SBD recovery case #1 : beneficiary rme [round 19]

in hive-129948 •  11 months ago 

This post is made for recovering lost SBD : 1470

Recovered so far : 438.269 SBD


গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ১৮


vampire-2115396_1280.jpg
Copyright Free Image Source : PixaBay


একটা গভীর দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবারো কিছুক্ষণ নিশ্চুপ থাকলো মহুয়া । তারপর রমেশবাবুর মুখের দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো । বড় বড় চোখ দু'টিতে কোনো পিশাচসুলভ আচরণের চিহ্নমাত্র খুঁজে পেলেন না রমেশবাবু । তিনি ক্রমে সহজ হয়ে উঠছেন । ব্যগ্র স্বরে বললেন, "তারপর ?"

মহুয়া এবার একটু বিষাদমাখা স্বরে আবার বলতে শুরু করলো বহু পুরোনো জমিদারবাড়ির সেই কথা -

"জমিদার গিন্নি ভগ্ন স্বরে ভাইকে এমন কার্য করা থেকে বিরত হতে বললেন । কিন্তু, ভাই সে কথা কানেও নিলেন না । প্রতিশোধ গ্রহণের নেশায় তিনি তখন উন্মাদ । তীব্র ঘৃণা আর আক্রোশে তাঁর হৃদয় তখন পূর্ণ । তিনি তাঁর দিদিকে বারংবার আশ্বস্ত করেন যে এতে তাঁর স্বামীর কোনো ক্ষতি তো হবেই না বরং সব আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যাবে । আবার তিনি ভূপতিবাবুর সাথে সুখে সংসার করতে পারবেন । ছেলেমেয়ে দু'টি বাপের স্নেহ বঞ্চিত হবে না আর ।"

"সব দিক থেকে বিবেচনা করলে এর চাইতে ভালো সমাধান আর হয় না । কিন্তু, জমিদার গিন্নির মন সায় দেয় না । তারপরেও ভাইয়ের সংসারে থেকে ভাইয়ের কথার ওপর কথা বলতেও তাঁর বাধলো । শেষমেশ তাই তিনি ব্যথিত মনে ঘাড় কাত করে সায় দিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলেন । আর জমিদার গিন্নির ভাই করালী বাবু নিজের ভয়ঙ্কর পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সচেষ্ট হলেন । পরদিনই তিনি নিজের সার্বক্ষণিক অনুচর ও নায়েব বটুকেশ্বরকে কাজে লাগিয়ে দিলেন ।"

"এর পরে প্রায় মাস দুই কেটে গেলো । ভূপতিবাবু প্রায় পাঁচ মাস পরে প্রথমা স্ত্রীর পিতৃগৃহে এলেন । উদ্দেশ্য স্ত্রী ও ছেলে মেয়ে দু'টিকে নিজ বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে আসা । ভূপতি বাবুর স্ত্রী খুব খুশি হলেন । তবে তাঁর এই খুশি একটি দিনের বেশি স্থায়ী হলো না । পরের দিনই তিনি জানতে পারলেন যে তাঁর সতীন গর্ভবতী । আর নিজের গর্ভবতী দ্বিতীয় স্ত্রীর দেখাশোনার জন্যই তিনি এসেছেন প্রথম পক্ষের স্ত্রীকে ফেরত নিয়ে যেতে ।"

"ভীষণ রাগে জমিদার গিন্নি রুদ্রমূর্তি ধারণ করলেন । জমিদার শ্যালক বহু অপমান করলেন, বহু কটূ কথা বললেন ভগ্নীপতিকে। শেষমেশ ভগ্ন মনোরথে ভূপতিবাবু খালি হাতে বাড়ি ফিরলেন । আর এর মাস তিনেক পরের কথা । গাঁয়ের পশ্চিমদিকে যে মহাশ্মশান সেখানে একদিন সন্ধ্যাবেলা উদয় হলো বটুকেশ্বর ওরফে বটুকবাবু । তিনি জমিদার শ্যালকের ডান হাত বললেও অত্যুক্তি করা হয় না । ভীষণ ধূর্ত আর নিষ্ঠুর, হৃদয়হীন তিনি । জমিদারের বহু কুকীর্তির পরামর্শদাতা তিনি । এ হেনো বটুকবাবুর হঠাৎ একদিন মহাশ্মশানে উদয় কেন ?"

"শ্মশানের উত্তর দিকে নদীর পাড়ে যে বিরাট অশ্বথ গাছটা অসংখ্য ঝুরি আর ডালপালা মেলে একটা গা ছমছমে আবছায়া পরিবেশ সৃষ্টি করেছে তার তলে একটা ছোট্ট কালী মন্দির । শ্মশানকালী । বহু পুরোনো । কথিত আছে এটা ডাকাতে কালী । বহু বছর আগে ডাকাতরা ডাকাতি করতে যাওয়ার আগে এই মন্দিরে কালী মূর্তির সামনে নরবলি দিত । মন্দিরের চাতালে এখনো প্রকান্ড একটা হাঁড়িকাঠ পোঁতা আছে ।সিঁদুরচর্চিত সেই হাঁড়িকাঠে এখনো মাঝে সাঝে বলি চড়ানো হয় । তবে তা নিতান্তই পাঁঠা বলি ।"

[চলবে]

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এখন এমন একটা পরিস্থিতিতে গল্পটা দাঁড়িয়েছে।যেখানে কিছুই আর প্রেডিক্ট করা যাচ্ছেনা।বারবার আগের ধারণাটাই মনে হচ্ছে যে মহুয়া ভালো তবে পরিস্থিতির কারণে হয়তো সেও খারাপ।

এই গল্পটি যতই পড়ছি ততই ভালো লাগছে। একের পর এক নতুন ঘটনা জানতে পারছি। তবে মহুয়া মনে হচ্ছে রমেশ বাবুর কোনো ক্ষতি করবে না। ভূপতিবাবুর শ্যালক করালী বাবু যে ভয়ংকর প্ল্যান করেছে, এতে করে মনে হচ্ছে ভূপতিবাবু তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাঁচাতে পারবে না। দেখা যাক পরবর্তী পর্বে কি হয়। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।

Posted using SteemPro Mobile

এ পর্বটাও পড়ে ফেললাম ভাই, তবে ঘটনা প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ এলোমেলো লাগছিল, তবে আগ্রহ বেড়েছে প্রচুর, পরের পর্বে কি হবে, তা জানার জন্য অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

আমিও তো ভেবেছিলাম ভূপ্রতি হয়তো তার প্রথম স্ত্রী আর সন্তানের ভালোবাসা অনুভব করেই তাকে নিতে এসেছে। কিন্তু কাহিনী দেখছি একেবারে উল্টো। এই লোককে আসলেই শাস্তি দেওয়া উচিত। যেরকম শ্মশানের বর্ণনা দিলেন শুনেই তো ভয় লাগছে।