আজকে আমি আবারো ম্যাসেঞ্জার পর্বের গল্প শেয়ার করব। লাস্ট পর্বে আমি আমাদের হোটেল পৌঁছানোর গল্প অবধি আপনাদের সাথে শেয়ার করেছিলাম। হোটেলে যখন ঢুকি আমরা মারাত্মক ক্লান্ত ছিলাম। তার প্রথম কারণ আমাদের সারাদিন ঠিকঠাক খাওয়া দাওয়া হচ্ছিল না এবং দ্বিতীয় তথা প্রধান কারণ ছিল অত্যন্ত খারাপ একটি বাস জার্নি। অনেক ধকর হয়েছিল মূলত বাস জার্নি টাতেই। আমাদের বাসটি যেখানে নামিয়ে ছিল সেখান থেকে হোটেল আরো দুশো মিটার পথ। শেষ ১০০ মিটার আবার কিছুটা পাহাড়ের ওপর।ক্লান্ত থাকার কারণে ওই পথ টুকু অতিক্রম করতে বেশ কষ্ট হয়েছিল আমাদের। এতকিছুর পরে হোটেলে গিয়ে যখন স্নান করে সামনে ভাত দেখলাম, তখন যেন মনে হচ্ছিল পুরো স্বর্গ।
আসলে আমি একটু ভেতো বাঙালি আছি। সারাদিনে অন্তত একবার ভাত না হলে আমার চলে না। সেই সময় অত ক্লান্ত থাকার পরে ভাস টুকু পেটে যাওয়ার পরে শরীরটা অনেকটা চাঙ্গা হয়ে গেছিল। ভাত খাওয়ার পরে আমরা রুমে গিয়ে আধ ঘন্টা মত রেস্ট নিলাম, তখন শরীরটা এতটাই চাঙ্গা হয়ে গেছিল যেন মনে হচ্ছিল দু-এক কিলোমিটার হেঁটে ফেলতে পারব।
খেয়েদেয়ে উঠতে উঠতে আমাদের বিকেল সাড়ে চারটে-পাঁচটার মধ্যে বেজে যাই। আমরা ঠিক করি আমাদের কিছু কেনাকাটি আছে সেগুলো তখনই করতে বেরোবো। কিন্তু সেই হোটেল থেকে দোকানপত্র আড়াই কিলোমিটার দূরে ছিল। তা আমরা ঠিক করলাম আমরা হেঁটে হেঁটে সেখানেই যাব।
যেহেতু স্নান খাওয়া-দাওয়া করে আমাদের শরীরের আবার ফ্রেশ হয়ে গেছিল তাই আমাদের হাঁটতে কোন অসুবিধা হয়নি। আমরা তিন ভাই মিলে গল্প করতে করতে এবং সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ উপভোগ করতে করতে দোকানে পৌঁছে গেলাম। আমরা অল্প কিছু মিষ্টি ,কোল্ড ড্রিঙ্ক এ সমস্ত জিনিস গুলি কিনে নিয়ে আসলাম। যদিও ফেরার সময় আমরা একটি বাস পেয়ে গেছিলাম। বাস টি না পেলেও সমস্যা হতো না কারণ সেখানকার রাস্তাঘাট এত সুন্দর পরিষ্কার যে রাস্তা দিয়ে হাঁটতেই বেশি ভালো লাগে। আমরা আধঘন্টার মধ্যে হোটেলে আবার ফিরে এলাম। আমাদের হোটেলের পরিবেশটা ছিল অসাধারণ।
আমরা যে হোটেলটি তে থাকছিলাম তার নাম হলো মেসেঞ্জার ইউথ হোস্টেল। এটি আসলে সরকারি একটি থাকার জায়গা। তাই দাম অত্যন্ত কম হলেও তাদের ব্যবহার , রুম থেকে শুরু করে সবকিছুই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। আমাদের হোটেলর সামনে এবং পিছনে বসার খুব সুন্দর জায়গা ছিল। সামনের দিকে যে বসার জায়গাটি ছিল সেখানে বসে থাকলে সামনের দিকে ড্যামের কিছুটা অংশ এবং দূরে পাহাড় চোখে পড়ে। মূলত সকালবেলা এবং বিকেল বেলা সেখানে বসে থাকলে অসাধারণ অনুভূতি হয়।
কারণ সূর্য ওঠা আবার সূর্য ডোবার মুহূর্তে সেই স্থানটি দেখতে অপূর্ব লাগে। আমরা ফিরে এসে সেখানে বসে থাকতে থাকতেই পুরো সন্ধ্যাটা উপোভোগ করলাম। কিভাবে যে তিন চার ঘন্টা কেটে গেল বুঝতেই পারলাম না। আমাদের হোটেলের আরো কয়েকটি ছবি আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি।