This post is made for recovering lost SBD : 1470
Recovered so far : 950.834 SBD
গল্প (রক্ত তৃষা) - পর্ব ২৮
Copyright Free Image Source : PixaBay
আশেপাশের গাঁয়ের মধ্যে এই একটি মাত্র শ্মশানই বড় । তাই একে মহাশ্মশান হিসেবেই লোকে মানে । নদীর পাড়ে বেশ অনেকখানি জায়গা জুড়ে শ্যাওড়া, আকন্দ, বট-অশ্বথ, ভাঁটফুল, কলকাসুন্দা প্রভৃতি গাছপালা আর ঘন ঝোপ ঝাড়ে ভর্তি । তারই মাঝে একটুখানি জায়গা একটু সাফসুতরো করে রাখা । সেখানেই শ্মশান যাত্রীরা মড়াপোড়ানোর চিতা সাজায় । কালী মন্দিরটি চিতা সাজানো জায়গা থেকে খানিকটা দূরে ।
চন্ড এখন মনে মনে বেশ উৎফুল্ল । শিকার এখন একদম তার করায়ত্তে, এখান থেকে তার হাতের বাইরে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। খুশি মনে সে এখন আর দ্রুত পদক্ষেপ করছে না, আর ভয় নেই কোনো । চন্ডের গতি শিথিল হতে দেখে কমলাদেবী একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললেন । এতোক্ষণ ধরে দ্রুত একটানা হেঁটে আসাতে তাঁর বুকে হাঁফ ধরে গিয়েছে, তেষ্টায় গলা কাঠ, পা দু'খানি অসম্ভ ভার, সাড় পাচ্ছেন তাতে কোনো ।
শ্মশানে কিন্তু শেয়ালের বেশ উপদ্রব আছে সেটা বেশ ভালোই বোঝা যাচ্ছে । প্রতিটা ঝোপে-ঝাড়ে তাদের নিঃশব্দ উপস্থিতি আর অগ্নিময় সবুজ চক্ষু জানান দিচ্ছে যে তারা সর্বত্রই আছে । মানুষের মাংস খুঁজে ফিরছে তারা । আধপোড়া মড়া, টাটকা লাশ, বাসি লাশ, গলিত লাশ, অপঘাতে মরা মুখাগ্নি করা জলে ভাসিয়ে দেওয়া মড়া কোনো কিছুতেই তাদের অরুচি নেই । এমনকি অর্ধমৃত বা আহত মানুষকেও টেনে ছিঁড়ে খেয়ে নিতে তারা পটু ।
আশেপাশের সব গাঁয়ের বাগদি, চণ্ডাল, শূদ্র প্রভৃতি ছোট জাতের মানুষেরা বড়ই দরিদ্র, সম্পূর্ণ চিতা সাজিয়ে দাহ করার মতো আর্থিক সামর্থ্য নেই তাদের । তাই তারা মড়ার মুখে একটুখানি আগুন ছুঁইয়েই নদীতে ভাসিয়ে দেয় । সেই সব লাশ নদীর জল থেকে টেনে তুলে ভূরিভোজনে মেতে ওঠে শোয়ালের দল । আর গ্রামে যদি কলেরা বা ম্যালেরিয়ার মতো মহামারী শুরু হয় তবে তো এই সব নরভূক শিয়ালের প্রায় প্রতিদিনই মহাভোজ । প্রতিদিন ১০-১২ টা লাশ আসে তখন শ্মশানে । কোনোরকমে তাদের মুখে আগুন ছুঁইয়েই ঝোপে ঝাড়ে ফেলে রেখে তরিৎ গতিতে পালিয়ে যায় শ্মশান যাত্রীরা ।
ক্রমাগত মানুষের মাংস আহার করতে করতে তাই বড্ড বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে এই সব শেয়ালের দল । অন্য কোনো জানোয়ারের মাংসে তাই তাদের রুচি নেই কোনো । স্বভাবটাও বড্ড বেশি হিংস্র এদের, কখনো সখনো একা মানুষ পেলে দলবেঁধে আক্রমণ করে বসে । আজ কিন্তু সেইসব হিংস্র শেয়ালের দল একটিবারের জন্যও চন্ড ও কমলাদেবীর কাছে ঘেঁষার চেষ্টাও করলো না । তারাও যেন বড় ভয় পেয়েছে এমনই মনে হলো । চন্ড এমনই একজন মানুষ যার কাছে হিংস্র জানোয়ারও ভয়ে ঘেঁষে না ।
অল্প কিছুক্ষণ ধীর পদক্ষেপে হেঁটে অবশেষে তাঁরা একদম নদীর পাড়ে চলে এলেন । এখন থেকে নদীর পাড় বরাবর উত্তর দিকে আর কিছুক্ষণ হাঁটলেই দেখা যাবে একটি বৃহৎ অশ্বথ বৃক্ষ তার ডালপালা আর অসংখ্য ঝুরি মেলে দাঁড়িয়ে রয়েছে । আর তার ঠিক নিচেই কালী মন্দিরটি ।
তাঁদের গন্তব্য সেখানেই ।
[চলবে]
নরখেকো পশুরাই যেখানে চন্ডকে ভয় পায় সেখানে কমলাদেবী আর কি!কি ভয়ংকর বর্ণনা!!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
চন্ড তো খুশি হবেই,কারণ সবকিছু তো প্ল্যান মোতাবেক করতে সক্ষম হয়েছে। কমলাদেবীকে শ্মশান পর্যন্ত নিয়েই গেলো। চন্ড যে কতোটা ভয়ানক, সেটা শিয়ালেরা খুব ভালোভাবেই জানে। পরবর্তী পর্বে তো মনে হচ্ছে কমলাদেবীকে মেরে ফেলবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শেয়ালের ভূরিভোজন পড়ে কিছুটা শরীর গুলিয়ে উঠেছিল ভাই। বিপদ একদম সন্নিকটে কমলাদেবীর, বড্ড খারাপ লাগছে তার জন্য। অপেক্ষায় থাকলাম পরের পর্বের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তাহলে কি কমলাদেবীও শেয়ালের ভুরিভোজ হবে। চন্ড কি শেয়ালদের জন্য সেই ব্যবস্থাই করছে। কমলাদেবী এত বিশ্বাস করে এসে এমন ধোকা খাবে ভাবতেই কেমন যেন লাগছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এতোক্ষনে আমরাও বুঝে গেছি চন্ড কতটা ভয়ংকর মানুষ, তার সাথে হিংস্র শেয়ালের আনাগুনা, একটা রহস্য রয়েই যাচ্ছে গল্পের উত্তেজনায়। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit