রেসিপি পোষ্ট:-সিঁদল দিয়ে রুই মাছের মজাদার গ্ৰামীন রেসিপি।।

🥰..আসসালামুয়ালাইকুম ..🥰

🥰..এবং হিন্দু ভাই বোনদের কে আদাব..💗🙏।
আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল বন্ধুরা সবাই কেমন আছেন ? আশা করছি সকলেই ভালো আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির একজন নতুন সদস্য, এই প্লাটফর্মের সাথে যুক্ত হয়েছি। সত্যি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে যুক্ত হতে পেরে আমার কাছে অনেক ভালো লাগতেছে।আজকে আমি আপনাদের সাথে সিঁদল দিয়ে রুই মাছের মজাদার গ্ৰামীন রেসিপি শেয়ার করবো।আশাকরি আপনাদের প্রত্যেকের অনেক অনেক ভালো লাগবে। চলুন এবার শুরু করা যাক।

রংপুর,বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি প্রাণবন্ত শহর।যেখানে রয়েছে নানা ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির মিলন। এর মধ্যেই একটি বিশেষ খাবার হচ্ছে "সিঁদল"।রংপুর বাসীর প্রিয় খাবারের তালিকায় অন্যতম হচ্ছে এই সিঁদল।এটি শুধুমাত্র বাংলাদেশের রংপুর অঞ্চলে জনপ্রিয়।তবে অন্যান্য অঞ্চলে জনপ্রিয়তা আছে কি না,সেটি আমার জানা নেই।সিঁদল মূলত ছোট মাছের শুকনো শুঁটকি আর কচুর ডাটা দিয়ে তৈরি হয়। পরবর্তীতে এর সঙ্গে পর্যায়ক্রমে আদা,রসুন,হলুদ, সরিষার তেল,খাবার সোডা আর এলাচও মিশিয়ে নিতে হয়।তারপর গোল গোল পিঁয়াজী বোড়ার মত বানিয়ে রোদে শুকিয়ে চুলার হলকা গরম সাই একটি পত্র নিয়ে সেই সাই এর নিচে ২ থেকে ৩ মাস রাখতে হয়। তারপর এই সিঁদল মাছ দিয়ে রান্না বা ভর্তা করে খাওয়ার জন্য উপযোগী হয়।রংপুর জেলার ৪টি ঐতিহ্যবাহী খাবার মধ্যে একটি হলো সিঁদল । সিঁদল তৈরির পদ্ধতি ও বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ আলাদা ও স্বাদে সুস্বাদু হওয়ার এর জনপ্রিয়তা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে অনেক নারী উদ্যোক্তাও রংপুরের ঐতিহ্যবাহী এই খাবারটি নিয়ে কাজ করছেন।এই সিঁদলের ঝাল ঝাল তরকারি অনেক সুস্বাদু ,আমার খুবই পছন্দের। আপনারা কে কে এই সিঁদল এর সঙ্গে পরিচিত অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।তবে চলুন এবার রেসিপি কিভাবে তৈরি করলাম দেখে নেয়।

প্রয়োজনীয় উপকরণ

• রুই মাছ পাঁচ পিস।
• আলু ।
• সিঁদল দুইটি ।
• কাচা মরিচ ।
• পিঁয়াজ কুচি।
• আদা ।
• রসুন ।
• হলুদ গুঁড়া।
• লবণ।
• মশলা গুঁড়া।
• ধনে পাতা।

ধাপ : ১

প্রথমে রুই মাছ গুলো ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিয়েছি। তারপর মাছ গুলো একটি পত্র রেখে হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে মিক্সড করে নিলাম।

ধাপ : ২

এরপর সিঁদল দুইটি পুরে নেওয়ার জন্য মাটির চুলায় গরম সাই এর ভিতরে দিয়ে পুরে নিয়েছি ।তারপর সিঁদল গুলো পরা হয়ে গেলে ভালো ভাবে পরিষ্কার করে নিয়ে। এরপর গোল সিঁদল গুলো হাতের সাহায্যে ভেঙ্গে নিয়েছি।

ধাপ : ৩

এরপর ভেঙ্গে নেওয়া সিঁদল গুলো, ভর্তা মত বেটে নিলাম। সঙ্গে মরিচ, আদা,রসুন, বেটে নিয়েছি।

ধাপ : ৪

এরপর কড়াইয়ে তেল দিয়ে পেঁয়াজ কুচি গুলো ভেজে নিলাম। তারপর হলুদ লবণ মাখানো মাছ গুলো কড়াইয়ে দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে কষিয়ে নেয়।

ধাপ : ৫

এরপর মাছ গুলো সাইডে রেখে সেখানে বেটে নেওয়া সিঁদল, মরিচ, আদা রসুন বাটা দিয়ে নেয়।

ধাপ : ৬

তারপর সেখান অল্প পরিমাণ পানি দিয়ে নেড়েচেড়ে নিয়ে কয়েক মিনিটের জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিলাম।

ধাপ : ৭

এরপর ঢাকনা খুলে হলকা ভাবে কষিয়ে নিয়ে, তারপর সেখান থেকে মাছ গুলো আলাদা একটি পত্র তুলে নেয় ।

ধাপ : ৮

মাছ গুলো উঠানোর পর , সেই কড়াইয়ে কেটে রাখা আলু গুলো দিয়ে , আলু গুলোকে ভালো ভাবে নেড়েচেড়ে কষিয়ে নেয়।

ধাপ : ৯

এরপর পরিমাণ মত কিছু ধনেপাতা কুচি দিয়ে দিলাম। তারপর বেশ কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে কষিয়ে নেয়।এই সিঁদলের তরকারি যতো নেড়েচেড়ে কষিয়ে রান্না করা হয়,খেতে ততো তাই সুস্বাদ হয়।

ধাপ : ১০

এরপর পরিমাণ মত আবার ও পানি দিয়ে বেশ কিছুক্ষণ জাল দেওয়ার পর , সেখানে মাছ গুলো দিয়ে ১০ /১৫ মিনিটের জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দেয়।

এরপর পরিবেশনের জন্য চুলা থেকে কড়াই নামিয়ে নেয়।

পরিবেশন

এই ছিল আজকের সিঁদল দিয়ে রুই মাছের ঝোল রেসিপি। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।কার কাছে কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্টের মন্তব্য করে জানাবেন।কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন। আজকের মত বিদায় নিচ্ছি, আবার নতুন কিছু নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে।সেই পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং সবার জন্য অনেক শুভকামনা রইল ।

আমার নাম মোছাঃ সামছুন্ নাহার সুইটি।আমি একজন বাংলাদেশী মুসলিম নাগরিক। আমি আমার মাতৃভাষা বাংলায় কথা বলতে ভালোবাসি।আমি আমাদের বাসার পাশেই বদরগঞ্জ মহিলা ডিগ্রী কলেজে অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ালেখা করি। পাশাপাশি ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাজিল প্রথম বর্ষে পড়ালেখা যুক্ত রয়েছি ।আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করার জন্য যুক্ত হয়েছি। আমি দীর্ঘ কয়েক মাস আগে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলার সাহাপুর গ্রামে অবস্থিত ।আমি ভ্রমণ করতে অনেক বেশি পছন্দ করি।সেই সাথে নতুন নতুন ফটোগ্রাফি করতে ও ইউনিক রেসিপি এবং নতুন নতুন ইউনিক ডাই তৈরি করতে বেশ পছন্দ করি। আর স্টিমিট প্ল্যাটফর্মকে আঁকড়ে ধরে ভবিষ্যতে আরো এগিয়ে যেতে চাই এটাই আমার লক্ষ্য।