসতুতো দিদি-জামাইবাবু এবং আরেক পিসতুতো দিদি ও তার মেয়ে মিলে হঠাৎ করেই এই ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যানটি হয়।

PXL_20220312_173215440.jpg

আমার পিসতুতো দিদি ও তার মেয়ে থাকে কলকাতার চন্দননগর এলাকায়।
তো অনেকদিন ধরেই তারা প্ল্যান করছিল আমার শহর অর্থাৎ কৃষ্ণনগরে আসার। অবশেষে তারা আসে। তারা এসে প্রথমে সেই দিদি জামাইবাবুর বাড়িতে ওঠে।
তারা মোটামুটি পাঁচ ছয় দিনের প্লান করে এখানে আসে। স্বাভাবিকভাবেই একটু ঘোরাঘুরি প্ল্যান ও করে।
তো আসার পরের দিন আমার সাথে ফোনে কথা বলে ঠিক করে যে সবাই মিলে মায়াপুরের ইসকন মন্দিরে যাব।

IMG-20220314-WA0070.jpg

আপনারা অনেকেই হয়তো মায়াপুরের ইসকন মন্দিরের নাম শুনেছেন কারণ এটি অত্যন্ত বিখ্যাত একটি মন্দির। রংদোলের সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এখানে লোকজনেরা আসে এবং বিভিন্ন শিষ্যরা প্রায় এক মাস ধরে এই মন্দিরে থাকে ও পুরো রংদোল টা আনন্দ করে কাটায়।
এবং বর্তমানে এই মায়াপুরেই তৈরি হচ্ছে এশিয়ার বৃহত্তম মন্দির যার কাজ প্রায় সত্তর শতাংশ শেষ।

PXL_20220312_171318796.jpg

PXL_20220312_171134094.jpg

কৃষ্ণনগর থেকে মায়াপুর যেতে মোটামুটি ৩০ মিনিট লাগে।তো আমাদের প্ল্যান হয়েছিল যে সকাল সাড়ে দশটা থেকে এগারটার মধ্যে আমরা এখান থেকে রওনা দেব অটো বা বাসে করে। তারপর সাড়ে এগারোটার মধ্যে মন্দিরে পৌঁছে একটু ঘোরাঘুরি করব সবাই মিলে এবং দুপুরের খাওয়া-দাওয়া ও মন্দিরের ভোগের মাধ্যমেই সারবো।
কিন্তু আমাদের বের হতে একটু দেরি হয়ে যাওয়ায় আমরা প্রায়ই সারে বারোটা-পৌনে একটা নাগাদ মন্দিরে পৌঁছাই।
সেখানে গিয়ে সবার প্রথমে দুপুরে খাওয়া দাওয়ার জন্য ভোগের টিকিটের লাইনে দাঁড়াই। তারপর সেখান থেকে টিকিট সংগ্রহ করে আমরা খাওয়ার স্থানে চলে যাই। খাওয়া-দাওয়া টি আমাদের তাড়াতাড়ি সারতে হলো কারণ তিনটে অব্দি সেখানে খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা থাকে এবং তার পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। খেতে যত দেরি করবো,সেখানে ভিড় ততো বাড়বে এবং গরমের মধ্যে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটু অসুবিধের।
তোমার ইচ্ছা না থাকলেও খেতে গেলাম।
একসাথে প্রায় তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো লোকজনের খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা সেখানে রয়েছে।

PXL_20220312_131622058.jpg

তো আমরা নিজের নিজের জায়গায় বসে পড়লাম প্রায় দশ পনের মিনিট সেখানে বসার পরে খাওয়ার দেওয়া শুরু হলো।
প্রথমে পুরো জায়গাজুড়ে মোটামুটি চার থেকে পাঁচজন মিলে শুধু জলের গ্লাস দিয়ে গেল তারপরে আরো তাঁরাই আবার খাওয়ার পাতা দিয়ে গেল এবং জল দিয়ে গেল।
এরপর শুরু হল খাওয়ার আসার পালা।
সর্বপ্রথমে আসলো খিচুড়ি তারপর একটি মেশানো তরকারি সাথে ডাল।তার কিছুপড়ে আসলো সয়াবিনের তরকারি।
রং সর্বশেষে চাটনি এবং পায়েস দিয়ে শেষ হলো খাওয়ার পর্ব।

PXL_20220312_131609844.jpg

এরপর আমরা বাইরে বসে আধঘন্টা একটু রেস্ট নিলাম এবং সেখান থেকে আইসক্রিম কিনে খেলাম।
তারপর দিদি দের কে পুরো মন্দির টা জুড়ে ঘুরে দেখানো হলো। পুরো মন্দির টা ঘুরে দেখতে হিসাব মতন পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টা লাগা উচিত, কিন্তু যেহেতু আমাদের হাতে অত সময় ছিলোনা তাই আমরা শুধুমাত্র মন্দিরের বিশেষ আকর্ষণ গুলো দেখলাম।

PXL_20220312_124136707.jpg

PXL_20220312_134748568.jpg

বেশ কিছু জায়গায় মোবাইল ফোন বা ক্যামেরা এগুলো এলাও ছিলনা তাই সব জায়গার ফটো তুলতে পারিনি ।
তাও যতটা সম্ভব ফটো কালেকশন এর চেষ্টা করেছি।
যেহেতু সত্য শীতকাল অতিক্রম করল তাই সেখানকার ফুলবাগানের অল্পকিছু অবশিষ্টাংশ ছিল এবং অধিকাংশই শুকিয়ে গেছে। আমাদের ঘোরাঘুরি করতে করতে বিকেল হয়ে যায় এবং তখন সেখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বেড়ে উঠেছিল।

PXL_20220312_171816762.jpg

PXL_20220312_173108215.jpg

বিকেলবেলা দেখলাম সেখানকার শিষ্য যারা রয়েছেন, খোল কীর্তন নিয়ে একসাথে দল বেঁধে নাচ-গান করছেন এবং নিজেদের মধ্যে আনন্দ করছেন।যেখানে অধিকাংশই ছিলেন বিদেশি-বিদেশিনী। তাদের দেখার জন্য সেখানে ভিড় উপচে পড়ে এবং সেই ভিড়ের মধ্যে থেকেই তারা সবাইকে ডেকে নিয়ে সবাই মিলে একসাথে আনন্দে মেতে ওঠেন।

PXL_20220312_174024007.jpg

PXL_20220312_173843317.jpg

PXL_20220312_173835914.jpg

তারপর আসতে আসতে সন্ধ্যা হয়ে আসে এবং আমরা আর একবার সেখান থেকে হালকা কিছু টিফিন করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিই।

PXL_20220312_174511734.jpg

আজ এখানে আমি আমার গল্প শেষ করছি।

প্রত্যেকটি ফটো মায়াপুর ইসকন মন্দিরে POCO M3 ফোনে তোলা।

@samratsaha

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ইসকন মন্দির ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত শেয়ার করেছেন ভাই। বাহ চমৎকার লাগল আপনার সবগুলো ফটোগ্রাফি। মন্দির টি বেশ চমৎকার ছিল। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন ভাই। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া। 🥰🥰

অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে, কোনোদিন সম্ভব হলে মন্দিরটি একবার দেখে যাবেন।আশা করি ভালো লাগবে।
ভালো থাকবেন।😊

এই মন্দিরের নাম অনেক শুনেছি তবে কখনো দেখা হয়নি। এবং আপনার সৌজন্যে আজকে সেই দেখার সৌভাগ্য হয়ে গেল। অনেক সুন্দর ছিল মন্দিরটি, এবং আপনি খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। শুভকামনা রইল আপনার জন্য, সৃষ্টিকর্তা আপনার মনের বাসনা পূরণ করুক।

হ্যাঁ ভাই,আসলেই এই মন্দিরটি অনেক সুন্দর।
কমেন্ট করার জন্যে ধন্যবাদ আপনাকে।

আমি ইস্কান্দার মন্দিরের নাম অনেক শুনেছি। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে আজকে দেখার সুযোগ হলো। আপনি তো দেখছি অনেক ভালো একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন। অনেক ভাল ঘোরাফেরা করলেন। তার সাথে অনেক সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। বিষয়টা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

হ্যাঁ আপু, নিজের পরিবারের সাথে ঘুরতে কার না ভালো লাগে, স্বাভাবিক ভাবেই অনেক সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছি।
আপনাদের এরকম ফটোগ্রাফি ভালো লাগলে চেষ্টা করবো এরকম আরও কিছু ফটোগ্রাফি তুলে ধরার।

ইসকন মন্দিরটির নাম অনেক শুনেছি কিন্তু কখনো দেখিনি। আজ আপনার পোষ্টের মাধ্যমে দেখতে পেয়ে আমার অনেক ভালো লাগছে। মন্দিরের প্রত্যেকটি ফটোগ্রাফি ছিল অসাধারণ। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর একটি মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ ভাইয়া আমার ফটোগ্রাফি নিয়ে প্রশংসা করার জন্যে।চেষ্টা করবো এরকম আরো কিছু ফটো আপনাদের সাথে শেয়ার করার।সম্ভব হলে মন্দিরটি একবার এসে দর্শন করে যাবেন।

ইসকন মন্দির ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত তোলা ফটোগ্রাফি চমৎকার লাগছে। মন্দির টি বেশ চমৎকার ছিল। ইসকন মন্দিরের নাম অনেক শুনেছি কখনো দেখা হয়নি। আপনার পোস্টে মাধ্যমে খুব সুন্দর উপভোগ করলাম ভাইয়া। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে মন্দিরের পরিবেশটা।খুব সুন্দর করে উপস্থাপন করেছেন ধন্যবাদ ভাইয়া আপনাকে আমাদের মাঝে শেয়ার করে দেখার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। শুভকামনা রইল ভাইয়া।

হ্যাঁ মন্দিরের পরিবেশটা আসলে সত্যিই খুব ভালো।এশিয়ার বৃহত্তম মন্দির বলে কথা।
অনেক ধন্যবাদ ,ভাল থাকবেন ।

আপনার ইসকন মন্দির ঘুরতে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত দেখতে পেয়ে এবং পড়তে খুবই ভালো লাগছে। দেখে মনে হচ্ছে আপনি খুবই সুন্দর সময় কাটিয়েছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের মাঝে আপনার কাটানো সুন্দর মুহূর্তের কিছু অনুভূতি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

হ্যাঁ দাদা আমি খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছি প্রিয় মানুষগুলোর সাথে। কমেন্ট করার জন্য ধন্যবাদ।