আমার বাংলা ব্লগ প্রতিযোগিতা-১৪/ আমার দেখা গ্রীস্মকালীন ফল এবং বোনের ভালোবাসা।

in hive-129948 •  3 years ago 

আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই সুস্থ ভাবে আছেন।আমিগ্রীস্মকালীন ফল নিয়ে একটি গল্প আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি আশা রাখি গল্পটি পড়ে ভালো লাগলো কিনা তা কমেন্ট বক্সে জানাবেন।

IMG_20220327_175141.jpg

আমার গল্পটি লেখা জাতীয় ফল কাঁঠাল কে কেন্দ্র করে। আমি যখন ছোট তখন আমার বাবা আমাদের সম্পূর্ণ পরিবার নিয়ে jfcl/ তারাকান্দি কোয়াটারে চলে এলোগ্রামের বাড়ি ছেড়ে। তারপর থেকেই জাকজমক পরিবেশে গড়ে ওঠা।সেই jfcl কলোনীতে স্কুল ও কলেজ ছিল ভিতরের এরিয়ায়।মোট কথা সেই কলোনীতে অফিসার্স ক্লাব, লেডিস ক্লাব, অতিথি ভবন, পার্ক মোটামুটি অনেক বিনোদনের ব্যবস্থাও ছিল সেই jfcl কলোনীতে । অনেক আনন্দে ও মজাই সেই দিনগুলো কেটেছে।

যাক সে সব কথা মা, বাবাকে বলল আমাদের পরীক্ষা শেষ হলে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে কিছুদিন থাকবে। তারপর একসময় পরীক্ষা শেষ হল আমরা সবাই গ্রামের বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হলাম এবং বাড়িতে এক পর্যায়ে পৌঁছে গেলাম।বাবার ছুটি বেশিদিন ছিলনা এইজন্য বাবা আমাদেরকে রেখে পরের দিন চলে গেছে তার গন্তব্য স্থানে কর্মের জন্য।

মা আমাদেরকে বলল মামা বেড়াতে আসবে আমাদের বাড়ীতে। মামা আসার কথা শুনে আমার মা-র এত যে আনন্দ হল সেটা তাকে দেখে সেই দিন আমি বুঝে ছিলাম একটা বোন যে ভাইকে কত ভালোবাসে।

received_299483158935191.jpeg

আমাদের অনেকগুলো কাঁঠাল গাছ কিন্তু একটা গাছের কাঁঠাল মামা খুব পছন্দ করত। সে কাঠাল গাছে মা একটা লোককে উঠিয়ে দিয়ে দেখতে বললো কাঁঠাল পেকেছে কিনা সেই গাছের । লোকটি বলল একটি কাঁঠাল হালকা পেকেছে । মা বললো সেই কাঁঠালটি পারতে । রীতিমতো সে ওই গাছের কাঁঠাল পেরে ফেলল এ কাঁঠালগুলো খেতে অনেক স্বাদ ভিতরের কোষগুলো বড় বড় আর সেই কাঁঠাল গুলো মূলত নরম হয় না শক্ত থাকে ।

received_4848008401978734.jpeg

তখন প্রায় দুপুর মামা আসার সময় হয়ে গেছে মা-র রান্নার আয়োজন শেষ। এখন মামা এলেই তাকে আপ্যায়ন করা হবে। কি যে খুশি আমার মা-র চোখে মুখে শুধু আনন্দ । একসময় মামা বাসায় এলো আমাদের জন্য অনেক কিছু নিয়ে। তারপর মামা ফ্রেশ হয়ে যখন খেতে বসলো তখন মাকে বলল বুবু তোমার ওই গাছের পাকা কাঁঠাল আছে। মামা বলল আমিতো আর বেশি কাঁঠাল পছন্দ করিনা তবে তোমাদের ঐ গাছের কাঁঠাল আমার অনেক পছন্দ এবং খেতেও ভালোবাসি।

IMG_20220327_175143.jpg

তারপর মা কাঁঠালটি কে একটি ধারালো বটি দিয়ে যেই মাত্র কাটতে ছিল তখন মা-র হাতের একটি আঙ্গুল কেটে ফেলেছিল। সেই মুহূর্তে আমরা চিৎকার করে উঠলে মা আমাদের কে বলেছিল তোমাদের মামার আর কাঁঠাল খাওয়া হলো না। মামা চিৎকার শুনে খাওয়ার টেবিল থেকে দৌড়ে এসে মা-র হাত ধরে কান্না করতে থাকে এবং বলে বুবু আমি কেন কাঁঠাল খেতে চাইলাম আজ আমার জন্য তোমার এত বড় ক্ষতি হয়ে গেল । ঠিক সেই মুহুর্তে মামা মা-র হাত চেপে ধরে একটি রিকশা ডেকে মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গেল এবং তাকে সমস্ত চিকিৎসার ট্রিটমেন্ট করে বাসায় নিয়ে আসলো।

আমার এই গল্পটি বাস্তবতার গল্প আমার নিজের জীবনের গল্প । এই ঘটনায় ভাইবোনের যে ভালোবাসা কতটা গভীর তা এই গল্প থেকে উপলব্ধি করা যায়। আসলে ভালোবাসা এমনই হওয়া উচিত

বিষয়ঃ- আমার দেখা গ্রীস্মকালীন ফল এবং বোনের ভালোবাসা।

কমিউনিটিঃ- আমার বাংলা ব্লগ।

আমার কমিউনিটির সকল ভাই বোনদের জন্য রইলো শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ..........

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

দুঃখ জনক বিষয়। সত্যি কাঠাল খেতে গিয়ে এমন বিপত্তি। গল্পটি পড়ে ভাল লাগেছে বলবো না কারন এটা একটি দুঃখের বিষয় ঘটে গেল। হাতের আঙ্গুল কেটে ফেললেন মা। যাই হোক ভাল থাকবেন। পরবর্তীতে কাঠাল কাটার সময় সাবধান থাকবেন আপনিও ।

জি ভাই তার পর থেকে সচেতন হয়েছি আমিও।

গ্রীষ্মকালীন ফলের গল্প শেয়ার করতে গিয়ে আপনি সুন্দর একটি ঘটনা আমাদের মাঝে ব্যাখ্যা করেছেন। আপনার গল্পটি পড়ে আমার খুব ভালো লাগলো। কিন্তু কাঠাল কাটতে গিয়ে আপনার মায়ের দুর্ঘটনার জন্য একটু খারাপ লাগলো। যাইহোক দুর্ঘটনা খুব অল্পতেই শেষ হয়ে গেছে এটা খুব ভালো আরো বেশি কিছু হতে পারত। আমার খুব ভালো লাগলো গল্পটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ ভাই।